কথা ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে সিনেমা ‘অমীমাংসিত’, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে। আর তাই গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্মাতা রায়হান রাফী ফেইসবুকে দিয়েছিলেন পোস্ট। প্রকাশ করেছিলেন টিজার এবং পোস্টার।
কিন্তু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পেছানো হয় সিনেমাটির মুক্তির তারিখ। জানানো হয়, মুক্তি পাবে ঈদে। কিন্তু ঈদেও মুক্তি পায়নি ‘অমীমাংসিত’।
আর এখন ‘অমীমাংসিত’ সিনেমাটিকে আটকেই দিলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সরবোর্ড। বোর্ড বলছে, এই সিনেমায় ‘নৃশংস খুনের’ দৃশ্য রয়েছে। কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তুর সঙ্গে ‘বাস্তবতার মিল’ রয়েছে। তাই জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন ‘উপযোগী নয়’।
বুধবার ‘অমীমাংসিত’ সিনেমার প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চুকে দেওয়া সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনুদ্দীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়।
তবে বাংলাদেশে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র নেয়ার নিয়ম নেই।
ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্জালে ‘অমীমাংসিত’র টিজার দেখে দর্শকদের কারো মন্তব্য ছিলো, সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমা। কেউ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির আলোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও এর মিল খুঁজে পান।
তবে সেন্সর বোর্ড সরারসরি সাগর-রুনির নাম বলেনি। এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত কেউও বলেননি ।
সেন্সর বোর্ড থেকে সিনেমাটিকে ‘প্রদর্শনের অযোগ্য’ ঘোষণার আরও যুক্তি দেওয়া হয়, এ ধরনের কাহিনী ‘বাস্তবে ঘটেছে’ এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। চলচ্চিত্রটির ‘কাহিনী/বিষয়বস্তু’ বিচারাধীন মামলার সঙ্গে ‘মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে পারে এবং তদন্তের বিঘ্ন ঘটাতে পারে’।
তবে সেন্সর বোর্ডের এক সদস্য বলছেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এ সিনেমার গল্পের মিল রয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ড আদালতে বিচারাধীন। আর তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপত্তি করা হয়েছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি মাছরাঙা টিভি চ্যানেলের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। সেই হত্যার রহস্য আজও মীমাংসা হয়নি। আদালতে শতবারের বেশী সময় নেওয়া হয়েছে, তারপরও এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন এখনও জমা দিতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
সেন্সর বোর্ডের চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩ মার্চ আবেদনের প্রেক্ষিতে পরদিন ৪ মার্চ সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা সিনেমাটি পরীক্ষা করেন। ‘অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের’ জন্য ২২ এপ্রিল বোর্ড সদস্যরা সিনেমাটি পুনরায় ‘পরীক্ষা’ করেন। এরপর বোর্ড সভায় ‘চলচ্চিত্রটির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা’ হয়।
আর ওই সভায় ‘সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা মত দেন – দি কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫ এর ১ এর প্রথম, পঞ্চম ও সপ্তম দফায় বর্ণিত উপাদানসমূহ বিদ্যমান থাকায় ‘অমীমাংসিত’ চলচ্চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়।‘
তবে সিনেমাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা চাইলে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সেন্সর বোর্ড। সেন্সর ছাড়পত্র বাতিলের চিঠি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সরকার বরাবর আপিল করার সুযোগ আছে সিনেমা সংশ্লিষ্টদের।
সিনেমায় কী গল্প, সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন?
‘অমীমাংসিত’ সিনেমা নিয়ে আপত্তি কেন আইস্ক্রিনের প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ আহমেদ তা বুঝতে পারছেন না। তিনি বলছেন, এই সিনেমা সাগর-রুনি হত্যার ঘটনা ‘নিয়ে নয়’। ‘যদি আংশিক মিলেও যায়, তাহলে কি এটা বন্ধ করে দিতে হবে, আমি জানি না,’ স্বগতোক্তির মতই বললেন তিনি।
যে কোনো ধরনের গল্প নিয়েই সিনেমা হতে পারে বলে মত নির্মাতা রায়হান রাফীর। আর তিনিও এই সিনেমায় আপত্তির কী আছে, বুঝতে পারছেন না।
রায়হান রাফী ফেব্রুয়ারিতে ফেইসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন তাতে লিখেছিলেন: কারা খুন করল অর্ণব আর নীরুকে? মুখোশধারী লোকগুলো কারা? এই অমীমাংসিত রহস্যের আদৌ কী জট খুলবে?
আর ৪০ সেকেন্ডের যে টিজার তাতে লেখা ছিলো: খুনগুলো হয়েছে আনুমানিক রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে। ধারণা করছি, এটা কোনো চুরি ডাকাতি কেস...; সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সবাই ক্রাইম জোনের আলামত নষ্ট করেছে। আমার করার কী ছিল; ওদের কেউ মারেনি। ওরা নিজেরাই নিজেদের খুন করেছে; এটা নিশ্চিত পরকীয়া কেস! নইলে সেদিন...।
সিনেমার যে পোস্টার তাতে দেখা যায়, ইমতিয়াজ বর্ষণ ও তানজিকা আমিন স্থির দৃষ্টিতে বসে আছেন, মাঝে একটি বাচ্চা মেয়ে দাঁড়িয়ে। আর তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ব্যক্তি, মুখে কালো কাপড় বাঁধা।
২০১৮ সালের এক সাংবাদিক দম্পতির খুনের ঘটনা নিয়ে এই সিনেমার গল্প। আর তাই রিয়াজের ধারণা, ‘হয়তো কেউ কেউ মনে করছেন, এটা সাগর-রুনির খুনের ঘটনা নিয়ে। আমরা কিন্তু তা বলছি না।’
সিনেমাটি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিনা- এমন প্রশ্নে নির্মাতা রায়হান রাফীর বক্তব্য, ‘সাংবাদিক দম্পতির গল্প বলেই কেউ কেউ ধারণা থেকে বলছে, এটি সাগর-রুনির ঘটনা। এজন্যই সেন্সর বোর্ড থেকে সিনেমাটি দেখতে চেয়েছে। কেন আটকে রেখেছে, জানি না।‘
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
কথা ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে সিনেমা ‘অমীমাংসিত’, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে। আর তাই গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্মাতা রায়হান রাফী ফেইসবুকে দিয়েছিলেন পোস্ট। প্রকাশ করেছিলেন টিজার এবং পোস্টার।
কিন্তু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পেছানো হয় সিনেমাটির মুক্তির তারিখ। জানানো হয়, মুক্তি পাবে ঈদে। কিন্তু ঈদেও মুক্তি পায়নি ‘অমীমাংসিত’।
আর এখন ‘অমীমাংসিত’ সিনেমাটিকে আটকেই দিলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সরবোর্ড। বোর্ড বলছে, এই সিনেমায় ‘নৃশংস খুনের’ দৃশ্য রয়েছে। কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তুর সঙ্গে ‘বাস্তবতার মিল’ রয়েছে। তাই জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন ‘উপযোগী নয়’।
বুধবার ‘অমীমাংসিত’ সিনেমার প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চুকে দেওয়া সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনুদ্দীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়।
তবে বাংলাদেশে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র নেয়ার নিয়ম নেই।
ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্জালে ‘অমীমাংসিত’র টিজার দেখে দর্শকদের কারো মন্তব্য ছিলো, সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমা। কেউ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির আলোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও এর মিল খুঁজে পান।
তবে সেন্সর বোর্ড সরারসরি সাগর-রুনির নাম বলেনি। এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত কেউও বলেননি ।
সেন্সর বোর্ড থেকে সিনেমাটিকে ‘প্রদর্শনের অযোগ্য’ ঘোষণার আরও যুক্তি দেওয়া হয়, এ ধরনের কাহিনী ‘বাস্তবে ঘটেছে’ এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। চলচ্চিত্রটির ‘কাহিনী/বিষয়বস্তু’ বিচারাধীন মামলার সঙ্গে ‘মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে পারে এবং তদন্তের বিঘ্ন ঘটাতে পারে’।
তবে সেন্সর বোর্ডের এক সদস্য বলছেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এ সিনেমার গল্পের মিল রয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ড আদালতে বিচারাধীন। আর তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপত্তি করা হয়েছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি মাছরাঙা টিভি চ্যানেলের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। সেই হত্যার রহস্য আজও মীমাংসা হয়নি। আদালতে শতবারের বেশী সময় নেওয়া হয়েছে, তারপরও এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন এখনও জমা দিতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
সেন্সর বোর্ডের চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩ মার্চ আবেদনের প্রেক্ষিতে পরদিন ৪ মার্চ সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা সিনেমাটি পরীক্ষা করেন। ‘অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের’ জন্য ২২ এপ্রিল বোর্ড সদস্যরা সিনেমাটি পুনরায় ‘পরীক্ষা’ করেন। এরপর বোর্ড সভায় ‘চলচ্চিত্রটির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা’ হয়।
আর ওই সভায় ‘সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা মত দেন – দি কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫ এর ১ এর প্রথম, পঞ্চম ও সপ্তম দফায় বর্ণিত উপাদানসমূহ বিদ্যমান থাকায় ‘অমীমাংসিত’ চলচ্চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়।‘
তবে সিনেমাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা চাইলে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সেন্সর বোর্ড। সেন্সর ছাড়পত্র বাতিলের চিঠি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সরকার বরাবর আপিল করার সুযোগ আছে সিনেমা সংশ্লিষ্টদের।
সিনেমায় কী গল্প, সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন?
‘অমীমাংসিত’ সিনেমা নিয়ে আপত্তি কেন আইস্ক্রিনের প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ আহমেদ তা বুঝতে পারছেন না। তিনি বলছেন, এই সিনেমা সাগর-রুনি হত্যার ঘটনা ‘নিয়ে নয়’। ‘যদি আংশিক মিলেও যায়, তাহলে কি এটা বন্ধ করে দিতে হবে, আমি জানি না,’ স্বগতোক্তির মতই বললেন তিনি।
যে কোনো ধরনের গল্প নিয়েই সিনেমা হতে পারে বলে মত নির্মাতা রায়হান রাফীর। আর তিনিও এই সিনেমায় আপত্তির কী আছে, বুঝতে পারছেন না।
রায়হান রাফী ফেব্রুয়ারিতে ফেইসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন তাতে লিখেছিলেন: কারা খুন করল অর্ণব আর নীরুকে? মুখোশধারী লোকগুলো কারা? এই অমীমাংসিত রহস্যের আদৌ কী জট খুলবে?
আর ৪০ সেকেন্ডের যে টিজার তাতে লেখা ছিলো: খুনগুলো হয়েছে আনুমানিক রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে। ধারণা করছি, এটা কোনো চুরি ডাকাতি কেস...; সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সবাই ক্রাইম জোনের আলামত নষ্ট করেছে। আমার করার কী ছিল; ওদের কেউ মারেনি। ওরা নিজেরাই নিজেদের খুন করেছে; এটা নিশ্চিত পরকীয়া কেস! নইলে সেদিন...।
সিনেমার যে পোস্টার তাতে দেখা যায়, ইমতিয়াজ বর্ষণ ও তানজিকা আমিন স্থির দৃষ্টিতে বসে আছেন, মাঝে একটি বাচ্চা মেয়ে দাঁড়িয়ে। আর তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ব্যক্তি, মুখে কালো কাপড় বাঁধা।
২০১৮ সালের এক সাংবাদিক দম্পতির খুনের ঘটনা নিয়ে এই সিনেমার গল্প। আর তাই রিয়াজের ধারণা, ‘হয়তো কেউ কেউ মনে করছেন, এটা সাগর-রুনির খুনের ঘটনা নিয়ে। আমরা কিন্তু তা বলছি না।’
সিনেমাটি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিনা- এমন প্রশ্নে নির্মাতা রায়হান রাফীর বক্তব্য, ‘সাংবাদিক দম্পতির গল্প বলেই কেউ কেউ ধারণা থেকে বলছে, এটি সাগর-রুনির ঘটনা। এজন্যই সেন্সর বোর্ড থেকে সিনেমাটি দেখতে চেয়েছে। কেন আটকে রেখেছে, জানি না।‘