alt

আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি’র পর্যবেক্ষণ

জুন-জুলাইয়ে দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার হার বেশি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব শীতকালে দেখা দেয় বলেই ভাবা হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ফ্লু’র মৌসুম গরমকাল।

সরকারি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ বলছে, দেশে এই শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগের প্রকোপ শুরু হয় এপ্রিল থেকে। আর চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অর্থাৎ গরমকালেই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পর্যবেক্ষণ আরও বলছে, ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি থাকে জুন ও জুলাই মাসে, এই সময় ছয় গুণের বেশি বৃদ্ধি পায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীতে ‘বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা পর্যবেক্ষণ বিষয়ক প্রচার’ শীর্ষক এক সেমিনারে আইসিডিসিআর’র পর্যবেক্ষণটি তুলে ধরা হয়।

সেমিনারে ২০০৭ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পরিচালিত ’ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভিলেন্স’ থেকে পাওয়া ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। আইইডিসিআর ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে ১৯টি হাসপাতালে এই পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

এই পযাবেক্ষণের লক্ষ্য দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ ও মৌসুমী বৈচিত্র বোঝার পাশাপাশি এর ধরন শনাক্ত করা। এতে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ওই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সেমিনারে বলা হয়, দেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি চারজনের নমুনা পরীক্ষা করে একজন ইনফ্লুয়েঞ্জার রোগী পাওয়া যায়। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় জুন ও জুলাই মাসে। গত কয়েক বছরের রোগীদের পরিসংখ্যানে জুনে মোট আক্রান্তের ২৯ দশমিক ১০ শতাংশ এবং জুলাইয়ে ৩০ দশমিক ৮৫ শতাংশ রোগী পাওয়া গেছে। তবে এর পরের মাসগুলো অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় একজন রোগী শনাক্ত হয় বলে সেমিনারে জানানো হয়।

দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কেমন?

জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা, পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা, খারাপ লাগা বোধ করা, গলাব্যথা ও নাক দিয়ে সর্দিঝরা- ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ।

সেমিনারে তুলে ধরা আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি’র ২০০৭ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, এই সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ নিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৮০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তবে ১৩ হাজার ২৩৪ জনের ইনফ্লুয়েঞ্জা পজেটিভ এসেছে, যা শতকরা ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। যদিও বয়সের হিসাবে ৫ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩২ শতাংশ ইনফ্লুয়েঞ্জা পাওয়া গেছে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ১ শতাংশের মৃত্যু হয় বলেও ওই পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। তবে ষাটোর্ধ্ব এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুঝুঁকি তিন গুণ বেশি বলেও গবেষণা বলছে।

টিকা নেয়ার পরামর্শ

সেমিনারে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন।

অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা মৌসুমে সময় প্রতি ৪ জন শ্বাসতন্ত্রের রোগীর ১ জন ইনফ্লুয়েঞ্জা পজেটিভ হয়, যা অন্য সময়ে ২৫ জনে ১ জন। ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেয়া হয়।’

দেশে যেহেতু এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম, তাই ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের মধ্যেই টিকা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় বলেও আইইডিসিআরের পরিচালক জানান।

বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি, ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু, গর্ভবতী নারী এবং যারা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগেন, তাদের টিকা নেয়ার বিষয়ে গুরুতারোপ করেন তিনি।

তবে সেমিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উন্নয়ন পরিকল্পনা শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গণহারে টিকা নেয়ার ‘প্রয়োজন নেই’।

‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টিকা নিতে হবে। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে হাত ধোয়া, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে’, বলেন তিনি।

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘এই ফ্লুকে অনেকেই অবহেলা করেন। কিন্তু এটাতে মানুষ মারাও যাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য টিকা নেয়ার পাশাপাশি সুলভ মূল্যে টিকার ব্যবস্থা করা দরকার।’

সেমিনারে ইনফ্লুয়েঞ্জার বৈশ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে উপস্থাপনা তুলে ধরেন আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ফাহমিদা চৌধুরী। এছাড়া আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, সিডিসির এপিডেমিওলজিস্ট গ্রেচেন কাওম্যান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

ছবি

সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

টিআইবির প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ মন্ত্রীদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় অতি আগ্রহ কেন?

ছবি

নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি: ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে অপমানিত করা হয়েছে

ছবি

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ

ছবি

আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয় নি: সিলেটে আসিফ নজরুল

ছবি

অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার দুটি লকার জব্দ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৬২২

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহের-আখতার

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে চারটি পদ্ধতির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ছবি

ডেমু ট্রেন কেনায় রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের মামলা

ছবি

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের প্রধান বিচারপতির বৈঠক

ছবি

ট্রাইব্যুনাল: নাহিদের সাক্ষ্য বুধবার, মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন

ছবি

ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা: বাংলাদেশ-ভারতের ভৌগোলিক নৈকট্য ও আন্তঃনির্ভতা নতুন সুযোগে রূপান্তরের সম্ভাবনা

ছবি

ধর্মীয় উৎসবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নয়, সমান নাগরিক অধিকারের বাংলাদেশ চান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য বুধবার

ছবি

জুলাই আন্দোলন: ইনু-নূরসহ ৯ আসামির ভার্চুয়াল হাজিরা

ছবি

বাংলাদেশে উষ্ণায়নের প্রভাব: কর্মদিবস নষ্ট, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যে বড় ক্ষতি

ছবি

এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য সচিব

ছবি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা

ছবি

দুর্গাপূজা প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালকদের দপ্তর বদল, একজনকে ওএসডি

ছবি

ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাল বাংলাদেশ

ছবি

আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ছাড়াল ৩৮ হাজার

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে অঙ্গীকার ইউনূসের

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি : মাইকেল মিলার

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার হাতে ১২ তরুণ পেলেন ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’

ছবি

ইসিতে নিবন্ধন: নতুন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চলছে

ছবি

সেপ্টেম্বরের শেষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি

ছবি

দ্বিমতের কোনো জায়গা নাই, এই সুযোগ আর আসবে না: ইউনূস

ছবি

নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারিত সময়ের আগেই

ছবি

মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানোতে ১১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাত: ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা সিদ্ধান্ত

ছবি

টাইফয়েড টিকা কর্মসূচি: দেড় মাসে নিবন্ধন প্রায় ৮৯ লাখ শিশু

tab

আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি’র পর্যবেক্ষণ

জুন-জুলাইয়ে দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার হার বেশি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব শীতকালে দেখা দেয় বলেই ভাবা হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ফ্লু’র মৌসুম গরমকাল।

সরকারি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ বলছে, দেশে এই শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগের প্রকোপ শুরু হয় এপ্রিল থেকে। আর চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অর্থাৎ গরমকালেই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পর্যবেক্ষণ আরও বলছে, ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি থাকে জুন ও জুলাই মাসে, এই সময় ছয় গুণের বেশি বৃদ্ধি পায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীতে ‘বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা পর্যবেক্ষণ বিষয়ক প্রচার’ শীর্ষক এক সেমিনারে আইসিডিসিআর’র পর্যবেক্ষণটি তুলে ধরা হয়।

সেমিনারে ২০০৭ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পরিচালিত ’ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভিলেন্স’ থেকে পাওয়া ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। আইইডিসিআর ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে ১৯টি হাসপাতালে এই পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

এই পযাবেক্ষণের লক্ষ্য দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ ও মৌসুমী বৈচিত্র বোঝার পাশাপাশি এর ধরন শনাক্ত করা। এতে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ওই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সেমিনারে বলা হয়, দেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি চারজনের নমুনা পরীক্ষা করে একজন ইনফ্লুয়েঞ্জার রোগী পাওয়া যায়। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় জুন ও জুলাই মাসে। গত কয়েক বছরের রোগীদের পরিসংখ্যানে জুনে মোট আক্রান্তের ২৯ দশমিক ১০ শতাংশ এবং জুলাইয়ে ৩০ দশমিক ৮৫ শতাংশ রোগী পাওয়া গেছে। তবে এর পরের মাসগুলো অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় একজন রোগী শনাক্ত হয় বলে সেমিনারে জানানো হয়।

দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কেমন?

জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা, পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা, খারাপ লাগা বোধ করা, গলাব্যথা ও নাক দিয়ে সর্দিঝরা- ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ।

সেমিনারে তুলে ধরা আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি’র ২০০৭ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, এই সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ নিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৮০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তবে ১৩ হাজার ২৩৪ জনের ইনফ্লুয়েঞ্জা পজেটিভ এসেছে, যা শতকরা ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। যদিও বয়সের হিসাবে ৫ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩২ শতাংশ ইনফ্লুয়েঞ্জা পাওয়া গেছে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ১ শতাংশের মৃত্যু হয় বলেও ওই পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। তবে ষাটোর্ধ্ব এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুঝুঁকি তিন গুণ বেশি বলেও গবেষণা বলছে।

টিকা নেয়ার পরামর্শ

সেমিনারে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন।

অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা মৌসুমে সময় প্রতি ৪ জন শ্বাসতন্ত্রের রোগীর ১ জন ইনফ্লুয়েঞ্জা পজেটিভ হয়, যা অন্য সময়ে ২৫ জনে ১ জন। ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেয়া হয়।’

দেশে যেহেতু এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম, তাই ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের মধ্যেই টিকা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় বলেও আইইডিসিআরের পরিচালক জানান।

বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি, ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু, গর্ভবতী নারী এবং যারা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগেন, তাদের টিকা নেয়ার বিষয়ে গুরুতারোপ করেন তিনি।

তবে সেমিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উন্নয়ন পরিকল্পনা শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গণহারে টিকা নেয়ার ‘প্রয়োজন নেই’।

‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টিকা নিতে হবে। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে হাত ধোয়া, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে’, বলেন তিনি।

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘এই ফ্লুকে অনেকেই অবহেলা করেন। কিন্তু এটাতে মানুষ মারাও যাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য টিকা নেয়ার পাশাপাশি সুলভ মূল্যে টিকার ব্যবস্থা করা দরকার।’

সেমিনারে ইনফ্লুয়েঞ্জার বৈশ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে উপস্থাপনা তুলে ধরেন আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ফাহমিদা চৌধুরী। এছাড়া আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, সিডিসির এপিডেমিওলজিস্ট গ্রেচেন কাওম্যান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

back to top