‘সাইবার সচেতন হোন, নিরাপদ থাকুন’ প্রতিপাদ্যে সারাদেশে অক্টোবর মাসব্যাপী শুরু হচ্ছে ১০ম সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাসের কর্মসূচি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা বাড়ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রতিরোধে সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানসহ রাজনৈতিক দলগুলোকেও সাইবার সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি সংস্থা সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিসিএএফ) উদ্যোগে ১২টি সংগঠনের প্লাটফর্ম সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেনের সহযোগিতায় ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস অক্টোবর-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা পিএলসি ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান পালোআলতো নেটওয়ার্কের পৃষ্ঠপোষকতায় অক্টোবর মাসব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সিসিএএফ।
সিসিএফের উপদেষ্টা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সিসিএএফ সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী কর্মসূচি তুলে ধরেন সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জি. মো. মুশফিকুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন রবির সাইবার সিকিউরিটি প্ল্যানিং বিভাগের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শফি উল্লাহ, বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্টের উপ-পরিচালক (ক্লায়েন্ট সাপোর্ট ও সালিশ) তাপসী রাবেয়া ও জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির সহকারী পরিচালক মো. আসিফ ইসলাম।
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শফি উল্লাহ অনুষ্ঠানে বলেন, প্রযুক্তির কোনো বাউন্ডারি নেই। যেভাবে বিশে^র অন্যরা প্রতারিত হয় আমরাও হচ্ছি। তাই সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহার যে স্তরে চলে গেছে ঠিক সেই স্তরে আমাদের সচেতনতা নিয়ে যেতে হবে।
সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ভুয়া তথ্য ছাড়ানো হয় তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। অনেক দল বা ব্যক্তি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এ ধরনের পোস্ট পরিকল্পিতভাবে ছড়ায়।
তাপসী রাবেয়া বলেন, গ্রামের কম শিক্ষিত লোকজনই নয়, শহরের উচ্চ শিক্ষিত অনেকেই অনলাইনে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই আইনের আশ্রয় নিতে চায় না। কারণ তারা নিজেদের অসচেতনতার কারণে এসব অপরাধের শিকার হন। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের ২০২৪ সালের প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মুশফিকুর রহমান জানান, সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৮ শতাংশের বয়সই ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এছাড়াও আক্রান্তদের প্রায় ৫৯ শতাংশই নারী। অপরাধের ধরনের মধ্যে ২১.৬৫ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে অ্যাকাউন্ট বেদখলের (হ্যাকিং) শিকার হয়ে শীর্ষে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা ঞয়, ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৪৭.৭২ শতাংশ সামাজিক মর্যাদাহানী, ৪০.১৫ শতাংশ আর্থিক ক্ষতির শিকার, এবং প্রায় সবাই মানসিক যন্ত্রণায় কাতর ছিলেন। এদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮১.২৫ শতাংশ সাধারণ ডায়রি এবং ১৮.৭৫ শতাংশ লিখিত অভিযোগ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগকারীদের মধ্যে সন্তুষ্ট নন ৮৭.৫০ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৪০.৯০ শতাংশ ভুক্তভোগী উচ্চ মাধ্যমিক পাস, ২১.২১ শতাংশ স্নাতক/সম্মান পাস, ১৬.৬৬ শতাংশ মাধ্যমিক পাস এবং ১২.৮৭ শতাংশ মাধ্যমিকের নিচে।
বিশ^ব্যাপী অক্টোবরকে ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করা হয়, বাংলাদেশেও ২০১৬ সাল থেকে একই সময়ে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করে আসছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।
বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
‘সাইবার সচেতন হোন, নিরাপদ থাকুন’ প্রতিপাদ্যে সারাদেশে অক্টোবর মাসব্যাপী শুরু হচ্ছে ১০ম সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাসের কর্মসূচি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা বাড়ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রতিরোধে সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানসহ রাজনৈতিক দলগুলোকেও সাইবার সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি সংস্থা সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিসিএএফ) উদ্যোগে ১২টি সংগঠনের প্লাটফর্ম সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেনের সহযোগিতায় ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস অক্টোবর-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা পিএলসি ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান পালোআলতো নেটওয়ার্কের পৃষ্ঠপোষকতায় অক্টোবর মাসব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সিসিএএফ।
সিসিএফের উপদেষ্টা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সিসিএএফ সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী কর্মসূচি তুলে ধরেন সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জি. মো. মুশফিকুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন রবির সাইবার সিকিউরিটি প্ল্যানিং বিভাগের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শফি উল্লাহ, বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্টের উপ-পরিচালক (ক্লায়েন্ট সাপোর্ট ও সালিশ) তাপসী রাবেয়া ও জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির সহকারী পরিচালক মো. আসিফ ইসলাম।
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শফি উল্লাহ অনুষ্ঠানে বলেন, প্রযুক্তির কোনো বাউন্ডারি নেই। যেভাবে বিশে^র অন্যরা প্রতারিত হয় আমরাও হচ্ছি। তাই সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহার যে স্তরে চলে গেছে ঠিক সেই স্তরে আমাদের সচেতনতা নিয়ে যেতে হবে।
সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ভুয়া তথ্য ছাড়ানো হয় তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। অনেক দল বা ব্যক্তি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এ ধরনের পোস্ট পরিকল্পিতভাবে ছড়ায়।
তাপসী রাবেয়া বলেন, গ্রামের কম শিক্ষিত লোকজনই নয়, শহরের উচ্চ শিক্ষিত অনেকেই অনলাইনে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই আইনের আশ্রয় নিতে চায় না। কারণ তারা নিজেদের অসচেতনতার কারণে এসব অপরাধের শিকার হন। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের ২০২৪ সালের প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মুশফিকুর রহমান জানান, সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৮ শতাংশের বয়সই ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এছাড়াও আক্রান্তদের প্রায় ৫৯ শতাংশই নারী। অপরাধের ধরনের মধ্যে ২১.৬৫ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে অ্যাকাউন্ট বেদখলের (হ্যাকিং) শিকার হয়ে শীর্ষে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা ঞয়, ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৪৭.৭২ শতাংশ সামাজিক মর্যাদাহানী, ৪০.১৫ শতাংশ আর্থিক ক্ষতির শিকার, এবং প্রায় সবাই মানসিক যন্ত্রণায় কাতর ছিলেন। এদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮১.২৫ শতাংশ সাধারণ ডায়রি এবং ১৮.৭৫ শতাংশ লিখিত অভিযোগ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগকারীদের মধ্যে সন্তুষ্ট নন ৮৭.৫০ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৪০.৯০ শতাংশ ভুক্তভোগী উচ্চ মাধ্যমিক পাস, ২১.২১ শতাংশ স্নাতক/সম্মান পাস, ১৬.৬৬ শতাংশ মাধ্যমিক পাস এবং ১২.৮৭ শতাংশ মাধ্যমিকের নিচে।
বিশ^ব্যাপী অক্টোবরকে ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করা হয়, বাংলাদেশেও ২০১৬ সাল থেকে একই সময়ে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করে আসছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।