ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় এক সাংবাদিককে বাসা থেকে ডেকে বের করে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়ার টানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কোতয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম।
নিহত স্বপন ভদ্র (৬৫) শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের জগেশ চন্দ্র ভদ্রের ছেলে। তিনি তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। জাতীয় দৈনিক খবরপত্র ও স্থানীয় দৈনিক আজকের খবর পত্রিকায় কাজ করতেন। আগে তিনি ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন পত্রিকায় তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। বর্তমানে তিনি কোনো গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন না।
তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যা, জমি সংক্রান্ত সমস্যা, এলাকায় মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ষাটোর্ধ্ব সাংবাদিক স্বপন ভদ্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই লেখালেখি করতেন এবং প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতেন। এর জেরেই এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটলো। স্বপন কুমার ভদ্রের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে রনি ভদ্র সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সাগর মিয়া (২০) একই এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। এই তরুণ ‘মাদকাসক্ত’ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সাগর। নৃশংস এই হত্যাকা-ের ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন এবং হত্যাকারির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, লেখালেখির জেরে স্বপন কুমার ভদ্রকে হত্যা করা হয়েছে। বছরখানেক আগেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ শনিবার দুপুরে সাগর মিয়া নামের ঐ তরুণকে আটক করেছে।
নিহতের ভাতিজা জুয়েল ভদ্র ও রুবেল ভদ্র বলেন, শনিবার বেলা ১১টার দিকে সাগরসহ তিনজন তার চাচাকে মাঝিপাড়ার বাসা থেকে ডেকে বের করেন। বের হতেই সাগর তার চাচার মাথায় ও হাতে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। এতে তার বাম হাতের কবজি পর্যন্ত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ সময় জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান স্বপন। পরে সাগর ঘাড়ে, পিঠে, মাথায় কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। চাচির চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের সামনে গিয়ে দেখা যায় মানুষের জটলা। স্বপন ভদ্রের মরদেহের সুরতহাল করছিলেন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ঘাড়েই ছয়টি কোপ রয়েছে। বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন। এ ছাড়া শরীরে আরও কোপের আঘাত রয়েছে।
নিহত স্বপন কুমার ভদ্রের ভাগনে মানিক সরকার বলেন, ‘মাদক নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করার কারণে আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন লেখালেখি করেন, সে জন্যই রাগ ছিল। এ কারণে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান বলেন, আটক সাগর এলাকায় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় মানুষকে ছুরিকাঘাত করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ওসি সফিকুল বলেন, ‘হত্যাকা- ঘটিয়ে সাগর পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ তাকে গৌরীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। সেইসঙ্গে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাগরের কর্মকা- নিয়ে আগেও প্রতিবাদ করেছিল স্বপন ভদ্র। আগেও একবার স্বপন ভদ্রের হাতে আঘাত করেছিল সাগর। আটক সাগর বখাটে ও সন্ত্রাসী। সে হত্যাকারী, এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
রোববার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪
ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় এক সাংবাদিককে বাসা থেকে ডেকে বের করে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়ার টানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কোতয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম।
নিহত স্বপন ভদ্র (৬৫) শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের জগেশ চন্দ্র ভদ্রের ছেলে। তিনি তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। জাতীয় দৈনিক খবরপত্র ও স্থানীয় দৈনিক আজকের খবর পত্রিকায় কাজ করতেন। আগে তিনি ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন পত্রিকায় তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। বর্তমানে তিনি কোনো গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন না।
তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যা, জমি সংক্রান্ত সমস্যা, এলাকায় মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ষাটোর্ধ্ব সাংবাদিক স্বপন ভদ্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই লেখালেখি করতেন এবং প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতেন। এর জেরেই এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটলো। স্বপন কুমার ভদ্রের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে রনি ভদ্র সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সাগর মিয়া (২০) একই এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। এই তরুণ ‘মাদকাসক্ত’ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সাগর। নৃশংস এই হত্যাকা-ের ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন এবং হত্যাকারির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, লেখালেখির জেরে স্বপন কুমার ভদ্রকে হত্যা করা হয়েছে। বছরখানেক আগেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ শনিবার দুপুরে সাগর মিয়া নামের ঐ তরুণকে আটক করেছে।
নিহতের ভাতিজা জুয়েল ভদ্র ও রুবেল ভদ্র বলেন, শনিবার বেলা ১১টার দিকে সাগরসহ তিনজন তার চাচাকে মাঝিপাড়ার বাসা থেকে ডেকে বের করেন। বের হতেই সাগর তার চাচার মাথায় ও হাতে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। এতে তার বাম হাতের কবজি পর্যন্ত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ সময় জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান স্বপন। পরে সাগর ঘাড়ে, পিঠে, মাথায় কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। চাচির চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের সামনে গিয়ে দেখা যায় মানুষের জটলা। স্বপন ভদ্রের মরদেহের সুরতহাল করছিলেন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ঘাড়েই ছয়টি কোপ রয়েছে। বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন। এ ছাড়া শরীরে আরও কোপের আঘাত রয়েছে।
নিহত স্বপন কুমার ভদ্রের ভাগনে মানিক সরকার বলেন, ‘মাদক নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করার কারণে আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন লেখালেখি করেন, সে জন্যই রাগ ছিল। এ কারণে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান বলেন, আটক সাগর এলাকায় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় মানুষকে ছুরিকাঘাত করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ওসি সফিকুল বলেন, ‘হত্যাকা- ঘটিয়ে সাগর পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ তাকে গৌরীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। সেইসঙ্গে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাগরের কর্মকা- নিয়ে আগেও প্রতিবাদ করেছিল স্বপন ভদ্র। আগেও একবার স্বপন ভদ্রের হাতে আঘাত করেছিল সাগর। আটক সাগর বখাটে ও সন্ত্রাসী। সে হত্যাকারী, এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।