হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইরান ও ইসরায়েল একটি ‘পর্যায়ক্রমিক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষ্য, এই সমঝোতা মধ্যপ্রাচ্যের দুই শত্রু রাষ্ট্রের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটাবে। যদিও এর মধ্যে তেহরানে রাতভর বিস্ফোরণ হয়েছে।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ স্যোশাল’-এ লেখেন, “ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে পূর্ণ সমঝোতা হয়েছে।”
তবে দুই দেশের কোনো পক্ষই ট্রাম্পের এই ঘোষণার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দুই সপ্তাহ ধরে চলা নজিরবিহীন হামলায় ইরানে নিহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ এবং ইসরায়েলে প্রাণ গেছে অন্তত ২৪ জনের।
ট্রাম্প জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে মঙ্গলবার সকাল ১০টা (বাংলাদেশ সময়) থেকে, ধাপে ধাপে ২৪ ঘণ্টায়। প্রথমে ইরান একতরফাভাবে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও একই পদক্ষেপ নেবে। ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হলে ১২ দিনের যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি উদ্যাপন করা হবে।
তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণার মধ্যেই তেহরানের উত্তরে ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, যুদ্ধ শুরুর পর এটিই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী হামলাগুলোর একটি।
বিশ্বনেতারা আশঙ্কা করেছিলেন, এই সংঘাত বড় ধরনের যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। তাই যুদ্ধবিরতির খবরে আন্তর্জাতিক মহলে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ‘আগাম প্রতিরক্ষামূলক’ হামলা চালায়। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় দুই পক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।
এরই মধ্যে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরান কাতারের আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। ট্রাম্প একে ‘খুব দুর্বল’ হামলা বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, ইরান আগে থেকেই এ হামলার বিষয়ে জানিয়েছিল এবং এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় ‘আক্রমণাত্মক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ হামলা চালানোয় প্রতিক্রিয়াস্বরূপ এ হামলা চালানো হয়েছে। তারা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যতটি বোমা ফেলেছে, ইরানও ততগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে— প্রতিক্রিয়াটি ছিল ‘নিয়ন্ত্রিত ও প্রতিসম’।
গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলি ভায়েজ বলেন, “হামলাটি এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল যাতে মার্কিন হতাহতের ঘটনা না ঘটে এবং উভয় পক্ষ সংঘাত থেকে সরে আসতে পারে।”
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের একটি ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ও আরও দুটি স্থাপনায় বাংকার-বিধ্বংসী বোমা নিক্ষেপ করেছিল। এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেন, “এই বিশৃঙ্খলার বৃত্ত থামাতে হবে।” চীনও সতর্ক করে দেয়, এই পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
ইরান দাবি করেছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্য ছিল কাতার নয়, বরং আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটি। তবে কাতার সরকার একে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে আখ্যা দিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার অধিকার সংরক্ষণের কথা জানিয়েছে।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ওই ঘাঁটিতে। কাতার জানায়, হামলার আগে ঘাঁটিটি খালি করে ফেলা হয়েছিল। এএফপির সাংবাদিকরা দোহা ও লুসাইলে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন এবং আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র উড়তে দেখেন।
এ ঘটনার পর কাতার সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং বিদেশি দূতাবাসগুলো নিজ নিজ নাগরিকদের নিরাপদে আশ্রয়ে থাকতে বলেছে। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবর, তেহরানে জনগণ রাস্তায় নেমে এই হামলার পর আনন্দ প্রকাশ করেছে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আর ইরানের হামলায় ইসরায়েলে ২৪ জন নিহত হয়েছেন বলে তেল আবিবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
ইরান ও ইসরায়েল একটি ‘পর্যায়ক্রমিক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষ্য, এই সমঝোতা মধ্যপ্রাচ্যের দুই শত্রু রাষ্ট্রের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটাবে। যদিও এর মধ্যে তেহরানে রাতভর বিস্ফোরণ হয়েছে।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ স্যোশাল’-এ লেখেন, “ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে পূর্ণ সমঝোতা হয়েছে।”
তবে দুই দেশের কোনো পক্ষই ট্রাম্পের এই ঘোষণার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দুই সপ্তাহ ধরে চলা নজিরবিহীন হামলায় ইরানে নিহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ এবং ইসরায়েলে প্রাণ গেছে অন্তত ২৪ জনের।
ট্রাম্প জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে মঙ্গলবার সকাল ১০টা (বাংলাদেশ সময়) থেকে, ধাপে ধাপে ২৪ ঘণ্টায়। প্রথমে ইরান একতরফাভাবে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও একই পদক্ষেপ নেবে। ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হলে ১২ দিনের যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি উদ্যাপন করা হবে।
তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণার মধ্যেই তেহরানের উত্তরে ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, যুদ্ধ শুরুর পর এটিই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী হামলাগুলোর একটি।
বিশ্বনেতারা আশঙ্কা করেছিলেন, এই সংঘাত বড় ধরনের যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। তাই যুদ্ধবিরতির খবরে আন্তর্জাতিক মহলে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ‘আগাম প্রতিরক্ষামূলক’ হামলা চালায়। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় দুই পক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।
এরই মধ্যে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরান কাতারের আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। ট্রাম্প একে ‘খুব দুর্বল’ হামলা বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, ইরান আগে থেকেই এ হামলার বিষয়ে জানিয়েছিল এবং এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় ‘আক্রমণাত্মক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ হামলা চালানোয় প্রতিক্রিয়াস্বরূপ এ হামলা চালানো হয়েছে। তারা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যতটি বোমা ফেলেছে, ইরানও ততগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে— প্রতিক্রিয়াটি ছিল ‘নিয়ন্ত্রিত ও প্রতিসম’।
গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলি ভায়েজ বলেন, “হামলাটি এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল যাতে মার্কিন হতাহতের ঘটনা না ঘটে এবং উভয় পক্ষ সংঘাত থেকে সরে আসতে পারে।”
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের একটি ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ও আরও দুটি স্থাপনায় বাংকার-বিধ্বংসী বোমা নিক্ষেপ করেছিল। এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেন, “এই বিশৃঙ্খলার বৃত্ত থামাতে হবে।” চীনও সতর্ক করে দেয়, এই পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
ইরান দাবি করেছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্য ছিল কাতার নয়, বরং আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটি। তবে কাতার সরকার একে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে আখ্যা দিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার অধিকার সংরক্ষণের কথা জানিয়েছে।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ওই ঘাঁটিতে। কাতার জানায়, হামলার আগে ঘাঁটিটি খালি করে ফেলা হয়েছিল। এএফপির সাংবাদিকরা দোহা ও লুসাইলে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন এবং আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র উড়তে দেখেন।
এ ঘটনার পর কাতার সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং বিদেশি দূতাবাসগুলো নিজ নিজ নাগরিকদের নিরাপদে আশ্রয়ে থাকতে বলেছে। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবর, তেহরানে জনগণ রাস্তায় নেমে এই হামলার পর আনন্দ প্রকাশ করেছে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আর ইরানের হামলায় ইসরায়েলে ২৪ জন নিহত হয়েছেন বলে তেল আবিবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।