মঙ্গলবার ভোরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি জানান, ইসরায়েল আক্রমণ বন্ধ করলে ইরানের আর জবাব দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। এর কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মতি জানানো হয়নি। ফলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে।
এর আগে ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের একাধিক এলাকায় বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এসব এলাকায় রাতে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, ইরানও ইসরায়েলের কিছু এলাকার বাসিন্দাদের সরতে বলেছে। মঙ্গলবার সকালে সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হবে বলে জানিয়েছিল ইরান।
সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই হামলাকে ‘খুব দুর্বল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হামলার পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে যায়।
শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইরান
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি জানান, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা পর্যন্ত ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ প্রতিহত করতে সর্বোচ্চ লড়াই করেছে ইরান। তিনি সামরিক বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এরপর যদি আর কোনো হামলা না হয়, তাহলে ইরানও পাল্টা আক্রমণ চালাবে না।
তবে তার এই বিবৃতি আসার আগ পর্যন্ত ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে তেহরানে একটি ‘দাবি’ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং উভয় দেশ সামরিক অভিযান ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেবে। তিনি এ সংঘাতকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বলে উল্লেখ করেন।
তবে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় দেশটির রাষ্ট্রীয় ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের ঘোষণাকে ‘একটি দাবি’ হিসেবে উপস্থাপন করে।
যুদ্ধ শেষ করার বার্তা দিয়েছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ কয়েক ঘণ্টা আগে জানান, নজিরবিহীন শক্তি নিয়ে তারা ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে একই সময় ইসরায়েল সরকার তার আরব প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ইরানকে বার্তা পাঠিয়েছে যে তারা কয়েক দিনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী।
গত ১১ দিনে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ফাঁক তৈরি করে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগেই জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে আগ্রহী নন।
ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে জানান, ইসরায়েল ও ইরান একটি সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, ছয় ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং ২৪ ঘণ্টা পর যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ বিবেচিত হবে।
ট্রাম্প বলেন, এটি এমন একটি যুদ্ধ যা বহু বছর ধরে চলতে পারত, তবে তা থেমে গেছে। তিনি এটিকে ইতিহাসের ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যা দেন। যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কাতার মধ্যস্থতা করেছে বলে জানানো হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তবে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)-সম্পর্কিত সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, ইরান এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি এবং শিগগিরই তারা এই ঘোষণাকে ভুল প্রমাণ করবে।
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা
শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং সেগুলো ধ্বংস করার দাবি করে। এর পাল্টা জবাবে সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত আল উদেইদ মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। দোহার আকাশে তখন বিকট শব্দ ও আলোর ঝলক দেখা যায়।
এই ঘাঁটিতে প্রায় আট হাজার মার্কিন সেনা ও কিছু ব্রিটিশ সৈনিক কর্মরত ছিলেন। তবে কাতার জানায়, হামলার আগে ঘাঁটিটি খালি করা হয়েছিল এবং এতে কেউ হতাহত হয়নি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে সতর্ক করেছিল, যেন তারা উত্তেজনা না বাড়ায় এবং কূটনৈতিক পথে সমাধানে আসে।
ট্রাম্পের অবস্থানে পরিবর্তন
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান নীতিতে ট্রাম্পের অবস্থানে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। কিছুদিন আগেই তিনি ‘শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের’ কথা বলেছিলেন, আর এখন শান্তি ও সংযমের আহ্বান জানাচ্ছেন। এই আচরণ তার পররাষ্ট্রনীতির তাৎক্ষণিকতা ও সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দিকটি স্পষ্ট করে।
সংঘাতের সূচনা
১৩ জুন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের অভিযানে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, এই হামলা ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের লক্ষ্যে। জবাবে ইরান ‘ট্রু প্রমিস’ নামের অভিযানে ইসরায়েলের দিকে শত শত রকেট ও ড্রোন ছোড়ে। এরপর দুই দেশ পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়ায়।
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
মঙ্গলবার ভোরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি জানান, ইসরায়েল আক্রমণ বন্ধ করলে ইরানের আর জবাব দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। এর কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মতি জানানো হয়নি। ফলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে।
এর আগে ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের একাধিক এলাকায় বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এসব এলাকায় রাতে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, ইরানও ইসরায়েলের কিছু এলাকার বাসিন্দাদের সরতে বলেছে। মঙ্গলবার সকালে সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হবে বলে জানিয়েছিল ইরান।
সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই হামলাকে ‘খুব দুর্বল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হামলার পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে যায়।
শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইরান
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি জানান, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা পর্যন্ত ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ প্রতিহত করতে সর্বোচ্চ লড়াই করেছে ইরান। তিনি সামরিক বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এরপর যদি আর কোনো হামলা না হয়, তাহলে ইরানও পাল্টা আক্রমণ চালাবে না।
তবে তার এই বিবৃতি আসার আগ পর্যন্ত ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে তেহরানে একটি ‘দাবি’ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং উভয় দেশ সামরিক অভিযান ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেবে। তিনি এ সংঘাতকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বলে উল্লেখ করেন।
তবে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় দেশটির রাষ্ট্রীয় ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের ঘোষণাকে ‘একটি দাবি’ হিসেবে উপস্থাপন করে।
যুদ্ধ শেষ করার বার্তা দিয়েছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ কয়েক ঘণ্টা আগে জানান, নজিরবিহীন শক্তি নিয়ে তারা ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে একই সময় ইসরায়েল সরকার তার আরব প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ইরানকে বার্তা পাঠিয়েছে যে তারা কয়েক দিনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী।
গত ১১ দিনে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ফাঁক তৈরি করে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগেই জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে আগ্রহী নন।
ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে জানান, ইসরায়েল ও ইরান একটি সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, ছয় ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং ২৪ ঘণ্টা পর যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ বিবেচিত হবে।
ট্রাম্প বলেন, এটি এমন একটি যুদ্ধ যা বহু বছর ধরে চলতে পারত, তবে তা থেমে গেছে। তিনি এটিকে ইতিহাসের ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যা দেন। যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কাতার মধ্যস্থতা করেছে বলে জানানো হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তবে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)-সম্পর্কিত সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, ইরান এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি এবং শিগগিরই তারা এই ঘোষণাকে ভুল প্রমাণ করবে।
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা
শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং সেগুলো ধ্বংস করার দাবি করে। এর পাল্টা জবাবে সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত আল উদেইদ মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। দোহার আকাশে তখন বিকট শব্দ ও আলোর ঝলক দেখা যায়।
এই ঘাঁটিতে প্রায় আট হাজার মার্কিন সেনা ও কিছু ব্রিটিশ সৈনিক কর্মরত ছিলেন। তবে কাতার জানায়, হামলার আগে ঘাঁটিটি খালি করা হয়েছিল এবং এতে কেউ হতাহত হয়নি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে সতর্ক করেছিল, যেন তারা উত্তেজনা না বাড়ায় এবং কূটনৈতিক পথে সমাধানে আসে।
ট্রাম্পের অবস্থানে পরিবর্তন
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান নীতিতে ট্রাম্পের অবস্থানে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। কিছুদিন আগেই তিনি ‘শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের’ কথা বলেছিলেন, আর এখন শান্তি ও সংযমের আহ্বান জানাচ্ছেন। এই আচরণ তার পররাষ্ট্রনীতির তাৎক্ষণিকতা ও সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দিকটি স্পষ্ট করে।
সংঘাতের সূচনা
১৩ জুন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের অভিযানে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, এই হামলা ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের লক্ষ্যে। জবাবে ইরান ‘ট্রু প্রমিস’ নামের অভিযানে ইসরায়েলের দিকে শত শত রকেট ও ড্রোন ছোড়ে। এরপর দুই দেশ পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়ায়।