দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ডিবির আলোচিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। অনুসন্ধান শেষে দুদক হারুন অর রশিদ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার মামলাগুলো করা হয়। মামলায় সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাগুলো দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ পুলিশে যোগদানের পর আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে বিপুল সম্পদের মালিক হন। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তার নামে-বেনামে জমি, ফ্ল্যাট এবং বিপুল নগদ অর্থের সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিদেশে ৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।
হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তারও বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, হারুন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএস ২০তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারে ২০০১ সালে চাকরিতে যোগ দেন। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও ভুয়া সনদ ব্যবহার করে তিনি এই সুযোগ নেন।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিরীহ মানুষের জমি কম দামে কিনে তিনি বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ গড়ে তোলেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘সবুজপাতা’ নামে আরেকটি রিসোর্ট নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকার উত্তরার সেক্টর ৩ এবং ৫-এ তার নামে একাধিক বাণিজ্যিক প্লট ও বহুতল ভবন পাওয়া গেছে। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কে সাড়ে সাত কাঠার একটি বাণিজ্যিক প্লট এবং একই এলাকায় আরেকটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, হারুনের নামে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে একটি পাঁচ কাঠার খালি প্লট এবং ৩ নম্বর সেক্টরে ‘এন্ডোরা’ নামে ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন নামে রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা এবং বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
হারুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ঘুষ নেওয়া, জমি দখল, ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এসব অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে এএসপি হিসেবে চাকরি শুরু করা হারুন একবার চাকরিচ্যুত হন। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি চাকরিতে ফেরেন এবং পদোন্নতি পেতে থাকেন। বিরোধী দলীয় হুইপ বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন ফারুককে হরতালের সময় মারধরের ঘটনায় তিনি আলোচনায় আসেন।
ডিবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নির্যাতন এবং অর্থ আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে গোয়েন্দা সংস্থার ক্ষমতা ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে দেশত্যাগ করেন।
দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের আরও অবৈধ সম্পদ থাকতে পারে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে সেসব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তাদের ধারণা।
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ডিবির আলোচিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। অনুসন্ধান শেষে দুদক হারুন অর রশিদ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার মামলাগুলো করা হয়। মামলায় সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ, তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ এবং ভাই এবিএম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাগুলো দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ পুলিশে যোগদানের পর আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে বিপুল সম্পদের মালিক হন। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তার নামে-বেনামে জমি, ফ্ল্যাট এবং বিপুল নগদ অর্থের সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিদেশে ৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।
হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তারও বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, হারুন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএস ২০তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারে ২০০১ সালে চাকরিতে যোগ দেন। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও ভুয়া সনদ ব্যবহার করে তিনি এই সুযোগ নেন।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিরীহ মানুষের জমি কম দামে কিনে তিনি বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ গড়ে তোলেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘সবুজপাতা’ নামে আরেকটি রিসোর্ট নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকার উত্তরার সেক্টর ৩ এবং ৫-এ তার নামে একাধিক বাণিজ্যিক প্লট ও বহুতল ভবন পাওয়া গেছে। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কে সাড়ে সাত কাঠার একটি বাণিজ্যিক প্লট এবং একই এলাকায় আরেকটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, হারুনের নামে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে একটি পাঁচ কাঠার খালি প্লট এবং ৩ নম্বর সেক্টরে ‘এন্ডোরা’ নামে ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন নামে রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা এবং বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
হারুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ঘুষ নেওয়া, জমি দখল, ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এসব অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে এএসপি হিসেবে চাকরি শুরু করা হারুন একবার চাকরিচ্যুত হন। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি চাকরিতে ফেরেন এবং পদোন্নতি পেতে থাকেন। বিরোধী দলীয় হুইপ বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন ফারুককে হরতালের সময় মারধরের ঘটনায় তিনি আলোচনায় আসেন।
ডিবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নির্যাতন এবং অর্থ আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে গোয়েন্দা সংস্থার ক্ষমতা ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে দেশত্যাগ করেন।
দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, হারুন অর রশিদ এবং তার পরিবারের আরও অবৈধ সম্পদ থাকতে পারে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে সেসব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তাদের ধারণা।