alt

news » cities

চানখাঁরপুলে গুলিতে নিহত আনাসের রক্তে ভেসে গিয়েছিল শরীর: ট্রাইব্যুনালে মায়ের সাক্ষ্য

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকার চানখাঁরপুলে গুলিতে নিহত শাহরিয়ার খান আনাসের লাশ নিয়ে বাসায় ফেরার সময় রক্তে শরীর ভেসে গিয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যে জানিয়েছেন তার মা সানজিদা খান দীপ্তি।

রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে তিনি এ সাক্ষ্য দেন। জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন সানজিদা। তিনি ছিলেন মামলার নবম সাক্ষী।

সানজিদা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট সকালে গেণ্ডারিয়ার ভাড়া বাসা থেকে বের হওয়ার আগে একটি চিঠি লিখে যান আনাস। চিঠিতে লেখা ছিল—“মা আমি মিছিলে যাচ্ছি। যদি না ফিরি তাহলে গর্বিত হইও।”

“ঠিক দুপুরে তার মৃত্যুর খবর পাই আমরা। পরে লাশ আনতে মিটফোর্ড হাসপাতালে যাই আমি, তার বাবা আর নানু। লাশ নিয়ে রিকশায় বাসায় ফেরার সময় আনাসের রক্তে আমাদের শরীর ভেসে গিয়েছিল।”

তিনি বলেন, লাশ বাসায় আনার পর হত্যার বিচার চেয়ে এলাকাবাসী মিছিল করেন। পরে ধুপখোলা মাঠে জানাজা হয়। সেখানে আনাসের সঙ্গে নিহত মেহেদী হাসান জুনায়েদের জানাজাও একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় আলেমের পরামর্শে রক্তাক্ত কাপড়ে গোসল ছাড়াই শহীদী মর্যাদায় দাফন করা হয় আনাসকে।

আনাসের মা জানান, তার ছেলে আন্দোলনকারী রাব্বী ও সৌরভের সঙ্গে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু চানখাঁরপুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়ে আন্দোলনকারীরা। র‌্যাব-পুলিশ গুলি ছুড়তে শুরু করলে প্রাণ বাঁচাতে বিভিন্ন গলিতে আশ্রয় নেন তারা।

“এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য আমার ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে লাগলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আনাস। পরে কয়েকজন আন্দোলনকারী তাকে রিকশায় করে হাসপাতালে নেয়। রিকশাই ছিল তখনকার অ্যাম্বুলেন্স।”

তিনি আরও বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গুলি চালানো এবং নির্দেশদাতাদের নাম জানতে পারেন তিনি।

সানজিদার দাবি, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ও রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম। তাদের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছিলেন রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

“তারা সেদিন নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এমন ভয়াবহভাবে গুলি চালিয়েছিল, যেন মানুষ বাঁচতে না পারে। তাদের গুলিতেই আমার ছেলে আনাসসহ ছয়জন শহীদ হয়েছিল। এছাড়া এ গুলির নির্দেশদাতা ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।”

আনাসের মা এ আসামিদের ফাঁসির দাবি জানান।

পরে তাকে জেরা করেন আসামি আরশাদের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও আসামিপক্ষের অন্য আইনজীবীরা।

সকালে এ মামলার চার আসামি—শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ছবি

চেক জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা

ছবি

ডিএসসিসিতে কোটি টাকার জ্বালানি খরচের ‘অনিয়ম’, দুদকের অভিযান

ছবি

মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার হামলায় আরও দুজন গ্রেপ্তার

ছবি

সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ও মালিকের বাসায় হামলার মামলায় এক আসামি রিমান্ডে, আরেকজন কারাগারে

ছবি

সংস্কারে আরো দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে ‘চাঁদপুর ইলিশ চত্বর’

ছবি

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক র‌্যালি

ছবি

আদাবরে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে গিয়ে পুলিশের গাড়িচালককে কুপিয়ে জখম

ছবি

৩৮ লাখ টাকার অভিযোগে ঢাকার সহকারী কর কমিশনার মিতু সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

একাধিক অভিযোগে বরখাস্ত হল চিকিৎসক ফাতেমা দোজা

ছবি

ডিআরইউ আলোচনায় হামলার শিকার অধ্যাপক কার্জনের জামিন নামঞ্জুর

ছবি

সহকারী শিক্ষকদের আল্টিমেটাম :  ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে আমরণ অনশন

ছবি

কাকরাইলে জাপা কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত কয়েকজন

ছবি

আগারগাঁও অবরোধে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা, তিন দফা দাবিতে দুর্ভোগে যাত্রীরা

ছবি

ডিএমপি কমিশনারের দুঃখ প্রকাশের পর শাহবাগ ছাড়লেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা

ছবি

কাকরাইলে আন্দোলনকারী ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ

ছবি

বুয়েট উপাচার্যের ক্ষোভ: শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ গ্রহণযোগ্য নয়

ছবি

শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের অবস্থান, পুলিশের হামলার বিরুদ্ধে পাঁচ দফা দাবি

ছবি

বিআইপি অভিযোগ: রাজউক ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয় আবাসন ব্যবসায়ীদের পক্ষে কাজ করছে

ছবি

হিজাব বিতর্কে শিক্ষক বরখাস্ত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিকারুননিসা নূন স্কুলে

ছবি

যমুনামুখী হতে চাইলে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

ছবি

শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের অবরোধ, তীব্র যানজট

ছবি

ঢাকায় ৮ কেজি কোকেনসহ গায়ানার নাগরিক গ্রেপ্তার

ছবি

শাহবাগ মোড়ে প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, তিন দাবিতে সড়ক অবরোধ

ছবি

রাজধানীতে সমাবেশের জন্য ডিএমপির চিহ্নিত ৯১ বিকল্প স্থান

ছবি

সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ বুয়েট শিক্ষার্থীদের যমুনায় যাওয়ার চেষ্টা

ছবি

জুলাই আন্দোলনে চোখের ক্ষতির শিকারদের চিত্র ট্রাইব্যুনালে

ছবি

রামপুরার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা : ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ চারজন পলাতক আসামিকে আত্মসমর্পণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

ছবি

বুড়িগঙ্গা থেকে উদ্ধার হওয়া চার লাশের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি

ছবি

ঢাকায় নির্বাচনি সভা-সমাবেশের জন্য সড়ক বাদ দিয়ে ৯১ বিকল্প স্থানের প্রস্তাব ডিএমপির

ছবি

ঢাকায় একদিনে চার শিশু-তরুণের মৃত্যু, ডেঙ্গুতে এ বছর প্রাণহানি ১১৪

ছবি

গেন্ডারিয়ায় ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের পর বাসায় আগুন, দগ্ধ হয়ে যুবকের মৃত্যু

ছবি

সায়েন্স ল্যাবে ঢাকা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত পুলিশসহ অন্তত ১০ জন

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উদ্যোগের পরও কমেনি যানজট, স্বেচ্ছাসেবক সংকটে সফলতা আসছে না

ছবি

পানি উন্নয়ন বোর্ডে নতুন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের যোগদান

দাবি আদায়ে আলটিমেটাম দিয়ে সচিবালয়ের সামনের সড়ক ছাড়লেন জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা

ছবি

এনবিআরে আন্দোলনে ‘সংগঠকের ভূমিকা’ অভিযোগে আরও পাঁচ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

tab

news » cities

চানখাঁরপুলে গুলিতে নিহত আনাসের রক্তে ভেসে গিয়েছিল শরীর: ট্রাইব্যুনালে মায়ের সাক্ষ্য

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকার চানখাঁরপুলে গুলিতে নিহত শাহরিয়ার খান আনাসের লাশ নিয়ে বাসায় ফেরার সময় রক্তে শরীর ভেসে গিয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যে জানিয়েছেন তার মা সানজিদা খান দীপ্তি।

রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে তিনি এ সাক্ষ্য দেন। জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন সানজিদা। তিনি ছিলেন মামলার নবম সাক্ষী।

সানজিদা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট সকালে গেণ্ডারিয়ার ভাড়া বাসা থেকে বের হওয়ার আগে একটি চিঠি লিখে যান আনাস। চিঠিতে লেখা ছিল—“মা আমি মিছিলে যাচ্ছি। যদি না ফিরি তাহলে গর্বিত হইও।”

“ঠিক দুপুরে তার মৃত্যুর খবর পাই আমরা। পরে লাশ আনতে মিটফোর্ড হাসপাতালে যাই আমি, তার বাবা আর নানু। লাশ নিয়ে রিকশায় বাসায় ফেরার সময় আনাসের রক্তে আমাদের শরীর ভেসে গিয়েছিল।”

তিনি বলেন, লাশ বাসায় আনার পর হত্যার বিচার চেয়ে এলাকাবাসী মিছিল করেন। পরে ধুপখোলা মাঠে জানাজা হয়। সেখানে আনাসের সঙ্গে নিহত মেহেদী হাসান জুনায়েদের জানাজাও একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় আলেমের পরামর্শে রক্তাক্ত কাপড়ে গোসল ছাড়াই শহীদী মর্যাদায় দাফন করা হয় আনাসকে।

আনাসের মা জানান, তার ছেলে আন্দোলনকারী রাব্বী ও সৌরভের সঙ্গে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু চানখাঁরপুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়ে আন্দোলনকারীরা। র‌্যাব-পুলিশ গুলি ছুড়তে শুরু করলে প্রাণ বাঁচাতে বিভিন্ন গলিতে আশ্রয় নেন তারা।

“এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য আমার ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে লাগলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আনাস। পরে কয়েকজন আন্দোলনকারী তাকে রিকশায় করে হাসপাতালে নেয়। রিকশাই ছিল তখনকার অ্যাম্বুলেন্স।”

তিনি আরও বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গুলি চালানো এবং নির্দেশদাতাদের নাম জানতে পারেন তিনি।

সানজিদার দাবি, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ও রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম। তাদের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছিলেন রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

“তারা সেদিন নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এমন ভয়াবহভাবে গুলি চালিয়েছিল, যেন মানুষ বাঁচতে না পারে। তাদের গুলিতেই আমার ছেলে আনাসসহ ছয়জন শহীদ হয়েছিল। এছাড়া এ গুলির নির্দেশদাতা ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।”

আনাসের মা এ আসামিদের ফাঁসির দাবি জানান।

পরে তাকে জেরা করেন আসামি আরশাদের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও আসামিপক্ষের অন্য আইনজীবীরা।

সকালে এ মামলার চার আসামি—শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

back to top