alt

আন্তর্জাতিক

সিরিয়ার সামনে এখন কী

সৈয়দ মুহাম্মদ আজম, ঢাকা : সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ায় আল-আসাদ পরিবারের টানা অর্ধশতাব্দীর শাসনামলের পতন ঘটানো মোটেই সহজ ছিল না। যুগের পর যুগ আন্দোলনেও যা সম্ভব হয়নি, এবং যা ছিল সিরিয়ানদের কল্পনাতীত। কিন্তু গত মাসের শেষে হঠাৎ করেই দেশটির পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে শুরু করে।

২৭ নভেম্বর দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের আক্রমণ শুরু হয়। একে একে তারা দখলে নিতে থাকে আলেপ্পো, হামা, হোমস ও রাজধানী দামেস্ক। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বাশার আল-আসাদ।

তবে তার পতনের পরই সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ট্যাংক। বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বার বার তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তাদের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিরে যাবেন না।

গত ২৬ নভেম্বর নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ জন্য সতর্ক করেছিলেন। ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে সমর্থন অব্যাহত রাখলে সিরিয়া সরকারকে ধ্বংস করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথাও সেসময় জানান নেতানিয়াহু। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সেই কথায় কর্ণপাত করেননি বাশার। ফলে মার্কিন মদদপুষ্ট কুর্দি বাহিনী, কট্টরপন্থী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও ইসলামি বিদ্রোহীদের মাধ্যমে পতন ঘটানো হয় আল-আসাদ পরিবারের দীর্ঘ শাসনামল।

পিতা-পুত্রের ‘স্বৈরশাসনের’ সমাপ্তি হলেও অনিশ্চিয়তা আরও ঘনীভূত হয়েছে সিরিয়ার আকাশে। দেশটির ভূখণ্ডে ইসরায়েলি ট্যাংকের প্রবেশ, যুক্তরাষ্ট্রের মুর্হুমুহু বিমান হামলা অশনিবার্তা দিচ্ছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি এখন টালমাটাল, নেতৃত্বেও রয়েছে দুর্বলতা। তাই পশ্চিমা বা জায়োনবাদীদের আক্রমণ প্রতিহত করা দেশটির পক্ষে কতটুকু সম্ভব, সেটাও বড় প্রশ্ন।

দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলা যুদ্ধ সিরিয়াকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একইসঙ্গে দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু, অবকাঠামোকে ধ্বংস এবং লাখ লাখ মানুষকে চরম দুর্দশায় ফেলেছে। এটি এমন একটি মানবিক সংকট তৈরি করেছে যেখান থেকে উত্তরণের কোনো সুস্পষ্ট পথ নেই।

পূর্বদিকে কুর্দি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলো যুদ্ধের প্রথম বছর থেকেই সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশটির বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে আইএস-এর টিকে থাকা একটি অংশ নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করছে। যুদ্ধের সময় ঠেলে দেওয়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জন্যে একটি শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। আর কার্যত প্রদেশটির শাসক হিসেবে এইচটিএস এই বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্বও পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তুরস্ক সমর্থিত বাহিনীসহ কিছু গোষ্ঠী কুর্দি যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।

আগামীতে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নিয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেই আশঙ্কা। বিশেষ করে এইচটিএস কট্টরপন্থী, কুর্দি বাহিনী মার্কিনপন্থী, তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী ও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর আদর্শিক ও নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। বিধায় স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অত্যন্ত জটিল। আরেকটি জটিলতা হলো শিয়া ও সুন্নি মতবাদ। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্টী হামাসের (সুন্নি) বেলায় এই মতপার্থক্যের বিভেদ ঘুচেছে। সিরিয়ায় তা হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

ছবি

স্বামীর প্ররোচনায় স্ত্রীকে ১০ বছর ধরে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ৫০ পুরুষ

ছবি

সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জরুরি: লয়েড অস্টিন

ছবি

সিরিয়ার কারাগারে নির্যাতনকারীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি জোলানির

ছবি

আলাওয়াইতদের সমর্থন পেল সিরিয়ার বিদ্রোহীরা

সিরিয়ায় ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলা: ২৫০টির বেশি সামরিক লক্ষ্যবস্তু বিধ্বস্ত

ছবি

সিরিয়ায় বাশার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের উদ্যোগ

ছবি

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধ করবেন ট্রাম্প

গোলান মালভূমির বাফার জোনে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ নিল ইসরায়েল

ছবি

সিরিয়ায় আইএস লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বিমান হামলা

ছবি

বাশার আল-আসাদ রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন

ছবি

দিল্লির ৪৪ স্কুলে বোমা হামলার হুমকি, নিরাপত্তা জোরদার

ছবি

সিরিয়া বিদ্রোহীদের দখলে, পালালেন বাশার, দামেস্কে কি শীতেই ‘বসন্ত’

ছবি

১২ দিনে সিরিয়া দখল করে নিলো এইচটিএস: এই বিদ্রোহী কারা?

ছবি

মুসলমানদের হৃদয় জয় করুন: মোদীকে দিল্লির শাহী ইমাম

ছবি

ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দামেস্ক ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ: রয়টার্স

ছবি

দামেস্কে রাস্তায়-রাস্তায় উল্লাস, বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা

ছবি

পালিয়ে যাননি সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী, বললেন— সহায়তায় প্রস্তুত আছি

ছবি

সামরিক আইন জারির জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট

ছবি

একদিনে নিহত ৩২, গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার ৬০০

ছবি

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন ৯৬৩ জন

ছবি

প্রেসিডেন্টকে আর চায় না দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীনরা

ছবি

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় সবার ওপরে ঢাকা

ছবি

ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা বাতিল

ছবি

গাজায় হত্যাযজ্ঞ চলছেই, নিহত আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি

ছবি

ম্যানহাটনে ইউনাইটেড হেলথকেয়ারের সিইওকে গুলি করে হত্যা

ছবি

বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা: সিরিয়ার হামা শহরে তীব্র লড়াই

ছবি

বাংলাদেশ বিরোধী বিক্ষোভ করায় ভারতের চেন্নাইয়ে আটক ৫০০

ছবি

ভিয়েতনামে বিস্ফোরণে ১২ সেনা নিহত

ছবি

ভারতের পতাকা মাড়ানোর ‘ভাইরাল’ ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি: রিউমার স্ক্যানার

ছবি

বাংলাদেশি রোগী বয়কটের বিরোধিতা করলো ভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন

ছবি

গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত আরও ৫০

ট্রাম্পের ইউক্রেইন পরিকল্পনা : ছাড়তে হবে ভূখণ্ড, নেটো সদস্যপদও পাওয়া যাবেনা

ছবি

স্বর্ণমন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলা

ছবি

পাকিস্তানের কাছ থেকে ২৫ হাজার টন চিনি কিনল বাংলাদেশ

ছবি

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হয়ে যেতে বললেন ট্রাম্প

ছবি

দ. কোরিয়ায় নাটকীয়তা, সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর প্রত্যাহার

tab

আন্তর্জাতিক

সিরিয়ার সামনে এখন কী

সৈয়দ মুহাম্মদ আজম, ঢাকা

সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ায় আল-আসাদ পরিবারের টানা অর্ধশতাব্দীর শাসনামলের পতন ঘটানো মোটেই সহজ ছিল না। যুগের পর যুগ আন্দোলনেও যা সম্ভব হয়নি, এবং যা ছিল সিরিয়ানদের কল্পনাতীত। কিন্তু গত মাসের শেষে হঠাৎ করেই দেশটির পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে শুরু করে।

২৭ নভেম্বর দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের আক্রমণ শুরু হয়। একে একে তারা দখলে নিতে থাকে আলেপ্পো, হামা, হোমস ও রাজধানী দামেস্ক। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বাশার আল-আসাদ।

তবে তার পতনের পরই সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ট্যাংক। বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বার বার তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তাদের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিরে যাবেন না।

গত ২৬ নভেম্বর নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ জন্য সতর্ক করেছিলেন। ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে সমর্থন অব্যাহত রাখলে সিরিয়া সরকারকে ধ্বংস করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথাও সেসময় জানান নেতানিয়াহু। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সেই কথায় কর্ণপাত করেননি বাশার। ফলে মার্কিন মদদপুষ্ট কুর্দি বাহিনী, কট্টরপন্থী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও ইসলামি বিদ্রোহীদের মাধ্যমে পতন ঘটানো হয় আল-আসাদ পরিবারের দীর্ঘ শাসনামল।

পিতা-পুত্রের ‘স্বৈরশাসনের’ সমাপ্তি হলেও অনিশ্চিয়তা আরও ঘনীভূত হয়েছে সিরিয়ার আকাশে। দেশটির ভূখণ্ডে ইসরায়েলি ট্যাংকের প্রবেশ, যুক্তরাষ্ট্রের মুর্হুমুহু বিমান হামলা অশনিবার্তা দিচ্ছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি এখন টালমাটাল, নেতৃত্বেও রয়েছে দুর্বলতা। তাই পশ্চিমা বা জায়োনবাদীদের আক্রমণ প্রতিহত করা দেশটির পক্ষে কতটুকু সম্ভব, সেটাও বড় প্রশ্ন।

দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলা যুদ্ধ সিরিয়াকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একইসঙ্গে দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু, অবকাঠামোকে ধ্বংস এবং লাখ লাখ মানুষকে চরম দুর্দশায় ফেলেছে। এটি এমন একটি মানবিক সংকট তৈরি করেছে যেখান থেকে উত্তরণের কোনো সুস্পষ্ট পথ নেই।

পূর্বদিকে কুর্দি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলো যুদ্ধের প্রথম বছর থেকেই সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশটির বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে আইএস-এর টিকে থাকা একটি অংশ নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করছে। যুদ্ধের সময় ঠেলে দেওয়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জন্যে একটি শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। আর কার্যত প্রদেশটির শাসক হিসেবে এইচটিএস এই বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্বও পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তুরস্ক সমর্থিত বাহিনীসহ কিছু গোষ্ঠী কুর্দি যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।

আগামীতে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নিয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেই আশঙ্কা। বিশেষ করে এইচটিএস কট্টরপন্থী, কুর্দি বাহিনী মার্কিনপন্থী, তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী ও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর আদর্শিক ও নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। বিধায় স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অত্যন্ত জটিল। আরেকটি জটিলতা হলো শিয়া ও সুন্নি মতবাদ। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্টী হামাসের (সুন্নি) বেলায় এই মতপার্থক্যের বিভেদ ঘুচেছে। সিরিয়ায় তা হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

back to top