image

প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটে হামলায় বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা

শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক ডেইলি স্টার ও ছায়ানট কার্যালয়ে হামলার নিন্দা জানিয়েছে আরও কয়েকটি সংগঠন।

আর্টিকেল নাইনটিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ হামলার নিন্দা জানানো হয়। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি, নিউ এইজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের ওপর হামলার নিন্দাও জানিয়েছে সংগঠনটি। এ হামলাকে মুক্ত মতের ওপর আক্রমণ হিসেবে দেখছে অধিকার রক্ষার সংগঠনটি।

আর্টিকেল নাইনটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম আলো ও দ্যা ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভয়ংকর হামলা, নিউ এইজের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরের ওপর আক্রমণ এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটে ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানাচ্ছে আর্টিকেল নাইনটিন।

আর্টিকেল নাইনটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক প্রথম আলো এবং দেশের প্রধান ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার সাম্প্রতিক সময়গুলোতে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক চরমপন্থি গোষ্ঠীর হুমকির মুখে রয়েছে। ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব হামলার ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে- সাংবাদিক, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি শত্রুতা, হয়রানি ও সহিংসতা গভীর ও উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্য দিয়ে সুরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার চিত্র ফুটে উঠেছে।

ঐতিহ্যের প্রতীক সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে হামলা নিয়ে আর্টিকেল নাইনটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশজুড়ে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল, শিল্পী এবং সাংস্কৃতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির নজির এটি। এ ক্রমবর্ধমান হামলার ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে যে সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক প্রকাশ এবং নাগরিক আলোচনায় যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য পরিবেশ ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ ও অরক্ষিত হয়ে উঠছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষক-সাংবাদিক

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত যোগাযোগ ও সাংবাদিকতার শিক্ষক এবং গবেষকদের সংগঠন বাংলাদেশি কমিউনিকেশন স্কলার্স ইন নর্থ আমেরিকা (বিসিএসএনএ) প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান কার্যালয়ে সহিংস হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে। গতকাল শুক্রবার এক লিখিত প্রতিবাদে বিসিএসএনএ এই সন্ত্রাসী হামলাকে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর গুরুতর আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে এ ঘটনার স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ৩০ জন গণযোগাযোগবিষয়ক বাংলাদেশি শিক্ষক ও গবেষক স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এসব হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় বরং সমন্বিত আক্রমণ, যার উদ্দেশ্য ভয় ও ধ্বংসের মাধ্যমে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে স্তব্ধ করা। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও সম্পাদকীয় স্বাধীনতায় অবদান রেখে আসছে। প্রতিষ্ঠান দুটির ওপর হামলা নাগরিকদের জানার অধিকারের ওপর আঘাত।

প্রথম আলো কার্যালয়ে বিভিন্ন দলের নেতারা

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলা এবং অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রথম আলোর কার্যালয় দেখতে যান ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শনিবার,(২০ ডিসেম্বর ২০২৫) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আসেন তারা। তারা ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন।

এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ঘোষণা দিয়ে এসে হামলা করা হয়েছে। কেউ কেউ বাধাও দিয়েছে। এরপরও হামলা হয়েছে। এটা ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন হামলার পর যদি পাশে এসে না দাঁড়াই, তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে, বোঝা যায় না। মাহমুদুর রহমান মান্না গত বছর প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে গরু জবাই ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন রাখেন, ওই সময় কজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে?

আজ প্রথম আলোর ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয় পরিদর্শনে আরও এসেছিলেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

তাদের সঙ্গে ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) যুগ্ম মহাসচিব কাজী মো. নজরুল, জেএসডির সহ-সভাপতি মো. তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, ভাসানী জনশক্তি পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বাবুল বিশ্বাস ও বিলকিস খন্দকার প্রমুখ।

‘নগর-মহানগর’ : আরও খবর

সম্প্রতি