২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা
হোয়াইট হাউজে সোমবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধে অবসান ঘটানোর উদ্দেশ্যে বিশদ ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প এই দিনটিকে শান্তির জন্য ঐতিহাসিক দিন হিসেবে অভিহিত করে জানান, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে পরিকল্পনাটি নিয়ে চুক্তির খুব কাছাকাছি আছেন এবং এটি হামাসসহ অন্যান্য পক্ষের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
ট্রাম্প বলেন, পরিকল্পনাটির বাস্তবায়নে বহু আরব ও মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে — সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। পরিকল্পনার প্রধান দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা, হামাসের নেটওয়ার্ক ও সব সুড়ঙ্গ ও উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস করা এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক সহায়তা অবাধে গাজায় প্রবেশের ব্যবস্থা করা।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সতর্কতা হিসেবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর গাজার শাসন ব্যবস্থায় ভবিষ্যতে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না; কিন্তু একই সঙ্গে একটি স্বতন্ত্র ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য পথ খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন তদারকির জন্য একটি ‘শান্তি বোর্ড’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে নিজে থাকবেন ট্রাম্প। বোর্ডে অন্যান্য দেশগুলোর নেতা এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বও থাকার কথা বলা হয়েছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, যদি আরব ও মুসলিম দেশগুলো হামাসের সঙ্গে কাজ করে এবং তাদের সঙ্গে কোনো বোঝাপড়া গড়ে ওঠে, তবে তা শান্তি স্থাপনে সহায়ক হবে; আর যদি আরবরা হামাসের সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ইসরায়েলকে হামাসের হুমকি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবে। তিনি আশ্বাস দেন যে চুক্তি গৃহীত হলে গাজায় অবিলম্বে লড়াই বন্ধ হবে।
নেতানিয়াহু অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়ে বললেন, এই বৈঠক কেবল গাজায় যুদ্ধ শেষ করার উদ্দেশ্যই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পটভূমি গঠনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “গাজার যুদ্ধ শেষ করতে আপনার পরিকল্পনাকে আমি সমর্থন করি।” তিনি আশা প্রকাশ করেন যে পরিকল্পনা ইসরায়েলের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং দেশের মানুষকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনবে।
পরিকল্পনার নির্দিষ্ট চাহিদার মধ্যে রয়েছে — অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে জীবিত ২০ জন জিম্মিকে ফেরত দেওয়া এবং অন্যান্য মেসেজ হিসেবে বাকিদের মরদেহ হস্তান্তর। এর বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগারে থাকা শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়ে গাজায় তাত্ক্ষণিক মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেবে। পাশাপাশি ধাপে ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে বলে বলা হয়েছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত ট্রাম্প জানান, হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রস্তাব পাননি এবং তাদের সম্মতি মেলেনি। হামাস পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে যে তাদের কাছে এখনও কোনো প্রস্তাব পাঠানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আনুষ্ঠানিক সম্মতি ও বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক শর্তাবলীর চূড়ান্তকরণ বাকি থাকায় পরিকল্পনার অনেক খুঁটিনাটি এখনও নির্ধারণ হয়নি, সে কথাও ট্রাম্প তদন্তীভাবে স্বীকার করেছেন।
পরিকল্পনার বাস্তবতা ও তা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে তা নির্ভর করবে হামাস, আরব দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বয় ও বাস্তব রাজনীতি কিভাবে এগোয়—এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। পরিকল্পনার উপযুক্ত প্রণয়ন, জিম্মিদের নিশ্চয়তা ও তাত্ক্ষণিক মানবিক সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করলে সাম্প্রতিক সংঘাত থেকে নিরন্তর সংহতি ও স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন।
২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা
মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
হোয়াইট হাউজে সোমবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধে অবসান ঘটানোর উদ্দেশ্যে বিশদ ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প এই দিনটিকে শান্তির জন্য ঐতিহাসিক দিন হিসেবে অভিহিত করে জানান, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে পরিকল্পনাটি নিয়ে চুক্তির খুব কাছাকাছি আছেন এবং এটি হামাসসহ অন্যান্য পক্ষের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
ট্রাম্প বলেন, পরিকল্পনাটির বাস্তবায়নে বহু আরব ও মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে — সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। পরিকল্পনার প্রধান দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা, হামাসের নেটওয়ার্ক ও সব সুড়ঙ্গ ও উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস করা এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক সহায়তা অবাধে গাজায় প্রবেশের ব্যবস্থা করা।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সতর্কতা হিসেবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর গাজার শাসন ব্যবস্থায় ভবিষ্যতে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না; কিন্তু একই সঙ্গে একটি স্বতন্ত্র ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য পথ খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন তদারকির জন্য একটি ‘শান্তি বোর্ড’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে নিজে থাকবেন ট্রাম্প। বোর্ডে অন্যান্য দেশগুলোর নেতা এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বও থাকার কথা বলা হয়েছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, যদি আরব ও মুসলিম দেশগুলো হামাসের সঙ্গে কাজ করে এবং তাদের সঙ্গে কোনো বোঝাপড়া গড়ে ওঠে, তবে তা শান্তি স্থাপনে সহায়ক হবে; আর যদি আরবরা হামাসের সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ইসরায়েলকে হামাসের হুমকি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবে। তিনি আশ্বাস দেন যে চুক্তি গৃহীত হলে গাজায় অবিলম্বে লড়াই বন্ধ হবে।
নেতানিয়াহু অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়ে বললেন, এই বৈঠক কেবল গাজায় যুদ্ধ শেষ করার উদ্দেশ্যই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পটভূমি গঠনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “গাজার যুদ্ধ শেষ করতে আপনার পরিকল্পনাকে আমি সমর্থন করি।” তিনি আশা প্রকাশ করেন যে পরিকল্পনা ইসরায়েলের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং দেশের মানুষকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনবে।
পরিকল্পনার নির্দিষ্ট চাহিদার মধ্যে রয়েছে — অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে জীবিত ২০ জন জিম্মিকে ফেরত দেওয়া এবং অন্যান্য মেসেজ হিসেবে বাকিদের মরদেহ হস্তান্তর। এর বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগারে থাকা শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়ে গাজায় তাত্ক্ষণিক মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেবে। পাশাপাশি ধাপে ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে বলে বলা হয়েছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত ট্রাম্প জানান, হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রস্তাব পাননি এবং তাদের সম্মতি মেলেনি। হামাস পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে যে তাদের কাছে এখনও কোনো প্রস্তাব পাঠানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আনুষ্ঠানিক সম্মতি ও বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক শর্তাবলীর চূড়ান্তকরণ বাকি থাকায় পরিকল্পনার অনেক খুঁটিনাটি এখনও নির্ধারণ হয়নি, সে কথাও ট্রাম্প তদন্তীভাবে স্বীকার করেছেন।
পরিকল্পনার বাস্তবতা ও তা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে তা নির্ভর করবে হামাস, আরব দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বয় ও বাস্তব রাজনীতি কিভাবে এগোয়—এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। পরিকল্পনার উপযুক্ত প্রণয়ন, জিম্মিদের নিশ্চয়তা ও তাত্ক্ষণিক মানবিক সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করলে সাম্প্রতিক সংঘাত থেকে নিরন্তর সংহতি ও স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন।