স্টেশনে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, সিআরএম বুথ ও এটিএম বুথ হচ্ছে
মেট্রোরেলে যাতায়াতে অপেক্ষার সময় আরও কমবে। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষার সময় পাঁচ মিনিটে আনা হবে। বুধবার,(২৯ অক্টোবর ২০২৫) মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সম্প্রতি পিক-আওয়ারে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষার সময়সীমা ৮ মিনিট থেকে কমিয়ে ৬ মিনিট করা হয়েছে। যা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে মাত্র পাঁচ মিনিটে আনা হবে। এছাড়া সম্প্রতি মেট্রোরেলের পরিসেবার সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়াও ভাড়া বহির্ভূত আয় বাড়ানোর জন্য স্টেশন ও ট্রেনের অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, এটিএম ও সিআরএম বুথ স্থাপন এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের মতো কাজের চুক্তিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নকশা সংশোধন, দর বিশ্লেষণ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে দর তুলনার মাধ্যমে সর্বনিম্ন স্তরে প্রাক্কলন নির্ধারণের কাজ চলমান আছে।
মেট্রোরেল পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও রেলটাইম টেকনোলজি ট্রান্সফার, ডিএমটিসিএল-এর ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা, স্থানীয়ভাবে চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি করা এবং স্থানীয় শিল্পের বিকাশে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মেট্রোরেলের মতিঝিল-কমলাপুর সেকশনের কাজে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও বলা হয়েছে, মেট্রোরেলের কমলাপুর সেকশনের ইলেকট্রো মেকানিক্যাল সিস্টেমের কাজের জন্য জুন ২০১৮ সালে দরপত্র দাখিলকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি নিয়োগ করা হয়েছে। এ কাজের প্রাথমিক ব্যয় নিয়ে সম্প্রতি কিছু প্রশ্ন উঠলেও অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সফল দর কষাকষির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করেছে।
সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে(আরডিপিপি) (দ্বিতীয় সংশোধনী) এই খাতে ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ রাখা হয়েছিল। কার্যত ২৭৪ কোটি টাকা আরডিপি বরাদ্ধ একটি অনুমোদিত ব্যয়। প্রকৃত ব্যয় দরপত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, যা মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন, কাঁচামাল সরবরাহের জটিলতা এবং পরিবর্তন খরচ ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল।
জুলাই ২০২৩ সালে মারুবিনি-এলঅ্যান্ডটি প্রস্তাবিত মূল্য ছিল প্রায় ৬শ’ কোটি টাকা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এত বেশি দরে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করে। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে নেগোসিয়েশন স্ট্রাটেজি গ্রহণ করে। দীর্ঘ আলোচনা ও দর কষাকষি করে ৪৬৫ কোটি টাকায় কাজটি করাতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। সেই সঙ্গে এক বছর ডিএনপি (ডিপেক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড) বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, উত্তরা উত্তর-মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজ মারুবিনি-এলঅ্যান্ডটি সম্পাদন করেছিল। সেক্ষেত্রে একই ঠিকাদার থাকায় মতিঝিল-কমলাপুর পর্যন্ত কাজে সিষ্টেম ইন্টিগ্রেশনে সুবিধা হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে ১৮৫ কোটি টাকা নিট সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে বলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন। চুক্তিতে সরকারের খরচ ‘ব্যয় অপ্টিমাইজেশন’ (খরচ যৌক্তিকীকরণ) নীতির প্রতিফলন। একইসঙ্গে প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকার সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী তাদের মনোনীত ঠিকাদার দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার ফলে অনেকগুলো উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। গত ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী আন্দোলন সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বরসহ অন্যান্য মেট্রোরেল স্টেশনগুলো মাত্র ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এবং আড়াই মাসে মেরামত করা সম্পন্ন হয়েছে। যা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৩৫০ কোটি টাকা এক বছরের বেশি সময় ধরে মেরামতের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছিল।
যাত্রীদের অভিযোগ মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে যাত্রীদের চলাচলের রাস্তায় যত্রতত্র দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এতে যাত্রীদের স্টেশনে উঠানামায় কষ্টকর হচ্ছে। সচিবালয় স্টেশনে পল্টন মোড়ের কাছে ফুটপাটে রাস্তায় দোকান বসিয়ে জনভোগান্তি বাড়িয়েছে। শাহবাগ-উত্তরা পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনের নিচে ফুটপাতে হাঁটার জায়গায় অবৈধ দোকান বসানো হয়েছে।
রাতে সময় আরও বাড়ানোর দাবি, রাজধানীর মতিঝিল-উত্তরা পর্যন্ত অনেক প্রাইভেট অফিসে রাত ১১টার পরও অনেকেই কাজ করে। তাই অনেকেই সময় রাত ১১টা পর্যন্ত করার দাবি জানিয়েছেন। এতে গণমাধ্যম কর্মীসহ রাতে যারা অফিস করেন তাদের কিছুটা হলেও সুবিধা হবে। সহজে ও নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারবেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
স্টেশনে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, সিআরএম বুথ ও এটিএম বুথ হচ্ছে
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
মেট্রোরেলে যাতায়াতে অপেক্ষার সময় আরও কমবে। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষার সময় পাঁচ মিনিটে আনা হবে। বুধবার,(২৯ অক্টোবর ২০২৫) মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সম্প্রতি পিক-আওয়ারে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষার সময়সীমা ৮ মিনিট থেকে কমিয়ে ৬ মিনিট করা হয়েছে। যা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে মাত্র পাঁচ মিনিটে আনা হবে। এছাড়া সম্প্রতি মেট্রোরেলের পরিসেবার সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়াও ভাড়া বহির্ভূত আয় বাড়ানোর জন্য স্টেশন ও ট্রেনের অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, এটিএম ও সিআরএম বুথ স্থাপন এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের মতো কাজের চুক্তিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নকশা সংশোধন, দর বিশ্লেষণ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে দর তুলনার মাধ্যমে সর্বনিম্ন স্তরে প্রাক্কলন নির্ধারণের কাজ চলমান আছে।
মেট্রোরেল পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও রেলটাইম টেকনোলজি ট্রান্সফার, ডিএমটিসিএল-এর ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা, স্থানীয়ভাবে চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি করা এবং স্থানীয় শিল্পের বিকাশে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মেট্রোরেলের মতিঝিল-কমলাপুর সেকশনের কাজে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও বলা হয়েছে, মেট্রোরেলের কমলাপুর সেকশনের ইলেকট্রো মেকানিক্যাল সিস্টেমের কাজের জন্য জুন ২০১৮ সালে দরপত্র দাখিলকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি নিয়োগ করা হয়েছে। এ কাজের প্রাথমিক ব্যয় নিয়ে সম্প্রতি কিছু প্রশ্ন উঠলেও অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সফল দর কষাকষির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করেছে।
সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে(আরডিপিপি) (দ্বিতীয় সংশোধনী) এই খাতে ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ রাখা হয়েছিল। কার্যত ২৭৪ কোটি টাকা আরডিপি বরাদ্ধ একটি অনুমোদিত ব্যয়। প্রকৃত ব্যয় দরপত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, যা মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন, কাঁচামাল সরবরাহের জটিলতা এবং পরিবর্তন খরচ ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল।
জুলাই ২০২৩ সালে মারুবিনি-এলঅ্যান্ডটি প্রস্তাবিত মূল্য ছিল প্রায় ৬শ’ কোটি টাকা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এত বেশি দরে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করে। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে নেগোসিয়েশন স্ট্রাটেজি গ্রহণ করে। দীর্ঘ আলোচনা ও দর কষাকষি করে ৪৬৫ কোটি টাকায় কাজটি করাতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। সেই সঙ্গে এক বছর ডিএনপি (ডিপেক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড) বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, উত্তরা উত্তর-মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজ মারুবিনি-এলঅ্যান্ডটি সম্পাদন করেছিল। সেক্ষেত্রে একই ঠিকাদার থাকায় মতিঝিল-কমলাপুর পর্যন্ত কাজে সিষ্টেম ইন্টিগ্রেশনে সুবিধা হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে ১৮৫ কোটি টাকা নিট সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে বলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন। চুক্তিতে সরকারের খরচ ‘ব্যয় অপ্টিমাইজেশন’ (খরচ যৌক্তিকীকরণ) নীতির প্রতিফলন। একইসঙ্গে প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকার সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী তাদের মনোনীত ঠিকাদার দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার ফলে অনেকগুলো উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। গত ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী আন্দোলন সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বরসহ অন্যান্য মেট্রোরেল স্টেশনগুলো মাত্র ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এবং আড়াই মাসে মেরামত করা সম্পন্ন হয়েছে। যা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৩৫০ কোটি টাকা এক বছরের বেশি সময় ধরে মেরামতের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছিল।
যাত্রীদের অভিযোগ মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে যাত্রীদের চলাচলের রাস্তায় যত্রতত্র দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এতে যাত্রীদের স্টেশনে উঠানামায় কষ্টকর হচ্ছে। সচিবালয় স্টেশনে পল্টন মোড়ের কাছে ফুটপাটে রাস্তায় দোকান বসিয়ে জনভোগান্তি বাড়িয়েছে। শাহবাগ-উত্তরা পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনের নিচে ফুটপাতে হাঁটার জায়গায় অবৈধ দোকান বসানো হয়েছে।
রাতে সময় আরও বাড়ানোর দাবি, রাজধানীর মতিঝিল-উত্তরা পর্যন্ত অনেক প্রাইভেট অফিসে রাত ১১টার পরও অনেকেই কাজ করে। তাই অনেকেই সময় রাত ১১টা পর্যন্ত করার দাবি জানিয়েছেন। এতে গণমাধ্যম কর্মীসহ রাতে যারা অফিস করেন তাদের কিছুটা হলেও সুবিধা হবে। সহজে ও নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারবেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।