alt

পৈতৃক ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন মৃৎশিল্পের কারিগররা

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে মৃৎশিল্পে কর্মরত একজন কারিগর-সংবাদ

প্রাচীনকাল থেকেই দেশের হাট-বাজারে হাতে তৈরি মাটির দৃষ্টিনন্দন গৃহস্থালির নিত্য ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল গ্রাম বাংলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে বাঙালি সংস্কৃতির ধারক এই মৃৎশিল্পের কারিগরদের শিল্পের সূর্যাস্ত হয়েছে কবেই। শুধুমাত্র পারিবারিক ঐতিহ্য আর বাপ-দাদার স্মৃতি ধরে রাখতে প্রাণপণ লড়াই করছেন গোটা কয়েক মানুষ।

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দিনদিন কমে আসছে মৃৎশিল্পের সংখ্যা। এই পৈতৃক ব্যবসা পূবের মতো চলমান না থাকায় ছেড়ে দিচ্ছেন বেশিরভাগ কারিগররা।

প্রান্তিক পর্যায়ে নানাভাবে জড়িয়ে আছে দেশের পাল সম্প্রদায়ের হাতে তৈরি কারুকাজ খঁচিত মৃৎশিল্পের নানাবিধ মাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল, থালা, কলসী-সড়ই, ঢোঁকসা, সাড়া, ভাতের হাঁড়ি, হাঁড়ির ঢাকনা, ফুলের টব, মাটির ব্যাংক, ফুলদানিসহ নানা প্রকার দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যা গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।

দেশজুড়ে মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র এবং শিল্পকর্মের বিপুল চাহিদা থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি পাল সম্প্রদায়েরও বসতি গড়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সেই সঙ্গে তাদের তৈরি জিনিসপত্র গ্রাম বাংলার হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হতো এসব দৈনন্দিন ব্যবহারের পরিবেশবান্ধব জিনিসপত্র।

কিন্তু সময় পেরিয়ে নতুন যুগের সূচনায় মানুষের চাহিদা আর আগ্রহে নতুন নতুন গৃহস্থালির ব্যবহৃত জিনিসপত্রের বাজারে প্লাস্টিক, মেলামাইন এবং স্টিলের তৈরি গৃহস্থালির পণ্যের যোগান আসায় দেশের বাজারে আগের মতো এখন আর চাহিদা নেই মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্রের। মেলামাইন, স্টিল এবং প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্র দেশের প্রায় সব অঞ্চলের মানুষের নিত্যদিনের গৃহস্থালির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হলেও পাল সম্প্রদায়ের মাটির তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চাহিদা শুধুমাত্র সৌন্দর্য প্রিয় এবং শৌখিন মানুষের বাসার ড্রইং রুম এবং ছাদে ফুলের টবে শোভা বাড়াচ্ছে মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র। সেই সঙ্গে দেশের সনাতন ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন পূজা-পার্বণে চাহিদা মেটানো হচ্ছে মাটির তৈরি জিনিসপত্র দিয়ে। কিন্তু বর্তমান আধুনিকায়নের যুগে তাদের নিত্যনতুন কর্মসংস্থানের অভাব, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং সামাজিক অবহেলায় এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুমারপাড়ায় কিছু সংখ্যক কারিগরদের কর্মব্যস্ততা। শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে এখানকার পাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা মিলে কাজ করছেন মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে। ওই এলাকার লোকরা যে কাজ করেন সেটা মৃৎশিল্পের কাজ, এখন আর এই কাজ তেমন কেউ করতে চান না। এ উপজেলায় আগে পাল সম্প্রদায়ের ৪০টি পরিবার ছিল, সবাই মাটির কাজ করতো, কিন্তু এখন মাত্র ৩ থেকে ৪টি পরিবার এই পেশায় যুক্ত রয়েছেন। এলাকায় ৫ থেকে ৬টি পাল পরিবার মাটির কাজ করছেন। কিন্তু মাটিসহ লাকড়ির দাম বেড়ে যাওয়াতে এই কাজে আগ্রহ কমেছে। বর্তমানে এখন যে গুটি দু-একজন আর কোনো কাজ না জানায় বাপ-দাদার এই পেশা ছেড়ে যেতে পারেননি। দুই একজন যারা ৫ দশক থেকে এই কাজ করে আসছেন, তাদের সন্তান-সন্ততিরা এখন আর এই পেশায় নিয়োজিত নন।

ছবি

আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৬ জনের মৃত্যু: হাসপাতালে ভর্তি ৯৮৩ জন

ছবি

জেইসির মাধ্যমে বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত, আজ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর

চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন

ছবি

এক লাখ কর্মী নিয়োগ, প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রগতি জানালো জাপানি প্রতিনিধিদল

ছবি

মঙ্গলবার সরকারের হাতে যাবে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা

ছবি

নভেম্বরের পরও চলবে উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম: অন্তর্বর্তী সরকারের স্পষ্টীকরণ

ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬১

ছবি

অর্থ পাচারের মামলায় সম্রাট ও আরমানের জামিন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হওয়া ও নৈতিক নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান শিক্ষা উপদেষ্টার

ডেঙ্গু: একদিনে সর্বোচ্চ ১১৪৩ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ৪

ছবি

শাহজালালে আগুন: অনুসন্ধানে ঢাকায় তুরস্কের বিশেষজ্ঞ দল

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউলসহ দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বেড়েছে

ছবি

মেট্রো রেললাইনের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু, ৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন

সেনা সদর দপ্তর আইন প্রয়োগ না করা পর্যন্ত আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তা কর্মরত: প্রসিকিউটর

ছবি

বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেয়া হবে না, হাইকোর্টের প্রশ্ন

আরপিও সংশোধন: রাষ্ট্রপতি সই করলেই জারি হবে অধ্যাদেশ

ছবি

অমর একুশে বইমেলা ‘যথা সময়েই’ অনুষ্ঠিত হবে: প্রেস সচিব

ছবি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা দেবে

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম নভেম্বরেই শেষ : তথ্য উপদেষ্টার

ছবি

বাংলাদেশ–পাকিস্তান সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনায় সাহির শামশাদ মির্জা ও প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে ফার্মগেটে একজন নিহত, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে, উপকূলে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত

ছবি

গুম প্রতিরোধে প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার: আসিফ নজরুল

ছবি

বিমানবন্দরের আগুন তদন্তে বিশেষজ্ঞ আসছেন ৪ দেশ থেকে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

সামনে ‘সংঘাতের আলামত’ দেখতে পাচ্ছেন মাহফুজ আলম

ছবি

ডেঙ্গুতে শিশু ও কিশোর আক্রান্ত ১০ হাজার ছাড়িয়েছে

ছবি

রাষ্ট্র নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থ হলে ন্যায়ের জন্য লড়াই অপরিহার্য: প্রধান বিচারপতি

ছবি

কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা আসছেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

লিবিয়া সরকারের দ্বিতীয় চার্টার ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ৩০৯ বাংলাদেশি

ছবি

মানসিক সুস্থতাকে এগিয়ে নিতে তরুণ সমাজকে দায়িত্বশীল হতে হবে: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

ছবি

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সর্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেয়ার নিন্দা জানালো বাংলাদেশ

ছবি

বাংলাদেশি স্থপতি রেজোয়ানের ভাসমান স্কুল পেল ইউনেস্কোর কনফুসিয়াস পুরস্কার

ছবি

উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা: ‘বিতর্ক’ এড়াতে ফাওজুল কবিরের দুই ‘ফর্মুলা’

tab

পৈতৃক ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন মৃৎশিল্পের কারিগররা

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল

শ্রীমঙ্গলে মৃৎশিল্পে কর্মরত একজন কারিগর-সংবাদ

শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রাচীনকাল থেকেই দেশের হাট-বাজারে হাতে তৈরি মাটির দৃষ্টিনন্দন গৃহস্থালির নিত্য ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল গ্রাম বাংলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে বাঙালি সংস্কৃতির ধারক এই মৃৎশিল্পের কারিগরদের শিল্পের সূর্যাস্ত হয়েছে কবেই। শুধুমাত্র পারিবারিক ঐতিহ্য আর বাপ-দাদার স্মৃতি ধরে রাখতে প্রাণপণ লড়াই করছেন গোটা কয়েক মানুষ।

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দিনদিন কমে আসছে মৃৎশিল্পের সংখ্যা। এই পৈতৃক ব্যবসা পূবের মতো চলমান না থাকায় ছেড়ে দিচ্ছেন বেশিরভাগ কারিগররা।

প্রান্তিক পর্যায়ে নানাভাবে জড়িয়ে আছে দেশের পাল সম্প্রদায়ের হাতে তৈরি কারুকাজ খঁচিত মৃৎশিল্পের নানাবিধ মাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল, থালা, কলসী-সড়ই, ঢোঁকসা, সাড়া, ভাতের হাঁড়ি, হাঁড়ির ঢাকনা, ফুলের টব, মাটির ব্যাংক, ফুলদানিসহ নানা প্রকার দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যা গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।

দেশজুড়ে মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র এবং শিল্পকর্মের বিপুল চাহিদা থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি পাল সম্প্রদায়েরও বসতি গড়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সেই সঙ্গে তাদের তৈরি জিনিসপত্র গ্রাম বাংলার হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হতো এসব দৈনন্দিন ব্যবহারের পরিবেশবান্ধব জিনিসপত্র।

কিন্তু সময় পেরিয়ে নতুন যুগের সূচনায় মানুষের চাহিদা আর আগ্রহে নতুন নতুন গৃহস্থালির ব্যবহৃত জিনিসপত্রের বাজারে প্লাস্টিক, মেলামাইন এবং স্টিলের তৈরি গৃহস্থালির পণ্যের যোগান আসায় দেশের বাজারে আগের মতো এখন আর চাহিদা নেই মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্রের। মেলামাইন, স্টিল এবং প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্র দেশের প্রায় সব অঞ্চলের মানুষের নিত্যদিনের গৃহস্থালির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হলেও পাল সম্প্রদায়ের মাটির তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চাহিদা শুধুমাত্র সৌন্দর্য প্রিয় এবং শৌখিন মানুষের বাসার ড্রইং রুম এবং ছাদে ফুলের টবে শোভা বাড়াচ্ছে মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র। সেই সঙ্গে দেশের সনাতন ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন পূজা-পার্বণে চাহিদা মেটানো হচ্ছে মাটির তৈরি জিনিসপত্র দিয়ে। কিন্তু বর্তমান আধুনিকায়নের যুগে তাদের নিত্যনতুন কর্মসংস্থানের অভাব, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং সামাজিক অবহেলায় এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুমারপাড়ায় কিছু সংখ্যক কারিগরদের কর্মব্যস্ততা। শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে এখানকার পাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা মিলে কাজ করছেন মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে। ওই এলাকার লোকরা যে কাজ করেন সেটা মৃৎশিল্পের কাজ, এখন আর এই কাজ তেমন কেউ করতে চান না। এ উপজেলায় আগে পাল সম্প্রদায়ের ৪০টি পরিবার ছিল, সবাই মাটির কাজ করতো, কিন্তু এখন মাত্র ৩ থেকে ৪টি পরিবার এই পেশায় যুক্ত রয়েছেন। এলাকায় ৫ থেকে ৬টি পাল পরিবার মাটির কাজ করছেন। কিন্তু মাটিসহ লাকড়ির দাম বেড়ে যাওয়াতে এই কাজে আগ্রহ কমেছে। বর্তমানে এখন যে গুটি দু-একজন আর কোনো কাজ না জানায় বাপ-দাদার এই পেশা ছেড়ে যেতে পারেননি। দুই একজন যারা ৫ দশক থেকে এই কাজ করে আসছেন, তাদের সন্তান-সন্ততিরা এখন আর এই পেশায় নিয়োজিত নন।

back to top