জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আদালত তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে দিয়েছে। উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার শাহরিয়ার আলী জানান, ‘মামলা হয়েছে, আনিস আলমগীরকে আমরা গ্রেপ্তার দেখিয়েছি।’
গতকাল রোববার রাত আড়াইটার দিকে জুলাই রেভুলেশনারি অ্যালায়েন্সের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানায় অভিযোগটি দায়ের করেছিলেন। অভিযোগে নাম আসা অন্য দুজন হলেন- মডেল মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ। ওই অভিযোগটি পরে মামলায় রূপান্তর করা হয়।
এর আগে সকালে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে সোমবার বিকেলে আদালতে তোলা হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে নেয়ার বিষয়টি মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আনিস আলমগীর নিজেই। তিনি বলেন, ‘ধানমন্ডি এলাকার একটি জিম থেকে আমাকে নিয়ে আসা হয়। ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তাদের প্রধান আমার সঙ্গে কথা বলবেন।’
তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে ধানমন্ডি থেকে আনা হয়। ৮টার দিকে তারা ডিবি কার্যালয়ে পৌঁছান। তখন থেকে অপেক্ষায় রয়েছেন।
সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠালে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত ৫ দিনের রেমান্ড মঞ্জুর করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর মুনিরুজ্জামান রিমান্ডের আবেদনে বলেছেন, আনিস আলমগীর এক মাস আগে বেসরকারি টিভির এক টকশোতে মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের নেতারা সরকারকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে।
আসামি মেহের আফরোজ শাওন তার ভেরিফাইড ফেইসবুকে এ বছরের ২৬ নভেম্বর লকার উদ্ধারের ঘটনায় কটাক্ষ করে সরকারবিরোধী পোস্ট দেন। তিনি বলেন, একেবারে তেলেসমাতি কারবার । আসামি ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ তার ভেরিফাইড ফেইসবুক আইডিতে লকার উদ্ধারকে ‘এটাই সাইন্স’ বলে কটাক্ষ করেন। এছাড়াও এ চার আসামিসহ অন্য আসামি পরস্পর যোগসাজশে অন্যদের বিভিন্ন সময়ে তাদের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল হতে বিভিন্ন প্রকার উসকাানিমূলক পোস্ট ও বক্তব্য দিয়ে দেশের জননিরাপত্তা বিপন্ন করা, অন্য ব্যক্তিকে হত্যার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা এবং অন্য ব্যক্তিকে হত্যা-গুরুতর জখম করার ষড়যন্ত্র ও সহায়তা করার জন্য প্ররোচিত করে।
আনিস আলমগীরের পক্ষে তার আইনজীবী নাজনীন আক্তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত আনিস আলমগীরের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
আমি ভয় পাই না: আনিস আলমগীর
আনিস আলমগীর আদালতের অনুমতি নিয়ে নিজেই আদালতের উদ্দেশে বলেন, আমি ইরাকযুদ্ধ কভার করেছি। তালেবানদের হাত থেকে বেঁচে দেশে ফিরে এসেছি। আমি ভয় পাই না বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন ‘আমাকে যারা নির্দিষ্ট দলের গোলাম বানাতে চায়, এটা তাদের সমস্যা। ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাবেন, বানাতে পারেন।’