ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুই শতাধিক খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন। এগুলোর মধ্যে কফি, গরুর মাংস, কলা ও কমলার রসের মতো মার্কিনিদের দৈনন্দিন ভোক্তা পণ্যও রয়েছে। ক্রমবর্ধমান খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ে ভোক্তাদের উদ্বেগ বাড়তে থাকায় হোয়াইট হাউজ এ সিদ্ধান্ত জানায়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে। এটি ট্রাম্পের অবস্থান থেকে বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন। কেননা এতদিন তিনি দাবি করে আসছিলেন যে, তার ব্যাপক শুল্ক আরোপের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, তার শুল্ক ‘কিছু ক্ষেত্রে’ দাম বৃদ্ধি করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে সামগ্রিকভাবে ‘প্রায় কোনো মূল্যস্ফীতি নেই’ বলে দাবি করেন তিনি।
ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি এবং নিউ ইয়র্ক সিটির সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের ধারাবাহিক জয়ের পেছনে উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়—বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের দাম—একটি বড় ইস্যু ছিল। ট্রাম্প আরও জানান, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মার্কিনিদের জন্য দুহাজার ডলারের একটি পেমেন্ট দেওয়া হবে, যা আগামী বছর শুল্ক রাজস্ব থেকে অর্থায়ন করা হবে।
এদিকে, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা ও এল সালভাদর থেকে কিছু খাদ্য ও অন্যান্য আমদানির শুল্ক উঠিয়ে নিতে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
বছর শেষের আগেই আরও চুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
শুক্রবার প্রকাশিত তালিকায় দৈনন্দিন চাহিদার বহু পণ্য রয়েছে—যার অনেকগুলোরই দাম চলতি বছরে দুই অঙ্কে বেড়েছে। কমলা, আসাই বেরি, পাপরিকা, কোকো, খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ, সার এবং এমনকি ধর্মীয় উপাসনায় ব্যবহৃত কমিউনিয়ন ওয়েফারও এতে অন্তর্ভুক্ত।
হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানায়, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও ‘পারস্পরিক সুবিধাজনক’ অবস্থানে আনার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত বা প্রক্রিয়াজাত নয় এমন কিছু খাদ্যপণ্যকে শুল্কমুক্ত করা যৌক্তিক বিবেচনায় এসেছে বলে বলা হয়।
সেপ্টেম্বরের উপাত্ত অনুযায়ী, গরুর কিমার দাম আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি এবং স্টেকের দাম ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে—যা তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটি গরুর মাংসের অন্যতম উৎপাদক হওয়া সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশুর ঘাটতি দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, কলা ৭ শতাংশ এবং টমেটো ১ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। ঘরে খাওয়ার খাদ্যপণ্যের সামগ্রিক দাম সেপ্টেম্বরে ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।
শুল্ক প্রত্যাহারকে অনেক শিল্পগোষ্ঠী স্বাগত জানিয়েছে। খাদ্যশিল্প সমিতি এফএমআই-এর সভাপতি লেসলি সারাসিন বলেন, আজকের সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের সহায়তা করবে—বিশেষ করে সকালে এক কাপ কফি আরও সাশ্রয়ী হবে বলে আশা করা যায়। উৎপাদনে ব্যবহৃত এসব পণ্যের দাম কমলে প্রস্তুতকারকও উপকৃত হবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মদ্যপানযোগ্য স্পিরিট শুল্কমুক্ত না হওয়ায় হতাশা দেখায় ডিস্টিলড স্পিরিটস কাউন্সিল। তাদের সভাপতি ক্রিস স্বোয়ানগার বলেন, স্কচ, কনিয়াক ও আইরিশ হুইস্কি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করা যায় না—এগুলোকে বাদ দেওয়া আতিথেয়তাশিল্পের জন্য ধাক্কা।
আরও শুল্ক ছাড়ের পরিকল্পনা আছে কি না—এ প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয় প্রয়োজন হবে না। আমরা আসলে সামান্য রোলব্যাক করেছি। কফির দাম একটু বেশি ছিল; খুব শিগগিরই তা কমে যাবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুই শতাধিক খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন। এগুলোর মধ্যে কফি, গরুর মাংস, কলা ও কমলার রসের মতো মার্কিনিদের দৈনন্দিন ভোক্তা পণ্যও রয়েছে। ক্রমবর্ধমান খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ে ভোক্তাদের উদ্বেগ বাড়তে থাকায় হোয়াইট হাউজ এ সিদ্ধান্ত জানায়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে। এটি ট্রাম্পের অবস্থান থেকে বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন। কেননা এতদিন তিনি দাবি করে আসছিলেন যে, তার ব্যাপক শুল্ক আরোপের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, তার শুল্ক ‘কিছু ক্ষেত্রে’ দাম বৃদ্ধি করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে সামগ্রিকভাবে ‘প্রায় কোনো মূল্যস্ফীতি নেই’ বলে দাবি করেন তিনি।
ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি এবং নিউ ইয়র্ক সিটির সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের ধারাবাহিক জয়ের পেছনে উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়—বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের দাম—একটি বড় ইস্যু ছিল। ট্রাম্প আরও জানান, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মার্কিনিদের জন্য দুহাজার ডলারের একটি পেমেন্ট দেওয়া হবে, যা আগামী বছর শুল্ক রাজস্ব থেকে অর্থায়ন করা হবে।
এদিকে, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা ও এল সালভাদর থেকে কিছু খাদ্য ও অন্যান্য আমদানির শুল্ক উঠিয়ে নিতে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
বছর শেষের আগেই আরও চুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
শুক্রবার প্রকাশিত তালিকায় দৈনন্দিন চাহিদার বহু পণ্য রয়েছে—যার অনেকগুলোরই দাম চলতি বছরে দুই অঙ্কে বেড়েছে। কমলা, আসাই বেরি, পাপরিকা, কোকো, খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ, সার এবং এমনকি ধর্মীয় উপাসনায় ব্যবহৃত কমিউনিয়ন ওয়েফারও এতে অন্তর্ভুক্ত।
হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানায়, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও ‘পারস্পরিক সুবিধাজনক’ অবস্থানে আনার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত বা প্রক্রিয়াজাত নয় এমন কিছু খাদ্যপণ্যকে শুল্কমুক্ত করা যৌক্তিক বিবেচনায় এসেছে বলে বলা হয়।
সেপ্টেম্বরের উপাত্ত অনুযায়ী, গরুর কিমার দাম আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি এবং স্টেকের দাম ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে—যা তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটি গরুর মাংসের অন্যতম উৎপাদক হওয়া সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশুর ঘাটতি দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, কলা ৭ শতাংশ এবং টমেটো ১ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। ঘরে খাওয়ার খাদ্যপণ্যের সামগ্রিক দাম সেপ্টেম্বরে ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।
শুল্ক প্রত্যাহারকে অনেক শিল্পগোষ্ঠী স্বাগত জানিয়েছে। খাদ্যশিল্প সমিতি এফএমআই-এর সভাপতি লেসলি সারাসিন বলেন, আজকের সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের সহায়তা করবে—বিশেষ করে সকালে এক কাপ কফি আরও সাশ্রয়ী হবে বলে আশা করা যায়। উৎপাদনে ব্যবহৃত এসব পণ্যের দাম কমলে প্রস্তুতকারকও উপকৃত হবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মদ্যপানযোগ্য স্পিরিট শুল্কমুক্ত না হওয়ায় হতাশা দেখায় ডিস্টিলড স্পিরিটস কাউন্সিল। তাদের সভাপতি ক্রিস স্বোয়ানগার বলেন, স্কচ, কনিয়াক ও আইরিশ হুইস্কি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করা যায় না—এগুলোকে বাদ দেওয়া আতিথেয়তাশিল্পের জন্য ধাক্কা।
আরও শুল্ক ছাড়ের পরিকল্পনা আছে কি না—এ প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয় প্রয়োজন হবে না। আমরা আসলে সামান্য রোলব্যাক করেছি। কফির দাম একটু বেশি ছিল; খুব শিগগিরই তা কমে যাবে।