alt

ইসরায়েলকে উপেক্ষা করে কেন সৌদির মন পেতে চেষ্টা করছেন ট্রাম্প

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

হোয়াইট হাউসে আয়োজিত নৈশভোজে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে করমর্দন করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প -এএফপি

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সাড়ম্বরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রশাসনে কোনো বিদেশি নেতাকে এটাই সবচেয়ে জমকালো অভ্যর্থনা। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে। যুবরাজের এ সফরকে একটি সাধারণ সফর হিসেবে উল্লেখ করা হলেও আদতে তা এমনটি ছিল না; বরং হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প প্রশাসন এখন পর্যন্ত যে কয়জন বিদেশি অতিথিকে আতিথ্য জানিয়েছে, তার মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি আতিশয্যময়।

ট্রাম্প সৌদি যুবরাজকে হোয়াইট হাউসের সবচেয়ে বড় মঞ্চ দক্ষিণ লনে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। অভ্যর্থনার সময়ে সেখানে ঘোড়ায় বসা ইউনিফর্মধারী সেনাদের পতাকা বহন করতে দেখা গেছে। একই সময়ে হোয়াইট হাউসের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে একঝাঁক যুদ্ধবিমান। নতুনভাবে সোনালি রঙে সাজানো ওভাল অফিসে প্রবেশের পর ট্রাম্পকে একজন মুগ্ধ ও মোহগ্রস্ত মানুষ মনে হয়েছে। তিনি যুবরাজের হাত ধরেন এবং একাধিকবার বলেন, রাজকীয় বন্ধুত্ব তাঁর জন্য বিরাট সম্মানের।

কিন্তু সোনালি বুদ্?বুদের আভা ছেদ করে যখন এক সাংবাদিক ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা এবং তাঁর মরদেহ টুকরা টুকরা করার প্রসঙ্গের অবতারণা করলেন, তখন ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি ওই সাংবাদিকের প্রতিষ্ঠান এবিসির সমালোচনা করেন। মূলত এ হত্যাকাণ্ডের কারণেই গত সাত বছর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাননি মোহাম্মদ বিন সালমান।

এফ-৩৫ বিক্রির প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি ঘোষণাও দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তা হলো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাছে উন্নত এআই চিপ বিক্রি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। ট্রাম্প বলেন, খাসোগি ‘চরম বিতর্কিত’ ছিলেন এবং তাঁকে সবাই পছন্দ করতেন না (ভাবটা এমন যে এ কারণে তাঁকে হত্যা করা যায়)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, ইস্তাম্বুলে সৌদি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংঘটিত ওই হত্যাকা- সম্পর্কে যুবরাজ কিছুই জানতেন না। কিন্তু তাঁর এ দাবি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের সম্পূর্ণ বিপরীত।

মানবাধিকারের প্রতি উদাসীনতা, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি অবহেলা ও স্বৈরশাসকদের প্রতি প্রকাশ্যে আনুগত্য ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু নয়। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সেই দিক এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে বদলে গেছে। তবে ১৮ নভেম্বর মোহাম্মদ বিন সালমানের সফরের সময় প্রকৃত কোনো পরিবর্তন হয়ে থাকলে, তা ছিল ওয়াশিংটনের আকাশে।

ট্রাম্প বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া এফ-৩৫ সিরিজের জঙ্গিবিমানগুলো সৌদি আরবের কাছে বিক্রি করা হবে। এসব যুদ্ধবিমান বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো শর্ত থাকবে না। সৌদির কাছে বিক্রির জন্য এফ-৩৫-এর প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য (স্পেসিফিকেশন) ইসরায়েলের কাছে এই সিরিজের যেসব বিমান রয়েছে, সেগুলোর অনুরূপ হবে।‘(সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের) মহান মিত্র এবং ইসরায়েলও মহান মিত্র। আমার মতে, তাদের উভয়ের এমন একটি পর্যায়ে থাকা উচিত, যেখানে উভয়ে সেরা সুবিধা পাবে।’

এই চুক্তি যদি এগিয়ে যায়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কের একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতিকে লঙ্ঘন করবে। নীতিটি হলো ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যে ইসরায়েল সবার আগে সেরা মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম সবার আগে পায়, যা অঞ্চলটিতে ইসরায়েলকে ‘মানগত সুবিধা’ দেয়। এবার এই নীতির প্রতি উদাসীনতা দেখিয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, উভয় দেশ সেরা সামরিক সরঞ্জাম পাবে। কারণ, তারা দুজন ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমানভাবে ঘনিষ্ঠ। ট্রাম্প বলেছেন, ‘(সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের) মহান মিত্র এবং ইসরায়েলও মহান মিত্র। আমার মতে, তাদের উভয়ের এমন একটি পর্যায়ে থাকা উচিত, যেখানে উভয়ে সেরা সুবিধা পাবে।’

ওয়াশিংটন থেকে এমন ভাষা শোনা ইসরায়েলের পছন্দের নয়। গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যেসব ধাক্কা এসেছে, সেগুলোর মধ্যে সর্বশেষ এল এটি। এফ-৩৫ বিক্রির প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি ঘোষণাও দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তা হলো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাছে উন্নত এআই চিপ বিক্রি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। সৌদি আরবের বৈশ্বিক প্রযুক্তির কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার যে স্বপ্ন, এ ঘোষণা সেটিকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে দিয়েছে।

সৌদি আরব ব্যাপক বিদ্যুৎ–নির্ভর ডেটা সেন্টার তৈরি করতে চাইছে, যা হবে বৈশ্বিক এআই অর্থনীতির ভিত্তি। এ খাতে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের অতিথি গবেষক গ্রেগরি গাউস এআই অর্থনীতিতে মার্কিন-সৌদি অংশীদারত্বের লক্ষ্যকে ১৯৩০-এর দশকে সৌদি তেলক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের করপোরেশনের নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

ছবি

সৌদি আরবে খোলা হচ্ছে নতুন দুই মদের দোকান

ছবি

আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালালো পাকিস্তান, নিহত ১০

ছবি

কূটনৈতিক অচলাবস্থার মুখে রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক

ছবি

বিপজ্জনক অচলাবস্থায় রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া, সংঘর্ষের আশঙ্কা

ছবি

ট্রাম্পের বয়কটেও যৌথ ঘোষণাপত্র গৃহীত, চীনের নজরকাড়া উপস্থিতি

ছবি

জাপানে সামরিকবাদ মতাদর্শ পুনরায় ফিরতে দেবে না চীন

ছবি

পাকিস্তানের সিন্ধু অঞ্চল একদিন ভারতের অংশ হতে পারে: রাজনাথ সিং

ছবি

ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়তে চায় জার্মানি

ছবি

ইসরায়েলি হামলায় শ্রবণশক্তি হারিয়েছে গাজার ৩৫ হাজার শিশু

ছবি

আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের

ছবি

ট্রাম্পকে খুশি করতে গাজায় সেনা পাঠিয়ে কী বিপদ পড়বে পাকিস্তান

ছবি

যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে জেনিভায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেইন, ইউরোপ

ছবি

গৃহবন্দী ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারে যে কারণে আটক হলেন

ছবি

ফ্রান্সে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

ছবি

ঘূর্ণিঝড় ফিনা: অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরিতে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন

ছবি

ভিয়েতনামে বন্যা-ভূমিধস: মৃত্যু বেড়ে ৯০, নিখোঁজ ১২ জন

ছবি

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে ‘কাজে লাগিয়ে’ নিজেদের অস্ত্রের পরীক্ষা করেছিল চীন

ছবি

নাইজেরিয়ার ক্যাথলিক স্কুল থেকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অপহরণ

ছবি

কী আছে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনায়

ছবি

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-মামদানি বৈঠকে প্রশংসা আর সৌহার্দ্যের বার্তা

ছবি

পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা: আফগানিস্তান খুঁজছে নতুন বাণিজ্য রুট

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতির পর থেকে ৬৭ শিশু নিহত: ইউনিসেফ

ছবি

নাইজেরিয়ায় স্কুলে হামলা, ২১৫ শিক্ষার্থী, ১২ শিক্ষককে অপহরণ

ছবি

লন্ডনে বিশাল আয়তনের দূতাবাস নির্মাণের অনুমোদন পাচ্ছে চীন

নারী সাংবাদিককে হেনস্তা, ট্রাম্পের সাফাই গাইলো হোয়াইট হাউজ

ছবি

যে প্রশ্নের উত্তরেই মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর ফাতিমা বশ

ছবি

তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য: বন্ধ শত শত স্কুল, ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়

ছবি

ডিসেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় কম বয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ

ছবি

তেল অন্বেষণে সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ বানাবে পাকিস্তান

ছবি

ইউক্রেনকে পুতিনের কাছে আত্মসমর্পণ করতেই কি যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাব

ছবি

ব্রাজিলে জলবায়ু সম্মেলনস্থলে আগুন, আলোচনা স্থগিত

ছবি

গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র শীতের আতঙ্ক

ছবি

রুশ বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের এক শহরে এক রাতে নিহত ২৫

ছবি

আগামী বছর জলবায়ু সম্মেলন কপ৩১ আয়োজনের দায়িত্ব পেল তুরস্ক

ছবি

ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নতুন মার্কিন কাঠামো, স্বস্তিতে নেই জেলেনস্কি

ছবি

ভারতকে ৯৩ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র

tab

ইসরায়েলকে উপেক্ষা করে কেন সৌদির মন পেতে চেষ্টা করছেন ট্রাম্প

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

হোয়াইট হাউসে আয়োজিত নৈশভোজে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে করমর্দন করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প -এএফপি

মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সাড়ম্বরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রশাসনে কোনো বিদেশি নেতাকে এটাই সবচেয়ে জমকালো অভ্যর্থনা। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে। যুবরাজের এ সফরকে একটি সাধারণ সফর হিসেবে উল্লেখ করা হলেও আদতে তা এমনটি ছিল না; বরং হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প প্রশাসন এখন পর্যন্ত যে কয়জন বিদেশি অতিথিকে আতিথ্য জানিয়েছে, তার মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি আতিশয্যময়।

ট্রাম্প সৌদি যুবরাজকে হোয়াইট হাউসের সবচেয়ে বড় মঞ্চ দক্ষিণ লনে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। অভ্যর্থনার সময়ে সেখানে ঘোড়ায় বসা ইউনিফর্মধারী সেনাদের পতাকা বহন করতে দেখা গেছে। একই সময়ে হোয়াইট হাউসের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে একঝাঁক যুদ্ধবিমান। নতুনভাবে সোনালি রঙে সাজানো ওভাল অফিসে প্রবেশের পর ট্রাম্পকে একজন মুগ্ধ ও মোহগ্রস্ত মানুষ মনে হয়েছে। তিনি যুবরাজের হাত ধরেন এবং একাধিকবার বলেন, রাজকীয় বন্ধুত্ব তাঁর জন্য বিরাট সম্মানের।

কিন্তু সোনালি বুদ্?বুদের আভা ছেদ করে যখন এক সাংবাদিক ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা এবং তাঁর মরদেহ টুকরা টুকরা করার প্রসঙ্গের অবতারণা করলেন, তখন ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি ওই সাংবাদিকের প্রতিষ্ঠান এবিসির সমালোচনা করেন। মূলত এ হত্যাকাণ্ডের কারণেই গত সাত বছর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাননি মোহাম্মদ বিন সালমান।

এফ-৩৫ বিক্রির প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি ঘোষণাও দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তা হলো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাছে উন্নত এআই চিপ বিক্রি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। ট্রাম্প বলেন, খাসোগি ‘চরম বিতর্কিত’ ছিলেন এবং তাঁকে সবাই পছন্দ করতেন না (ভাবটা এমন যে এ কারণে তাঁকে হত্যা করা যায়)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, ইস্তাম্বুলে সৌদি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংঘটিত ওই হত্যাকা- সম্পর্কে যুবরাজ কিছুই জানতেন না। কিন্তু তাঁর এ দাবি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের সম্পূর্ণ বিপরীত।

মানবাধিকারের প্রতি উদাসীনতা, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি অবহেলা ও স্বৈরশাসকদের প্রতি প্রকাশ্যে আনুগত্য ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু নয়। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সেই দিক এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে বদলে গেছে। তবে ১৮ নভেম্বর মোহাম্মদ বিন সালমানের সফরের সময় প্রকৃত কোনো পরিবর্তন হয়ে থাকলে, তা ছিল ওয়াশিংটনের আকাশে।

ট্রাম্প বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া এফ-৩৫ সিরিজের জঙ্গিবিমানগুলো সৌদি আরবের কাছে বিক্রি করা হবে। এসব যুদ্ধবিমান বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো শর্ত থাকবে না। সৌদির কাছে বিক্রির জন্য এফ-৩৫-এর প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য (স্পেসিফিকেশন) ইসরায়েলের কাছে এই সিরিজের যেসব বিমান রয়েছে, সেগুলোর অনুরূপ হবে।‘(সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের) মহান মিত্র এবং ইসরায়েলও মহান মিত্র। আমার মতে, তাদের উভয়ের এমন একটি পর্যায়ে থাকা উচিত, যেখানে উভয়ে সেরা সুবিধা পাবে।’

এই চুক্তি যদি এগিয়ে যায়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কের একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতিকে লঙ্ঘন করবে। নীতিটি হলো ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যে ইসরায়েল সবার আগে সেরা মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম সবার আগে পায়, যা অঞ্চলটিতে ইসরায়েলকে ‘মানগত সুবিধা’ দেয়। এবার এই নীতির প্রতি উদাসীনতা দেখিয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, উভয় দেশ সেরা সামরিক সরঞ্জাম পাবে। কারণ, তারা দুজন ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমানভাবে ঘনিষ্ঠ। ট্রাম্প বলেছেন, ‘(সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের) মহান মিত্র এবং ইসরায়েলও মহান মিত্র। আমার মতে, তাদের উভয়ের এমন একটি পর্যায়ে থাকা উচিত, যেখানে উভয়ে সেরা সুবিধা পাবে।’

ওয়াশিংটন থেকে এমন ভাষা শোনা ইসরায়েলের পছন্দের নয়। গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যেসব ধাক্কা এসেছে, সেগুলোর মধ্যে সর্বশেষ এল এটি। এফ-৩৫ বিক্রির প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি ঘোষণাও দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তা হলো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাছে উন্নত এআই চিপ বিক্রি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। সৌদি আরবের বৈশ্বিক প্রযুক্তির কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার যে স্বপ্ন, এ ঘোষণা সেটিকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে দিয়েছে।

সৌদি আরব ব্যাপক বিদ্যুৎ–নির্ভর ডেটা সেন্টার তৈরি করতে চাইছে, যা হবে বৈশ্বিক এআই অর্থনীতির ভিত্তি। এ খাতে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের অতিথি গবেষক গ্রেগরি গাউস এআই অর্থনীতিতে মার্কিন-সৌদি অংশীদারত্বের লক্ষ্যকে ১৯৩০-এর দশকে সৌদি তেলক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের করপোরেশনের নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

back to top