alt

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক: একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৯

এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ২১০ ছাড়িয়েছে, নতুন আক্রান্ত ৯১৫ জন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। শনিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা একদিনে মৃত্যুর ক্ষেত্রে এ বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যা। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১০ জনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ও ২ অক্টোবর একদিনে আটজন করে মারা গিয়েছিলেন ডেঙ্গুতে।

মৃত্যুর হার বাড়ছে

এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে এ বছর এখন পর্যন্ত ২১০ জন মারা গেছেন, যা মৃত্যুর তৃতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগে ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে ১৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৮১ জন। সাম্প্রতিক মৃত্যুর হার বাড়তে থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

শনিবার মারা যাওয়া ৯ জনের মধ্যে ছয়জন ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া বরিশালে ২ জন, চট্টগ্রামে ১ জন এবং ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা শুধু মৃত্যুতেই সীমাবদ্ধ নয়, প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৪৩ জন এবং দেশের অন্যান্য বিভাগে ৫৭২ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৮১০ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার নতুন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাইরে বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন, চট্টগ্রামে ১৯৭ জন, খুলনায় ৯৭ জন, ময়মনসিংহে ৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা

বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯৪৯ জন। তবে এখনো দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৬৫১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮৪৯ জন, আর ঢাকার বাইরে ১৮০২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকার বাইরের আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ডেঙ্গুতে সেপ্টেম্বর মাসের ভয়াবহতা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাস ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৯ হাজার ২৪১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন, যা এ বছরের সবচেয়ে বেশি। একই সময়ে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়, যা এক মাসে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা।

অক্টোবরের শুরুতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমেনি। অক্টোবরের প্রথম ১২ দিনে ১০ হাজার ৮৭২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আর মৃত্যুর সংখ্যা ৪৭ জনে পৌঁছেছে।

বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার

চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। জানুয়ারিতে ১ হাজার ৫৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমে আসে এবং ৩৩৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন, যার মধ্যে মৃত্যু হয় ৩ জনের। মার্চে ৩১১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়, আর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫।

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে এপ্রিল থেকে। ওই মাসে ৫০৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২ জনের মৃত্যু হয়। মে মাসে এই সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪৪ জনে এবং ১২ জন মারা যান। এরপর জুনে ৭৯৮ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন এবং মারা যান ৮ জন।

জুলাই ও অগাস্টে ডেঙ্গুর প্রকোপ

জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। ওই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১২ জন মারা যান। অগাস্টে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, ওই মাসে ৬৫২১ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং মৃত্যু হয় ২৭ জনের।

পূর্বের পরিসংখ্যান

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য সংরক্ষণ করে আসছে। এর মধ্যে ২০২৩ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ, ওই বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

দেশে ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এইডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং হাসপাতালে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ছবি

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই: উপদেষ্টা

ছবি

মরমী সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন মারা গেছেন

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি ৩৭ হাজার ছাড়াল, চলতি বছর মৃতের সংখ্যা ১৪৭

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিআইজি ও মেহেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার এ কে এম নাহিদুল ইসলাম কারাগারে

ছবি

সরকারি হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রবেশে নতুন নিয়ম

ছবি

লন্ডনে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজের গাড়িতে ছুঁড়ে মারা হলে ডিম

ছবি

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

ছবি

কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ভোটার নিবন্ধন ও এনআইডি সেবা চালু

ছবি

পল্লী বিদ্যুতের ‘গণছুটি’ কর্মসূচি স্থগিত, কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান

ছবি

ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যেই নির্বাচন, এটি আমাদের কমিটমেন্ট: প্রেস সচিব

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গুরুত্ব আরোপ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের

ছবি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ধর্ম উপদেষ্টার

ছবি

বিদিশার গাড়ি চুরি মামলার আসামিকে নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ পরিদর্শক কারাগারে

ছবি

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও বাড়লো

ছবি

ঐকমত্য ছাড়াই ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ

ছবি

৪৮তম বিশেষ বিসিএসের ফল: চিকিৎসক নিয়োগে সুপারিশ পেলেন ৩,১২০ জন

ছবি

নেপালে মারধর ও লুটের শিকার এক বাংলাদেশি পরিবার

ছবি

ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ, ‘ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে’ কমেছে ভোটকক্ষের সংখ্যা

ছবি

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

হাই কোর্টের আদেশ: পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ স্থগিত

ছবি

কাতারে ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানালো বাংলাদেশ

ছবি

জুলাই সনদ: দলগুলোর সঙ্গে ফের বসবে ঐকমত্য কমিশন

ছবি

১৬ বছরেই মিলবে জাতীয় পরিচয়পত্র: ইসি

ছবি

২০ জনের হাত বা পা কাটতে হয়েছিল, ট্রাইব্যুনালে চিকিৎসকের ভাষ্য

ছবি

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রেস উইংয়ের বয়ান

ছবি

নেপাল পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখছে ঢাকা, বাংলাদেশীদের বাইরে না বেরুনোর নির্দেশনা

ছবি

‘মঞ্চ ৭১’: এবার গ্রেপ্তার সাবেক সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম

ছবি

দুর্গাপূজা: ৩৩ হাজার পূজা মণ্ডপে ‘পর্যাপ্ত’ নিরাপত্তা থাকবে, বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

সাংবাদিকরা স্বাবলম্বী না হলে পাপেট হয়ে যায়: তথ্য উপদেষ্টা

ছবি

জুলাই সনদ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক, ‘বিশেষ আদেশে’ বাস্তবায়নে মত

মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করার সুযোগ নেই: সেনাবাহিনী

মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করার সুযোগ নেই: সেনাবাহিনী

ছবি

ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে গুজবের অভিযোগ অস্বীকার সেনাবাহিনীর

ছবি

সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান গ্রেপ্তার

ছবি

বদরুদ্দীন উমরের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

ছবি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ৫২ আসনের সীমানায় ব্যাপক রদবদল

tab

news » national

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক: একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৯

এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ২১০ ছাড়িয়েছে, নতুন আক্রান্ত ৯১৫ জন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। শনিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা একদিনে মৃত্যুর ক্ষেত্রে এ বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যা। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১০ জনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ও ২ অক্টোবর একদিনে আটজন করে মারা গিয়েছিলেন ডেঙ্গুতে।

মৃত্যুর হার বাড়ছে

এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে এ বছর এখন পর্যন্ত ২১০ জন মারা গেছেন, যা মৃত্যুর তৃতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগে ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে ১৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৮১ জন। সাম্প্রতিক মৃত্যুর হার বাড়তে থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

শনিবার মারা যাওয়া ৯ জনের মধ্যে ছয়জন ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া বরিশালে ২ জন, চট্টগ্রামে ১ জন এবং ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা শুধু মৃত্যুতেই সীমাবদ্ধ নয়, প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৪৩ জন এবং দেশের অন্যান্য বিভাগে ৫৭২ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৮১০ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার নতুন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাইরে বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন, চট্টগ্রামে ১৯৭ জন, খুলনায় ৯৭ জন, ময়মনসিংহে ৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা

বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯৪৯ জন। তবে এখনো দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৬৫১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮৪৯ জন, আর ঢাকার বাইরে ১৮০২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকার বাইরের আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ডেঙ্গুতে সেপ্টেম্বর মাসের ভয়াবহতা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাস ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৯ হাজার ২৪১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন, যা এ বছরের সবচেয়ে বেশি। একই সময়ে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়, যা এক মাসে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা।

অক্টোবরের শুরুতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমেনি। অক্টোবরের প্রথম ১২ দিনে ১০ হাজার ৮৭২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আর মৃত্যুর সংখ্যা ৪৭ জনে পৌঁছেছে।

বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার

চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। জানুয়ারিতে ১ হাজার ৫৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমে আসে এবং ৩৩৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন, যার মধ্যে মৃত্যু হয় ৩ জনের। মার্চে ৩১১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়, আর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫।

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে এপ্রিল থেকে। ওই মাসে ৫০৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২ জনের মৃত্যু হয়। মে মাসে এই সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪৪ জনে এবং ১২ জন মারা যান। এরপর জুনে ৭৯৮ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন এবং মারা যান ৮ জন।

জুলাই ও অগাস্টে ডেঙ্গুর প্রকোপ

জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। ওই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১২ জন মারা যান। অগাস্টে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, ওই মাসে ৬৫২১ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং মৃত্যু হয় ২৭ জনের।

পূর্বের পরিসংখ্যান

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য সংরক্ষণ করে আসছে। এর মধ্যে ২০২৩ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ, ওই বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

দেশে ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এইডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং হাসপাতালে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

back to top