বিক্ষোভের মুখে শিল্পকলা একাডেমিতে নাটক বন্ধ করার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সংস্কৃতি অঙ্গন। বন্ধ হওয়া ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী সাত দিনের মধ্যে ফেরত দিতে শিল্পকলা একাডেমিকে সময় বেঁধে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীরা।
জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন খুলে দেওয়া, একাডেমির পরিষদে ‘আমলা নির্ভরতা’ কমানোর পাশাপাশি একাডেমি থেকে সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিও তুলেছেন তারা।
আজ সোমবার জাতীয় নাট্যশালার সামনে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ’ এর ব্যানারে একাডেমির মূল মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বটতলার নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা মোহাম্মদ আলী হায়দার।
এসময় তারা পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। তার মধ্যে রয়েছে- দেশ নাটকের বন্ধ প্রদর্শনী সাতদিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে, সেই প্রদর্শনী নির্বিঘ্ন করতে নাট্যকর্মীরাই পাহারা দেবে; শিল্পকলায় আমলানির্ভরতা কমাতে হবে; প্রদর্শনী বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে; সাধারণ নাট্যকর্মী, দর্শক, নাগরিকদের জন্য শিল্পকলাকে উন্মুক্ত করে দিতে হবে; শিল্পকলা থেকে সেনাসদস্যদের সাতদিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে হবে।
নাট্যকর্মী আলী হায়দার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, শিল্পকলায় নাটক বন্ধের ঘটনা বাংলাদেশের নাট্যচর্চার ইতিহাসে এক করুণতম দৃষ্টান্ত।
লিখিত বক্তব্যে দেশ নাটকের কর্মী এহসানুল এজাজ বাবুর ফেইসবুক পোস্টটির সমালোচনা করেই বলা হয়, কিন্তু কোনও একক ব্যক্তির জন্য নাটক বন্ধের দাবি তোলা কখনোই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, শিল্পকলার প্রত্যেকের দায় আছে যেকোনও মূল্যে প্রদর্শনীরত দলকে নাটক শেষ করা পর্যন্ত নিরাপত্তা দেওয়া। সে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া শিল্পকলার দায়, মহাপরিচালক যে দায় নিজের মাথা পেতে নিয়েছেন, যা তার দায়িত্বশীলতাকে আরও মহিমান্বিত করতে পারত, যদি এই সংগঠিত হিংস্র আচরণকে শিল্পকলা ঠেকাতে পারত।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হায়দার আলী বলেন, আগের আমলে যেমন কিছু হলেই শেখ হাসিনা এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়ে যাবার ‘অপরাধে’ মানুষকে শাস্তি দেওয়া হতো, সে প্রথার পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না।
নাট্যকর্মীরা বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মানুষের ফেইসবুক স্ট্যাটাসের জেরে তার দলকে ‘রাজাকার ট্যাগ’ দিয়ে নানাভাবে হেনস্থা এবং নিপীড়ন করা হয়েছে। সেই একই চর্চা নতুন বাংলাদেশে চালু হওয়ার সুযোগ নেই।
একজন ব্যক্তির ফেইসবুক পোস্ট ধরে ব্যানার তৈরি করে সংগঠিত বিক্ষোভের পেছনে তৃতীয় কোনও পক্ষের ইন্ধন রয়েছে কি না, সেই সন্দেহও রয়েছে অনেক নাট্যকর্মীর। তারা বলছেন, সৈয়দ জামিল আহমেদকে বিপদে ফেলতে পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়ে থাকতে পারে।
আলী হায়দার বলেন, দেশ নাটকের আলোচ্য সদস্যের নাট্যাঙ্গনের বাইরে তেমন পরিচিতিই নেই। মানে একজনের পোস্ট নিয়ে এতবড় মব সংগঠিত করা কেবল বাইরের লোকের পক্ষে সম্ভব না। আর সেনাবাহিনীর কারণে যেহেতু সাধারণ নাট্যকর্মীদের প্রবেশাধিকার শিল্পকলায় সীমিত, কাজেই এই পুরো ঘটনায় পতিত প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়েও এখনও টিকে থাকা কোনও গ্রুপ বা নতুন করে ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করা অন্য কোনও অংশের ভূমিকা থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আলী হায়দার বলেন, নাটকের দল একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান। সাধারণত সেখানে সব রাজনৈতিক দল-মত ও আদর্শের মানূষের সহবস্থান থাকে। শিল্পচর্চায় এসব খুব বড় বাধা নয়, বরং এ সহাবস্থান আর সহিষ্ণুতার চর্চাই থিয়েটারের মূল শক্তি।
সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪
বিক্ষোভের মুখে শিল্পকলা একাডেমিতে নাটক বন্ধ করার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সংস্কৃতি অঙ্গন। বন্ধ হওয়া ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী সাত দিনের মধ্যে ফেরত দিতে শিল্পকলা একাডেমিকে সময় বেঁধে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীরা।
জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন খুলে দেওয়া, একাডেমির পরিষদে ‘আমলা নির্ভরতা’ কমানোর পাশাপাশি একাডেমি থেকে সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিও তুলেছেন তারা।
আজ সোমবার জাতীয় নাট্যশালার সামনে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ’ এর ব্যানারে একাডেমির মূল মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বটতলার নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা মোহাম্মদ আলী হায়দার।
এসময় তারা পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। তার মধ্যে রয়েছে- দেশ নাটকের বন্ধ প্রদর্শনী সাতদিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে, সেই প্রদর্শনী নির্বিঘ্ন করতে নাট্যকর্মীরাই পাহারা দেবে; শিল্পকলায় আমলানির্ভরতা কমাতে হবে; প্রদর্শনী বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে; সাধারণ নাট্যকর্মী, দর্শক, নাগরিকদের জন্য শিল্পকলাকে উন্মুক্ত করে দিতে হবে; শিল্পকলা থেকে সেনাসদস্যদের সাতদিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে হবে।
নাট্যকর্মী আলী হায়দার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, শিল্পকলায় নাটক বন্ধের ঘটনা বাংলাদেশের নাট্যচর্চার ইতিহাসে এক করুণতম দৃষ্টান্ত।
লিখিত বক্তব্যে দেশ নাটকের কর্মী এহসানুল এজাজ বাবুর ফেইসবুক পোস্টটির সমালোচনা করেই বলা হয়, কিন্তু কোনও একক ব্যক্তির জন্য নাটক বন্ধের দাবি তোলা কখনোই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, শিল্পকলার প্রত্যেকের দায় আছে যেকোনও মূল্যে প্রদর্শনীরত দলকে নাটক শেষ করা পর্যন্ত নিরাপত্তা দেওয়া। সে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া শিল্পকলার দায়, মহাপরিচালক যে দায় নিজের মাথা পেতে নিয়েছেন, যা তার দায়িত্বশীলতাকে আরও মহিমান্বিত করতে পারত, যদি এই সংগঠিত হিংস্র আচরণকে শিল্পকলা ঠেকাতে পারত।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হায়দার আলী বলেন, আগের আমলে যেমন কিছু হলেই শেখ হাসিনা এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়ে যাবার ‘অপরাধে’ মানুষকে শাস্তি দেওয়া হতো, সে প্রথার পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না।
নাট্যকর্মীরা বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মানুষের ফেইসবুক স্ট্যাটাসের জেরে তার দলকে ‘রাজাকার ট্যাগ’ দিয়ে নানাভাবে হেনস্থা এবং নিপীড়ন করা হয়েছে। সেই একই চর্চা নতুন বাংলাদেশে চালু হওয়ার সুযোগ নেই।
একজন ব্যক্তির ফেইসবুক পোস্ট ধরে ব্যানার তৈরি করে সংগঠিত বিক্ষোভের পেছনে তৃতীয় কোনও পক্ষের ইন্ধন রয়েছে কি না, সেই সন্দেহও রয়েছে অনেক নাট্যকর্মীর। তারা বলছেন, সৈয়দ জামিল আহমেদকে বিপদে ফেলতে পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়ে থাকতে পারে।
আলী হায়দার বলেন, দেশ নাটকের আলোচ্য সদস্যের নাট্যাঙ্গনের বাইরে তেমন পরিচিতিই নেই। মানে একজনের পোস্ট নিয়ে এতবড় মব সংগঠিত করা কেবল বাইরের লোকের পক্ষে সম্ভব না। আর সেনাবাহিনীর কারণে যেহেতু সাধারণ নাট্যকর্মীদের প্রবেশাধিকার শিল্পকলায় সীমিত, কাজেই এই পুরো ঘটনায় পতিত প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়েও এখনও টিকে থাকা কোনও গ্রুপ বা নতুন করে ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করা অন্য কোনও অংশের ভূমিকা থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আলী হায়দার বলেন, নাটকের দল একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান। সাধারণত সেখানে সব রাজনৈতিক দল-মত ও আদর্শের মানূষের সহবস্থান থাকে। শিল্পচর্চায় এসব খুব বড় বাধা নয়, বরং এ সহাবস্থান আর সহিষ্ণুতার চর্চাই থিয়েটারের মূল শক্তি।