‘ধর্ষণ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ শব্দ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বিতর্কের পর সোমবার এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
ডিএমপির পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে সাজ্জাত আলী বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন প্রসঙ্গে আলোচনাকালে ধর্ষণকে বৃহত্তর পরিসরে নির্যাতন হিসেবে অভিহিত করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ মনঃক্ষুণ্ন হলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
শনিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার ভবনে ‘হেল্প’ (হ্যারেসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম) নামের একটি অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অনুরোধ জানান সাজ্জাত আলী।
তিনি বলেন,“আমি দুইটা শব্দ খুব অপছন্দ করি। আমি অনুরোধ করব এই দুইটা শব্দ বলবেন না। একটা ভুলে গেলাম, একটা এবার বলি— ধর্ষণ শব্দটা ব্যবহার করবেন না প্লিজ। আমাদের শুনতে খুব খারাপ লাগে। আপনারা ‘নারী নির্যাতন’ বলবেন, ‘নারী নিপীড়ন’ বলবেন।
“আমাদের যে আইনটি আছে, সেটার নামও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’। সো, যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, আমরা না বলি।”
ডিএমপি কমিশনারের এমন বক্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। রবিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তার বক্তব্যের “তীব্র নিন্দা” জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ধর্ষণ যে কোনো বয়সের ব্যক্তির বিরুদ্ধেই সংঘটিত হতে পারে— আট বছরের শিশুর হোক বা ৮০ বছরের বৃদ্ধার, এটি একটি গুরুতর অপরাধ এবং একে যথাযথ নামেই ডাকতে হবে।
“এ ধরনের জঘন্য অপরাধকে তার প্রকৃত নামেই অভিহিত করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহিংসতা সহ্য করবে না।”
একই দিন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কমিশনারের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে।
জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত মানববন্ধনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, **“নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। অথচ সেই সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ধর্ষণ শব্দটি না ব্যবহারের অনুরোধ করেন— এটি আমাদের অবাক করে।
“তার বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ধর্ষকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত।”
বিতর্ক বাড়তে থাকায় সোমবার ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী এক বিবৃতিতে তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু বলেননি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
‘ধর্ষণ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ শব্দ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বিতর্কের পর সোমবার এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
ডিএমপির পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে সাজ্জাত আলী বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন প্রসঙ্গে আলোচনাকালে ধর্ষণকে বৃহত্তর পরিসরে নির্যাতন হিসেবে অভিহিত করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ মনঃক্ষুণ্ন হলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
শনিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার ভবনে ‘হেল্প’ (হ্যারেসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম) নামের একটি অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অনুরোধ জানান সাজ্জাত আলী।
তিনি বলেন,“আমি দুইটা শব্দ খুব অপছন্দ করি। আমি অনুরোধ করব এই দুইটা শব্দ বলবেন না। একটা ভুলে গেলাম, একটা এবার বলি— ধর্ষণ শব্দটা ব্যবহার করবেন না প্লিজ। আমাদের শুনতে খুব খারাপ লাগে। আপনারা ‘নারী নির্যাতন’ বলবেন, ‘নারী নিপীড়ন’ বলবেন।
“আমাদের যে আইনটি আছে, সেটার নামও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’। সো, যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, আমরা না বলি।”
ডিএমপি কমিশনারের এমন বক্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। রবিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তার বক্তব্যের “তীব্র নিন্দা” জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ধর্ষণ যে কোনো বয়সের ব্যক্তির বিরুদ্ধেই সংঘটিত হতে পারে— আট বছরের শিশুর হোক বা ৮০ বছরের বৃদ্ধার, এটি একটি গুরুতর অপরাধ এবং একে যথাযথ নামেই ডাকতে হবে।
“এ ধরনের জঘন্য অপরাধকে তার প্রকৃত নামেই অভিহিত করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহিংসতা সহ্য করবে না।”
একই দিন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কমিশনারের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে।
জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত মানববন্ধনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, **“নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। অথচ সেই সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ধর্ষণ শব্দটি না ব্যবহারের অনুরোধ করেন— এটি আমাদের অবাক করে।
“তার বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ধর্ষকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত।”
বিতর্ক বাড়তে থাকায় সোমবার ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী এক বিবৃতিতে তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু বলেননি।