alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

ডিবির সাবেক কর্মকর্তা হারুন ও পরিবারের ‘৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ডিবির আলোচিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। অনুসন্ধান শেষে দুদক হারুন অর রশিদ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার মামলাগুলো করা হয়। মামলায় সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাগুলো দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ পুলিশে যোগদানের পর আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে বিপুল সম্পদের মালিক হন। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তার নামে-বেনামে জমি, ফ্ল্যাট এবং বিপুল নগদ অর্থের সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিদেশে ৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তারও বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, হারুন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএস ২০তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারে ২০০১ সালে চাকরিতে যোগ দেন। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও ভুয়া সনদ ব্যবহার করে তিনি এই সুযোগ নেন।

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিরীহ মানুষের জমি কম দামে কিনে তিনি বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ গড়ে তোলেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘সবুজপাতা’ নামে আরেকটি রিসোর্ট নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকার উত্তরার সেক্টর ৩ এবং ৫-এ তার নামে একাধিক বাণিজ্যিক প্লট ও বহুতল ভবন পাওয়া গেছে। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কে সাড়ে সাত কাঠার একটি বাণিজ্যিক প্লট এবং একই এলাকায় আরেকটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, হারুনের নামে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে একটি পাঁচ কাঠার খালি প্লট এবং ৩ নম্বর সেক্টরে ‘এন্ডোরা’ নামে ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন নামে রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা এবং বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

হারুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ঘুষ নেওয়া, জমি দখল, ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এসব অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে এএসপি হিসেবে চাকরি শুরু করা হারুন একবার চাকরিচ্যুত হন। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি চাকরিতে ফেরেন এবং পদোন্নতি পেতে থাকেন। বিরোধী দলীয় হুইপ বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন ফারুককে হরতালের সময় মারধরের ঘটনায় তিনি আলোচনায় আসেন।

ডিবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নির্যাতন এবং অর্থ আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে গোয়েন্দা সংস্থার ক্ষমতা ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে দেশত্যাগ করেন।

দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের আরও অবৈধ সম্পদ থাকতে পারে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে সেসব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তাদের ধারণা।

ছবি

শেখ হাসিনার ‘৪০০ কোটির’ সেই পিয়নের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ছবি

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের ‘দেশত্যাগ’, ব্যাখ্যা চেয়েছে ট্রাইব্যুনাল

ছবি

হাসিনা, পরিবারের ‘দুর্নীতি’ অনুসন্ধানে দুদক

ছবি

বি‌জি‌বির অ‌ভিযানে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীমান্তে প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকা মূল্যের মাদক ও অবৈধ মালামাল জব্দ

ছবি

সাবেক আইজিপি বেনজীর ও এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ছয় মামলা

ভাঙ্গায় কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ, মামলা, ধর্ষণকারী দুই যুবক গ্রেফতার

শিবচরে জমি নিয়ে বিরোধে স্বামী ও স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

সিরাজগঞ্জে এজেন্ট ব্যাংকের কর্মচারীদের তুলে নিয়ে ২৮ লাখ টাকা ছিনতাই

খাগড়াছড়িতে হাজার কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র্র-মল্লিকা মামলার ফাঁদে

ঘিওরে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিহত

ছবি

একাধিক হত্যা মামলার আসামি কাউন্সিলর ফোরকান গ্রেপ্তার

ছবি

এস আলম ও পরিবারের ব্যাংক শেয়ার জব্দের নির্দেশ, দুদককে তদন্তের নির্দেশ

ছবি

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা : হাইকোর্টের রায় রোববার

ছবি

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন সেই তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি

ছবি

গণহত্যা মামলায় মামুন-জিয়াউলসহ আরও ৬ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখানো হলো

ছবি

জমি নিয়ে বিরোধ: মাদারীপুরে ২ বোনকে লাঠিপেটা, ভিডিও ভাইরাল

ছবি

উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিপণ, নজরদারিতে শিশুটির বাবা

ছবি

প্রতিবেশীর সাথে মুরগী নিয়ে ঝগড়া, সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ২

ছবি

রাজধানীর আজিমপুরে ডাকাতি মালামালের সঙ্গে দুধের শিশুকেও নিয়ে যায় ডাকাতরা

সূত্রাপুরে সাংবাদিকের বাসার গ্রিল কেটে ২০ ভরি স্বর্ণ ও আড়াই লাখ টাকা চুরি

ঝিকরগাছায় যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা: ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪

হাত খরচের টাকার জন্য মাকে খুন, ছেলে গ্রেপ্তার

ছবি

বেক্সিমকো ফার্মায় রিসিভার নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত

ছবি

শরীয়তপুরে সড়কের পাশে পড়ে থাকা দশটি ব্যাগ থেকে ১২৩টি ককটেল বোমা উদ্ধার

ছবি

কেন শিশু মুনতাহাকে হত্যা করে তার গৃহশিক্ষিকা?

ছবি

ঝিকরগাছায় দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে যুবদল কর্মী খুন

জামালপুরে সেনা সদস্যের স্ত্রী ধর্ষণসহ হত্যা মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪

আরিচা-কাজিরহাট-বাঘাবাড়ী ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ড্রেজিংয়ের নামে ৭০০ কোটি টাকা লোপাট

ছবি

আদালতে আমুর আইনজীবীকে পিটুনি

সিলেটে ভারতীয় বৃহৎ চোরাই চালান জব্দ

নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রী হত্যায় যুবকের যাবজ্জীবন

যশোরে ‘বাজার কেন্দ্রীক বিরোধে’ খুন হন ব্যবসায়ী জামায়াত নেতা সজল

হত্যা মামলায় কারাগারে যশোর নগর বিএনপির সভাপতি মুল্লুক চাঁদ

না’গঞ্জে নারী পোশাক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা, পুলিশ বলছে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’

ছবি

উখিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৩ ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড

ছবি

গান বাংলার চেয়ারম্যান তাপস গ্রেপ্তার

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

ডিবির সাবেক কর্মকর্তা হারুন ও পরিবারের ‘৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ডিবির আলোচিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। অনুসন্ধান শেষে দুদক হারুন অর রশিদ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার মামলাগুলো করা হয়। মামলায় সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাগুলো দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ পুলিশে যোগদানের পর আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে বিপুল সম্পদের মালিক হন। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তার নামে-বেনামে জমি, ফ্ল্যাট এবং বিপুল নগদ অর্থের সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিদেশে ৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তারও বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, হারুন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএস ২০তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারে ২০০১ সালে চাকরিতে যোগ দেন। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও ভুয়া সনদ ব্যবহার করে তিনি এই সুযোগ নেন।

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিরীহ মানুষের জমি কম দামে কিনে তিনি বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ গড়ে তোলেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘সবুজপাতা’ নামে আরেকটি রিসোর্ট নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকার উত্তরার সেক্টর ৩ এবং ৫-এ তার নামে একাধিক বাণিজ্যিক প্লট ও বহুতল ভবন পাওয়া গেছে। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কে সাড়ে সাত কাঠার একটি বাণিজ্যিক প্লট এবং একই এলাকায় আরেকটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, হারুনের নামে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে একটি পাঁচ কাঠার খালি প্লট এবং ৩ নম্বর সেক্টরে ‘এন্ডোরা’ নামে ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন নামে রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা এবং বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

হারুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ঘুষ নেওয়া, জমি দখল, ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এসব অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে এএসপি হিসেবে চাকরি শুরু করা হারুন একবার চাকরিচ্যুত হন। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি চাকরিতে ফেরেন এবং পদোন্নতি পেতে থাকেন। বিরোধী দলীয় হুইপ বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন ফারুককে হরতালের সময় মারধরের ঘটনায় তিনি আলোচনায় আসেন।

ডিবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নির্যাতন এবং অর্থ আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে গোয়েন্দা সংস্থার ক্ষমতা ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে দেশত্যাগ করেন।

দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের আরও অবৈধ সম্পদ থাকতে পারে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে সেসব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তাদের ধারণা।

back to top