ইউজিসিতে স্মারকলিপি বিসিএস জেনারেল অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রাজধানীর সাত সরকারি কলেজে উচ্চশিক্ষা ও নারীশিক্ষা সংকোচন, কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য বিলুপ্তির চেষ্টার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) স্মারকলিপি দিয়েছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা।
বিসিএস জেনারেল অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে বুধবার,(১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে ইউজিসি ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছেও স্মারকলিপি দেন শিক্ষা ক্যাডার সদস্যরা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি সাত কলেজ পৃথক করার সময় যথাযথ কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়নি। এর ফলে সাত সরকারি কলেজে নারী শিক্ষার সুযোগ সংকোচনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্মারকলিপিতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা উচ্চশিক্ষা সংকোচন ও নারীর উচ্চশিক্ষায় বৈষম্যমূলক প্রভাব প্রতিরোধে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবগুলো হলো- শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানো, লাইব্রেরি, আবাসন, গবেষণা বাজেট, আধুনিক ল্যাব ও বৃত্তি সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা।
এছাড়া সব অংশীজনের জানার অধিকার ও তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের স্বার্থ সুরক্ষা করে শিক্ষা-পরিবেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। তারা রংপুর কারমাইকেল কলেজ ও বরিশাল বিএম কলেজের উদাহরণ অনুসরণ করে প্রয়োজনে নতুন ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব করেছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, কলেজগেুলোতে আসন কমানোর ফলে দেশের বিপুল সংখ্যক সুবিধাবঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। সরকারি কলেজের গঠনগত বৈশিষ্ট্য ও অবকাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ফলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দুই ধরনের সংকট তৈরি হয় উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, একদিকে শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হয়, অন্যদিকে অবকাঠামোগত সংকট চরমে উঠে। এসব কলেজের শিক্ষকরা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের পদ সেখানে সংকুচিত হয়ে যাবে।
পদ বিলুপ্ত হলে তা ভবিষ্যৎ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার পদপ্রার্থীদের বিশাল সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে দাবি করে শিক্ষকরা বলেন, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ দীর্ঘকাল ধরে নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রস্তাবিত সংকোচন কার্যকর
হলে রাজধানীতে নারীদের উচ্চশিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, তাদের প্রবেশাধিকার সংকীর্ণ হবে এবং সংবিধানপ্রদত্ত সমান সুযোগের নিশ্চয়তা লঙ্ঘিত হবে।
পরে বিসিএস জেনারেল অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাতটি সরকারি কলেজ রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ এবং গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক। এগুলোকে হঠাৎ করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা বা প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তন করা জাতীয় স্বার্থ ও ঐতিহ্যের পরিপন্থী।
নামসর্বস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, সাত কলেজে শিক্ষার সুযোগ সীমিত হলে শিক্ষার্থীদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হবে, যা নীতিগতভাবে শিক্ষার্থীবান্ধব নয়।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষা ক্যাডার সদস্যরা রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা পেলে কলেজভিত্তিক উচ্চশিক্ষা পরিচালনা করতে সক্ষম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও চিকিৎসকদের মতো তারাও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় পারদর্শী হতে পারে।
সাত কলেজে শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হলে জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোও সমরূপ দাবি উত্থাপন করতে পারে, যা সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দাবি।
রাজধানীর ওই সাত সরকারি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, মিরপুরের বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এ সাত কলেজের প্রায় আটশ’ শিক্ষক স্মারকলিপি দেয়ার সময় ইউজিসির সামনে উপস্থিত ছিলেন বলে কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন।
ইউজিসিতে স্মারকলিপি বিসিএস জেনারেল অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজধানীর সাত সরকারি কলেজে উচ্চশিক্ষা ও নারীশিক্ষা সংকোচন, কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য বিলুপ্তির চেষ্টার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) স্মারকলিপি দিয়েছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা।
বিসিএস জেনারেল অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে বুধবার,(১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে ইউজিসি ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছেও স্মারকলিপি দেন শিক্ষা ক্যাডার সদস্যরা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি সাত কলেজ পৃথক করার সময় যথাযথ কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়নি। এর ফলে সাত সরকারি কলেজে নারী শিক্ষার সুযোগ সংকোচনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্মারকলিপিতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা উচ্চশিক্ষা সংকোচন ও নারীর উচ্চশিক্ষায় বৈষম্যমূলক প্রভাব প্রতিরোধে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবগুলো হলো- শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানো, লাইব্রেরি, আবাসন, গবেষণা বাজেট, আধুনিক ল্যাব ও বৃত্তি সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা।
এছাড়া সব অংশীজনের জানার অধিকার ও তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের স্বার্থ সুরক্ষা করে শিক্ষা-পরিবেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। তারা রংপুর কারমাইকেল কলেজ ও বরিশাল বিএম কলেজের উদাহরণ অনুসরণ করে প্রয়োজনে নতুন ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব করেছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, কলেজগেুলোতে আসন কমানোর ফলে দেশের বিপুল সংখ্যক সুবিধাবঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। সরকারি কলেজের গঠনগত বৈশিষ্ট্য ও অবকাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ফলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দুই ধরনের সংকট তৈরি হয় উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, একদিকে শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হয়, অন্যদিকে অবকাঠামোগত সংকট চরমে উঠে। এসব কলেজের শিক্ষকরা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের পদ সেখানে সংকুচিত হয়ে যাবে।
পদ বিলুপ্ত হলে তা ভবিষ্যৎ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার পদপ্রার্থীদের বিশাল সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে দাবি করে শিক্ষকরা বলেন, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ দীর্ঘকাল ধরে নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রস্তাবিত সংকোচন কার্যকর
হলে রাজধানীতে নারীদের উচ্চশিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, তাদের প্রবেশাধিকার সংকীর্ণ হবে এবং সংবিধানপ্রদত্ত সমান সুযোগের নিশ্চয়তা লঙ্ঘিত হবে।
পরে বিসিএস জেনারেল অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাতটি সরকারি কলেজ রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ এবং গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক। এগুলোকে হঠাৎ করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা বা প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তন করা জাতীয় স্বার্থ ও ঐতিহ্যের পরিপন্থী।
নামসর্বস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, সাত কলেজে শিক্ষার সুযোগ সীমিত হলে শিক্ষার্থীদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হবে, যা নীতিগতভাবে শিক্ষার্থীবান্ধব নয়।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষা ক্যাডার সদস্যরা রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা পেলে কলেজভিত্তিক উচ্চশিক্ষা পরিচালনা করতে সক্ষম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও চিকিৎসকদের মতো তারাও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় পারদর্শী হতে পারে।
সাত কলেজে শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হলে জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোও সমরূপ দাবি উত্থাপন করতে পারে, যা সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দাবি।
রাজধানীর ওই সাত সরকারি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, মিরপুরের বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এ সাত কলেজের প্রায় আটশ’ শিক্ষক স্মারকলিপি দেয়ার সময় ইউজিসির সামনে উপস্থিত ছিলেন বলে কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন।