মোবাইল ফোনের গ্রে মার্কেটের ব্যবসায়ীসহ সবপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সরকারের তরফ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আসছে ১৬ ডিসেম্বর থেকেই কার্যকর হবে মোবাইল হ্যান্ডসেটের নিবন্ধন বা এনইআইআর।
তবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পথে আনা ফোনগুলো আগামী মার্চ পর্যন্ত বিক্রি করা যাবে, এই সময়ের পরে আর কোনো অবৈধ ফোনকে নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে দেয়া হবে না।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার, (১০ ডিসেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় সোনারগাঁও হোটেল ক্রসিং আটকে বিক্ষোভ করেন গ্রে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের’ (এমবিসিবি) সদস্যরা।
বুধবার, সন্ধ্যায় সচিবালয়ে বহুপক্ষীয় ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আব্দুন নাসের খান। সভায় এমবিসিবির শীর্ষ নেতারা ছাড়াও দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদনকারীদের সংগঠন মোবাইলফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি) শীর্ষ নেতারা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কমিশনার মাহমুদ হোসেন এবং স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুল হক উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আমাদের ফোনগুলো বিক্রির জন্য মার্চ পর্যন্ত সময় দিছে।’ আরও কিছু দাবি ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন আন্দোলনের মধ্যে আছি পরে কথা বলবো।’
সড়ক অবরোধ-দুর্ভোগ
ওই সভার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ‘আনঅফিসিয়াল’ মোবাইল বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। বুধবার, সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, তাদের অবরোধ-বিক্ষোভের ফলে আশপাশের সব রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে।
সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভের ফলে হঠাৎ বিপাকে পড়েন পথ চলতি মানুষ। চাকরিজীবী মোর্শেদা ইয়াসমিন বলেন, ‘অফিসের গাড়িতে ছিলাম, অনেকক্ষণ আটকে থেকে পরে মেট্রো ধরতে হেঁটে শাহবাগে গেলাম।
সেখানে গিয়েও দেখি অনেক ভিড়। মেট্রোতে মিরপুর গিয়ে সেখান থেকে উবার নিয়ে বসুন্ধরায় যাওয়ার চেষ্টা করবো।’ বিক্ষোভরত ব্যবসায়ীরা সোনারগাঁও ক্রসিংয়ে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তারা বিআরটিসির একটি দোতলা বাস ভাঙচুর করেন।
‘ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার’ বা এনইআইআর পদ্ধতির বিরোধিতা করে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ করছিলেন এ ব্যবসায়ীরা। এনইআইআর চালু হলে দেশে অবৈধ পথে আসা ফোনগুলো আর ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে অবৈধভাবে বিদেশ থেকে নিয়ে আসা পুরনো ফোনের ব্যবসাও।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর দেশে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে এনইআইআর।
মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর হওয়ার পর কেবল সরকার অনুমোদিত বৈধ হ্যান্ডসেটই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারবে।
বুধবারের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর কার্যকর হলেও মজুদ থাকা ফোনগুলো বিক্রির জন্য মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হবে ব্যবসায়ীদের। অর্থাৎ মার্চ পর্যন্তও আনঅফিসিয়াল ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারবে।