রাজধানীর মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটি এলাকায় খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বেশ কয়েকটি কুকুর ও বিড়াল হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন।
আজ শনিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টা থেকে জাপান গার্ডেন সিটির মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রাণীগুলোকে পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সাতটি কুকুর ও একটি বিড়ালের মৃত্যুর অভিযোগের পর গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে। অভিযুক্তরা চারটি কুকুর ও একটি বিড়ালের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করলেও বিষ প্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, প্রাণীগুলোর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটার তদন্ত চান তারাও।
এ নিয়ে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে জাপান গার্ডেন সিটির প্রবেশ পথ শনিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু বের হওয়ার মূল গেট খোলা রেখে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিষয়টি এতটাই আলোচনা তৈরি করেছে যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ দুপুরে জাপান গার্ডেন সিটিতে লোক পাঠায়। তারা ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির নেতাদের পাশাপাশি কুকুর প্রেমীদের সঙ্গেও কথা বলেন।
এই ঘটনায় আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ‘পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ’ এর সমন্বয়ক অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ।
আদাবর থানার এসআই নাসির উদ্দীন বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাপান গার্ডেন সিটিতে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ উত্তেজনা হয়েছিল। রাত ২টা পর্যন্ত চলা এই উত্তেজনা থামাতে পুলিশ গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে।
শনিবার বেলা ৪টার দিকে জাপান গার্ডেন সিটির প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় ‘অভয়ারণ্য বাংলাদেশ প্রাণী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। এ সময় জাপান গার্ডেন সিটি থেকে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারেননি।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক কাওসার শাকিল বলেন, আমরা কুকুর ও বিড়াল হত্যার অভিযোগে জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে মামলা করব। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে এই কুকুর-বিড়াল তারা মেরেছেন।
জাপান গার্ডেন সিটির বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী খন্দকার তাজরুবা তানিশা বলেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই বিড়াল ও কুকুরগুলোর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পরে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন তারা। আমরা এরই মধ্যে তিনটি কুকুরের মৃতদেহ নিজেদের হেফাজতে নিতে পেরেছি। বাকি চারটি নিরাপত্তাকর্মীরা সরিয়ে ফেলেছে। তিনটি কুকুরের মরদেহ ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ বের করার চেষ্টা করা হবে।
তিনি জানান, সেখানে কয়েক বছর আগেও ৮০টির মত কুকুর ছিল। কিছুদিন আগে ১২থেকে ১৩টিকে দেখা যেত। কারও না কারও নির্দেশে প্রায় প্রতিদিন সকাল বেলা নিরাপত্তাকর্মীরা কারণ ছাড়াই কুকুরগুলোকে মারতে মারতে বাইরে বের করে দেয়।গাড়ি চাপা দিয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চাগুলোকেও হত্যা করা হয়। তখন মা কুকুরগুলোর আহাজারি দেখার মত না। আর পা ভেঙে দেওয়া বা শরীরের ক্ষত করে দেওয়ার কথা নাই বললাম।
আরেক কুকুর প্রেমী সারিশমা ইসলাম দিয়া বলেন, কুকুরগুলো মারার জন্য গেটের কাছে লাঠির স্তূপ করা থাকে নিরাপত্তাকর্মীদের। যদি না তার উপর অত্যাচার চালানো হয়, এখানকার কোনো কুকুর কামড় বা আঘাত করে না। আদর করলেই বা সহানুভূতি দেখালেই তারা কাউকে আঘাত করে না।
নিজ উদ্যোগে এবং অন্যদের সহায়তায় জাপান গার্ডেন সিটির ভেতরে থাকা সব কুকুরের ভ্যাকসিন দেওয়া আছে জানিয়ে তাজরুবা তানিশা বলেন, অত্যাচারের কারণে কুকুরগুলো এই এলাকায় থাকতে পারছে না। ভয়ে গ্যারাজের কোথাও লুকিয়ে থাকতে থাকে। সেখানে খাবার না পেয়ে অনেক কুকুর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াহিয়া খন্দকার বলেন, প্রাণীগুলোর মৃত্যুর ঘটনাটিতে ‘হত্যা’ বলে কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে ছাড়াচ্ছেন। এই কারণে রাত তিনটা পর্যন্ত চরম উত্তেজনা চলে। শতশত বহিরাগত সেখানে আসে। মধ্য রাতে পরে জাপান গার্ডেন সিটির বাসিন্দারা নেমে এলে তারা চলে যায়।
নানা কারণে প্রাণীগুলোর মৃত্যু হতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জাপান গার্ডেন সিটির অনেক বাসিন্দা তেলাপোকা বা ইঁদুর মারার ওষুধ ব্যবহার করেন। পরে পরিষ্কার করে ডাস্টবিনে ফেলে দেন। এসব ডাস্টবিনে থাকা পরিত্যক্ত খাবারের সাথে মিশে থাকা ওসব ওষুধের বিষক্রিয়ায় প্রাণীগুলো আক্রান্ত হয়েছে কি না তাও দেখার বিষয় আছে। সঠিক তদন্ত হোক কীভাবে কুকুর - বিড়ালগুলো মারা গেল। কারও দোষ পাওয়া গেলে আইনানুসারে শাস্তি হোক।
ইয়াহিয়া খন্দকার অবশ্য এটাও জানিয়েছেন, আবাসিক এলাকাটিকে ‘কুকুর মুক্ত’ করার জন্য সেখানে দুই হাজার বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ১ হাজার আটশ জন দরখাস্ত দিয়েছে। গত বছর আমরা একটা তালিকা করেছি সেখানে ৩৮জন কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
কুকুরকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ নুর ভূইয়া বলেন, কুকুরগুলোর ব্যাপারে নজরদারি রাখার জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের বলেছেন, সেগুলোকে তাড়িয়ে দিতে বা মারতে নয়। সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে তাদের কাউকে কাউকে হেনস্তা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিষ প্রয়োগের ফলে বিড়াল ও কুকুরগুলো রক্ত বমি করে যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেছে বলে অভিযোগ এনে আদাবর থাকায় এই ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। তিনি বলেন, এলাকাবাসী ও প্রাণী অধিকারকর্মীরা থানায় যোগাযোগ করলে একজন এসআই ঘটনাস্থলে আসেন। তার উপস্থিতিতে ৩টি কুকুর ও এটি বিড়ালের মরদেহ পাওয়া যায়। বাকিদের মরদেহ লুকিয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নওশাবা বলেন, এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি, কুকুরগুলোকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
আগামীকাল রোববার কুকুরগুলোর ময়নাতদন্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পোস্টমর্টেম হোক, এরপর মামলা বা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেব।
আদাবর থানাও ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া বলেন, কুকুর মৃত্যুর ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদেরকে আদালতে অভিযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা বলে দিয়েছি কুকুরকে কোনোভাবেই হত্যা বা মারধর করা যাবে না। বহিরাগত কুকুর যেন না ঢুকে সে ব্যাপারেও মালিক সমিতিকে বলে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, দুইপক্ষের সাথেই আমাদের কথা হয়েছে। এসব কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটি এলাকায় খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বেশ কয়েকটি কুকুর ও বিড়াল হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন।
আজ শনিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টা থেকে জাপান গার্ডেন সিটির মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রাণীগুলোকে পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সাতটি কুকুর ও একটি বিড়ালের মৃত্যুর অভিযোগের পর গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে। অভিযুক্তরা চারটি কুকুর ও একটি বিড়ালের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করলেও বিষ প্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, প্রাণীগুলোর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটার তদন্ত চান তারাও।
এ নিয়ে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে জাপান গার্ডেন সিটির প্রবেশ পথ শনিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু বের হওয়ার মূল গেট খোলা রেখে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিষয়টি এতটাই আলোচনা তৈরি করেছে যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ দুপুরে জাপান গার্ডেন সিটিতে লোক পাঠায়। তারা ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির নেতাদের পাশাপাশি কুকুর প্রেমীদের সঙ্গেও কথা বলেন।
এই ঘটনায় আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ‘পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ’ এর সমন্বয়ক অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ।
আদাবর থানার এসআই নাসির উদ্দীন বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাপান গার্ডেন সিটিতে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ উত্তেজনা হয়েছিল। রাত ২টা পর্যন্ত চলা এই উত্তেজনা থামাতে পুলিশ গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে।
শনিবার বেলা ৪টার দিকে জাপান গার্ডেন সিটির প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় ‘অভয়ারণ্য বাংলাদেশ প্রাণী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। এ সময় জাপান গার্ডেন সিটি থেকে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারেননি।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক কাওসার শাকিল বলেন, আমরা কুকুর ও বিড়াল হত্যার অভিযোগে জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে মামলা করব। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে এই কুকুর-বিড়াল তারা মেরেছেন।
জাপান গার্ডেন সিটির বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী খন্দকার তাজরুবা তানিশা বলেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই বিড়াল ও কুকুরগুলোর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পরে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন তারা। আমরা এরই মধ্যে তিনটি কুকুরের মৃতদেহ নিজেদের হেফাজতে নিতে পেরেছি। বাকি চারটি নিরাপত্তাকর্মীরা সরিয়ে ফেলেছে। তিনটি কুকুরের মরদেহ ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ বের করার চেষ্টা করা হবে।
তিনি জানান, সেখানে কয়েক বছর আগেও ৮০টির মত কুকুর ছিল। কিছুদিন আগে ১২থেকে ১৩টিকে দেখা যেত। কারও না কারও নির্দেশে প্রায় প্রতিদিন সকাল বেলা নিরাপত্তাকর্মীরা কারণ ছাড়াই কুকুরগুলোকে মারতে মারতে বাইরে বের করে দেয়।গাড়ি চাপা দিয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চাগুলোকেও হত্যা করা হয়। তখন মা কুকুরগুলোর আহাজারি দেখার মত না। আর পা ভেঙে দেওয়া বা শরীরের ক্ষত করে দেওয়ার কথা নাই বললাম।
আরেক কুকুর প্রেমী সারিশমা ইসলাম দিয়া বলেন, কুকুরগুলো মারার জন্য গেটের কাছে লাঠির স্তূপ করা থাকে নিরাপত্তাকর্মীদের। যদি না তার উপর অত্যাচার চালানো হয়, এখানকার কোনো কুকুর কামড় বা আঘাত করে না। আদর করলেই বা সহানুভূতি দেখালেই তারা কাউকে আঘাত করে না।
নিজ উদ্যোগে এবং অন্যদের সহায়তায় জাপান গার্ডেন সিটির ভেতরে থাকা সব কুকুরের ভ্যাকসিন দেওয়া আছে জানিয়ে তাজরুবা তানিশা বলেন, অত্যাচারের কারণে কুকুরগুলো এই এলাকায় থাকতে পারছে না। ভয়ে গ্যারাজের কোথাও লুকিয়ে থাকতে থাকে। সেখানে খাবার না পেয়ে অনেক কুকুর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াহিয়া খন্দকার বলেন, প্রাণীগুলোর মৃত্যুর ঘটনাটিতে ‘হত্যা’ বলে কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে ছাড়াচ্ছেন। এই কারণে রাত তিনটা পর্যন্ত চরম উত্তেজনা চলে। শতশত বহিরাগত সেখানে আসে। মধ্য রাতে পরে জাপান গার্ডেন সিটির বাসিন্দারা নেমে এলে তারা চলে যায়।
নানা কারণে প্রাণীগুলোর মৃত্যু হতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জাপান গার্ডেন সিটির অনেক বাসিন্দা তেলাপোকা বা ইঁদুর মারার ওষুধ ব্যবহার করেন। পরে পরিষ্কার করে ডাস্টবিনে ফেলে দেন। এসব ডাস্টবিনে থাকা পরিত্যক্ত খাবারের সাথে মিশে থাকা ওসব ওষুধের বিষক্রিয়ায় প্রাণীগুলো আক্রান্ত হয়েছে কি না তাও দেখার বিষয় আছে। সঠিক তদন্ত হোক কীভাবে কুকুর - বিড়ালগুলো মারা গেল। কারও দোষ পাওয়া গেলে আইনানুসারে শাস্তি হোক।
ইয়াহিয়া খন্দকার অবশ্য এটাও জানিয়েছেন, আবাসিক এলাকাটিকে ‘কুকুর মুক্ত’ করার জন্য সেখানে দুই হাজার বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ১ হাজার আটশ জন দরখাস্ত দিয়েছে। গত বছর আমরা একটা তালিকা করেছি সেখানে ৩৮জন কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
কুকুরকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ নুর ভূইয়া বলেন, কুকুরগুলোর ব্যাপারে নজরদারি রাখার জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের বলেছেন, সেগুলোকে তাড়িয়ে দিতে বা মারতে নয়। সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে তাদের কাউকে কাউকে হেনস্তা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিষ প্রয়োগের ফলে বিড়াল ও কুকুরগুলো রক্ত বমি করে যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেছে বলে অভিযোগ এনে আদাবর থাকায় এই ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। তিনি বলেন, এলাকাবাসী ও প্রাণী অধিকারকর্মীরা থানায় যোগাযোগ করলে একজন এসআই ঘটনাস্থলে আসেন। তার উপস্থিতিতে ৩টি কুকুর ও এটি বিড়ালের মরদেহ পাওয়া যায়। বাকিদের মরদেহ লুকিয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নওশাবা বলেন, এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি, কুকুরগুলোকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
আগামীকাল রোববার কুকুরগুলোর ময়নাতদন্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পোস্টমর্টেম হোক, এরপর মামলা বা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেব।
আদাবর থানাও ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া বলেন, কুকুর মৃত্যুর ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদেরকে আদালতে অভিযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা বলে দিয়েছি কুকুরকে কোনোভাবেই হত্যা বা মারধর করা যাবে না। বহিরাগত কুকুর যেন না ঢুকে সে ব্যাপারেও মালিক সমিতিকে বলে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, দুইপক্ষের সাথেই আমাদের কথা হয়েছে। এসব কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।