হাত পচে দুর্গন্ধ, ঢামেক ওয়ার্ডে ঠাঁই হয়নি যুবকের!

বুধবার, ১৮ মে ২০২২
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বাম হাত পচে গেছে, সেখান থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছেন আজম শিকদার (২২) নামে এক যুবক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ব্লকের চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করলেও হাত থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হওয়ার কারণে ওয়ার্ডে ঠাঁই হলো না তার।

মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরের দিকে ঢামেক হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ১০৩ ও ১০১ নম্বর দুই ওয়ার্ডে প্রবেশের মাঝে দ্বিতীয় তলায় উঠার সিঁড়ির নিচে প্রচন্ড ব্যথায় কাতরাতে দেখা যায় আজম শিকদার নামে ওই যুবককে। তখন তার ক্ষত হাত থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল।

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চুনারচর সিকদার বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আজম শিকদার। তার বাবা সাত্তার শিকদার জানান, তার ছেলে আজম শিকদারের একটু মানসিক সমস্যা আছে। দেশের বাড়িতে থাকে না। সে ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ঘোরাফেরা করে।

তিনি বলেন, গত ১২ মে রাজধানীর রায়েরবাগে একটি দোতলা বাড়ি থেকে নিচে পড়ে যায় আজম। এতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। ওই অবস্থায় আজম নিজেই ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেয়। তখন তারা তার হাতে প্লাস্টার করে দেয়। এ অবস্থায় আজম সাইনবোর্ড এলাকায় আমাদের এক আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার পর তার হাতের প্লাস্টারের জায়গা আস্তে আস্তে কালো হতে থাকে এবং প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এ অবস্থায় তাকে আমরা ১৫ মে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেদিন সারাদিন চেষ্টা করেও সরকারি ছুটি থাকায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেনি। পরে রাতে কামরাঙ্গীরচরে এক আত্মীয়ের বাসায় তাকে রাখা হয়। ১৬ মে সকালে আবার তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন (আরএস) আলাউদ্দিন জানান, রোগীর দ্রুত অস্ত্রোপচার দরকার। তাকে ভর্তি নেয়া হয়েছে। কোন ওয়ার্ডে ভর্তি নিলো সেটা বিষয় না। বিষয় হচ্ছে তার দ্রুত চিকিৎসা দরকার। রাতের মধ্যেই তার অস্ত্রোপচার করা হবে। আজমের হাতের অবস্থা খুবই খারাপ। তার ডান হাত পুরোপুরি পচনশীল মানে তিনি গ্যাংগ্রিন রোগে আক্রান্ত। জীবন রক্ষার্থে অস্ত্রোপচারের সময় অর্থোপেডিক চিকিৎসকরা তার হাতটা কেটে ফেলে দিতে পারেন।

ওই রোগী প্রথমে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে এ রকম কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। তাছাড়া ঢামেক থেকে চিকিৎসা নিলে রোগীর হাতের অবস্থা এমন হওয়ার কথা না। এমনও দেখা গেছে গ্রামের রোগীরা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে আবার গ্রামের স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসায় রোগীর ক্ষতি হওয়ার পরে আবারও রোগীকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসে কিন্তু স্থানীয় ভুল চিকিৎসার বিষয়টি রোগী ও স্বজনরা গোপন করে যায়।

‘নগর-মহানগর’ : আরও খবর

সম্প্রতি