সম্প্রতি গণহারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বদলি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ওঠা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব অভিযোগকে ‘মূলহীন’ এবং ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেন।
দৈনিক কালবেলা পরপর দুটি প্রতিবেদনে ডিসি নিয়োগে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলে। বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে হোয়াটসঅ্যাপে জনপ্রশাসন সচিব এবং একাধিক যুগ্ম সচিবের কথোপকথনের ক্রিনশট প্রকাশ করে বলা হয়, ওই আলাপচারিতায় ডিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের প্রসঙ্গ এসেছে।
আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ
কালবেলার প্রতিবেদনে হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের মাধ্যমে দাবি করা হয়, জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান নিজেকে ‘নির্লোভ’ দাবি করলেও মাত্র পাঁচ কোটি টাকার আর্থিক দাবি করেছিলেন, আর এক যুগ্ম সচিব তাকে ১০ কোটি রাখার পরামর্শ দেন। এর জবাবে সচিব তাকে বলেন, "আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার যেটা ভালো মনে হয়।" প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সচিব টাকা-পয়সার প্রতি তেমন লোভ নেই বলে ওই যুগ্ম সচিবকে জানান।
জনপ্রশাসন সচিবের প্রতিক্রিয়া
এই অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোখলেস উর রহমান বলেন, “এগুলো ভিত্তিহীন, বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের বিষয়ে তিনি বলেন, "আমার মোবাইল স্যামসাং ব্র্যান্ডের, আর প্রতিবেদনে যেটা দেখানো হয়েছে, সেটা আইফোনের। তাদের কী প্রমাণ রয়েছে, সেটা তাদেরকেই জিজ্ঞেস করবেন। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না।"
তিনি আরও বলেন, “আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সরকার যে মোবাইল দিয়েছে সেটাও ব্যবহার করি না। আমার আগের নম্বরই ব্যবহার করছি।”
অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো তদন্ত হবে কিনা, সে বিষয়ে সচিব জানান, "এই অভিযোগকে আমি মূল্যহীন মনে করি এবং এটাকে কোনো গুরুত্ব দেওয়ার মতো মনে করি না।"
অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
অভিযোগগুলো মিথ্যা দাবি করে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, "এই ভুয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ইতোমধ্যে তিনটি পদক্ষেপ নিয়েছি। পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তথ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছি এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রেস কাউন্সিলসহ অন্যান্য মাধ্যমেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সচিব আরও জানান, হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনে যাকে কেন্দ্র করে এই অভিযোগ উঠেছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ডিসি বদলিতে রদবদল
সরকারের ক্ষমতা পরিবর্তনের পর মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। ৫৯টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে, ১০ সেপ্টেম্বর কিছু উপসচিবের অসন্তোষের ফলে নতুন প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আটজন ডিসিকে প্রত্যাহার করা হয় এবং চার জনের কর্মস্থল বদলানো হয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি
কালবেলার প্রতিবেদনে বলা হয়, এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক এবং ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে।
অন্যদিকে, জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "এই প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করছে এবং যেকোনো ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের পেছনে সময় ব্যয় করার প্রয়োজন নেই।
সমাপনী
গণমাধ্যমে ডিসি বদলি নিয়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করলেও জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এ অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সচিব আশ্বস্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
সম্প্রতি গণহারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বদলি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ওঠা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব অভিযোগকে ‘মূলহীন’ এবং ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেন।
দৈনিক কালবেলা পরপর দুটি প্রতিবেদনে ডিসি নিয়োগে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলে। বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে হোয়াটসঅ্যাপে জনপ্রশাসন সচিব এবং একাধিক যুগ্ম সচিবের কথোপকথনের ক্রিনশট প্রকাশ করে বলা হয়, ওই আলাপচারিতায় ডিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের প্রসঙ্গ এসেছে।
আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ
কালবেলার প্রতিবেদনে হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের মাধ্যমে দাবি করা হয়, জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান নিজেকে ‘নির্লোভ’ দাবি করলেও মাত্র পাঁচ কোটি টাকার আর্থিক দাবি করেছিলেন, আর এক যুগ্ম সচিব তাকে ১০ কোটি রাখার পরামর্শ দেন। এর জবাবে সচিব তাকে বলেন, "আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার যেটা ভালো মনে হয়।" প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সচিব টাকা-পয়সার প্রতি তেমন লোভ নেই বলে ওই যুগ্ম সচিবকে জানান।
জনপ্রশাসন সচিবের প্রতিক্রিয়া
এই অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোখলেস উর রহমান বলেন, “এগুলো ভিত্তিহীন, বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের বিষয়ে তিনি বলেন, "আমার মোবাইল স্যামসাং ব্র্যান্ডের, আর প্রতিবেদনে যেটা দেখানো হয়েছে, সেটা আইফোনের। তাদের কী প্রমাণ রয়েছে, সেটা তাদেরকেই জিজ্ঞেস করবেন। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না।"
তিনি আরও বলেন, “আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সরকার যে মোবাইল দিয়েছে সেটাও ব্যবহার করি না। আমার আগের নম্বরই ব্যবহার করছি।”
অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো তদন্ত হবে কিনা, সে বিষয়ে সচিব জানান, "এই অভিযোগকে আমি মূল্যহীন মনে করি এবং এটাকে কোনো গুরুত্ব দেওয়ার মতো মনে করি না।"
অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
অভিযোগগুলো মিথ্যা দাবি করে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, "এই ভুয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ইতোমধ্যে তিনটি পদক্ষেপ নিয়েছি। পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তথ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছি এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রেস কাউন্সিলসহ অন্যান্য মাধ্যমেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সচিব আরও জানান, হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনে যাকে কেন্দ্র করে এই অভিযোগ উঠেছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ডিসি বদলিতে রদবদল
সরকারের ক্ষমতা পরিবর্তনের পর মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। ৫৯টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে, ১০ সেপ্টেম্বর কিছু উপসচিবের অসন্তোষের ফলে নতুন প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আটজন ডিসিকে প্রত্যাহার করা হয় এবং চার জনের কর্মস্থল বদলানো হয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি
কালবেলার প্রতিবেদনে বলা হয়, এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক এবং ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে।
অন্যদিকে, জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "এই প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করছে এবং যেকোনো ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের পেছনে সময় ব্যয় করার প্রয়োজন নেই।
সমাপনী
গণমাধ্যমে ডিসি বদলি নিয়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করলেও জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এ অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সচিব আশ্বস্ত করেছেন।