বিজয় দিবসে ‘গণকুচকাওয়াজ’ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য। সংগঠনটির আহ্বায়ক এবং উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন জানিয়েছেন, সেদিন বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের উদ্দেশে এ আয়োজন করা হবে।
বুধবার বিকালে প্রেস ক্লাবের বিপরীতে সত্যেন সেন চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তপন এই কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “বিজয় দিবস আমাদের অস্তিত্বের উৎস, আমাদের মুক্তির উন্মেষ। অথচ গতবারের মত এ বছরও রাষ্ট্রীয় কুচকাওয়াজ স্থগিতের সরকারি সিদ্ধান্ত আমাদের চোখে স্পষ্টতই বিজয়ের পুণ্য স্মৃতিকে সংকুচিত করার এক সংগঠিত প্রয়াস। রাষ্ট্র যেন বিজয়ের নিজস্ব প্রতীককেই ভয় পায়। রাষ্ট্রের এই ভীতি ক্ষমতাহীনতার নয়, বরং ইতিহাসের সামনে মুখ তুলে দাঁড়ানোর।
“আমরা বিজয় দিবসে রাষ্ট্রীয় কুচকাওয়াজ স্থগিত দেখি, তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের আলোকবর্তিকা, ভাষা আন্দোলনের স্বপ্ন, বৈচিত্র্যের শিল্পীসত্তা—সবকিছুকেই নির্বাপিত করার এক পরিকল্পিত অভিযাত্রা চলছে।”
তিনি জানান, শিখা চিরন্তনে অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গান, কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে মুক্তির বিজয়গাথা উপস্থাপন করা হবে।
তপন আরও বলেন, “আমরা ভুলে যাইনি—বিজয় দিবস, বইমেলা, বাউলদের গান—এসবই জনগণের ঐতিহ্য; কোনো সরকারের নয়।”
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লালটু, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, বাংলাদেশ থিয়েটারের দলপ্রধান খন্দকার শাহ আলম, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্রের সমন্বয়ক বিমল কান্তি দাশ, সমাজচিন্তা ফোরামের আহ্বায়ক কামাল হোসেন বাদল ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি তাহমিনা ইয়াসমিন নীলা।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সমাজ অনুশীলন কেন্দ্রের সংগঠক রঘু অভিজিৎ রায়, উদীচীর (একাংশ) সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহ-সভাপতি কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কবির, এবং সমাজচিন্তা ফোরামের সংগঠক কাইয়ূম হোসেন ও রঞ্জন দাশ শিবু।