alt

যুক্তরাষ্ট্রে অচলাবস্থা

শাটডাউন কী? কতদিন অচল থাকতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন?

ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে লাখো কর্মী

বিদেশী সংবাদ মাধোম : বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

শেষ পর্যন্ত শাটডাউন ঠেকাতে পারলো না যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম এখন বন্ধ হয়ে গেছে - সিএনএন

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন শুরু হয়ে গেছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হয়ে গেছে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন সিনেট ট্রাম্প প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে না পারায় এই ‘শাটডাউন’ শুরু হয়। যদিও এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বৈঠক করেছিলেন সিনেটের ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান সদস্যরা। কিন্তু তহবিল নিয়ে একমত হতে পারেননি তারা।

এর আগে সোমবার ট্রাম্প নিজেও সিনেট সদস্যদের নিয়ে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন। মতানৈক্য চলতে থাকায় শাটডাউনের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেয় হোয়াইট হাউস। পরে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ১০টা) থেকে ‘শাটডাউন’ শুরু হয় উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে।

শাটডাউন কী: যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি অর্থবছরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কাজ চালানোর জন্য মার্কিন কংগ্রেসকে অর্থ বরাদ্দ করতে হয়। অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। যদি এই সময়ের মধ্যে সিনেট সদস্যরা একমত হয়ে ব্যয় বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে না পারেন, তবে বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে যতদিন পর্যন্ত কংগ্রেস থেকে অর্থ বরাদ্দ না করা হচ্ছে, ততদিন দপ্তরগুলো বন্ধ থাকবে। ১০০ সদস্যের মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩। যে কোনও বিল পাস করাতে অন্তত ৬০টি ভোটের প্রয়োজন হয়। সেই হিসেবে সাত জন ডেমোক্র্যাট সদস্যের সমর্থন তাদের প্রয়োজন ছিল। সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিলে তা হয়নি। বিলটি ৪৭–৫৩ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়।

আর সেই কারণে সিনেটের অনুমোদনও মেলেনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ব্যয় বাজেট গঠনকারী ১২টি বিলের কোনওটিই এখনও আইনসভার দুই কক্ষে পাস হয়নি। ফলে শাটডাউনটি হতে চলেছে ‘সম্পূর্ণ শাটডাউন’।

কী কী বন্ধ, কী কী খোলা: ‘শাটডাউন’-এ মার্কিন সরকারের অধিকাংশ দপ্তরের কাজই বন্ধ হয়ে যাবে। চালু থাকবে কেবল জরুরি পরিষেবাগুলো। কোন কোন দপ্তর চালু থাকবে, কত জন কর্মীকে নিয়ে চলবে, তা আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হয়।

যারা শাটডাউন চলাকালীনও কাজ করবেন, তাদের অধিকাংশই বেতন পাবেন না। ‘শাটডাউন’ শেষ হলে আবার তাদের বেতন দেওয়া হবে।

এছাড়া শাটডাউনের প্রভাব পড়বে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য দপ্তরে। জরুরি পরিষেবা চালু থাকলেও অনেক কাজই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোনও কোনও কাজ পিছিয়ে যেতে পারে বা সাময়িক ভাবে বন্ধও হতে পারে। মার্কিন শিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, অধিকাংশ কর্মীকেই আপাতত বসিয়ে রাখা হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি চালু থাকবে। এই দপ্তরের কর্মীদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। শুল্ক এবং সীমান্তরক্ষা দপ্তরের কর্মীদেরও কাজ করতে হবে। এছাড়া শাটডাউনের মধ্যেও অভিবাসন, পরিবহন নিরাপত্তা, সিক্রেট সার্ভিস, নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবার কাজ চালু থাকবে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরে বাছাই করা কিছু অংশ খোলা রাখা হবে। তার মধ্যে দক্ষিণ সীমান্ত, পশ্চিম এশিয়া এবং গোল্ডেন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অগ্রাধিকার পাবে বলে দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বয়স্ক নাগরিক, প্রতিবন্ধী এবং অন্যান্যদের মার্কিন সরকারের তরফ থেকে যে সামাজিক সুরক্ষা ভাতা দেওয়া হয়, তা বন্ধ হচ্ছে না। মার্কিন শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রক্রিয়াকরণের জন্য তহবিল রয়েছে, ততক্ষণ মার্কিন বেকারদের সুযোগসুবিধাগুলো বন্ধ হবে না। তবে বিনা বেতনে কাজ করতে হবে এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারীদের।

অবশ্য ঠিক কতদিন এই শাটডাউন চলতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম দফায় মার্কিন প্রশাসন ৩৫ দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল। এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সেটাই সবচেয়ে বড় শাটডাউন। যদিও তহবিল সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় ডেমোক্র্যাটদেরই দোষারোপ করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি ইতোমধ্যে গণছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়ে রেখেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, “শাটডাউনের অনেক ভালো দিকও রয়েছে। আমরা যেগুলো চাই না, তেমন অনেক জিনিস ফেলে দিতে পারি। অনেককে ছাঁটাই করা হবে। তারা প্রত্যেকেই হবেন ডেমোক্র্যাট।”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ব্যয় বিল পাস না হওয়ায় সরকারি কার্যক্রমে শাটডাউন শুরু হয়েছে। অর্থ্যাৎ, বেশ কিছু সরকারি দপ্তরের সেবাদান বন্ধ হয়ে গেছে। এসব দপ্তরের কর্মীদের অবৈতনিক ছুটিতে থাকতে হবে। এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হতে শুরু করে। এটি কতদিন চলবে তা এখনো জানা যায়নি। সাত বছর আগেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই শাটডাউন ছিল সবচেয়ে দীর্ঘতম- ৩৫ দিন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। এর আগেই কংগ্রেসে ফেডারেল বিভাগ ও এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ অনুমোদন দিতে হয়। আইনপ্রণেতারা পুরো বছরের জন্য ব্যয় পরিকল্পনা পাস করতে ব্যর্থ হলে অনেক সংস্থা ও দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। তবে জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো চালু থাকে। যেমন- জাতীয় নিরাপত্তা, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, যেহেতু কংগ্রেসে ব্যয় চালানোর বিল পাস হয়নি, তাই শাটডাউন না কাটা পর্যন্ত কিছু দপ্তরের কর্মীরা বেতন পাবেন না।

এ ক্ষেত্রে লাখো কর্মী ছাঁটাইও হতে পারেন। অর্থ বিলে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটরা স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাড়তি ভর্তুকি দাবি করেছিল। কিন্তু তা নাকচ করে রিপাবলিকানরা। ফলাফল বিলটি নিয়ে যখন সিনেটে ভোটাভুটি শুরু হয় তখন উভয়পক্ষ একে অপরের প্রস্তাব আটকে দেওয়া শুরু করে। বিল পাসের জন্য রিপাবলিকানদের অন্তত ৬০টি ভোট দরকার ছিল। কিন্তু তারা পায় ৫৫টি।

ছবি

গাজায় ত্রাণবাহী জাহাজ আটকে দিলো ইসরায়েল

ছবি

জেন জি বিক্ষোভে উত্তাল মরক্কো

ছবি

বিশ্বের প্রথম হাফ-ট্রিলিয়নিয়ার হলেন ইলন মাস্ক

ছবি

আমরা ইন্টারনেট বন্ধ করিনি: তালেবান

ছবি

ফ্লোটিলার জাহাজ আটকের প্রতিবাদে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ

ছবি

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় কি উভয় সংকটে নেতানিয়াহু?

ছবি

কংগ্রেসে অর্থ বিল নাকচ, সংকটে ট্রাম্প প্রশাসন

ছবি

চাকরি, ভ্রমণ ও পার্ক—শাটডাউনে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন মার্কিনিরা

ছবি

গাজামুখী ১৩ নৌযান আটকাল ইসরায়েল, আটক ৩৭ দেশের ২০০ অধিকারকর্মী

ছবি

ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনায় প্যালেস্টাইন প্রসঙ্গ নেই

ছবি

ফিলিপাইনে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৯

ছবি

এবার মরক্কোতে জেন-জির ঢেউ, গণগ্রেপ্তারের পাশাপাশি সংলাপের প্রস্তাব

ছবি

আফগানিস্তানে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, ‘শেষ আশা’ও হারাচ্ছেন নারীরা

ছবি

ট্রাম্প হামাসকে সময় দিলো ৩–৪ দিন, নয়তো ‘দুঃখজনক পরিণতির’ হুঁশিয়ারি

ছবি

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ নেই: হামাস

ছবি

ফিলিপিন্সে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ৬৯

ছবি

লেবার পার্টি গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ভোট দিল

ছবি

কানাডা ভারতের বিষ্ণোই গ্যাংকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ ঘোষণা

ছবি

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনায় অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা

ছবি

এবার ‘জেন–জি’ আন্দোলনে মাদাগাস্কারে সরকার ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট

ছবি

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট

ছবি

ঘাঁটি বানাতে রোহিঙ্গাদের গ্রাম ধ্বংস করে মায়ানমার সেনারা

ছবি

কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত রাখলেন লাদাখের নেতারা

ছবি

কাতারে হামলার জন্য ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন মঙ্গলবার

ছবি

মানবাধিকার কর্মীদের ঘন ঘন বাংলাদেশ সফরের আহ্বান ইউনূসের

ছবি

‘গাজায় যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ হবে’, বললেন ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু

ছবি

নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী অলি’র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে গির্জায় বন্দুকধারী গুলিতে নিহত ৪, আহত ৮

ছবি

মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ কিছুর ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

ছবি

বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর উদ্বোধন করলো চীন

ছবি

নতুন অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা ইরানিদের

ছবি

গাজায় অবিরাম বোমা হামলার শিকার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারাও

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগানের গির্জায় বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৪

ছবি

‘ভিত্তিহীন’ সরকারের হাতে দেশ ছেড়ে দিয়ে পালাবেন না, জনসম্মুখে এসে ঘোষণা নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির পক্ষে বারাক ওবামা

tab

যুক্তরাষ্ট্রে অচলাবস্থা

শাটডাউন কী? কতদিন অচল থাকতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন?

ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে লাখো কর্মী

বিদেশী সংবাদ মাধোম

শেষ পর্যন্ত শাটডাউন ঠেকাতে পারলো না যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম এখন বন্ধ হয়ে গেছে - সিএনএন

বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন শুরু হয়ে গেছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হয়ে গেছে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন সিনেট ট্রাম্প প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে না পারায় এই ‘শাটডাউন’ শুরু হয়। যদিও এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বৈঠক করেছিলেন সিনেটের ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান সদস্যরা। কিন্তু তহবিল নিয়ে একমত হতে পারেননি তারা।

এর আগে সোমবার ট্রাম্প নিজেও সিনেট সদস্যদের নিয়ে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন। মতানৈক্য চলতে থাকায় শাটডাউনের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেয় হোয়াইট হাউস। পরে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ১০টা) থেকে ‘শাটডাউন’ শুরু হয় উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে।

শাটডাউন কী: যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি অর্থবছরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কাজ চালানোর জন্য মার্কিন কংগ্রেসকে অর্থ বরাদ্দ করতে হয়। অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। যদি এই সময়ের মধ্যে সিনেট সদস্যরা একমত হয়ে ব্যয় বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে না পারেন, তবে বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে যতদিন পর্যন্ত কংগ্রেস থেকে অর্থ বরাদ্দ না করা হচ্ছে, ততদিন দপ্তরগুলো বন্ধ থাকবে। ১০০ সদস্যের মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩। যে কোনও বিল পাস করাতে অন্তত ৬০টি ভোটের প্রয়োজন হয়। সেই হিসেবে সাত জন ডেমোক্র্যাট সদস্যের সমর্থন তাদের প্রয়োজন ছিল। সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিলে তা হয়নি। বিলটি ৪৭–৫৩ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়।

আর সেই কারণে সিনেটের অনুমোদনও মেলেনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ব্যয় বাজেট গঠনকারী ১২টি বিলের কোনওটিই এখনও আইনসভার দুই কক্ষে পাস হয়নি। ফলে শাটডাউনটি হতে চলেছে ‘সম্পূর্ণ শাটডাউন’।

কী কী বন্ধ, কী কী খোলা: ‘শাটডাউন’-এ মার্কিন সরকারের অধিকাংশ দপ্তরের কাজই বন্ধ হয়ে যাবে। চালু থাকবে কেবল জরুরি পরিষেবাগুলো। কোন কোন দপ্তর চালু থাকবে, কত জন কর্মীকে নিয়ে চলবে, তা আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হয়।

যারা শাটডাউন চলাকালীনও কাজ করবেন, তাদের অধিকাংশই বেতন পাবেন না। ‘শাটডাউন’ শেষ হলে আবার তাদের বেতন দেওয়া হবে।

এছাড়া শাটডাউনের প্রভাব পড়বে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য দপ্তরে। জরুরি পরিষেবা চালু থাকলেও অনেক কাজই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোনও কোনও কাজ পিছিয়ে যেতে পারে বা সাময়িক ভাবে বন্ধও হতে পারে। মার্কিন শিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, অধিকাংশ কর্মীকেই আপাতত বসিয়ে রাখা হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি চালু থাকবে। এই দপ্তরের কর্মীদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। শুল্ক এবং সীমান্তরক্ষা দপ্তরের কর্মীদেরও কাজ করতে হবে। এছাড়া শাটডাউনের মধ্যেও অভিবাসন, পরিবহন নিরাপত্তা, সিক্রেট সার্ভিস, নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবার কাজ চালু থাকবে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরে বাছাই করা কিছু অংশ খোলা রাখা হবে। তার মধ্যে দক্ষিণ সীমান্ত, পশ্চিম এশিয়া এবং গোল্ডেন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অগ্রাধিকার পাবে বলে দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বয়স্ক নাগরিক, প্রতিবন্ধী এবং অন্যান্যদের মার্কিন সরকারের তরফ থেকে যে সামাজিক সুরক্ষা ভাতা দেওয়া হয়, তা বন্ধ হচ্ছে না। মার্কিন শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রক্রিয়াকরণের জন্য তহবিল রয়েছে, ততক্ষণ মার্কিন বেকারদের সুযোগসুবিধাগুলো বন্ধ হবে না। তবে বিনা বেতনে কাজ করতে হবে এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারীদের।

অবশ্য ঠিক কতদিন এই শাটডাউন চলতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম দফায় মার্কিন প্রশাসন ৩৫ দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল। এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সেটাই সবচেয়ে বড় শাটডাউন। যদিও তহবিল সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় ডেমোক্র্যাটদেরই দোষারোপ করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি ইতোমধ্যে গণছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়ে রেখেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, “শাটডাউনের অনেক ভালো দিকও রয়েছে। আমরা যেগুলো চাই না, তেমন অনেক জিনিস ফেলে দিতে পারি। অনেককে ছাঁটাই করা হবে। তারা প্রত্যেকেই হবেন ডেমোক্র্যাট।”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ব্যয় বিল পাস না হওয়ায় সরকারি কার্যক্রমে শাটডাউন শুরু হয়েছে। অর্থ্যাৎ, বেশ কিছু সরকারি দপ্তরের সেবাদান বন্ধ হয়ে গেছে। এসব দপ্তরের কর্মীদের অবৈতনিক ছুটিতে থাকতে হবে। এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হতে শুরু করে। এটি কতদিন চলবে তা এখনো জানা যায়নি। সাত বছর আগেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই শাটডাউন ছিল সবচেয়ে দীর্ঘতম- ৩৫ দিন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। এর আগেই কংগ্রেসে ফেডারেল বিভাগ ও এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ অনুমোদন দিতে হয়। আইনপ্রণেতারা পুরো বছরের জন্য ব্যয় পরিকল্পনা পাস করতে ব্যর্থ হলে অনেক সংস্থা ও দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। তবে জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো চালু থাকে। যেমন- জাতীয় নিরাপত্তা, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, যেহেতু কংগ্রেসে ব্যয় চালানোর বিল পাস হয়নি, তাই শাটডাউন না কাটা পর্যন্ত কিছু দপ্তরের কর্মীরা বেতন পাবেন না।

এ ক্ষেত্রে লাখো কর্মী ছাঁটাইও হতে পারেন। অর্থ বিলে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটরা স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাড়তি ভর্তুকি দাবি করেছিল। কিন্তু তা নাকচ করে রিপাবলিকানরা। ফলাফল বিলটি নিয়ে যখন সিনেটে ভোটাভুটি শুরু হয় তখন উভয়পক্ষ একে অপরের প্রস্তাব আটকে দেওয়া শুরু করে। বিল পাসের জন্য রিপাবলিকানদের অন্তত ৬০টি ভোট দরকার ছিল। কিন্তু তারা পায় ৫৫টি।

back to top