ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, ঢাকার মেট্রোরেল লাইনের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিনে মোট সাতটি ককটেল পাওয়া গেছে। সোমবার উত্তরায় ডিএমটিসিএলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “মানুষের হিউম্যান সাইডটা বাড়াতে হবে। আপনি যদি মানুষের সচেতনতা না বাড়ান, তাহলে যতই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক না কেন, তা কার্যকর হবে না।”
তিনি আরও জানান, গত সপ্তাহে মেট্রোরেল ট্র্যাকের ওপর একটি ড্রোন পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“গত কিছুদিনে মোট সাতটা ককটেল পাওয়া গেছে। আমরা জনগণের সচেতনতার জন্য অনুরোধ করছি—আপনারা পজিটিভ কিছু লিখুন। এই সম্পদটি শুধু ডিএমটিসিএলের নয়, এটি আমাদের সবার। আমরা যেন একসঙ্গে এটি রক্ষা করতে পারি।”
রোববার রাতে ঢাকার সচিবালয় এলাকায় মেট্রোরেলের ছাদে এক কিশোর উঠে পড়লে সেদিনের মতো ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিশোরটি বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে বলে ডিএমটিসিএল জানায়।
এ বিষয়ে এমডি বলেন, “ছেলেটিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটি জননিরাপত্তার বিষয়। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল ওহাব জানান, কিশোরটিকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন,
“ছেলেটি সাধারণত বাসাবাড়িতে থাকে না—হয়তো ফুটপাতে বা অন্য কোথাও থাকে। তার মনে হয়তো আর্ট ছিল—‘অন্য ট্রেনের ছাদে উঠা যায়, তাহলে এটাতেও পারবো’। কিন্তু মেট্রোরেলের ছাদে উঠা অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “উপরে ১৫০০ ভোল্টের লাইন রয়েছে। যেকোনো সময় সে মারা যেতে পারত। সবাইকে জানিয়ে দিন—এই ট্রেনের ছাদে ওঠা কোনোভাবেই সম্ভব নয়, ভেতরে থেকেই যাত্রা করতে হবে।”
সম্প্রতি ভূমিকম্পের পর মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার গুঞ্জন ছড়ায়। তবে ডিএমটিসিএল এমডি এসব গুজব উড়িয়ে দিয়ে বলেন,
“যাত্রীদের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবার আগে। ভূমিকম্পের পরে আমরা ৪-৫ ঘণ্টা ধরে পুরো মেট্রোরেলের স্ট্রাকচার ফিজিক্যালি চেক করেছি। আমিও উপস্থিত ছিলাম। কোনো ধরনের ফিজিক্যাল ডিসপ্লেসমেন্ট পাওয়া যায়নি।”
তিনি জানান, নিয়মমাফিক পাবলিক সার্ভিস শুরু করার আগে দুই দিক থেকে দুইটি ট্রেন টেস্ট রান চালানো হয়েছে। ফার্মগেট ও বিজয় সরণি এলাকায় বিয়ারিং প্যাডও পরীক্ষা করা হয়, যার কারণে সেদিন ট্রেন চালাতে ২৭ মিনিট দেরি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেট্রোরেল ভেঙে পড়ার ভিডিও ও ছবি ছড়ানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছু দেখেছি—যেমন মেট্রোরেল ভেঙে পড়েছে—যা মূলত এআই দ্বারা তৈরি। এগুলো যাচাই করতে সময় দরকার। বাস্তবে আমরা পুরোটা পরীক্ষা করে দেখেছি—কোনো ক্ষতি হয়নি।”
তবে তিনি স্বীকার করেন, “একটি দেয়ালে সামান্য ক্র্যাক হয়েছে, দুইটা টাইলস পড়েছে, সিলিং থেকে দুইটা প্যাড খুলেছে—আমার বাসার ওয়ালও তো ফেটেছে। কেন ফেটেছে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।”
মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গুজব রোধে সবার সহযোগিতা কামনা করেন ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, ঢাকার মেট্রোরেল লাইনের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিনে মোট সাতটি ককটেল পাওয়া গেছে। সোমবার উত্তরায় ডিএমটিসিএলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “মানুষের হিউম্যান সাইডটা বাড়াতে হবে। আপনি যদি মানুষের সচেতনতা না বাড়ান, তাহলে যতই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক না কেন, তা কার্যকর হবে না।”
তিনি আরও জানান, গত সপ্তাহে মেট্রোরেল ট্র্যাকের ওপর একটি ড্রোন পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“গত কিছুদিনে মোট সাতটা ককটেল পাওয়া গেছে। আমরা জনগণের সচেতনতার জন্য অনুরোধ করছি—আপনারা পজিটিভ কিছু লিখুন। এই সম্পদটি শুধু ডিএমটিসিএলের নয়, এটি আমাদের সবার। আমরা যেন একসঙ্গে এটি রক্ষা করতে পারি।”
রোববার রাতে ঢাকার সচিবালয় এলাকায় মেট্রোরেলের ছাদে এক কিশোর উঠে পড়লে সেদিনের মতো ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিশোরটি বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে বলে ডিএমটিসিএল জানায়।
এ বিষয়ে এমডি বলেন, “ছেলেটিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটি জননিরাপত্তার বিষয়। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল ওহাব জানান, কিশোরটিকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন,
“ছেলেটি সাধারণত বাসাবাড়িতে থাকে না—হয়তো ফুটপাতে বা অন্য কোথাও থাকে। তার মনে হয়তো আর্ট ছিল—‘অন্য ট্রেনের ছাদে উঠা যায়, তাহলে এটাতেও পারবো’। কিন্তু মেট্রোরেলের ছাদে উঠা অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “উপরে ১৫০০ ভোল্টের লাইন রয়েছে। যেকোনো সময় সে মারা যেতে পারত। সবাইকে জানিয়ে দিন—এই ট্রেনের ছাদে ওঠা কোনোভাবেই সম্ভব নয়, ভেতরে থেকেই যাত্রা করতে হবে।”
সম্প্রতি ভূমিকম্পের পর মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার গুঞ্জন ছড়ায়। তবে ডিএমটিসিএল এমডি এসব গুজব উড়িয়ে দিয়ে বলেন,
“যাত্রীদের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবার আগে। ভূমিকম্পের পরে আমরা ৪-৫ ঘণ্টা ধরে পুরো মেট্রোরেলের স্ট্রাকচার ফিজিক্যালি চেক করেছি। আমিও উপস্থিত ছিলাম। কোনো ধরনের ফিজিক্যাল ডিসপ্লেসমেন্ট পাওয়া যায়নি।”
তিনি জানান, নিয়মমাফিক পাবলিক সার্ভিস শুরু করার আগে দুই দিক থেকে দুইটি ট্রেন টেস্ট রান চালানো হয়েছে। ফার্মগেট ও বিজয় সরণি এলাকায় বিয়ারিং প্যাডও পরীক্ষা করা হয়, যার কারণে সেদিন ট্রেন চালাতে ২৭ মিনিট দেরি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেট্রোরেল ভেঙে পড়ার ভিডিও ও ছবি ছড়ানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছু দেখেছি—যেমন মেট্রোরেল ভেঙে পড়েছে—যা মূলত এআই দ্বারা তৈরি। এগুলো যাচাই করতে সময় দরকার। বাস্তবে আমরা পুরোটা পরীক্ষা করে দেখেছি—কোনো ক্ষতি হয়নি।”
তবে তিনি স্বীকার করেন, “একটি দেয়ালে সামান্য ক্র্যাক হয়েছে, দুইটা টাইলস পড়েছে, সিলিং থেকে দুইটা প্যাড খুলেছে—আমার বাসার ওয়ালও তো ফেটেছে। কেন ফেটেছে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।”
মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গুজব রোধে সবার সহযোগিতা কামনা করেন ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা।