জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আইনি পথে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। তারা জানান, রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাতে সন্তুষ্ট নন। তাই খালেদা জিয়াকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত করতে হাইকোর্টে আপিল শুনানির উদ্যোগ নিয়েছেন আইনজীবীরা। এ মামলায় আপিল শুনানির জন্য খালেদা জিয়াকে নিজ খরচে পেপারবুক তৈরিরও অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।
রোববার (৩ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেয়। শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও কয়েজন আইনজীবী।
রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করার পরও আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয়ার কারণ জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলন, ‘রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করলেও খালেদা জিয়া চান আদালতের মাধ্যমে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে আসবেন। তাই আমরা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছি।’
কায়সার কামাল আরও বলেন, ‘মামলার আপিল দ্রুত শুনানি করতে আমরা নিজ খরচে পেপার বুক তৈরি করতে কোর্টের অনুমতি প্রার্থনা করি। কোর্ট অনুমতি দিয়েছেন।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল বিভাগে যাবেন কিনা এমন প্রশ্নে কায়সার কামাল বলেন, ‘নিশ্চয় যাব। আগামী ১০ নভেম্বর আপিল বিভাগে ওই মামলার শুনানির জন্য দিন ধার্য করা আছে।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দেয় আদালত। পরে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। পরের বছর ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট। কিন্তু এরপর আর শুনানি হয়নি।
দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান। এরপর থেকে ছয় মাস পরপর সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।
সে সময় বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফপূর্বক মুক্তির বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮ (বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা এর বিশেষ মামলা নং ১৭/২০১৭ থেকে উদ্ভূত) এবং বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা এর বিশেষ মামলা নং-১৮/২০১৭ এ প্রদত্ত দণ্ডাদেশ মওকুফপূর্বক নির্দেশক্রমে মুক্তি প্রদান করা হল।’
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেয়া যে কোনো দণ্ডের ‘মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম’ মঞ্জুর করার এবং যে কোনো দণ্ড ‘মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস’ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।
কিন্তু আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কারো দণ্ড বাতিল করলেও তিনি যে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন (কনভিকশন), সেই রায় বাতিল হয় না। আর আদালত দোষী সাব্যস্ত করলে মুক্তির পর পাঁচ বছর পার না হলে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।
সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আইনি পথে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। তারা জানান, রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাতে সন্তুষ্ট নন। তাই খালেদা জিয়াকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত করতে হাইকোর্টে আপিল শুনানির উদ্যোগ নিয়েছেন আইনজীবীরা। এ মামলায় আপিল শুনানির জন্য খালেদা জিয়াকে নিজ খরচে পেপারবুক তৈরিরও অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।
রোববার (৩ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেয়। শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও কয়েজন আইনজীবী।
রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করার পরও আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয়ার কারণ জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলন, ‘রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করলেও খালেদা জিয়া চান আদালতের মাধ্যমে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে আসবেন। তাই আমরা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছি।’
কায়সার কামাল আরও বলেন, ‘মামলার আপিল দ্রুত শুনানি করতে আমরা নিজ খরচে পেপার বুক তৈরি করতে কোর্টের অনুমতি প্রার্থনা করি। কোর্ট অনুমতি দিয়েছেন।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল বিভাগে যাবেন কিনা এমন প্রশ্নে কায়সার কামাল বলেন, ‘নিশ্চয় যাব। আগামী ১০ নভেম্বর আপিল বিভাগে ওই মামলার শুনানির জন্য দিন ধার্য করা আছে।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দেয় আদালত। পরে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। পরের বছর ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট। কিন্তু এরপর আর শুনানি হয়নি।
দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান। এরপর থেকে ছয় মাস পরপর সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।
সে সময় বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফপূর্বক মুক্তির বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮ (বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা এর বিশেষ মামলা নং ১৭/২০১৭ থেকে উদ্ভূত) এবং বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা এর বিশেষ মামলা নং-১৮/২০১৭ এ প্রদত্ত দণ্ডাদেশ মওকুফপূর্বক নির্দেশক্রমে মুক্তি প্রদান করা হল।’
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেয়া যে কোনো দণ্ডের ‘মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম’ মঞ্জুর করার এবং যে কোনো দণ্ড ‘মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস’ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।
কিন্তু আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কারো দণ্ড বাতিল করলেও তিনি যে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন (কনভিকশন), সেই রায় বাতিল হয় না। আর আদালত দোষী সাব্যস্ত করলে মুক্তির পর পাঁচ বছর পার না হলে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।