দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তিনি বলেন, এসব ‘ষড়যন্ত্রে’ তিনি ‘ভয় পান না’। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ষড়যন্ত্র সবসময়ই থাকে। দেশবাসী সবসময় আওয়ামী লীগের পাশে আছে, তাই উদ্বেগের কিছু নেই।’
বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এ সময় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ এবং টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন বলে বাসসের খবরে বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গেল ১৪ বছরে গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নতি করেছি। মানুষের কল্যাণে যা যা করা দরকার, করছি। প্রত্যেক এমপিকে (সংসদ সদস্য) নিজ এলাকার মানুষকে দেখতে হয়। আমাকে দেখতে হয় ৩০০ আসনের মানুষকে।’
নবম থেকে একাদশ সংসদ; টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। আসছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো দিন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে। তফসিল ঘোষণা হবে নভেম্বরের প্রথম দিকেই।
দ্বাদশ সংদস নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই। আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ, জনগণ তাদের ম্যান্ডেট নিয়ে সবসময় আমাদের পাশে আছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু ষড়যন্ত্র সবসময়ই থাকে। আমি সেটা ভয় পাই না। গ্রেনেড, গুলি, বোমা সবকিছু মোকাবিলা করেই এই পর্যন্ত এসেছি।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২২ নেতাকর্মী নিহত হন। ওই ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে দলের সভাপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ একটা মানুষকে কাজ দেয়। সেই দায়িত্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনিই তাকে রক্ষা করেন। আমাকে রক্ষা করতে উপরে আল্লাহ আছেন আর মাঠে আমার দলের নেতাকর্মীরা আছেন। যখনই আমার ওপর কোনো হামলা হয়, আমার দলের লোকেরা সবসময় আমাকে রক্ষা করে।’
করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়া সম্ভব হতো বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই উন্নয়নযাত্রা ধরে রাখতে হবে।’
অনাবাদি জমি আবাদ করে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবাইকে উদ্যোগী হওয়ারও পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্বেই জিনিসপত্রের দাম বেশি। তাই বিভিন্নভাবে সবাইকে উৎপাদনমুখী হতে হবে। আমাদের সৌভাগ্য যে আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর এবং আমাদের মানুষগুলো দক্ষ। যে কারণে আমরা যদি চেষ্টা করি তাহলে খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে উন্নত ও সুন্দর জীবন দেয়ার মাধ্যমে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের কল্যাণে সম্ভাব্য সবকিছু করছি।’
গোপালগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটিতে ভোটার সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।
বারবার ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করায় শেখ হাসিনা তার সংসদীয় আসনের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার আপনজনদের হারানোর পর দেশের মানুষ এবং আমার দলের নেতাকর্মীরাই আমার স্বজন। কাছের মানুষগুলো আমার পাশে না থাকলে সফল হওয়া সম্ভব হতো না।’
প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সংযোগের উদ্বোধন ও ফরিদপুরের ভাঙ্গায় জনসভায় ভাষণ দেয়ার পর বিকেলে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান।
প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তিনি ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত করেন। টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ফেইসবুক সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় নিজ হাতে ইলিশ-পোলাও রান্না করে সেই খাবার স্বজনদের মাঝে পরিবেশন করেন শেখ হাসিনা। অনেকদিন পর শেখ হাসিনাকে বাড়িতে পেয়ে আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার সকালে শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার হেঁটে দলের উপজেলা কার্যালয়ে যান। বেলা পৌনে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্স লাগোয়া বাসভবন থেকে বের হন সরকারপ্রধান। গাড়ি ব্যবহার না করে হেঁটেই রওয়ানা হন তিনি।
সঙ্গে ছিলেন, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শেখ সারহান নাসের তন্ময় ও দলের নেতাকর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গেলে শেখ হাসিনাকে সেখানে স্লোগানে স্লোগানে বরণ করে নেন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। সভায় নিজে বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় নেতাকর্মীদের বক্তব্যও শোনেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তিনি বলেন, এসব ‘ষড়যন্ত্রে’ তিনি ‘ভয় পান না’। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ষড়যন্ত্র সবসময়ই থাকে। দেশবাসী সবসময় আওয়ামী লীগের পাশে আছে, তাই উদ্বেগের কিছু নেই।’
বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এ সময় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ এবং টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন বলে বাসসের খবরে বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গেল ১৪ বছরে গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নতি করেছি। মানুষের কল্যাণে যা যা করা দরকার, করছি। প্রত্যেক এমপিকে (সংসদ সদস্য) নিজ এলাকার মানুষকে দেখতে হয়। আমাকে দেখতে হয় ৩০০ আসনের মানুষকে।’
নবম থেকে একাদশ সংসদ; টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। আসছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো দিন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে। তফসিল ঘোষণা হবে নভেম্বরের প্রথম দিকেই।
দ্বাদশ সংদস নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই। আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ, জনগণ তাদের ম্যান্ডেট নিয়ে সবসময় আমাদের পাশে আছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু ষড়যন্ত্র সবসময়ই থাকে। আমি সেটা ভয় পাই না। গ্রেনেড, গুলি, বোমা সবকিছু মোকাবিলা করেই এই পর্যন্ত এসেছি।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২২ নেতাকর্মী নিহত হন। ওই ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে দলের সভাপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ একটা মানুষকে কাজ দেয়। সেই দায়িত্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনিই তাকে রক্ষা করেন। আমাকে রক্ষা করতে উপরে আল্লাহ আছেন আর মাঠে আমার দলের নেতাকর্মীরা আছেন। যখনই আমার ওপর কোনো হামলা হয়, আমার দলের লোকেরা সবসময় আমাকে রক্ষা করে।’
করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়া সম্ভব হতো বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই উন্নয়নযাত্রা ধরে রাখতে হবে।’
অনাবাদি জমি আবাদ করে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবাইকে উদ্যোগী হওয়ারও পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্বেই জিনিসপত্রের দাম বেশি। তাই বিভিন্নভাবে সবাইকে উৎপাদনমুখী হতে হবে। আমাদের সৌভাগ্য যে আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর এবং আমাদের মানুষগুলো দক্ষ। যে কারণে আমরা যদি চেষ্টা করি তাহলে খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে উন্নত ও সুন্দর জীবন দেয়ার মাধ্যমে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের কল্যাণে সম্ভাব্য সবকিছু করছি।’
গোপালগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটিতে ভোটার সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।
বারবার ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করায় শেখ হাসিনা তার সংসদীয় আসনের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার আপনজনদের হারানোর পর দেশের মানুষ এবং আমার দলের নেতাকর্মীরাই আমার স্বজন। কাছের মানুষগুলো আমার পাশে না থাকলে সফল হওয়া সম্ভব হতো না।’
প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সংযোগের উদ্বোধন ও ফরিদপুরের ভাঙ্গায় জনসভায় ভাষণ দেয়ার পর বিকেলে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান।
প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তিনি ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত করেন। টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ফেইসবুক সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় নিজ হাতে ইলিশ-পোলাও রান্না করে সেই খাবার স্বজনদের মাঝে পরিবেশন করেন শেখ হাসিনা। অনেকদিন পর শেখ হাসিনাকে বাড়িতে পেয়ে আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার সকালে শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার হেঁটে দলের উপজেলা কার্যালয়ে যান। বেলা পৌনে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্স লাগোয়া বাসভবন থেকে বের হন সরকারপ্রধান। গাড়ি ব্যবহার না করে হেঁটেই রওয়ানা হন তিনি।
সঙ্গে ছিলেন, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শেখ সারহান নাসের তন্ময় ও দলের নেতাকর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গেলে শেখ হাসিনাকে সেখানে স্লোগানে স্লোগানে বরণ করে নেন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। সভায় নিজে বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় নেতাকর্মীদের বক্তব্যও শোনেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।