alt

শেষ সময় স্বস্তিহীন ঈদযাত্রা

ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখে অস্বাভাবিক যানজট

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ : শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

https://sangbad.net.bd/images/2022/April/30Apr22/news/pic-1.jpg

ঈদযাত্রার শেষ সময় অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায় লঞ্চ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শেষ সময়ে রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে যাত্রাপথে পরিবহন সংকট, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়কপথে থেমে থেমে যানজটসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। মহাসড়কে ভোগান্তি কিছুটা কমলেও ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান।

সড়কের পাশে অবৈধ দোকানপাট ও এলোমেলো বাস পার্কিং করার কারণে গুলিস্তান-বাবুবাজার ব্রিজ ও গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদের। এছাড়া নৌপথে লঞ্চে অতিরিক্ত বোঝাই ও ফেরিঘাটের যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের কারণে ভোগান্তির শেষ নেই বলে জানান তারা।

https://sangbad.net.bd/images/2022/April/30Apr22/news/pic-2.jpg

কমলাপুর রেলস্টেশনের চিত্র, ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রীরা ট্রেনে চড়ে বাড়ি যাচ্ছেন -সোহরাব আলম

তবু ইট-পাথর আর কংক্রিটের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী। ঈদের আনন্দ প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে গিয়ে পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়। তবে সড়কপথে ভোগান্তি থাকলেও স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন রেলপথের যাত্রীরা।

নৌপথে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। অনেক যাত্রী ভোর রাতে সেহরি খাওয়ার পরপরই গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করতে দেখা গেছে। সকাল সকাল যাত্রা করলে পথে পথে যানজটের ভোগান্তি কম হয় বলে যাত্রীরা জানান।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শনিবার সকালে কথা পটুয়াখালীর যাত্রী জসিম উদ্দীনের সঙ্গে। তিনি জানান, তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপায়। সদরঘাট থেকে লঞ্চে যাতায়াত করতে হয়। স্বাভাবিক সময় লঞ্চ ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টায়। তবে ঈদের সময় কোন শিডিউল নেই। লঞ্চ বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়। তাই সকাল সকাল সদরঘাটে যাচ্ছি জায়গা পাওয়ার জন্য। আগে ভালো জায়গা পাওয়া যাবে। তা না হলে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হবে। ঈদের আগের প্রতিটি লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার দুই-তিন গুণ বেশি যাত্রী নেয়া হয়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (নৌ-টা) সেলিম রেজা সংবাদকে বলেন, ‘সদরঘাট থেকে প্রতিটি লঞ্চ বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়া হয়। এখন আর রুটেশন ব্যবস্থা নেই। বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সদরঘাট ছেড়ে যায়। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৭৩টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সারাদিন ১২৫টি লঞ্চ ঢাকা নদীবন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়।’ অতিরিক্ত বোঝাই ও ভাড়া বেশি নেয়ার কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঈদের সালামির নামে লোকাল বাসেও বেশি ভাড়া

শনিবার দুপুরে সরদঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে, যাত্রীদের প্রচ- ভিড়। বিকেলের দিকে তা আরও দ্বিগুণ হয়। প্রতিটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে যাত্রী বোঝাই করে। সন্ধ্যায় ছাড়ার কথা থাকলেও অনেক যাত্রীবাহী লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের আগেই সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে গেছে। লঞ্চে যাত্রী বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা টার্মিনাল থেকে ছাড়া হচ্ছে বলে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান।

রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি বাস যাত্রী বোঝাই করে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। গাবতলী থেকে উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা যাতায়াত করেন। অনেক যাত্রী আগে থেকে অগ্রিম টিকেট কাটায় নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পেরেছেন। তবে যারা আগে টিকেট কাটকে পারেনি তাদের পড়তে হয়েছে নানা ভোগান্তিতে। লোকাল বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান।

রফিকুল ইসলাম নামের মানিকগঞ্জের এক যাত্রী বলেন, ‘বাসটার্মিনালে ভিড় কম থাকলেও লোকাল ও গেটলক বাসগুলোতে মানুষের চাপ বেশি। এ সুযোগে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। দেড়শ’ টাকার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০০ থেকে আড়াইশ’ টাকা।’ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের অপর এক যাত্রী বলেন, ‘অন্য সময় ভাড়া নিত ১৫০ টাকা, আজ (শনিবার) নেয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। ভাড়া এক এক গাড়িতে একেক রকম। বাসও মিলছে না। বাধ্য হয়ে পরিবারসহ সেলফি বাসে উঠেছি।’

কাওসার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘গাবতলীতে এসে পরিবহন ভোগান্তিতে পড়েছি। লাইনে দাঁড়িয়ে কখনো টিকেট কিনি না। সিডিউল বাসেই যাওয়া যায়। কিন্তু এবার এসে দেখছি ভাড়া বেশি, পরিবহনও কম। অল্প বাসে ঠাসাঠাসি অবস্থা।’

মহাখালী বাস টার্মিনালে এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আবার ঢাকা থেকে অনন্যা, অনন্যা ক্লাসিক ও জলসিঁড়ি পরিবহনে যাত্রীদের কাছ থেকে ১৭০ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ২৭০ টাকা। অর্থাৎ ১০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করে যাত্রীরা।

কাপাসিয়ার টোকগামী যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা থেকে টোকের ভাড়া ১৭০ টাকা। আমার কাছ থেকে রাখল ২৭০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে ১০০ টাকা বেশি নিচ্ছে। বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করব বলে বেশি ভাড়া দিয়েই বাড়ি যাচ্ছি।’ অনন্যা পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে নির্ধারিত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। সারা বছর তো আর বেশি নিচ্ছি না। ঈদ করতে আমাদের কি সালামি দেবেন না।’

আবদুর রহমান নামের নেত্রকোনার এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে নেত্রকোনার মদনের ভাড়া ২৫০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ৫০০ টাকার কমে যাত্রী নেয়া হচ্ছে না। অন্য সময় যাত্রীর কারণে ভাড়া বাড়ায়, এবার যাত্রী নেই বলে ভাড়া বাড়াচ্ছে। ভাড়াও নিচ্ছে বেশি আবার আমাদের বাস ছাড়ার জন্য বসেও থাকতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে বাস ট্রাক মালিক সমিতির চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকেট বিক্রি শেষ। যাত্রাও শুরু হয়ে গেছে। যাত্রীর চাপ সামলানোর সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে কাউন্টারগুলোকে। বাস টার্মিনালে মনিটরিং টিম আছে। র‌্যাব ও পুলিশের কন্ট্রোল রুম রয়েছে। মালিক সমিতির নজরদারিও রয়েছে। যদি কোন যাত্রীর কাছে বাড়তি ভাড়া চাওয়া হয় তবে অভিযোগ করুক, আমরা ব্যবস্থা নেব।’

মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট

শনিবার সকাল থেকে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন ও গাড়ির চাপ বেশি থাকায় থেমে থেমে যানজটের কারণে ঘরমুখো মানুষদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও তেমন যানজট ছিল না। তবে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে গাড়ির ধীরগতির কারণে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এছাড়া গাড়ি সংকটের কারণে অতিরিক্ত ভাড়া লোকাল বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান।

শনিবার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বাসের অপেক্ষায় থাকা মনির নামের এক পোশাক শ্রমিক বলেন, ‘বাসের চালক ও সহযোগীরা ভাড়া বৃদ্ধি করায় যাত্রীদের কিছুটা বিপাকে পড়তে হয়েছে। এখানে ভাড়া যাতে ইচ্ছে মতো না নিতে পার তার জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

আক্তার হোসেন নামের অন্য একযাত্রী বলেন, ‘ময়মনসিংহ যেতে অন্য সময় বাসে ভাড়া লাগে ২০০-২৫০ টাকা। কিন্তু এখন ভাড়া চাচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা। যার যেমন খুশি ভাড়া আদায় করছে। ভাড়া নিয়ে তাদের সঙ্গে কিছু বলতে গেলেই ঝগড়া বিবাদ করতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে গাজীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার বলেন, ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজের কারণে এবার ঈদযাত্রায় ভয়াবহ যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা ছিল। তবে সেসব আশঙ্কা দূর করে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করছে।’

গাজীপুরের সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফিরোজ হোসেন জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অন্যান্য বছর ঈদের এই সময়ে গাজীপুরের শিল্প-কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হলে মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে আটকা পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে সময় পার করেছে মানুষ। কিন্তু ঈদের আর মাত্র দুই-এক দিন বাকি থাকলেও মহাসড়কে সেই চিরচেনা যানজট নেই।

ফেরিঘাটে ছিল যানবাহনের দীর্ঘ লাইন

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। শনিবার সকাল থেকে ছিল ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এছাড়া যাত্রীবাহী যানবাহনের পাশাপাশি ফেরিগুলো দখলে ছিল মোটরসাইকেলের। যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের কারণে ফেরির অপেক্ষায় থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে যাত্রীরা জানান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের ঘরে ফেরার তাড়া। লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। নৌযান থেকে নেমে গন্তব্যের পরিবহনে উঠতেও চলছে প্রতিযোগিতা। নৌরুটে রো রো ফেরি বেগম রোকেয়া ও কে-টাইপ ফেরি ফরিদপুরসহ ২টি ফেরি সংযোজন হয়ে মোট ৯টি ফেরি চলাচল করছে। এ রুটে পূর্বনির্ধারিত সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টার পরিবর্তে বর্তমানে রাতেও ফেরি চলাচল করছে।

আহসান হাবিন নামের বরিশালের এক যাত্রী বলেন, ‘ঈদে বাড়ি ফিরতে পারার মাঝেই ঈদের আনন্দ। পরিবারের সবার জন্য ঈদের জামা কাপড়সহ কেনাকাটা করে বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারের সদস্যরা আমার আশায় অপেক্ষা করছে। বাড়ি পৌঁছানোর পর যে ভালো লাগা, যে অনুভূতি তৈরি হয়। আমার কাছে সেটাই ঈদ! পথের শত ভোগান্তিকে পায়ে ঠেলে আমাকে বাড়ি পৌঁছাতেই হবে এটা বড় কথা, এটা আনন্দ।’

কামাল হোসেন নামে গোপালগঞ্জের এক যাত্রী বলেন, ‘বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা রয়েছে। তাদের রেখে ঈদ করার কথা স্বপ্নেও ভাবি না। লঞ্চে সারা পথ দাঁড়িয়ে এসেছি। সব জায়গায় ভিড়। কষ্টের মধ্যেও বাড়ি পৌঁছাতে পারলে যাত্রাপথের কষ্ট ভুলে যাই।’

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ফেরিতেই অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেলের বেশ চাপ রয়েছে। ঘাটে ফেরি ভিড়লেই মোটরসাইকেল দ্রুত ফেরিতে উঠে যায়। এ কারণে অনেক সময় অন্যান্য গাড়ি উঠতে পারে না। মোটরবাইক ‘রাইড’ এর জনপ্রিয়তা থাকায় এ পেশায় অনেক যুবক ঝুঁকছেন। ঢাকাতেও অসংখ্য মোটরসাইকেল রাইডার রয়েছেন। ঈদে বাড়িতে যাচ্ছেন তারা। এ কারণে চাপ বেড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফেরিতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। প্রতিটি ফেরিতে মোটরসাইকেলের চাপ আরও বেশি। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সাভারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ধর্ষণ: প্রধান আসামিসহ দুইজন গ্রেপ্তার

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’ আটকে দিল পুলিশ

বিইউপি শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনে ফ্লাইট বাতিল, কয়েকটি ফ্লাইটের গন্তব্য পরিবর্তন

ছবি

শাহজালালে আগুন লাগে কুরিয়ার গুদামে

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন

ছবি

‘সুযোগ সন্ধানীদের’ আশঙ্কায় পদযাত্রা স্থগিত, শুক্রবার থেকে আমরণ অনশন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের

ছবি

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বিএফআইইউর সাবেক প্রধান শাহীনুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর

বাড়ি ভাতা বাড়ানোর দাবিতে শাহবাগ অবরোধ শেষে শহীদ মিনারে অবস্থান, বৃহস্পতিবার পদযাত্রার ঘোষণা

ছবি

শাহবাগ মোড় ব্লকেডের ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা

ছবি

মিরপুরের আগুনে মৃত্যু অন্তত ১৬

ছবি

জিজ্ঞাসাবাদের নামে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে মারধরের অভিযোগে মামলা

ছবি

মিরপুরের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ১৬

ছবি

পুলিশের বাধায় থমকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সচিবালয় অভিমুখী পদযাত্রা

ছবি

মিরপুরে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ৯ জনের মৃত্যু

ছবি

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুন

ছবি

সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি

কলাবাগানে ফ্রিজের ভেতর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ছবি

চায়ের দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

ছবি

বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থানে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার

ছবি

পুলিশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে

ছবি

ঢাকায় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের ডাক

ছবি

বাধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর গেন্ডারিয়ায়ও ক‌রা যায়নি ‘শরৎ উৎসব’

ঘুষি মেরে বিমানের মনিটর ভেঙে ফেললেন লন্ডন থেকে সিলেট যাওয়া যাত্রী

ছবি

এফডিসি মোড়ে যাত্রীবাহী বাসে ‘অজ্ঞানপার্টি’ সন্দেহে পাঁচজনকে গণপিটুনি

ছবি

মৌচাকে দোকান থে‌কে ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির অ‌ভি‌যোগ

ছবি

ভেন্টিলেশন ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিচ্ছেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহার

ছবি

ঢাকায় ওএমএস ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ, প্রতিবাদে বঞ্চিতদের বিক্ষোভ

ছবি

কোরআন অবমাননার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গণপিটুনি, পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে

সিলেট নগরের যানজট নিরসনে এনসিপির ২৭ প্রস্তাব

ছবি

গাজীপুরে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত, আহত ৩

ছবি

রাজধানীর মিরপুরে বাসে আগুন

tab

শেষ সময় স্বস্তিহীন ঈদযাত্রা

ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখে অস্বাভাবিক যানজট

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

https://sangbad.net.bd/images/2022/April/30Apr22/news/pic-1.jpg

ঈদযাত্রার শেষ সময় অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায় লঞ্চ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শেষ সময়ে রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে যাত্রাপথে পরিবহন সংকট, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়কপথে থেমে থেমে যানজটসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। মহাসড়কে ভোগান্তি কিছুটা কমলেও ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান।

সড়কের পাশে অবৈধ দোকানপাট ও এলোমেলো বাস পার্কিং করার কারণে গুলিস্তান-বাবুবাজার ব্রিজ ও গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদের। এছাড়া নৌপথে লঞ্চে অতিরিক্ত বোঝাই ও ফেরিঘাটের যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের কারণে ভোগান্তির শেষ নেই বলে জানান তারা।

https://sangbad.net.bd/images/2022/April/30Apr22/news/pic-2.jpg

কমলাপুর রেলস্টেশনের চিত্র, ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রীরা ট্রেনে চড়ে বাড়ি যাচ্ছেন -সোহরাব আলম

তবু ইট-পাথর আর কংক্রিটের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী। ঈদের আনন্দ প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে গিয়ে পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়। তবে সড়কপথে ভোগান্তি থাকলেও স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন রেলপথের যাত্রীরা।

নৌপথে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। অনেক যাত্রী ভোর রাতে সেহরি খাওয়ার পরপরই গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করতে দেখা গেছে। সকাল সকাল যাত্রা করলে পথে পথে যানজটের ভোগান্তি কম হয় বলে যাত্রীরা জানান।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শনিবার সকালে কথা পটুয়াখালীর যাত্রী জসিম উদ্দীনের সঙ্গে। তিনি জানান, তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপায়। সদরঘাট থেকে লঞ্চে যাতায়াত করতে হয়। স্বাভাবিক সময় লঞ্চ ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টায়। তবে ঈদের সময় কোন শিডিউল নেই। লঞ্চ বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়। তাই সকাল সকাল সদরঘাটে যাচ্ছি জায়গা পাওয়ার জন্য। আগে ভালো জায়গা পাওয়া যাবে। তা না হলে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হবে। ঈদের আগের প্রতিটি লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার দুই-তিন গুণ বেশি যাত্রী নেয়া হয়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (নৌ-টা) সেলিম রেজা সংবাদকে বলেন, ‘সদরঘাট থেকে প্রতিটি লঞ্চ বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়া হয়। এখন আর রুটেশন ব্যবস্থা নেই। বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সদরঘাট ছেড়ে যায়। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৭৩টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সারাদিন ১২৫টি লঞ্চ ঢাকা নদীবন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়।’ অতিরিক্ত বোঝাই ও ভাড়া বেশি নেয়ার কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঈদের সালামির নামে লোকাল বাসেও বেশি ভাড়া

শনিবার দুপুরে সরদঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে, যাত্রীদের প্রচ- ভিড়। বিকেলের দিকে তা আরও দ্বিগুণ হয়। প্রতিটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে যাত্রী বোঝাই করে। সন্ধ্যায় ছাড়ার কথা থাকলেও অনেক যাত্রীবাহী লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের আগেই সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে গেছে। লঞ্চে যাত্রী বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা টার্মিনাল থেকে ছাড়া হচ্ছে বলে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান।

রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি বাস যাত্রী বোঝাই করে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। গাবতলী থেকে উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা যাতায়াত করেন। অনেক যাত্রী আগে থেকে অগ্রিম টিকেট কাটায় নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পেরেছেন। তবে যারা আগে টিকেট কাটকে পারেনি তাদের পড়তে হয়েছে নানা ভোগান্তিতে। লোকাল বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান।

রফিকুল ইসলাম নামের মানিকগঞ্জের এক যাত্রী বলেন, ‘বাসটার্মিনালে ভিড় কম থাকলেও লোকাল ও গেটলক বাসগুলোতে মানুষের চাপ বেশি। এ সুযোগে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। দেড়শ’ টাকার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০০ থেকে আড়াইশ’ টাকা।’ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের অপর এক যাত্রী বলেন, ‘অন্য সময় ভাড়া নিত ১৫০ টাকা, আজ (শনিবার) নেয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। ভাড়া এক এক গাড়িতে একেক রকম। বাসও মিলছে না। বাধ্য হয়ে পরিবারসহ সেলফি বাসে উঠেছি।’

কাওসার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘গাবতলীতে এসে পরিবহন ভোগান্তিতে পড়েছি। লাইনে দাঁড়িয়ে কখনো টিকেট কিনি না। সিডিউল বাসেই যাওয়া যায়। কিন্তু এবার এসে দেখছি ভাড়া বেশি, পরিবহনও কম। অল্প বাসে ঠাসাঠাসি অবস্থা।’

মহাখালী বাস টার্মিনালে এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আবার ঢাকা থেকে অনন্যা, অনন্যা ক্লাসিক ও জলসিঁড়ি পরিবহনে যাত্রীদের কাছ থেকে ১৭০ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ২৭০ টাকা। অর্থাৎ ১০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করে যাত্রীরা।

কাপাসিয়ার টোকগামী যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা থেকে টোকের ভাড়া ১৭০ টাকা। আমার কাছ থেকে রাখল ২৭০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে ১০০ টাকা বেশি নিচ্ছে। বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করব বলে বেশি ভাড়া দিয়েই বাড়ি যাচ্ছি।’ অনন্যা পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে নির্ধারিত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। সারা বছর তো আর বেশি নিচ্ছি না। ঈদ করতে আমাদের কি সালামি দেবেন না।’

আবদুর রহমান নামের নেত্রকোনার এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে নেত্রকোনার মদনের ভাড়া ২৫০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ৫০০ টাকার কমে যাত্রী নেয়া হচ্ছে না। অন্য সময় যাত্রীর কারণে ভাড়া বাড়ায়, এবার যাত্রী নেই বলে ভাড়া বাড়াচ্ছে। ভাড়াও নিচ্ছে বেশি আবার আমাদের বাস ছাড়ার জন্য বসেও থাকতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে বাস ট্রাক মালিক সমিতির চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকেট বিক্রি শেষ। যাত্রাও শুরু হয়ে গেছে। যাত্রীর চাপ সামলানোর সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে কাউন্টারগুলোকে। বাস টার্মিনালে মনিটরিং টিম আছে। র‌্যাব ও পুলিশের কন্ট্রোল রুম রয়েছে। মালিক সমিতির নজরদারিও রয়েছে। যদি কোন যাত্রীর কাছে বাড়তি ভাড়া চাওয়া হয় তবে অভিযোগ করুক, আমরা ব্যবস্থা নেব।’

মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট

শনিবার সকাল থেকে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন ও গাড়ির চাপ বেশি থাকায় থেমে থেমে যানজটের কারণে ঘরমুখো মানুষদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও তেমন যানজট ছিল না। তবে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে গাড়ির ধীরগতির কারণে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এছাড়া গাড়ি সংকটের কারণে অতিরিক্ত ভাড়া লোকাল বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান।

শনিবার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বাসের অপেক্ষায় থাকা মনির নামের এক পোশাক শ্রমিক বলেন, ‘বাসের চালক ও সহযোগীরা ভাড়া বৃদ্ধি করায় যাত্রীদের কিছুটা বিপাকে পড়তে হয়েছে। এখানে ভাড়া যাতে ইচ্ছে মতো না নিতে পার তার জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

আক্তার হোসেন নামের অন্য একযাত্রী বলেন, ‘ময়মনসিংহ যেতে অন্য সময় বাসে ভাড়া লাগে ২০০-২৫০ টাকা। কিন্তু এখন ভাড়া চাচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা। যার যেমন খুশি ভাড়া আদায় করছে। ভাড়া নিয়ে তাদের সঙ্গে কিছু বলতে গেলেই ঝগড়া বিবাদ করতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে গাজীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার বলেন, ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজের কারণে এবার ঈদযাত্রায় ভয়াবহ যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা ছিল। তবে সেসব আশঙ্কা দূর করে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করছে।’

গাজীপুরের সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফিরোজ হোসেন জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অন্যান্য বছর ঈদের এই সময়ে গাজীপুরের শিল্প-কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হলে মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে আটকা পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে সময় পার করেছে মানুষ। কিন্তু ঈদের আর মাত্র দুই-এক দিন বাকি থাকলেও মহাসড়কে সেই চিরচেনা যানজট নেই।

ফেরিঘাটে ছিল যানবাহনের দীর্ঘ লাইন

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। শনিবার সকাল থেকে ছিল ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এছাড়া যাত্রীবাহী যানবাহনের পাশাপাশি ফেরিগুলো দখলে ছিল মোটরসাইকেলের। যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের কারণে ফেরির অপেক্ষায় থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে যাত্রীরা জানান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের ঘরে ফেরার তাড়া। লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। নৌযান থেকে নেমে গন্তব্যের পরিবহনে উঠতেও চলছে প্রতিযোগিতা। নৌরুটে রো রো ফেরি বেগম রোকেয়া ও কে-টাইপ ফেরি ফরিদপুরসহ ২টি ফেরি সংযোজন হয়ে মোট ৯টি ফেরি চলাচল করছে। এ রুটে পূর্বনির্ধারিত সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টার পরিবর্তে বর্তমানে রাতেও ফেরি চলাচল করছে।

আহসান হাবিন নামের বরিশালের এক যাত্রী বলেন, ‘ঈদে বাড়ি ফিরতে পারার মাঝেই ঈদের আনন্দ। পরিবারের সবার জন্য ঈদের জামা কাপড়সহ কেনাকাটা করে বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারের সদস্যরা আমার আশায় অপেক্ষা করছে। বাড়ি পৌঁছানোর পর যে ভালো লাগা, যে অনুভূতি তৈরি হয়। আমার কাছে সেটাই ঈদ! পথের শত ভোগান্তিকে পায়ে ঠেলে আমাকে বাড়ি পৌঁছাতেই হবে এটা বড় কথা, এটা আনন্দ।’

কামাল হোসেন নামে গোপালগঞ্জের এক যাত্রী বলেন, ‘বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা রয়েছে। তাদের রেখে ঈদ করার কথা স্বপ্নেও ভাবি না। লঞ্চে সারা পথ দাঁড়িয়ে এসেছি। সব জায়গায় ভিড়। কষ্টের মধ্যেও বাড়ি পৌঁছাতে পারলে যাত্রাপথের কষ্ট ভুলে যাই।’

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ফেরিতেই অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেলের বেশ চাপ রয়েছে। ঘাটে ফেরি ভিড়লেই মোটরসাইকেল দ্রুত ফেরিতে উঠে যায়। এ কারণে অনেক সময় অন্যান্য গাড়ি উঠতে পারে না। মোটরবাইক ‘রাইড’ এর জনপ্রিয়তা থাকায় এ পেশায় অনেক যুবক ঝুঁকছেন। ঢাকাতেও অসংখ্য মোটরসাইকেল রাইডার রয়েছেন। ঈদে বাড়িতে যাচ্ছেন তারা। এ কারণে চাপ বেড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফেরিতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। প্রতিটি ফেরিতে মোটরসাইকেলের চাপ আরও বেশি। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

back to top