সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : সিদ্ধিরগঞ্জের সাইবোর্ড এলাকায় সওজের জমি দখল করে বাস ডিপো -সংবাদ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় সড়ক ও জনপদ (সওজ) এর প্রায় ৫০ কোটি টাকার জমি বেদখলে নিয়েছে একটি ভূমিদস্যু চক্র। চক্রটি উক্ত জমি গত ১২ বছর ধরে অন্যের কাছে ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বিষয়টি সওজ নারায়ণগঞ্জ বিভাগ জানলেও জমি উদ্ধারে কোন উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো ভূমিদস্যুদের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে দ্রুত উক্ত জমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীনে ঢাকা (যাত্রাবাড়ী)-কুমিল্লা (ময়নামতি)-চট্টগ্রাম-টেকনাফ (এন-১) মহাসড়কের ৫ম কি.মি. এলাকায় খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার ১১টি দাগের ২ একর ৬ শতাংশ জমি মো. ময়নাল হোসেন ভূইয়া গংরা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে দখলে রেখেছে। বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের সার্ভেয়ার দেওয়ান মো. সোহাগ এর তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও সওজ কর্তৃপক্ষ উক্ত জমি উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। মঙ্গলবার, (০২ ডিসেম্বর ২০২৫) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ড এলাকার খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার ১১টি দাগের ২ একর ৬ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে বাস ডিপো করা হয়েছে। ঢাকায় চলাচল করে এমন কয়েকটি পরিবহন কোম্পানীর বাস এই ডিপোতে রাখা হয়। ডিপোতে থাকা বাসের লোকজন জানায়, উক্ত স্থানে তারা ভাড়ায় বাস রাখে। ময়নাল হোসেনের লোকজন তাদের কাছ থেকে বাস রাখা বাবদ ভাড়া নিয়ে থাকে। এছাড়াও জমির সাথে থাকা পুকুরের পানিতে বাস বা অন্যান্য যানবাহন ধৌত করলে তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে হয়। মহাসড়কের পাশে থাকা একাধিক দোকানী জানায়, সওজ’র উক্ত জমি দীর্ঘ দিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকার ময়নাল নামে এক ব্যক্তি দখলে নিয়ে বাস ডিপো ভাড়া দিয়েছে। এছাড়াও মাহসড়কের পাশে বাস কাউন্টার বসিয়ে ভাড়া নিচ্ছে। দোকানীরা আরও জানায়, ময়নালের দখলীয় জমির উত্তর পাশের সওজর জমি মাতুয়াইলের ফজলুল কবির ও ফজল মাহমুদ নামে দুই ব্যক্তিও দখলে নিয়েছে। সরেজমিনে উক্ত জমিতে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করতে দেখা গেছে।
সওজ নারায়ণগঞ্জ বিভাগীয় অফিস সুত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের খোর্দ্দঘোষপাড়া ও ডেমরা ডগার মৌজার মৌজার ৩২ টি দাগে এল এ কেইস নং- ১৪৭/৬৭-৬৮ এর মাধ্যমে সরকার অধিগ্রহন করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৪ লেন থেকে ৮ লেনে উন্নীত করার পরও উক্ত খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজায় ১১টি দাগের ২ একর ৬ শতাংশ এবং ডগার মৌজায় ৩ একর ৯৪ শতাংশ জমি অবশিষ্ট থাকে। এসব জমি থেকে খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার জমি দখলে নিয়ে ময়নাল গংরা ভাড়া দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ বিষয়টি সওজ’র নজরে আসলে সওজ কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, জনৈক ময়নাল হোসেন উক্ত জমিতে বনায়ন ও মৎস্য চাষের জন্য আবেদন করেছিলেন। এরপর ময়নাল হোসেন ও তার সহযোগিরা উক্ত ভূমিতে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে জোরপূর্বক দখলে নেয়। এরপর থেকে উক্ত জমি ভাড়া দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ময়নাল গংরা। ময়নাল হোসেন অবৈধ দখল ও উক্ত জমি ভাড়া দেয়ার বিষয়টি সওজ কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেছেন। এরপরও কর্তৃপক্ষের নীরবতায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ভূমিদস্যুদের সাথে সওজ নারায়ণগঞ্জ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের অবৈধ যোগসাজশ থাকায় সরকারের কোটি কোটি টাকার জমি উদ্ধার হচ্ছে না। দখলকারী ময়নাল হোসেন উক্ত জমি দখলে নিয়ে ভাড়া দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, জমি লিজ নেয়ার জন্য গত ২০১১ সালে আবেদন করলে আবেদনটি বিবেচনাধীন রয়েছে। তাদের অনুমতিতেই আমি জমি দখলে রেখেছি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উক্ত অংশের দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ মজুমদার বলেন, উক্ত স্থানের জায়গাগুলো কাউকে কোন প্রকার লিজ দেয়া হয়নি। তবে লিজ নেয়ার জন্য একাধিক ব্যক্তি আবেদন করেছেন। তিনি আরো বলেন, উক্ত জায়গা কারো দখল হয়ে থাকলে আমরা শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : সিদ্ধিরগঞ্জের সাইবোর্ড এলাকায় সওজের জমি দখল করে বাস ডিপো -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় সড়ক ও জনপদ (সওজ) এর প্রায় ৫০ কোটি টাকার জমি বেদখলে নিয়েছে একটি ভূমিদস্যু চক্র। চক্রটি উক্ত জমি গত ১২ বছর ধরে অন্যের কাছে ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বিষয়টি সওজ নারায়ণগঞ্জ বিভাগ জানলেও জমি উদ্ধারে কোন উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো ভূমিদস্যুদের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে দ্রুত উক্ত জমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীনে ঢাকা (যাত্রাবাড়ী)-কুমিল্লা (ময়নামতি)-চট্টগ্রাম-টেকনাফ (এন-১) মহাসড়কের ৫ম কি.মি. এলাকায় খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার ১১টি দাগের ২ একর ৬ শতাংশ জমি মো. ময়নাল হোসেন ভূইয়া গংরা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে দখলে রেখেছে। বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের সার্ভেয়ার দেওয়ান মো. সোহাগ এর তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও সওজ কর্তৃপক্ষ উক্ত জমি উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। মঙ্গলবার, (০২ ডিসেম্বর ২০২৫) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ড এলাকার খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার ১১টি দাগের ২ একর ৬ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে বাস ডিপো করা হয়েছে। ঢাকায় চলাচল করে এমন কয়েকটি পরিবহন কোম্পানীর বাস এই ডিপোতে রাখা হয়। ডিপোতে থাকা বাসের লোকজন জানায়, উক্ত স্থানে তারা ভাড়ায় বাস রাখে। ময়নাল হোসেনের লোকজন তাদের কাছ থেকে বাস রাখা বাবদ ভাড়া নিয়ে থাকে। এছাড়াও জমির সাথে থাকা পুকুরের পানিতে বাস বা অন্যান্য যানবাহন ধৌত করলে তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে হয়। মহাসড়কের পাশে থাকা একাধিক দোকানী জানায়, সওজ’র উক্ত জমি দীর্ঘ দিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকার ময়নাল নামে এক ব্যক্তি দখলে নিয়ে বাস ডিপো ভাড়া দিয়েছে। এছাড়াও মাহসড়কের পাশে বাস কাউন্টার বসিয়ে ভাড়া নিচ্ছে। দোকানীরা আরও জানায়, ময়নালের দখলীয় জমির উত্তর পাশের সওজর জমি মাতুয়াইলের ফজলুল কবির ও ফজল মাহমুদ নামে দুই ব্যক্তিও দখলে নিয়েছে। সরেজমিনে উক্ত জমিতে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করতে দেখা গেছে।
সওজ নারায়ণগঞ্জ বিভাগীয় অফিস সুত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের খোর্দ্দঘোষপাড়া ও ডেমরা ডগার মৌজার মৌজার ৩২ টি দাগে এল এ কেইস নং- ১৪৭/৬৭-৬৮ এর মাধ্যমে সরকার অধিগ্রহন করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৪ লেন থেকে ৮ লেনে উন্নীত করার পরও উক্ত খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজায় ১১টি দাগের ২ একর ৬ শতাংশ এবং ডগার মৌজায় ৩ একর ৯৪ শতাংশ জমি অবশিষ্ট থাকে। এসব জমি থেকে খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার জমি দখলে নিয়ে ময়নাল গংরা ভাড়া দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ বিষয়টি সওজ’র নজরে আসলে সওজ কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, জনৈক ময়নাল হোসেন উক্ত জমিতে বনায়ন ও মৎস্য চাষের জন্য আবেদন করেছিলেন। এরপর ময়নাল হোসেন ও তার সহযোগিরা উক্ত ভূমিতে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে জোরপূর্বক দখলে নেয়। এরপর থেকে উক্ত জমি ভাড়া দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ময়নাল গংরা। ময়নাল হোসেন অবৈধ দখল ও উক্ত জমি ভাড়া দেয়ার বিষয়টি সওজ কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেছেন। এরপরও কর্তৃপক্ষের নীরবতায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ভূমিদস্যুদের সাথে সওজ নারায়ণগঞ্জ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের অবৈধ যোগসাজশ থাকায় সরকারের কোটি কোটি টাকার জমি উদ্ধার হচ্ছে না। দখলকারী ময়নাল হোসেন উক্ত জমি দখলে নিয়ে ভাড়া দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, জমি লিজ নেয়ার জন্য গত ২০১১ সালে আবেদন করলে আবেদনটি বিবেচনাধীন রয়েছে। তাদের অনুমতিতেই আমি জমি দখলে রেখেছি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উক্ত অংশের দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ মজুমদার বলেন, উক্ত স্থানের জায়গাগুলো কাউকে কোন প্রকার লিজ দেয়া হয়নি। তবে লিজ নেয়ার জন্য একাধিক ব্যক্তি আবেদন করেছেন। তিনি আরো বলেন, উক্ত জায়গা কারো দখল হয়ে থাকলে আমরা শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।