সোমবার রায়ের পর আদালত থেকে বেরিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস
গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে ঠকানোর অভিযোগে শ্রম আইনে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় সোমবার (১ জানুয়ারি) রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে সাজা পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
ইউনূসের পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানও সাজা পেয়েছেন। চারজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাদের জরিমানাও করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এই রায় দেন। ৮৪ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ‘প্রমাণিত হয়েছে’।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলে, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এক নম্বর আসামির (মুহাম্মদ ইউনূস) বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলা হয়েছে। কিন্তু এ আদালতে তার বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচার হচ্ছে।’
রায়ে কারাদণ্ডের সঙ্গে শ্রম আইনের একটি ধারায় আসামিদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদণ্ড এবং আরেকটি ধারায় ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রায়ে সাজা হলেও আসামিদের আপাতত তাদের জেলে যেতে হয়নি। আপিলের শর্তে সাজাপ্রাপ্তদের ১ মাসের জামিন দিয়েছে আদালত।
রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় নোবেলজয়ী ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
‘দোষ না করেও এই দিনে আমরা শাস্তি পেলাম। সেটা আশা করিনি। এই দুঃখটা রয়ে গেল। আনন্দের দিনে (ইংরেজি বছরের প্রথম দিন) এই আঘাতটা পেলাম। আমাদের কপালে ছিল আর কি। আমরা সেটা গ্রহণ করলাম। তবে শেষ পর্যন্ত বিচার পাব।’
ইউনূস আরও বলেন, ‘আজ রায় ঘোষণা শুনতে আমার অনেক বিদেশি বন্ধুবান্ধব এসেছেন। যাদের সঙ্গে বহুদিন দেখা হয়নি। আজ তাদের দেখে খুব আনন্দ লাগছিল। সবাই রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আনন্দের দিনে আঘাতটা পেলাম।’
ইউনুস এবং তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করা, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। মামলায় গত ৬ জুন ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
তবে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন ইউনূস ও অন্যরা। হাইকোর্ট তা খারিজ করে দিলে এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত ২০ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বিভাগ সেই আপিল আবেদনও খারিজ করে দেয়।
এরপর চলতি বছরের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ আগস্ট থেকে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদীসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আসামিরা।
৩৪২ ধারার আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্যে ইউনূসসহ চারজন বিবাদী লিখিতভাবে আদালতকে বলেছিলেন, ‘শ্রম আইনের ২৩৪ ধারার বিধান লঙ্ঘিত হলে ২৩৬ ধারায় অনেকগুলো প্রতিকারের বিধান রেখেছে। শ্রম আইনের ২৩৬ ধারার উপরোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ না করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বিবাদী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ আইনের লঙ্ঘন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি নিজের স্বার্থে কোনো কিছু করিনি। আমি অপরাধ করিনি।’
আদালতকে আরও বলেছিলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী। কারণ, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। তবে গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ী কর্মীর মতো ভবিষ্যৎ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড), আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি), অর্জিত ছুটি ও অবসরকালীন ছুটি দেয়া হয়ে থাকে। মামলায় নিয়োগ স্থায়ী না করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রশাসনিক ও দেওয়ানি মামলার বিষয়। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।’
পরে গত ৯ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। বিচারিক ধারাবাহিকতায় গত ২১ নভেম্বর থেকে গত ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ কার্যদিবস চলে দুইপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক। আদালতে ইউনূসের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। আর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও সৈয়দ হায়দার আলী। যুক্তিতর্ক শেষ হলে গত ২৪ ডিসেম্বর মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য ১ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করে দেয় আদালত।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সোমবার বিজয় নগরের টাপা প্লাজায় শ্রম আদালত ও আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। আলোচিত এই মামলার রায়ের খবর সংগ্রহ করতে দেশের বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীর পাশাপাশি বিবিসি, আল জাজিরাসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত হন।
এদিন দুপুর পৌনে দুইটায় আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন ইউনূসসহ আসামিরা। এ সময় আদালতে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উবিনিগের ফরিদা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, আইনজীবী সারাহ হোসেনসহ অনেককে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। পরে দুপুর সোয়া ২টায় রায় পড়া শুরু করেন বিচারক। রায়ে আসামিদের সাজা ঘোষণা হলে তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জামিনের আবেদন করেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার রায়ের পর আদালত থেকে বেরিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস
মঙ্গলবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৪
গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে ঠকানোর অভিযোগে শ্রম আইনে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় সোমবার (১ জানুয়ারি) রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে সাজা পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
ইউনূসের পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানও সাজা পেয়েছেন। চারজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাদের জরিমানাও করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এই রায় দেন। ৮৪ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ‘প্রমাণিত হয়েছে’।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলে, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এক নম্বর আসামির (মুহাম্মদ ইউনূস) বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলা হয়েছে। কিন্তু এ আদালতে তার বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচার হচ্ছে।’
রায়ে কারাদণ্ডের সঙ্গে শ্রম আইনের একটি ধারায় আসামিদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদণ্ড এবং আরেকটি ধারায় ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রায়ে সাজা হলেও আসামিদের আপাতত তাদের জেলে যেতে হয়নি। আপিলের শর্তে সাজাপ্রাপ্তদের ১ মাসের জামিন দিয়েছে আদালত।
রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় নোবেলজয়ী ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
‘দোষ না করেও এই দিনে আমরা শাস্তি পেলাম। সেটা আশা করিনি। এই দুঃখটা রয়ে গেল। আনন্দের দিনে (ইংরেজি বছরের প্রথম দিন) এই আঘাতটা পেলাম। আমাদের কপালে ছিল আর কি। আমরা সেটা গ্রহণ করলাম। তবে শেষ পর্যন্ত বিচার পাব।’
ইউনূস আরও বলেন, ‘আজ রায় ঘোষণা শুনতে আমার অনেক বিদেশি বন্ধুবান্ধব এসেছেন। যাদের সঙ্গে বহুদিন দেখা হয়নি। আজ তাদের দেখে খুব আনন্দ লাগছিল। সবাই রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আনন্দের দিনে আঘাতটা পেলাম।’
ইউনুস এবং তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করা, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। মামলায় গত ৬ জুন ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
তবে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন ইউনূস ও অন্যরা। হাইকোর্ট তা খারিজ করে দিলে এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত ২০ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বিভাগ সেই আপিল আবেদনও খারিজ করে দেয়।
এরপর চলতি বছরের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ আগস্ট থেকে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদীসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আসামিরা।
৩৪২ ধারার আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্যে ইউনূসসহ চারজন বিবাদী লিখিতভাবে আদালতকে বলেছিলেন, ‘শ্রম আইনের ২৩৪ ধারার বিধান লঙ্ঘিত হলে ২৩৬ ধারায় অনেকগুলো প্রতিকারের বিধান রেখেছে। শ্রম আইনের ২৩৬ ধারার উপরোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ না করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বিবাদী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ আইনের লঙ্ঘন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি নিজের স্বার্থে কোনো কিছু করিনি। আমি অপরাধ করিনি।’
আদালতকে আরও বলেছিলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী। কারণ, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। তবে গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ী কর্মীর মতো ভবিষ্যৎ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড), আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি), অর্জিত ছুটি ও অবসরকালীন ছুটি দেয়া হয়ে থাকে। মামলায় নিয়োগ স্থায়ী না করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রশাসনিক ও দেওয়ানি মামলার বিষয়। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।’
পরে গত ৯ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। বিচারিক ধারাবাহিকতায় গত ২১ নভেম্বর থেকে গত ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ কার্যদিবস চলে দুইপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক। আদালতে ইউনূসের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। আর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও সৈয়দ হায়দার আলী। যুক্তিতর্ক শেষ হলে গত ২৪ ডিসেম্বর মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য ১ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করে দেয় আদালত।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সোমবার বিজয় নগরের টাপা প্লাজায় শ্রম আদালত ও আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। আলোচিত এই মামলার রায়ের খবর সংগ্রহ করতে দেশের বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীর পাশাপাশি বিবিসি, আল জাজিরাসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত হন।
এদিন দুপুর পৌনে দুইটায় আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন ইউনূসসহ আসামিরা। এ সময় আদালতে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উবিনিগের ফরিদা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, আইনজীবী সারাহ হোসেনসহ অনেককে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। পরে দুপুর সোয়া ২টায় রায় পড়া শুরু করেন বিচারক। রায়ে আসামিদের সাজা ঘোষণা হলে তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জামিনের আবেদন করেন।