মঙ্গলবার মিরপুরের রূপনগরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় স্বজনদের কান্না -সংবাদ
রাজধানীর মিরপুরে রূপনগরে একটি পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পোশাক কারখানর ভবন থেকেই এই ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে আগুন
অনেকেই দগ্ধ ও আহত
রাসায়নিক গুদামের নেই অনুমোদন
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সোয়া নয়টা পর্যন্ত) রাসায়নিকের গুদামের আগুন নেভেনি। পোশাক কারখানার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণচেষ্টার পাশাপাশি সেখানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার,(১৪ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের সময় অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। তারা ১১টা ৫৬ মিনিটের সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ পোশাক কারখানার ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জন হওয়ার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।
সর্বশেষ তথ্য মতে, ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল ও মিডিয়া শাখা থেকে সংবাদকে জানিয়েছেন, আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
আর ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতাল থেকে জানা গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, দুইটি প্রতিষ্ঠানে এক সঙ্গে আগুন লাগে। কেমিক্যাল গোডাউন না গার্মেন্টস থেকে আগুনের সূত্রপাত- তা নিশ্চিত করা যায়নি।
পোশাক কারখানার দোতলা ও তৃতীয়তলা থেকে লাশগুলো একে একে উদ্ধার করা হয়েছে। পুড়ে যাওয়ার কারণে নিহতরা নারী না পুরুষ তাৎক্ষণিকভাবে তা বোঝা যাচ্ছে না। এগুলো স্তুপের আকারে হয়ে ছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিরপুরে রূপনগরে অবস্থান নিয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশে লোকজন যাতে ভিড় না কওে, তার জন্য পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কাজ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন লাগা আলম কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির মালিক পক্ষের কাউকে বিকেল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কর্মচারী ও ম্যানেজার কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না।
কেমিক্যাল গুদামের অনুমোদন আছে কি না- তা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এখানে কেমিক্যাল গোডাউন স্থাপনের অনুমোদন নেই। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসের টিম তদন্ত করছে।
## স্বজনের খোঁজে ঘটনাস্থলে ছবি হাতে অনেকে
পুড়ে যাওয়া পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামের আশপাশে স্বজনের খোঁজে ঘুরছেন অনেক মানুষ। তারা বলছেন, আগুন লাগার পর থেকে স্বজনদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না তারা। মোবাইল ফোনেও সাড়া পাচ্ছেন না তারা।
ভাতিজা রবিনের ছবি হাতে এদিক-সেদিক ছুটছেন নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, এখানে জিএম ফ্যাশন নামে একটি কারখানায় কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করছিলেন রবিন। তার কর্মক্ষেত্র ছিল পুড়ে যাওয়া ভবনটির তিন তলায়।
নাসিমা বলেন, ভবনের পাঁচতলা থেকে শ্রমিকরা বের হতে পারলেও তিনতলা থেকে কেউ বের হতে পারেনি। এখন পুরো পরিবারের সদস্যরা রবিনের ছবি হাতে খুঁজতে বেরিয়েছেন।
পোশাককর্মী খালিদ হাসান সাব্বিরকে খুঁজছেন তার মামাতো ভাই শাকিল আহমেদ। তিনি বলেন, সাব্বির আরমান গার্মেন্টসের স্টোর ইনচার্জ ছিলেন। সাব্বিরের ফোন এখনও বাজছে। তবে কেউ ধরছেন না।
ঘটনাস্থলে বন্ধু সারোয়ারের ছবি হাতে ঘুরছেন আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, তার বন্ধু সেখানকার একটি ‘ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতে’ হেলপারের কাজ করতেন। অল্প কয়েকদিন হল সারোয়ার এখানে কাজে যুক্ত হয়েছেন। আগুন লাগার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার মিরপুরের রূপনগরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় স্বজনদের কান্না -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
রাজধানীর মিরপুরে রূপনগরে একটি পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পোশাক কারখানর ভবন থেকেই এই ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে আগুন
অনেকেই দগ্ধ ও আহত
রাসায়নিক গুদামের নেই অনুমোদন
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সোয়া নয়টা পর্যন্ত) রাসায়নিকের গুদামের আগুন নেভেনি। পোশাক কারখানার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণচেষ্টার পাশাপাশি সেখানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার,(১৪ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের সময় অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। তারা ১১টা ৫৬ মিনিটের সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ পোশাক কারখানার ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জন হওয়ার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।
সর্বশেষ তথ্য মতে, ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল ও মিডিয়া শাখা থেকে সংবাদকে জানিয়েছেন, আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
আর ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতাল থেকে জানা গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, দুইটি প্রতিষ্ঠানে এক সঙ্গে আগুন লাগে। কেমিক্যাল গোডাউন না গার্মেন্টস থেকে আগুনের সূত্রপাত- তা নিশ্চিত করা যায়নি।
পোশাক কারখানার দোতলা ও তৃতীয়তলা থেকে লাশগুলো একে একে উদ্ধার করা হয়েছে। পুড়ে যাওয়ার কারণে নিহতরা নারী না পুরুষ তাৎক্ষণিকভাবে তা বোঝা যাচ্ছে না। এগুলো স্তুপের আকারে হয়ে ছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিরপুরে রূপনগরে অবস্থান নিয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশে লোকজন যাতে ভিড় না কওে, তার জন্য পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কাজ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন লাগা আলম কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির মালিক পক্ষের কাউকে বিকেল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কর্মচারী ও ম্যানেজার কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না।
কেমিক্যাল গুদামের অনুমোদন আছে কি না- তা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এখানে কেমিক্যাল গোডাউন স্থাপনের অনুমোদন নেই। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসের টিম তদন্ত করছে।
## স্বজনের খোঁজে ঘটনাস্থলে ছবি হাতে অনেকে
পুড়ে যাওয়া পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামের আশপাশে স্বজনের খোঁজে ঘুরছেন অনেক মানুষ। তারা বলছেন, আগুন লাগার পর থেকে স্বজনদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না তারা। মোবাইল ফোনেও সাড়া পাচ্ছেন না তারা।
ভাতিজা রবিনের ছবি হাতে এদিক-সেদিক ছুটছেন নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, এখানে জিএম ফ্যাশন নামে একটি কারখানায় কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করছিলেন রবিন। তার কর্মক্ষেত্র ছিল পুড়ে যাওয়া ভবনটির তিন তলায়।
নাসিমা বলেন, ভবনের পাঁচতলা থেকে শ্রমিকরা বের হতে পারলেও তিনতলা থেকে কেউ বের হতে পারেনি। এখন পুরো পরিবারের সদস্যরা রবিনের ছবি হাতে খুঁজতে বেরিয়েছেন।
পোশাককর্মী খালিদ হাসান সাব্বিরকে খুঁজছেন তার মামাতো ভাই শাকিল আহমেদ। তিনি বলেন, সাব্বির আরমান গার্মেন্টসের স্টোর ইনচার্জ ছিলেন। সাব্বিরের ফোন এখনও বাজছে। তবে কেউ ধরছেন না।
ঘটনাস্থলে বন্ধু সারোয়ারের ছবি হাতে ঘুরছেন আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, তার বন্ধু সেখানকার একটি ‘ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতে’ হেলপারের কাজ করতেন। অল্প কয়েকদিন হল সারোয়ার এখানে কাজে যুক্ত হয়েছেন। আগুন লাগার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।