ভ্যাট কমানোর দাবিতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার বসুন্ধরার প্রগতি সরণি আটকে বিক্ষোভ সমাবেশ করে -সংবাদ
অননুমোদিত মোবাইল হ্যান্ডসেট বন্ধ করায় সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সড়ক আটকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীরা। মঙ্গলবার,(০২ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর পৌনে ১টার দিকে তারা সড়কের দুইপাশে অবস্থান নিলে প্রগতি সরণিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে ভাটারা থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান। পরে দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু হয় বলে জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ’ ব্যনারে শতাধিক মানুষ মিছিল নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে অবস্থান নেন। অনেকে সড়কে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এ সময় তাদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সড়ক আটকে রাখার কারণে বাড্ডা-কুড়িল সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার সাগর সরকার।
তিনি বলেন, ‘দুই পাশে আটকে রাখার কারণে যানজট তৈরি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছি।’ আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) কার্যকরের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত রোববার ঢাকাসহ দেশের অনেক মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখা হয়। সেদিন ঢাকার কারওয়ানবাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা।
মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি এনইআইআর চালুর আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় না বসেন, তবে সারাদেশের মোবাইল ব্যবসায়ীরা ঢাকায় জড়ো হয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবেন। তারা বলেন, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসার মার্কেট শেয়ার যাদের ৭০ শতাংশের বেশি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে এনইআইআর চালু করুন। আমরা কোনোভাবেই এনইআইআরের বিরুদ্ধে না। তবে এ প্রক্রিয়ার কিছু সংস্কার, ন্যায্য করনীতি প্রণয়ন, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আমাদের কিছু দাবি ও প্রস্তাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের ব্যাখ্যা সরকারকে বলতে চাই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের বিশাল সংখ্যক ব্যবসায়ীর কথা না শুনেই একতরফা এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী নেতারা অভিযোগ করে বলেন, কোনো প্রকার পূর্ব-পরামর্শ ছাড়াই হঠাৎ এনইআইআর বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে। ফলে দেশের প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে জড়িত ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। বর্তমানে আমাদের স্টকে কোটি কোটি টাকার হ্যান্ডসেট রয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিপুল পরিমাণ অবিক্রিত হ্যান্ডসেট বিক্রি করা অসম্ভব। আমাদের দাবি না মেনে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিলে আমরা পথে বসবো।
এমবিসিবির নেতারা বলেন, এনইআইআরের বর্তমান কাঠামো যদি অপরিবর্তিতভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে শুল্ক ৫৭ শতাংশ হোক কিংবা শূন্য শতাংশ, কোনো অবস্থাতেই বৈধ উপায়ে মোবাইল ফোন আমদানি সম্ভব হবে না। কারণ বিটিআরসির আমদানি নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, কোনো বিদেশি ব্র্যান্ড যদি স্থানীয়ভাবে তাদের পণ্য সংযোজন করে, তাহলে সেই ব্র্যান্ডের কোনো মডেল অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আমদানি করতে পারবে না।
তাদের অভিযোগ, এ নীতিমালা কার্যত মনোপলি ব্যবসার সুযোগ তৈরি করছে। এর ফলে বাজারে বিদ্যমান প্রতিযোগিতা বিলুপ্ত হবে এবং প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মোবাইল ফোন বাজারের নিয়ন্ত্রণ গুটি কয়েক প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যাবে। একই সঙ্গে স্মার্টফোনের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাবে এবং সাধারণ ভোক্তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া এতে দেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রাও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন। মূলত, আগামী ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার সিস্টেম চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এটি চালু হলে দেশের নেটওয়ার্কে আর অবৈধ ও অননুমোদিত মোবাইল হ্যান্ডসেট চলবে না বলেও জানানো হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ভ্যাট কমানোর দাবিতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার বসুন্ধরার প্রগতি সরণি আটকে বিক্ষোভ সমাবেশ করে -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
অননুমোদিত মোবাইল হ্যান্ডসেট বন্ধ করায় সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সড়ক আটকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীরা। মঙ্গলবার,(০২ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর পৌনে ১টার দিকে তারা সড়কের দুইপাশে অবস্থান নিলে প্রগতি সরণিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে ভাটারা থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান। পরে দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু হয় বলে জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ’ ব্যনারে শতাধিক মানুষ মিছিল নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে অবস্থান নেন। অনেকে সড়কে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এ সময় তাদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সড়ক আটকে রাখার কারণে বাড্ডা-কুড়িল সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার সাগর সরকার।
তিনি বলেন, ‘দুই পাশে আটকে রাখার কারণে যানজট তৈরি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছি।’ আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) কার্যকরের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত রোববার ঢাকাসহ দেশের অনেক মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখা হয়। সেদিন ঢাকার কারওয়ানবাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা।
মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি এনইআইআর চালুর আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় না বসেন, তবে সারাদেশের মোবাইল ব্যবসায়ীরা ঢাকায় জড়ো হয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবেন। তারা বলেন, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসার মার্কেট শেয়ার যাদের ৭০ শতাংশের বেশি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে এনইআইআর চালু করুন। আমরা কোনোভাবেই এনইআইআরের বিরুদ্ধে না। তবে এ প্রক্রিয়ার কিছু সংস্কার, ন্যায্য করনীতি প্রণয়ন, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আমাদের কিছু দাবি ও প্রস্তাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের ব্যাখ্যা সরকারকে বলতে চাই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের বিশাল সংখ্যক ব্যবসায়ীর কথা না শুনেই একতরফা এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী নেতারা অভিযোগ করে বলেন, কোনো প্রকার পূর্ব-পরামর্শ ছাড়াই হঠাৎ এনইআইআর বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে। ফলে দেশের প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে জড়িত ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। বর্তমানে আমাদের স্টকে কোটি কোটি টাকার হ্যান্ডসেট রয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিপুল পরিমাণ অবিক্রিত হ্যান্ডসেট বিক্রি করা অসম্ভব। আমাদের দাবি না মেনে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিলে আমরা পথে বসবো।
এমবিসিবির নেতারা বলেন, এনইআইআরের বর্তমান কাঠামো যদি অপরিবর্তিতভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে শুল্ক ৫৭ শতাংশ হোক কিংবা শূন্য শতাংশ, কোনো অবস্থাতেই বৈধ উপায়ে মোবাইল ফোন আমদানি সম্ভব হবে না। কারণ বিটিআরসির আমদানি নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, কোনো বিদেশি ব্র্যান্ড যদি স্থানীয়ভাবে তাদের পণ্য সংযোজন করে, তাহলে সেই ব্র্যান্ডের কোনো মডেল অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আমদানি করতে পারবে না।
তাদের অভিযোগ, এ নীতিমালা কার্যত মনোপলি ব্যবসার সুযোগ তৈরি করছে। এর ফলে বাজারে বিদ্যমান প্রতিযোগিতা বিলুপ্ত হবে এবং প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মোবাইল ফোন বাজারের নিয়ন্ত্রণ গুটি কয়েক প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যাবে। একই সঙ্গে স্মার্টফোনের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাবে এবং সাধারণ ভোক্তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া এতে দেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রাও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন। মূলত, আগামী ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার সিস্টেম চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এটি চালু হলে দেশের নেটওয়ার্কে আর অবৈধ ও অননুমোদিত মোবাইল হ্যান্ডসেট চলবে না বলেও জানানো হয়েছে।