স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশের দাবিতে আজ থেকে কর্মবিরতি ও যাত্রী সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানিয়েছে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ডিএমটিসিএল’র কর্মকর্তারা জানান, প্রতিষ্ঠার পর ডিএমটিসিএলের ৯০০’র বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য এখনও স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে উন্মুক্ত নিয়োগে আসা এসব কর্মচারী নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট অ্যালাউন্স বা ওভারটাইম, গ্রুপ ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার অভিযোগ করেন তারা।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানায়, ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির নির্দেশনায় ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রস্তুত করার কথা ছিল। তা না হওয়ায় ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কর্মচারীরা আন্দোলনে নামে। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি কর্তৃপক্ষ ২০ মার্চের মধ্যে সার্ভিস রুল চূড়ান্তের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে এ নিয়ে কর্মচারীদের ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
গত ১০ ডিসেম্বর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে বৈঠকে জানানো হয়, সার্ভিস রুলের সব ধারায় পরিচালনা পর্ষদ একমত হলেও ‘বিশেষ বিধান’ সংক্রান্ত একাদশ অধ্যায়ই প্রধান বাধা। ওই অধ্যায়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের জনবলকে ডিএমটিসিএলে আত্মীকরণের বিষয় রয়েছে, যা কর্মচারীদের দাবি-প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কর্মচারীদের অভিযোগ, পরিচালনা পর্ষদ বিতর্কিত বিধান বাদ দিতে আগ্রহী হলেও ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের চাপের কারণে সার্ভিস রুল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী গত ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রকাশ না হওয়ায় কর্মচারীরা ঘোষণা দেন, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যেও সার্ভিস রুল প্রণয়ন না হলে ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ভোর ৭টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন এবং যাত্রী সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
কর্তৃপক্ষের অযৌক্তিক বিলম্ব এবং বিতর্কিত বিশেষ বিধান বজায় রাখার কারণে তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কর্মসূচির ফলে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে, তার সম্পূর্ণ দায়ভার ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।
এ বিষয়ে ডিএমটিসিএল’র উপ-প্রকল্প পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আহসান উল্লাহ শরিফী সাংবাদিকদের বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি নিয়ে ডিএমটিসিএল’র এমডির সঙ্গে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। তাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বোর্ডসভা। তাদের দাবির সঙ্গে মেট্রোরেল বন্ধের কোনো সর্ম্পক নেই। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানায়, কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রত্যাহারের কোনো তথ্য জানা নেই।