image

বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করল সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক ভবন-৪–এ সচিবালয়টির উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন,

“আজ আমরা প্রকৃত অর্থে এক প্রাতিষ্ঠানিক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। এখানে উপস্থিত সবাই কোনো না কোনোভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতায় এবং স্টেকহোল্ডার হিসেবে এই সচিবালয় প্রতিষ্ঠার অংশীদার। ২৬ বছরের যাত্রা—কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো সচিবালয়ের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। বিচারকার্য পরিচালনার সাংবিধানিক ক্ষমতা এখন সুপ্রিম কোর্টের অধীনে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এ অর্জন যেমন আমাদের, ব্যর্থতাও আমাদেরই হবে। আগামী সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারের প্রতি আহ্বান—এই ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র রক্ষার প্রক্রিয়া যেন অটুট থাকে।”

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন,

“আজ বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটি ঐতিহাসিক দিন। সুপ্রিম কোর্টের স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ফলে রাজনৈতিক প্রভাব আর অধস্তন আদালতে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। আগে কোন মামলার জামিন হবে, কোনটা আগে শুনানি হবে, বিচারকদের বদলি বা পদোন্নতি—এসব রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হতো। এখন এই প্রভাব আর থাকবে না।”

বাংলাদেশে স্বাধীন বিচার বিভাগের দাবি দীর্ঘদিনের। ১৯৯৫ সালে বিসিএস বিচার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাসদার হোসেন ও সহকর্মীরা নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার ভিত্তিতে ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত রায় দেয়।

সেই রায়ের ২৬ বছর পর ২০ নভেম্বর সরকার পৃথক সচিবালয় গঠনের অনুমোদন দেয়। এরপর ৩০ নভেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে, যাতে স্বাধীন সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিধান রাখা হয়।

অধ্যাদেশ পুরোপুরি কার্যকর হলে নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলাজনিত ব্যবস্থা, ছুটি এবং নিয়োগ—সবকিছুই সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় পরিচালনা করবে।

এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরও সুসংহত হওয়ার প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

‘নগর-মহানগর’ : আরও খবর

সম্প্রতি