খুলনায় আদালতের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে গুলিতে দুই যুবক নিহতের ঘটনার তিন দিন পরও কোনো মামলা হয়নি।
বুধবার, (০৩ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেল ৩টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি জানিয়ে খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল হাই বলেন, নিহত দুই ব্যক্তির পরিবার রাজি না হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মামলা না করার বিষয়ে নিহত হাসিব হাওলাদারের ভাই সুমন হাওলাদার বলেন, কারা হত্যা করেছে, আমরা জানি না। এর ওপর আমরা আতঙ্কে আছি। মারা যাওয়া বড় ভাই ও আমার সন্তানসহ সবার নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
সুমন বলেন, পরিবারে এখন একমাত্র ছেলে আমি। আমাদের ওপর যদি আক্রমণ আসে তাই আমরা কোনো মামলায় যেতে চাই না। বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রিপন শেখ (৩৩) নামের গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, রিপনকে থানায় নিয়ে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মামলায় তার সম্পৃক্ততা পেলে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে রিপন শেখকে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। এ বিষয়ে দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে রিপনের স্ত্রী মিসেস আঁখি বলেন, রিপন মাছব্যবসায়ী, অহেতুক হয়রানির জন্য তাকে হত্যাকাণ্ডের সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ ঘটনার দিন তিনি ফকিরহাটের ফলতিতা বাজারে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাছ কিনছিলেন- এ বিষয়ে ভিডিও ও চালান বই আছে।
আঁখির দাবি, রিপন কোনো গ্যাং, সন্ত্রাসী গ্রুপ বা মাদক চক্রের সঙ্গে কখনো যুক্ত ছিলেন না।
তবে পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আটক রিপন বিলুপ্ত হওয়া ‘ইহুদি বাহিনী’র শীর্ষ সদস্যদের একজন ছিলেন। এর প্রধান ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর ২০০৩ সালে বাহিনীটি বিলুপ্ত হয়। তবে তখনকার সদস্যরা অন্য গ্রুপে যুক্ত হয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
এ অভিযোগ প্রসঙ্গে আঁখি বলেন, বাহিনীটি ২০০৩ সালে বিলুপ্ত হয়েছে। এখন রিপনের বয়স ৩৩। ২২ বছর আগে তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। এ ধরনের ‘হাস্যকর গল্প’ এলাকায় অস্বস্তি তৈরি করেছে।
গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে হাসিব হাওলাদার (৪১) ও ফজলে রাব্বি রাজন (৩৭) গুলিতে নিহত হন।
হাসিব নগরের নতুনবাজার ওয়াপদা বেড়িবাঁধের মিনারা গলি ও রাব্বি রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসার বাগমারা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশের তথ্য মতে, হাসিব ও ফজলে রাব্বির বিরুদ্ধে ছয়টি করে মামলা আছে। তারা ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ পলাশের সহযোগী ছিলেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি চৌধুরী ওরফে ‘গ্রেনেড বাবু’র সহযোগীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।
খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ) সুদর্শন কুমার রায় বলেন, পুলিশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে হত্যাকাণ্ড গুলো তদন্ত করছে। এসব হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারও আছে। তার দাবি, নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য সতর্ক হয়ে কাজ করছে পুলিশ। এতে তদন্ত শেষ করতে সময় বেশি লাগছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
খুলনায় আদালতের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে গুলিতে দুই যুবক নিহতের ঘটনার তিন দিন পরও কোনো মামলা হয়নি।
বুধবার, (০৩ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেল ৩টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি জানিয়ে খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল হাই বলেন, নিহত দুই ব্যক্তির পরিবার রাজি না হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মামলা না করার বিষয়ে নিহত হাসিব হাওলাদারের ভাই সুমন হাওলাদার বলেন, কারা হত্যা করেছে, আমরা জানি না। এর ওপর আমরা আতঙ্কে আছি। মারা যাওয়া বড় ভাই ও আমার সন্তানসহ সবার নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
সুমন বলেন, পরিবারে এখন একমাত্র ছেলে আমি। আমাদের ওপর যদি আক্রমণ আসে তাই আমরা কোনো মামলায় যেতে চাই না। বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রিপন শেখ (৩৩) নামের গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, রিপনকে থানায় নিয়ে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মামলায় তার সম্পৃক্ততা পেলে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে রিপন শেখকে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। এ বিষয়ে দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে রিপনের স্ত্রী মিসেস আঁখি বলেন, রিপন মাছব্যবসায়ী, অহেতুক হয়রানির জন্য তাকে হত্যাকাণ্ডের সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ ঘটনার দিন তিনি ফকিরহাটের ফলতিতা বাজারে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাছ কিনছিলেন- এ বিষয়ে ভিডিও ও চালান বই আছে।
আঁখির দাবি, রিপন কোনো গ্যাং, সন্ত্রাসী গ্রুপ বা মাদক চক্রের সঙ্গে কখনো যুক্ত ছিলেন না।
তবে পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আটক রিপন বিলুপ্ত হওয়া ‘ইহুদি বাহিনী’র শীর্ষ সদস্যদের একজন ছিলেন। এর প্রধান ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর ২০০৩ সালে বাহিনীটি বিলুপ্ত হয়। তবে তখনকার সদস্যরা অন্য গ্রুপে যুক্ত হয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
এ অভিযোগ প্রসঙ্গে আঁখি বলেন, বাহিনীটি ২০০৩ সালে বিলুপ্ত হয়েছে। এখন রিপনের বয়স ৩৩। ২২ বছর আগে তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। এ ধরনের ‘হাস্যকর গল্প’ এলাকায় অস্বস্তি তৈরি করেছে।
গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে হাসিব হাওলাদার (৪১) ও ফজলে রাব্বি রাজন (৩৭) গুলিতে নিহত হন।
হাসিব নগরের নতুনবাজার ওয়াপদা বেড়িবাঁধের মিনারা গলি ও রাব্বি রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসার বাগমারা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশের তথ্য মতে, হাসিব ও ফজলে রাব্বির বিরুদ্ধে ছয়টি করে মামলা আছে। তারা ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ পলাশের সহযোগী ছিলেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি চৌধুরী ওরফে ‘গ্রেনেড বাবু’র সহযোগীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।
খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ) সুদর্শন কুমার রায় বলেন, পুলিশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে হত্যাকাণ্ড গুলো তদন্ত করছে। এসব হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারও আছে। তার দাবি, নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য সতর্ক হয়ে কাজ করছে পুলিশ। এতে তদন্ত শেষ করতে সময় বেশি লাগছে।