ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় ক্ষিপ্ত ইয়েমেনের হুথিরা। তারা লোহিত সাগরে ইসরায়েল ও মিত্র দেশের জাহাজে হামলা ও তা ধ্বংস করতে মোটেই কুণ্ঠাবোধ করে না। এই অবস্থায় ইসরায়েল হুথিদের ওপরও ক্ষুব্ধ। গত বৃহস্পতিবার নিখুঁত হামলা চালিয়ে হুথিদের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাবিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এতেও হুথিরা সাহজ হারায়নি। বরং তারা যে হামলার হুমকি দিয়েছিল, রোববার তা বাস্তবায়ন করেছে। হুথিদের ছোড়া একটি ড্রোন গত রোববার ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির দক্ষিণের রামন বিমানবন্দরে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আকাশসীমা ও বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে।
জেরুজালেম পোস্ট জানায়, সেপ্টেম্বরে ইয়েমেন থেকে নিক্ষেপ করা কয়েক ডজন ড্রোন ও ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। এখন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় নিয়মিত হয়ে উঠছে। হুথির হামলা ঠেকাতে ইসরায়েল স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রাখে সর্বক্ষণ। মাঝে মাঝেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হচ্ছে। একই মাসে ইসরায়েলের পশ্চিম নেগেভে হুথি ড্রোন আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এই ঘটনার অল্প সময় পর আরেকটি ড্রোন রামন বিমানবন্দরে পড়ে। কিন্তু কোনো সাইরেন বাজতে দেখা যায়নি। এই ঘটনা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষার দুর্বলতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে প্রতিনিয়ত হুথি ড্রোন কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর। এসব ঘটনা অনেক সময় প্রকাশ্যে আসে না। ইসরায়েলি বাহিনী জানালেই তবে মানুষ জানে। গত ২৮ আগস্ট ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) একটি ড্রোন আটক করে। তার ছয়দিন আগে আরেকটি ড্রোন তারা ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়। তবে র্যা মন বিমানবন্দরে আঘাত হানা ড্রোনটি আইডিএফকে হুথির শক্তি সম্পর্কে নতুন করে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে।
আইডিএফের কাছে আগে হুথি ড্রোন কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র মামুলি বিষয় ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, হুথিরা সামান্য হলেও ইসরায়েলকে আতংকে ফেলতে সক্ষম হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হুথিরা অসংখ্যা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে। এই অবস্থায় আইডিএফ হুথিকে আতংক মনে করে এখন।
হুথিরা মূলত ইরানিদের কাছ থেকে ড্রোন তৈরি শিখেছিল। তারা প্রাথমিকভাবে ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করে। ওই সময়ে হুথিদের ড্রোন হুমকি বৃদ্ধি পায়। হুথিরা রাডার, বিমানবন্দর এবং অন্যান্য স্থাপনায় হামলায় দক্ষ হয়ে ওঠে।
হুথির ড্রোনের পরিসর বেড়েছে: হুথিরা তাদের ড্রোনের পরিসর আরও বাড়িয়েছে। বিভিন্ন কায়দায় এই ড্রোন পরিচালনা করতে শিখেছে তারা। কিছু ড্রোনের মধ্যে রয়েছে একটি লম্বা টিউবের মতো ফিউজলেস। এগুলোর একটি ওয়ারহেড ও গাইডেন্স সিস্টেম রয়েছে। এগুলো সাধারণত লম্বা এবং ডানা আয়তাকার। এগুলো মূলত একটি বড় মডেলের বিমান ছিল। হুথি ড্রোন এবং তাদের পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত কিছু সিস্টেম নিয়ে বছরের পর বছর ইসরায়েল পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে। এতে ইসরায়েল নিশ্চিত হয়, হুথিদের কাছে ইরান ড্রোন রপ্তানি করে থাকে। ইরানের তৈরি ড্রোনের ইঞ্জিন হুথিদের হাতে রয়েছে। এখন হুথিরা নিজেরই ড্রোন বানাতে পারে। এমনকি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিও হুথিদের অনেকটা আয়ত্বে এসে গেছে।
২০২১ সালের স্যাটেলাইট ছবিতে হুথিদের ড্রোন উদ্ভাবনের বিষয়টি ধরা পড়ে। সেখানে দেখা যায়, তারা শাহেদ-১৩৬ ড্রোন উৎপাদন করছে, যে প্রযুক্তি তারা ইরানের কাছ থেকে পেয়েছে। ইরান দেখিয়েছে, তুলনামূলকভাবে সস্তা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে সৌদি জ্বালানি শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করা যেতে পারে। হুথিরাও একই প্রযুক্তি হাত করতে সক্ষম হয়। কারণ ইরান ইসরায়েলের জবাব দিতে হুথিদের ব্যবহার করতে চায় বলে মনে করে তেলআবিব।
ইরান রাশিয়ার কাছেও শাহেদ-১৩৬ ড্রোন রপ্তানি করেছিল, যা রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার কাজে ব্যবহার করে। রাশিয়া প্রথম দিকে প্রতি রাতে ২০ থেকে ১০০টি ড্রোন উৎক্ষেপণ করতো। এখন রাশিয়ার ড্রোন উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেড়েছে। সর্বশেষ হামলায়ও রাশিয়া ইউক্রেনে ৮০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই সংখ্যা অভূতপূর্ব।
অন্যদিকে হুথিরা ইসরায়েলে ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলের হাতে তাদের প্রধানমন্ত্রী নিহত হলেও তেলআবিবের কাছে তারা নতি স্বীকার করেনি।
হুথির টার্গেটে ইসরায়েলি বিমানবন্দর: বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ইসরায়েল হুথি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পর লোহিত সাগরের চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা তীব্র করার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠটি। সর্বশেষ রোববার রামন বিমানবন্দরের হামলটিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না ইসরায়েল।
দক্ষিণ প্রান্তে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত রিসোর্ট শহর ইলাত থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামন বিমানবন্দর। হামলাটিকে হুথিরা ‘শক্তিশালী সামরিক অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় ক্ষিপ্ত ইয়েমেনের হুথিরা। তারা লোহিত সাগরে ইসরায়েল ও মিত্র দেশের জাহাজে হামলা ও তা ধ্বংস করতে মোটেই কুণ্ঠাবোধ করে না। এই অবস্থায় ইসরায়েল হুথিদের ওপরও ক্ষুব্ধ। গত বৃহস্পতিবার নিখুঁত হামলা চালিয়ে হুথিদের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাবিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এতেও হুথিরা সাহজ হারায়নি। বরং তারা যে হামলার হুমকি দিয়েছিল, রোববার তা বাস্তবায়ন করেছে। হুথিদের ছোড়া একটি ড্রোন গত রোববার ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির দক্ষিণের রামন বিমানবন্দরে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আকাশসীমা ও বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে।
জেরুজালেম পোস্ট জানায়, সেপ্টেম্বরে ইয়েমেন থেকে নিক্ষেপ করা কয়েক ডজন ড্রোন ও ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। এখন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় নিয়মিত হয়ে উঠছে। হুথির হামলা ঠেকাতে ইসরায়েল স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রাখে সর্বক্ষণ। মাঝে মাঝেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হচ্ছে। একই মাসে ইসরায়েলের পশ্চিম নেগেভে হুথি ড্রোন আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এই ঘটনার অল্প সময় পর আরেকটি ড্রোন রামন বিমানবন্দরে পড়ে। কিন্তু কোনো সাইরেন বাজতে দেখা যায়নি। এই ঘটনা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষার দুর্বলতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে প্রতিনিয়ত হুথি ড্রোন কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর। এসব ঘটনা অনেক সময় প্রকাশ্যে আসে না। ইসরায়েলি বাহিনী জানালেই তবে মানুষ জানে। গত ২৮ আগস্ট ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) একটি ড্রোন আটক করে। তার ছয়দিন আগে আরেকটি ড্রোন তারা ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়। তবে র্যা মন বিমানবন্দরে আঘাত হানা ড্রোনটি আইডিএফকে হুথির শক্তি সম্পর্কে নতুন করে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে।
আইডিএফের কাছে আগে হুথি ড্রোন কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র মামুলি বিষয় ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, হুথিরা সামান্য হলেও ইসরায়েলকে আতংকে ফেলতে সক্ষম হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হুথিরা অসংখ্যা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে। এই অবস্থায় আইডিএফ হুথিকে আতংক মনে করে এখন।
হুথিরা মূলত ইরানিদের কাছ থেকে ড্রোন তৈরি শিখেছিল। তারা প্রাথমিকভাবে ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করে। ওই সময়ে হুথিদের ড্রোন হুমকি বৃদ্ধি পায়। হুথিরা রাডার, বিমানবন্দর এবং অন্যান্য স্থাপনায় হামলায় দক্ষ হয়ে ওঠে।
হুথির ড্রোনের পরিসর বেড়েছে: হুথিরা তাদের ড্রোনের পরিসর আরও বাড়িয়েছে। বিভিন্ন কায়দায় এই ড্রোন পরিচালনা করতে শিখেছে তারা। কিছু ড্রোনের মধ্যে রয়েছে একটি লম্বা টিউবের মতো ফিউজলেস। এগুলোর একটি ওয়ারহেড ও গাইডেন্স সিস্টেম রয়েছে। এগুলো সাধারণত লম্বা এবং ডানা আয়তাকার। এগুলো মূলত একটি বড় মডেলের বিমান ছিল। হুথি ড্রোন এবং তাদের পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত কিছু সিস্টেম নিয়ে বছরের পর বছর ইসরায়েল পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে। এতে ইসরায়েল নিশ্চিত হয়, হুথিদের কাছে ইরান ড্রোন রপ্তানি করে থাকে। ইরানের তৈরি ড্রোনের ইঞ্জিন হুথিদের হাতে রয়েছে। এখন হুথিরা নিজেরই ড্রোন বানাতে পারে। এমনকি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিও হুথিদের অনেকটা আয়ত্বে এসে গেছে।
২০২১ সালের স্যাটেলাইট ছবিতে হুথিদের ড্রোন উদ্ভাবনের বিষয়টি ধরা পড়ে। সেখানে দেখা যায়, তারা শাহেদ-১৩৬ ড্রোন উৎপাদন করছে, যে প্রযুক্তি তারা ইরানের কাছ থেকে পেয়েছে। ইরান দেখিয়েছে, তুলনামূলকভাবে সস্তা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে সৌদি জ্বালানি শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করা যেতে পারে। হুথিরাও একই প্রযুক্তি হাত করতে সক্ষম হয়। কারণ ইরান ইসরায়েলের জবাব দিতে হুথিদের ব্যবহার করতে চায় বলে মনে করে তেলআবিব।
ইরান রাশিয়ার কাছেও শাহেদ-১৩৬ ড্রোন রপ্তানি করেছিল, যা রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার কাজে ব্যবহার করে। রাশিয়া প্রথম দিকে প্রতি রাতে ২০ থেকে ১০০টি ড্রোন উৎক্ষেপণ করতো। এখন রাশিয়ার ড্রোন উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেড়েছে। সর্বশেষ হামলায়ও রাশিয়া ইউক্রেনে ৮০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই সংখ্যা অভূতপূর্ব।
অন্যদিকে হুথিরা ইসরায়েলে ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলের হাতে তাদের প্রধানমন্ত্রী নিহত হলেও তেলআবিবের কাছে তারা নতি স্বীকার করেনি।
হুথির টার্গেটে ইসরায়েলি বিমানবন্দর: বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ইসরায়েল হুথি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পর লোহিত সাগরের চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা তীব্র করার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠটি। সর্বশেষ রোববার রামন বিমানবন্দরের হামলটিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না ইসরায়েল।
দক্ষিণ প্রান্তে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত রিসোর্ট শহর ইলাত থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামন বিমানবন্দর। হামলাটিকে হুথিরা ‘শক্তিশালী সামরিক অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।