কবি, গীতিকার এবং চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার।বহুমুখী প্রতিভার এই মানুষটি চলচ্চিত্র শিল্পে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৬৪ সালে মুম্বাই আসেন। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কোনো কাজই পাননি তিনি। এই পাচ বছর সকাল হলে বেড়িয়ে পড়েছেন কাজের সন্ধানে। রাত হলে কখনও কোনও বারান্দা, কখনও বা কোনও করিডোর। মাঝে মাঝে আবার গাছের তলায় ভিড়ের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন তিনি। সকাল হলে ফের লোটাকম্বল গুটিয়ে কাজের সন্ধান।
শত কঠিন অবস্থার মাঝেও হাল ছেড়ে দেননি জাভেদ আখতার। ক্ষুরধার অস্ত্রের মতো তার কলমের প্রতি তার ছিল অগাধ বিশ্বাস। সেই অস্ত্র তাকে নিরাশ করেনি। তাকে পৌছে দিয়েছে সাফল্যের চুড়ায়।
১৯৬৯ সালে এমন একটি কাজ পান, যার ফলে গাছের তলায় ঘুমনোর প্রয়োজন হয়নি আর। এরপর ১৯৭১ সালে সরহাদি লুটেরা ছবি তৈরির সময় বলিউডের আরেক কিংবদন্তী সেলিম খানের সাথে সাক্ষাৎ হয় জাভেদ আখতারের। এই ছবি ছিলো সেলিম খানের সর্বশেষ অভিনীত ছবিগুলোর একটা। একের পর এক নিজের অভিনীত ছবি ব্যর্থ হওয়ায় চিত্রনাট্য লেখার দিকে মন দেন সেলিম খান। আর ঠিক এই সময় থেকেই সেলিম কাহ্ন ও জাভেদ আখতারের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে একসাথে কাজ শুরু করেন তারা।
সেলিম খান চিত্রনাট্য লিখতেন আর জাভেদ আখতার তাকে ডায়ালগ দিয়ে সাহায্য করতেন। একপর্যায়ে তারা সেলিম-জাভেদ জুটি নামে ব্যাপক পরিচিতি পান। প্রচুর হিট ছবি উপহার দেন তারা। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’, ‘ডন’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র ছবির কথা তৈরি করেন তাঁরা। সেলিম-জাভেদ জুটিকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সফল চিত্রনাট্যকার হিসাবে বর্ণনা করা হয়।
১৯৮২ সালে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আলাদা হয়ে যায় সেলিম এবং জাভেদের পথ। আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করা শুরু করেন তাঁরা। আলাদা হলেও স্বতন্ত্র ভাবে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করতে ব্যর্থ হননি কেউই।
ব্যক্তিগত জীবনে দুবার বিয়ে করেন জাভেদ আখতার। প্রথম স্ত্রী হানি ইরানি। এখানে তার দুই সন্তান জয়া আখতার ও ফারহান আখতার। এরা দুজনেই বর্তমানে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। পরবর্তিতে হানি ইরানির সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর উর্দু কবি কাইফি আজমির মেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা আজমিকে বিয়ে করেন জাভেদ আখতার।
শাবানা এবং জাভেদের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার সময়ে সমাজ থেকে নানা কটাক্ষ এসেছিল। অনেকেই কাদা ছোড়া শুরু তাঁদের দু’জনকে নিয়ে। শাবানা তাঁর এবং জাভেদের বিয়ে নিয়ে কথা বলার সময়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমি সেই সময়ে নিজের যুক্তি দিতে পারতাম সকলকে। কিন্তু তাতে আরও কথা বাড়ত। আমি জানতাম, এখন চুপ থাকলে পরে সবাই ধীরে ধীরে বুঝবে। এবং তা-ই হল।
একই সঙ্গে তিনি হানি ইরানির প্রশংসা করেন। তাঁর মতে, জাভেদের আগের পক্ষের স্ত্রী যদি তাঁদের পাশে না দাঁড়াতেন, তা হলে হয়তো তাঁদের দাম্পত্য সহজ হত না।
তিনি পাঁচ বার জাতীয় পুরস্কার পান, এছাড়াও পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণ পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন তার কবিতা সংগ্রহ “লাভা”র জন্য। ২০২০ সালে তিনি ‘রিচার্ড ডকিন্স অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন।
আজ বহু প্রতিভার এই মানুষোটির জন্মদিন। ১৯৪৫ সালের আজকের এইদিনে জন্মগ্রহন করেন তিনি।
সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
কবি, গীতিকার এবং চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার।বহুমুখী প্রতিভার এই মানুষটি চলচ্চিত্র শিল্পে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৬৪ সালে মুম্বাই আসেন। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কোনো কাজই পাননি তিনি। এই পাচ বছর সকাল হলে বেড়িয়ে পড়েছেন কাজের সন্ধানে। রাত হলে কখনও কোনও বারান্দা, কখনও বা কোনও করিডোর। মাঝে মাঝে আবার গাছের তলায় ভিড়ের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন তিনি। সকাল হলে ফের লোটাকম্বল গুটিয়ে কাজের সন্ধান।
শত কঠিন অবস্থার মাঝেও হাল ছেড়ে দেননি জাভেদ আখতার। ক্ষুরধার অস্ত্রের মতো তার কলমের প্রতি তার ছিল অগাধ বিশ্বাস। সেই অস্ত্র তাকে নিরাশ করেনি। তাকে পৌছে দিয়েছে সাফল্যের চুড়ায়।
১৯৬৯ সালে এমন একটি কাজ পান, যার ফলে গাছের তলায় ঘুমনোর প্রয়োজন হয়নি আর। এরপর ১৯৭১ সালে সরহাদি লুটেরা ছবি তৈরির সময় বলিউডের আরেক কিংবদন্তী সেলিম খানের সাথে সাক্ষাৎ হয় জাভেদ আখতারের। এই ছবি ছিলো সেলিম খানের সর্বশেষ অভিনীত ছবিগুলোর একটা। একের পর এক নিজের অভিনীত ছবি ব্যর্থ হওয়ায় চিত্রনাট্য লেখার দিকে মন দেন সেলিম খান। আর ঠিক এই সময় থেকেই সেলিম কাহ্ন ও জাভেদ আখতারের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে একসাথে কাজ শুরু করেন তারা।
সেলিম খান চিত্রনাট্য লিখতেন আর জাভেদ আখতার তাকে ডায়ালগ দিয়ে সাহায্য করতেন। একপর্যায়ে তারা সেলিম-জাভেদ জুটি নামে ব্যাপক পরিচিতি পান। প্রচুর হিট ছবি উপহার দেন তারা। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’, ‘ডন’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র ছবির কথা তৈরি করেন তাঁরা। সেলিম-জাভেদ জুটিকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সফল চিত্রনাট্যকার হিসাবে বর্ণনা করা হয়।
১৯৮২ সালে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আলাদা হয়ে যায় সেলিম এবং জাভেদের পথ। আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করা শুরু করেন তাঁরা। আলাদা হলেও স্বতন্ত্র ভাবে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করতে ব্যর্থ হননি কেউই।
ব্যক্তিগত জীবনে দুবার বিয়ে করেন জাভেদ আখতার। প্রথম স্ত্রী হানি ইরানি। এখানে তার দুই সন্তান জয়া আখতার ও ফারহান আখতার। এরা দুজনেই বর্তমানে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। পরবর্তিতে হানি ইরানির সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর উর্দু কবি কাইফি আজমির মেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা আজমিকে বিয়ে করেন জাভেদ আখতার।
শাবানা এবং জাভেদের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার সময়ে সমাজ থেকে নানা কটাক্ষ এসেছিল। অনেকেই কাদা ছোড়া শুরু তাঁদের দু’জনকে নিয়ে। শাবানা তাঁর এবং জাভেদের বিয়ে নিয়ে কথা বলার সময়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমি সেই সময়ে নিজের যুক্তি দিতে পারতাম সকলকে। কিন্তু তাতে আরও কথা বাড়ত। আমি জানতাম, এখন চুপ থাকলে পরে সবাই ধীরে ধীরে বুঝবে। এবং তা-ই হল।
একই সঙ্গে তিনি হানি ইরানির প্রশংসা করেন। তাঁর মতে, জাভেদের আগের পক্ষের স্ত্রী যদি তাঁদের পাশে না দাঁড়াতেন, তা হলে হয়তো তাঁদের দাম্পত্য সহজ হত না।
তিনি পাঁচ বার জাতীয় পুরস্কার পান, এছাড়াও পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণ পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন তার কবিতা সংগ্রহ “লাভা”র জন্য। ২০২০ সালে তিনি ‘রিচার্ড ডকিন্স অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন।
আজ বহু প্রতিভার এই মানুষোটির জন্মদিন। ১৯৪৫ সালের আজকের এইদিনে জন্মগ্রহন করেন তিনি।