একদিকে তাপমাত্রা কম থাকায় বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা রয়েছে, অন্যদিকে বিদ্যুতের স্থাপনাগুলোয় একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে রুশ বাহিনী। সব মিলিয়ে চরম সংকটে পড়েছে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ খাত। মঙ্গলবার অন্ধকারে (জরুরি ব্ল্যাকআউট) ডুবে যায় পুরো ইউক্রেন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউক্রেনেগো এ তথ্য জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। এসব হামলার কারণে বিদ্যুতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করতে পারছে না ইউক্রেন। এমনকি চাহিদা পূরণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে ইউক্রেনকে বাধ্য করেছে রাশিয়া। টেলিগ্রামে ইউক্রেনেগো জানায়, স্থানীয় সময় রাত নয়টা থেকে পরবর্তী চার ঘণ্টা ইউক্রেনের সব কটি অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর ফলে অন্ধকারে ডুবে ছিল পুরো ইউক্রেন।
প্রতিষ্ঠানটি এর পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করেছে। এক, ইউক্রেনের বিদ্যুতের স্থাপনাগুলোয় রুশবাহিনীর একের পর এক হামলা। দুই, তাপমাত্রা কম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চলের লিভিভ শহরের কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, শহরের কেন্দ্রস্থলে ভবনগুলো অন্ধকারে ডুবে আছে। সড়ক বাতিগুলো জ্বলছে না। রাজধানী কিয়েভের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্তত ১০ শতাংশ বাড়ির বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এদিকে, রুশ হামলার মুখে খারকিভের দুটি অঞ্চল থেকে পিছু হটে ইউক্রেনীয় সেনারা নতুন সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা। মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী এই অগ্রগতির কথা জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে বলেছে, খারকিভের কাছে উত্তর দিকে সুমি অঞ্চলে সম্ভাব্য নতুন অভিযানের জন্য সেনা জড়ো করছে রাশিয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সুমি অঞ্চলে রাশিয়া যদি নতুন স্থল হামলা চালায় তাহলে রণক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে। এর আগে শুক্রবার খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়া স্থল হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন দ্রুত সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে। এমন অবস্থায় সুমি অঞ্চলে নতুন অভিযান শুরু হলে রুশদের ঠেকাতে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে ইউক্রেনীয় সেনাদের। রাশিয়া বলেছে, খারকিভের উত্তরের দিকে তাদের অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। বুহরুভাতকা নামের আরেকটি গ্রামের দখল নিয়েছে তারা। এটি শুক্রবারের পর থেকে রুশ সেনাদের দখল করা দশম গ্রাম।
সীমান্ত থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরের শহর ভভচানস্কের পুলিশ প্রধান বলেছেন, শহরটি রাশিয়ার গোলাবর্ষণে প্রধান নিশানায় পরিণত হয়েছে। শহরের উত্তরে গুলি বিনিময় হচ্ছে। মঙ্গলবার শেষরাতের দিকে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেছে, লিকিয়ান্তসি ও ভভচানস্কের নির্দিষ্ট সেক্টরে সেনারা আরও সুবিধাজনক অবস্থানে সরে গেছে। শত্রুদের গোলাবর্ষণ ও অভিযানের পর সেনাদের জীবন রক্ষা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
খারকিভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনিয়েহুবভ বলেছেন, রুশ গোলাবর্ষণে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ভভচানস্ক ও আশেপাশের সীমান্ত অঞ্চল থেকে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রুশ হামলায় ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও অঞ্চলটিতে বসবাসরত ইউক্রেনীয়দের মনোবলে ধাক্কা দিয়েছে। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হলো খারকিভ। এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার আক্রমণের মূল মনোযোগ ছিল ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল। ফলে খারকিভে নতুন আক্রমণ পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরক্ষা অভিযানকে ব্যাহত করবে।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান কিরিলো বুদানভ বলেছেন, মস্কো ইতোমধ্যে খারকিভে অভিযানের জন্য নিজেদের সব সেনা জড়ো করেছে। কিন্তু রাশিয়ার আরও রিজার্ভ সেনা রয়েছে।
আগামী দিনগুলোতে তাদের কাজে লাগাতে পারে রাশিয়া। শীর্ষ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, খারকিভ শহর দখল করার মতো সেনা রাশিয়ার রয়েছে বলে তারা মনে করেন না। ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফের সংগৃহীত তথ্য অনুসারে, খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার আক্রমগণের গতি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার ১৪টি হামলা চালিয়েছে তারা। সোমবার ছিল ১৩টি ও ২২টি ছিল রবিবার।
বুদানভ পরিস্থিতিটিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, রাশিয়ার অভিযান এখনও সক্রিয় পর্যায়ে রয়েছে। সুমি অঞ্চলের সীমান্ত অঞ্চলে রাশিয়ার ছোট ছোট দলে সেনারা অবস্থান করছে। শুরু থেকেই এই অঞ্চলে অভিযানের পরিকল্পনা ছিল রুশ বাহিনীর। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তারা সক্রিয় পদক্ষেপ ও অভিযান শুরু করতে পারেনি।
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
একদিকে তাপমাত্রা কম থাকায় বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা রয়েছে, অন্যদিকে বিদ্যুতের স্থাপনাগুলোয় একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে রুশ বাহিনী। সব মিলিয়ে চরম সংকটে পড়েছে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ খাত। মঙ্গলবার অন্ধকারে (জরুরি ব্ল্যাকআউট) ডুবে যায় পুরো ইউক্রেন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউক্রেনেগো এ তথ্য জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। এসব হামলার কারণে বিদ্যুতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করতে পারছে না ইউক্রেন। এমনকি চাহিদা পূরণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে ইউক্রেনকে বাধ্য করেছে রাশিয়া। টেলিগ্রামে ইউক্রেনেগো জানায়, স্থানীয় সময় রাত নয়টা থেকে পরবর্তী চার ঘণ্টা ইউক্রেনের সব কটি অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর ফলে অন্ধকারে ডুবে ছিল পুরো ইউক্রেন।
প্রতিষ্ঠানটি এর পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করেছে। এক, ইউক্রেনের বিদ্যুতের স্থাপনাগুলোয় রুশবাহিনীর একের পর এক হামলা। দুই, তাপমাত্রা কম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চলের লিভিভ শহরের কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, শহরের কেন্দ্রস্থলে ভবনগুলো অন্ধকারে ডুবে আছে। সড়ক বাতিগুলো জ্বলছে না। রাজধানী কিয়েভের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্তত ১০ শতাংশ বাড়ির বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এদিকে, রুশ হামলার মুখে খারকিভের দুটি অঞ্চল থেকে পিছু হটে ইউক্রেনীয় সেনারা নতুন সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা। মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী এই অগ্রগতির কথা জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে বলেছে, খারকিভের কাছে উত্তর দিকে সুমি অঞ্চলে সম্ভাব্য নতুন অভিযানের জন্য সেনা জড়ো করছে রাশিয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সুমি অঞ্চলে রাশিয়া যদি নতুন স্থল হামলা চালায় তাহলে রণক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে। এর আগে শুক্রবার খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়া স্থল হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন দ্রুত সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে। এমন অবস্থায় সুমি অঞ্চলে নতুন অভিযান শুরু হলে রুশদের ঠেকাতে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে ইউক্রেনীয় সেনাদের। রাশিয়া বলেছে, খারকিভের উত্তরের দিকে তাদের অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। বুহরুভাতকা নামের আরেকটি গ্রামের দখল নিয়েছে তারা। এটি শুক্রবারের পর থেকে রুশ সেনাদের দখল করা দশম গ্রাম।
সীমান্ত থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরের শহর ভভচানস্কের পুলিশ প্রধান বলেছেন, শহরটি রাশিয়ার গোলাবর্ষণে প্রধান নিশানায় পরিণত হয়েছে। শহরের উত্তরে গুলি বিনিময় হচ্ছে। মঙ্গলবার শেষরাতের দিকে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেছে, লিকিয়ান্তসি ও ভভচানস্কের নির্দিষ্ট সেক্টরে সেনারা আরও সুবিধাজনক অবস্থানে সরে গেছে। শত্রুদের গোলাবর্ষণ ও অভিযানের পর সেনাদের জীবন রক্ষা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
খারকিভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনিয়েহুবভ বলেছেন, রুশ গোলাবর্ষণে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ভভচানস্ক ও আশেপাশের সীমান্ত অঞ্চল থেকে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রুশ হামলায় ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও অঞ্চলটিতে বসবাসরত ইউক্রেনীয়দের মনোবলে ধাক্কা দিয়েছে। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হলো খারকিভ। এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার আক্রমণের মূল মনোযোগ ছিল ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল। ফলে খারকিভে নতুন আক্রমণ পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরক্ষা অভিযানকে ব্যাহত করবে।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান কিরিলো বুদানভ বলেছেন, মস্কো ইতোমধ্যে খারকিভে অভিযানের জন্য নিজেদের সব সেনা জড়ো করেছে। কিন্তু রাশিয়ার আরও রিজার্ভ সেনা রয়েছে।
আগামী দিনগুলোতে তাদের কাজে লাগাতে পারে রাশিয়া। শীর্ষ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, খারকিভ শহর দখল করার মতো সেনা রাশিয়ার রয়েছে বলে তারা মনে করেন না। ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফের সংগৃহীত তথ্য অনুসারে, খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার আক্রমগণের গতি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার ১৪টি হামলা চালিয়েছে তারা। সোমবার ছিল ১৩টি ও ২২টি ছিল রবিবার।
বুদানভ পরিস্থিতিটিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, রাশিয়ার অভিযান এখনও সক্রিয় পর্যায়ে রয়েছে। সুমি অঞ্চলের সীমান্ত অঞ্চলে রাশিয়ার ছোট ছোট দলে সেনারা অবস্থান করছে। শুরু থেকেই এই অঞ্চলে অভিযানের পরিকল্পনা ছিল রুশ বাহিনীর। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তারা সক্রিয় পদক্ষেপ ও অভিযান শুরু করতে পারেনি।
