গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলে আদিবাসী ছাত্র-জনতার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। অভিযোগ উঠেছে, প্রথম দফা হামলার সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে এবং দ্বিতীয় দফায় হামলাকারীদের সরিয়ে নেওয়ার পরও কোনো উল্লেখযোগ্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনায় দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনগুলো যৌথ বিবৃতি দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর হামলা, পাঠ্যপুস্তক থেকে “আদিবাসী” শব্দ বাদ দেওয়ার মতো ঘটনা রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তিমূলক কাঠামোর বিপরীতে কাজ করছে।
সম্প্রতি এনসিটিবি প্রণীত পাঠ্যবইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় আদিবাসীসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান চিত্রিত একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হলে, স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে এনসিটিবি গ্রাফিতি বাতিলের উদ্যোগ নেয়। এর প্রতিবাদে আদিবাসী ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিল। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে হামলা চালানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এই হামলায় আদিবাসী অধিকারকর্মীদের চিহ্নিত করে বেছে বেছে আঘাত করা হয়েছে। এমনকি, হামলার আলামত ধ্বংস করতে পুলিশকে রাস্তায় জমে থাকা রক্ত পরিষ্কার করতেও দেখা গেছে। এতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর নিপীড়নের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণের পথে অন্তরায়। বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক আক্রমণ বৈচিত্র্যের বিরুদ্ধে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ।
বিবৃতির মাধ্যমে দাবি জানানো হয়েছে যে, ভিন্নমত ও সাংস্কৃতিক চর্চাকে স্বীকৃতি দিতে সংবেদনশীল রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। একই সঙ্গে আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করে তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, মানবাধিকার কর্মী এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন:
১. অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
২. রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
৩. রামেন্দু মজুমদার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
৪. ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
৫. অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
৬. অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
৭. ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভাপতি, মহিলা পরিষদ
৮. ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সদস্য সচিব, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ
৯. এস. এম. এ সবুর, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি
১০. খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী
১১. এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১২. রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৩. অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৪. সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
১৫. ড. জোবায়দা নাসরিন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৬. পারভেজ হাসেম, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
১৭. কাজল দেবনাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
১৮. আবদুল ওয়াহেদ, কার্যকরী সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট
১৯. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব)
২০. অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
২১. এ কে আজাদ, সংস্কৃতি কর্মী
২২. জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সমাজকর্মী
২৩. অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতি কর্মী
২৪. জহিরুল ইসলাম জহির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর
২৫. দীপায়ন খীসা, সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম
২৬. রেজাউল কবির, সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর
২৭. গৌতম শীল, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল)।
বিবৃতিতে শেষ করা হয় এই প্রত্যাশায় যে, দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সরকার ও নাগরিক সমাজ আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংবেদনশীল উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলে আদিবাসী ছাত্র-জনতার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। অভিযোগ উঠেছে, প্রথম দফা হামলার সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে এবং দ্বিতীয় দফায় হামলাকারীদের সরিয়ে নেওয়ার পরও কোনো উল্লেখযোগ্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনায় দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনগুলো যৌথ বিবৃতি দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর হামলা, পাঠ্যপুস্তক থেকে “আদিবাসী” শব্দ বাদ দেওয়ার মতো ঘটনা রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তিমূলক কাঠামোর বিপরীতে কাজ করছে।
সম্প্রতি এনসিটিবি প্রণীত পাঠ্যবইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় আদিবাসীসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান চিত্রিত একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হলে, স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে এনসিটিবি গ্রাফিতি বাতিলের উদ্যোগ নেয়। এর প্রতিবাদে আদিবাসী ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিল। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে হামলা চালানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এই হামলায় আদিবাসী অধিকারকর্মীদের চিহ্নিত করে বেছে বেছে আঘাত করা হয়েছে। এমনকি, হামলার আলামত ধ্বংস করতে পুলিশকে রাস্তায় জমে থাকা রক্ত পরিষ্কার করতেও দেখা গেছে। এতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর নিপীড়নের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণের পথে অন্তরায়। বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক আক্রমণ বৈচিত্র্যের বিরুদ্ধে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ।
বিবৃতির মাধ্যমে দাবি জানানো হয়েছে যে, ভিন্নমত ও সাংস্কৃতিক চর্চাকে স্বীকৃতি দিতে সংবেদনশীল রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। একই সঙ্গে আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করে তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, মানবাধিকার কর্মী এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন:
১. অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
২. রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
৩. রামেন্দু মজুমদার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
৪. ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
৫. অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
৬. অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
৭. ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভাপতি, মহিলা পরিষদ
৮. ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সদস্য সচিব, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ
৯. এস. এম. এ সবুর, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি
১০. খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী
১১. এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১২. রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৩. অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৪. সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
১৫. ড. জোবায়দা নাসরিন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৬. পারভেজ হাসেম, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
১৭. কাজল দেবনাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
১৮. আবদুল ওয়াহেদ, কার্যকরী সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট
১৯. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব)
২০. অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
২১. এ কে আজাদ, সংস্কৃতি কর্মী
২২. জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সমাজকর্মী
২৩. অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতি কর্মী
২৪. জহিরুল ইসলাম জহির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর
২৫. দীপায়ন খীসা, সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম
২৬. রেজাউল কবির, সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর
২৭. গৌতম শীল, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল)।
বিবৃতিতে শেষ করা হয় এই প্রত্যাশায় যে, দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সরকার ও নাগরিক সমাজ আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংবেদনশীল উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।