বিশ্বে নতুন এক পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়া ও চীনের সমান হারে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে।
বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক এক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে পোস্ট করে বলেন, অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির কারণে আমি যুদ্ধ দফতরকে (পেন্টাগন) নির্দেশ দিয়েছি যাতে তারা আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করে। এই প্রক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে।
১৯৯২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। একই সময়ের পর থেকে রাশিয়া ও চীনও এমন কোনও পরীক্ষা চালায়নি। ফলে ট্রাম্পের ‘সমানভাবে পরীক্ষা’ মন্তব্যে কী ধরনের কর্মসূচি শুরু হবে, তা স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকদের মতে, এটি রাশিয়ার সাম্প্রতিক সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মতো প্রতীকী কার্যক্রম হতে পারে। ১৯৯৮ সালের পর উত্তর কোরিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ নিশ্চিতভাবে পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা চালায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো কম্পিউটার সিমুলেশন, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং উপ-গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা চালিয়ে নিজেদের অস্ত্রভান্ডার সচল রাখছে।
বৈঠকের পর ট্রাম্প বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, আমি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ দেখতে চাই। আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সে বিষয়ে কথা বলছি এবং চীনকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) মেনে চলে এবং এমন পদক্ষেপ নেয় যা আঞ্চলিক শান্তিকে সমর্থন করে, তার বিপরীত নয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রতিরক্ষামূলক নিরাপত্তা নীতি অনুসরণ করছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত রবিবার ঘোষণা করেন, তার দেশ সফলভাবে ‘বুরেভেস্তনিক’ নামের পরমাণুচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের অংশ বলে ক্রেমলিন দাবি করেছে। ট্রাম্প এই পরীক্ষাকে ‘অনুপযুক্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বুধবার পুতিন বলেছেন, রাশিয়া আরও একটি ‘পোসেইডন’ নামের পরমাণু-চালিত সুপার টর্পেডোর পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছে, যা সমুদ্রের নিচে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে তেজস্ক্রিয় সুনামি সৃষ্টি করতে সক্ষম। ট্রাম্প তার পোস্টে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের সর্বাধিক পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, যা বাস্তবে সঠিক নয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা আইক্যান (ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপন্স) জানিয়েছে, রাশিয়ার হাতে বর্তমানে ৫ হাজার ৫০০টির বেশি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৪৪।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা ‘ডিভাইডার’ কোডনামে ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নেভাদা ন্যাশনাল সিকিউরিটি সাইটে অনুষ্ঠিত হয়। সে বছরই প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ ভূগর্ভস্থ পরীক্ষার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এখনও সেই স্থানে পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার সক্ষমতা রয়েছে।
ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে দেশটির ভেতরে সমালোচনা ছড়িয়েছে। নেভাদা অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেস সদস্য দিনা টাইটাস এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, একদম নয়। আমি এই পরিকল্পনা বন্ধে আইন প্রস্তাব আনব। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই বহুদিন ধরে অস্ত্র প্রতিযোগিতা থামানোর আহ্বান জানালেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি হয়নি। ক্রেমলিন সম্প্রতি ট্রাম্পের ‘গোল্ডেন ডোম’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে, যা ট্রাম্প দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অভেদ্য’ করে তুলবে।
এর আগে তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পামাণবিক অস্ত্রভান্ডার ‘দশগুণ’ বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, বিশ্ব যতক্ষণ না পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ে বোধোদয় লাভ করছে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রকে তার পারমাণবিক ক্ষমতা ব্যাপকভাবে শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রমাণ করছে যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে নতুন এক পারমাণবিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এর প্রভাব বৈশ্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর গভীর ছায়া ফেলতে পারে। সোভিয়েত রাশিয়ার আনুষ্ঠানিক বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয় ১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এর মধ্য দিয়ে শীতল যুদ্ধেরও অবসান ঘটে। পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাও ধীরে ধীরে কমে আসে।
যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ১৯৯২ সালে ও চীন ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। অন্যদিকে ১৯৯০ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা স্থগিত করে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া। এর পর থেকে রাশিয়া এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি। ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘের কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার?টেস্ট?ব্যান ট্রিটিতে (সিটিবিটি) যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ সই করে। তখন থেকে বিশ্বের শীর্ষ এই তিন সামরিক শক্তি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি। তবে এসব দেশ নিয়মিতভাবে বিভিন্ন মাত্রার পারমাণবিক সক্ষমতা বা পরমাণুশক্তিচালিত নানা অস্ত্র ও ব্যবস্থার পরীক্ষা চালিয়ে আসছে।
কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া যাবে না ফারহান হক, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উপমুখপাত্র এ পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কার্যক্রম আবার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেই তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘অন্য দেশগুলোর পারমাণবিক পরীক্ষা কর্মসূচির কারণে আমি ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ারকে (প্রতিরক্ষা দপ্তর) পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা সমানতালে শুরুর নির্দেশ দিয়েছি।’
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
বিশ্বে নতুন এক পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়া ও চীনের সমান হারে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে।
বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক এক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে পোস্ট করে বলেন, অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির কারণে আমি যুদ্ধ দফতরকে (পেন্টাগন) নির্দেশ দিয়েছি যাতে তারা আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করে। এই প্রক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে।
১৯৯২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। একই সময়ের পর থেকে রাশিয়া ও চীনও এমন কোনও পরীক্ষা চালায়নি। ফলে ট্রাম্পের ‘সমানভাবে পরীক্ষা’ মন্তব্যে কী ধরনের কর্মসূচি শুরু হবে, তা স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকদের মতে, এটি রাশিয়ার সাম্প্রতিক সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মতো প্রতীকী কার্যক্রম হতে পারে। ১৯৯৮ সালের পর উত্তর কোরিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ নিশ্চিতভাবে পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা চালায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো কম্পিউটার সিমুলেশন, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং উপ-গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা চালিয়ে নিজেদের অস্ত্রভান্ডার সচল রাখছে।
বৈঠকের পর ট্রাম্প বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, আমি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ দেখতে চাই। আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সে বিষয়ে কথা বলছি এবং চীনকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) মেনে চলে এবং এমন পদক্ষেপ নেয় যা আঞ্চলিক শান্তিকে সমর্থন করে, তার বিপরীত নয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রতিরক্ষামূলক নিরাপত্তা নীতি অনুসরণ করছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত রবিবার ঘোষণা করেন, তার দেশ সফলভাবে ‘বুরেভেস্তনিক’ নামের পরমাণুচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের অংশ বলে ক্রেমলিন দাবি করেছে। ট্রাম্প এই পরীক্ষাকে ‘অনুপযুক্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বুধবার পুতিন বলেছেন, রাশিয়া আরও একটি ‘পোসেইডন’ নামের পরমাণু-চালিত সুপার টর্পেডোর পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছে, যা সমুদ্রের নিচে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে তেজস্ক্রিয় সুনামি সৃষ্টি করতে সক্ষম। ট্রাম্প তার পোস্টে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের সর্বাধিক পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, যা বাস্তবে সঠিক নয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা আইক্যান (ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপন্স) জানিয়েছে, রাশিয়ার হাতে বর্তমানে ৫ হাজার ৫০০টির বেশি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৪৪।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা ‘ডিভাইডার’ কোডনামে ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নেভাদা ন্যাশনাল সিকিউরিটি সাইটে অনুষ্ঠিত হয়। সে বছরই প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ ভূগর্ভস্থ পরীক্ষার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এখনও সেই স্থানে পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার সক্ষমতা রয়েছে।
ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে দেশটির ভেতরে সমালোচনা ছড়িয়েছে। নেভাদা অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেস সদস্য দিনা টাইটাস এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, একদম নয়। আমি এই পরিকল্পনা বন্ধে আইন প্রস্তাব আনব। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই বহুদিন ধরে অস্ত্র প্রতিযোগিতা থামানোর আহ্বান জানালেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি হয়নি। ক্রেমলিন সম্প্রতি ট্রাম্পের ‘গোল্ডেন ডোম’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে, যা ট্রাম্প দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অভেদ্য’ করে তুলবে।
এর আগে তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পামাণবিক অস্ত্রভান্ডার ‘দশগুণ’ বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, বিশ্ব যতক্ষণ না পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ে বোধোদয় লাভ করছে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রকে তার পারমাণবিক ক্ষমতা ব্যাপকভাবে শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রমাণ করছে যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে নতুন এক পারমাণবিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এর প্রভাব বৈশ্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর গভীর ছায়া ফেলতে পারে। সোভিয়েত রাশিয়ার আনুষ্ঠানিক বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয় ১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এর মধ্য দিয়ে শীতল যুদ্ধেরও অবসান ঘটে। পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাও ধীরে ধীরে কমে আসে।
যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ১৯৯২ সালে ও চীন ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। অন্যদিকে ১৯৯০ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা স্থগিত করে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া। এর পর থেকে রাশিয়া এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি। ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘের কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার?টেস্ট?ব্যান ট্রিটিতে (সিটিবিটি) যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ সই করে। তখন থেকে বিশ্বের শীর্ষ এই তিন সামরিক শক্তি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি। তবে এসব দেশ নিয়মিতভাবে বিভিন্ন মাত্রার পারমাণবিক সক্ষমতা বা পরমাণুশক্তিচালিত নানা অস্ত্র ও ব্যবস্থার পরীক্ষা চালিয়ে আসছে।
কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া যাবে না ফারহান হক, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উপমুখপাত্র এ পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কার্যক্রম আবার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেই তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘অন্য দেশগুলোর পারমাণবিক পরীক্ষা কর্মসূচির কারণে আমি ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ারকে (প্রতিরক্ষা দপ্তর) পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা সমানতালে শুরুর নির্দেশ দিয়েছি।’
