শ্রমিক আন্দোলনের তিনদিন পর অবশেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ বৈঠকে বকেয়া বেতন পরিষদের আশ্বাস পেয়ে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহর করা হয়। তবে এখনও খোলা হয়নি কারখানাগুলো। টিএ্যান্ডজেড গ্রুপের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে টানা তিনদিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ১১ নভেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয় সংবাদ’কে বলেন, শ্রমিকদের যে বকেয়া বেতন ভাতা পাওনা ছিল তা আগামী রোববারের মধ্যে ছয় কোটি টাকা শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে পরিশোধ করা হবে। এবং আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা বেতন ভাতা বাবদ আরও ১০ কোটি টাকা শ্রম মন্ত্রণালয় পরিশোধ করবে। এরমধ্যেই বন্ধ কারখানাটি চালু করা হবে।
তিনি বলেন, কারখানাটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে সেটাও শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। তারা বিদ্যুতের লাইনটি পুনঃসংযোগ দেয়ার পর কারখানা চালু করা হবে। শ্রমিকরা কথা দিয়েছেন কারখানা চালু করা হলে তারা নিয়মিত কারখানায় কাজে যোগদান করবেন।
কবে নাগাদ কারখানাগুলো চালু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে টিএনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক সংবাদ’কে বলেন, কারখানাতে এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, আজকালের মধ্যে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগ ঠিক করে ফেলব। আমি আজকে মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি হয়েছে সেগুলি আজকের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলব। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যে আমরা কারখানাগুলো চালু করতে পারবো। টিএনজেড গ্রুপে আগে যেখানে সাড়ে সাত হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল বর্তমানে তা সাড়ে ছয় হাজারে নেমে এসেছে। দেখুন আমাদের কারখানাটি ইকো ফ্রেন্ডলি প্রজেক্ট, অর্থাৎ ক্লিন প্রজেক্ট ।
তিনি আরও জানান, ২০০৭ সালে কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এ প্রজেক্টটির আনুমানিক মূল্য ১৪০০ কোটি টাকা। ইকো ফ্রেন্ডলি এই কারখানাটির ২০২৩ সাল পর্যন্ত এক্সপোর্টের পরিমাণ ছিল ৩৩৯ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। করোনা পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও দেশিয় নানা কারণসহ ব্যাংকের একটি চক্রান্তের শিকার হয়ে কারখানাটি বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। গত জুলাই মাস থেকে সংকট চরম আকারে দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত সাপোর্ট না পাওয়ার কারণে বেতন ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছিল না।
এই কোম্পানি একটি সময় অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এই কোম্পানি ব্যাংকের বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এই কোম্পানির ১৫০ কোটি টাকা ইউসিবিএল ব্যাংকে তিন বছর পরেছিল কোনো ইন্টারেস্ট ছাড়া। টিএনজেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাত হেসেন শামীম খুবই ধার্মিক মানুষ বিধায় তিনি এক টাকা ইন্টারেস্ট নেননি।
অথচ যখন আমাদের ক্রাইসিস পিরিয়ড আসলো তখন ব্যাংক কোনো কারণে এই সুযোগ-সুবিধা থেকে এলসি, ব্যাক টু ব্যাক এলসি এগুলো বন্ধ করে দিল। তখন তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু সুযোগ সুবিধা পাননি, না পাওয়ার কারণে এতো বড় প্রতিষ্ঠানটি পড়ে গেল। এবং তার কিছু আত্মীয় স্বজন এখানে ইনভলভ ছিল। আত্মীয় স্বজনগুলো উনি না থাকার কারণে অনেক সুযোগ নিয়েছে। উনার ছেলেকে কিডন্যাপ পর্যন্ত করা হয়েছিল তিনি টাকা বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে উনার ছেলেকে উদ্ধার করে।
তারপর ২০১৪ সাল থেকে থেকে উনি তার পরিবারসহ মদিনাতে শিফট করেন। তিনি এখন মদিনাতে থাকেন আবার বাংলাদেশেও আসেন এবার বাংলাদেশে এসে আট মাস ছিলেন। সেই সুবাধে অসাধু প্রকৃতির আত্মীয়-স্বজন কারখনার যেখানে বেতন আসত ১০ কোটি টাকা সেখানে ২০ /২২কোটি টাকাও বেতন ওঠানো হয়েছে প্রতি মাসে। যারা রাস্তায় ঘুড়ে বেড়াত, তারা আজকে কোটি পতি। গাড়ি বাড়িও হয়েছে অথচ নাম্বার ওয়ান কোম্পানির মালিক হয়েও তিনি আজ নিঃশ^। তিনি বর্তমানে ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে বড় বড় বায়ারদের সঙ্গে ওনার খুব ভালো সম্পর্ক। তিনি এখন শুধু বায়ার ডিল করেন, এখন শুধু মার্কেটিং করবে।
তিনি আরও বলেন, কারখাটি ঘুড়ে দাঁড়াতে পাশাপাশি আমাদের যতোটুকু লোকবল দরকার ততটুকুই রাখব। যেহেতু এখন আমাদের পজিশন ভালো নাই আগের মতো। আগের পজিশনে ফিড়িয়ে আনার জন্য যাতে মানুষের ঘাটতি না থাকে। যে লোকগুলো আমার এখানে কাজ করবে সে প্রতি যেন মাসে বেতনটা পায়। সেটুকু বিবেচনা করে আমি কারখাটিকে নতুন ভাবে সাজাতে চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে সরকার আমাদেরকে সহযোগিতা করছে। সুযোগ দিচ্ছে এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সংবাদ’কে বলেন, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) শ্রম মন্ত্রণালয়ে কারখানার মালিক, শ্রমিক ও বিজিএমইএ প্রতিনিধিদের বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের ছয় কোটি টাকা আগামী রবিবার দিনের মধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয় পরিশোধ করবেন এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে শ্রমিকরা তাদের ৩ দিনের টানা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। অবরোধ প্রত্যাহার হলেও কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কারখানাটি বৈদ্যুতিক বিল বকেয়া থাকায় কারখানাটির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। সেটার সমাধান হয়ে গেলেই কারখানাটি চালু করা হবে। শ্রমিকরা পরিস্থিতি অবজারভ করছেন বকেয়া বেতনের প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেলে কারখানায় কাজে যোগ দেবেন।
ছাঁটাই শ্রমিকদের পুনর্বহাল দাবিতে কর্মবিরতি, ১৪ কারখানা বন্ধ
গাজীপুর, প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কোনাবাড়ী শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিভিন্ন কারখানায় ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে দুই কারখানার প্রায় ১০ হাজার পোশাক শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কোনাবাড়ীর এম.এম নীটওয়্যার লি. ও মামুন নীটওয়্যার লি. কারখানার পোশাক শ্রমিকরা এ কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভেতরে অবস্থান করেন।
জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর দুপুর আড়াইটার সময় শ্রমিকরা কিছু ‘অযৌক্তিক’ দাবি নিয়ে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করে। শ্রমিকদের কিছু দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও আরও কিছু ‘অযৌক্তিক’ দাবি উৎত্থাপন করে কাজ থেকে বিরত থাকে। পরে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার স্বার্থে গত ৪ নভেম্বর থেকে শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ৯ নভেম্বর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টর অভিযোগে শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী এম এম নীটওয়্যার লি. থেকে ৬৮ জন এবং মামুন নীটওয়্যার লি. থেকে ৪৫ জন শ্রমিককে টার্মিনেশন বা (অব্যাহতি) দেয় কর্তৃপক্ষ। ৯ নভেম্বর থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলেও মঙ্গলবার হঠাৎ সকাল ৯টা থেকে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিকরা জানান, আন্দোলনের পরে কারখানা চালু হওয়ার পর মালিক বলেছিল কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হবে না। কিন্তু এতোগুলো শ্রমিক কেন ছাঁটাই করা হলো এর প্রতিবাদেই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছেন।
এ বিষয়ে এম এম নীটওয়্যার লিমিটেডের প্রশাসকি কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন জানান, যেসব শ্রমিকদের টার্মিনেশন বা চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনাদি পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরেও কিছু শ্রমিক কারখানায় কাজ বন্ধ করে বসে আছেন। যে অবস্থা চলছে তাতে কারখানা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অন্যদিকে কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা গত একমাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে তিনদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় কাজ বন্ধ করে শ্রমিকরা কারখানা মূল ফটকের সামনে অবস্থান করেন। হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল ও নাইট বিলসহ ১০ দফা দাবি অদায়ে বিক্ষোভ করছেন বাইমাইল এলাকায় কাশেমল্যাম্পস কারখানার শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সংবাদ’কে বলেন, বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানাসহ অন্যদিকে নয়টি সব মিলে ১৪টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
শ্রমিক আন্দোলনের তিনদিন পর অবশেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ বৈঠকে বকেয়া বেতন পরিষদের আশ্বাস পেয়ে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহর করা হয়। তবে এখনও খোলা হয়নি কারখানাগুলো। টিএ্যান্ডজেড গ্রুপের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে টানা তিনদিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ১১ নভেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয় সংবাদ’কে বলেন, শ্রমিকদের যে বকেয়া বেতন ভাতা পাওনা ছিল তা আগামী রোববারের মধ্যে ছয় কোটি টাকা শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে পরিশোধ করা হবে। এবং আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা বেতন ভাতা বাবদ আরও ১০ কোটি টাকা শ্রম মন্ত্রণালয় পরিশোধ করবে। এরমধ্যেই বন্ধ কারখানাটি চালু করা হবে।
তিনি বলেন, কারখানাটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে সেটাও শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। তারা বিদ্যুতের লাইনটি পুনঃসংযোগ দেয়ার পর কারখানা চালু করা হবে। শ্রমিকরা কথা দিয়েছেন কারখানা চালু করা হলে তারা নিয়মিত কারখানায় কাজে যোগদান করবেন।
কবে নাগাদ কারখানাগুলো চালু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে টিএনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক সংবাদ’কে বলেন, কারখানাতে এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, আজকালের মধ্যে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগ ঠিক করে ফেলব। আমি আজকে মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি হয়েছে সেগুলি আজকের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলব। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যে আমরা কারখানাগুলো চালু করতে পারবো। টিএনজেড গ্রুপে আগে যেখানে সাড়ে সাত হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল বর্তমানে তা সাড়ে ছয় হাজারে নেমে এসেছে। দেখুন আমাদের কারখানাটি ইকো ফ্রেন্ডলি প্রজেক্ট, অর্থাৎ ক্লিন প্রজেক্ট ।
তিনি আরও জানান, ২০০৭ সালে কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এ প্রজেক্টটির আনুমানিক মূল্য ১৪০০ কোটি টাকা। ইকো ফ্রেন্ডলি এই কারখানাটির ২০২৩ সাল পর্যন্ত এক্সপোর্টের পরিমাণ ছিল ৩৩৯ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। করোনা পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও দেশিয় নানা কারণসহ ব্যাংকের একটি চক্রান্তের শিকার হয়ে কারখানাটি বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। গত জুলাই মাস থেকে সংকট চরম আকারে দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত সাপোর্ট না পাওয়ার কারণে বেতন ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছিল না।
এই কোম্পানি একটি সময় অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এই কোম্পানি ব্যাংকের বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এই কোম্পানির ১৫০ কোটি টাকা ইউসিবিএল ব্যাংকে তিন বছর পরেছিল কোনো ইন্টারেস্ট ছাড়া। টিএনজেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাত হেসেন শামীম খুবই ধার্মিক মানুষ বিধায় তিনি এক টাকা ইন্টারেস্ট নেননি।
অথচ যখন আমাদের ক্রাইসিস পিরিয়ড আসলো তখন ব্যাংক কোনো কারণে এই সুযোগ-সুবিধা থেকে এলসি, ব্যাক টু ব্যাক এলসি এগুলো বন্ধ করে দিল। তখন তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু সুযোগ সুবিধা পাননি, না পাওয়ার কারণে এতো বড় প্রতিষ্ঠানটি পড়ে গেল। এবং তার কিছু আত্মীয় স্বজন এখানে ইনভলভ ছিল। আত্মীয় স্বজনগুলো উনি না থাকার কারণে অনেক সুযোগ নিয়েছে। উনার ছেলেকে কিডন্যাপ পর্যন্ত করা হয়েছিল তিনি টাকা বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে উনার ছেলেকে উদ্ধার করে।
তারপর ২০১৪ সাল থেকে থেকে উনি তার পরিবারসহ মদিনাতে শিফট করেন। তিনি এখন মদিনাতে থাকেন আবার বাংলাদেশেও আসেন এবার বাংলাদেশে এসে আট মাস ছিলেন। সেই সুবাধে অসাধু প্রকৃতির আত্মীয়-স্বজন কারখনার যেখানে বেতন আসত ১০ কোটি টাকা সেখানে ২০ /২২কোটি টাকাও বেতন ওঠানো হয়েছে প্রতি মাসে। যারা রাস্তায় ঘুড়ে বেড়াত, তারা আজকে কোটি পতি। গাড়ি বাড়িও হয়েছে অথচ নাম্বার ওয়ান কোম্পানির মালিক হয়েও তিনি আজ নিঃশ^। তিনি বর্তমানে ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে বড় বড় বায়ারদের সঙ্গে ওনার খুব ভালো সম্পর্ক। তিনি এখন শুধু বায়ার ডিল করেন, এখন শুধু মার্কেটিং করবে।
তিনি আরও বলেন, কারখাটি ঘুড়ে দাঁড়াতে পাশাপাশি আমাদের যতোটুকু লোকবল দরকার ততটুকুই রাখব। যেহেতু এখন আমাদের পজিশন ভালো নাই আগের মতো। আগের পজিশনে ফিড়িয়ে আনার জন্য যাতে মানুষের ঘাটতি না থাকে। যে লোকগুলো আমার এখানে কাজ করবে সে প্রতি যেন মাসে বেতনটা পায়। সেটুকু বিবেচনা করে আমি কারখাটিকে নতুন ভাবে সাজাতে চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে সরকার আমাদেরকে সহযোগিতা করছে। সুযোগ দিচ্ছে এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সংবাদ’কে বলেন, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) শ্রম মন্ত্রণালয়ে কারখানার মালিক, শ্রমিক ও বিজিএমইএ প্রতিনিধিদের বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের ছয় কোটি টাকা আগামী রবিবার দিনের মধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয় পরিশোধ করবেন এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে শ্রমিকরা তাদের ৩ দিনের টানা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। অবরোধ প্রত্যাহার হলেও কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কারখানাটি বৈদ্যুতিক বিল বকেয়া থাকায় কারখানাটির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। সেটার সমাধান হয়ে গেলেই কারখানাটি চালু করা হবে। শ্রমিকরা পরিস্থিতি অবজারভ করছেন বকেয়া বেতনের প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেলে কারখানায় কাজে যোগ দেবেন।
ছাঁটাই শ্রমিকদের পুনর্বহাল দাবিতে কর্মবিরতি, ১৪ কারখানা বন্ধ
গাজীপুর, প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কোনাবাড়ী শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিভিন্ন কারখানায় ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে দুই কারখানার প্রায় ১০ হাজার পোশাক শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কোনাবাড়ীর এম.এম নীটওয়্যার লি. ও মামুন নীটওয়্যার লি. কারখানার পোশাক শ্রমিকরা এ কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভেতরে অবস্থান করেন।
জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর দুপুর আড়াইটার সময় শ্রমিকরা কিছু ‘অযৌক্তিক’ দাবি নিয়ে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করে। শ্রমিকদের কিছু দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও আরও কিছু ‘অযৌক্তিক’ দাবি উৎত্থাপন করে কাজ থেকে বিরত থাকে। পরে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার স্বার্থে গত ৪ নভেম্বর থেকে শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ৯ নভেম্বর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টর অভিযোগে শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী এম এম নীটওয়্যার লি. থেকে ৬৮ জন এবং মামুন নীটওয়্যার লি. থেকে ৪৫ জন শ্রমিককে টার্মিনেশন বা (অব্যাহতি) দেয় কর্তৃপক্ষ। ৯ নভেম্বর থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলেও মঙ্গলবার হঠাৎ সকাল ৯টা থেকে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিকরা জানান, আন্দোলনের পরে কারখানা চালু হওয়ার পর মালিক বলেছিল কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হবে না। কিন্তু এতোগুলো শ্রমিক কেন ছাঁটাই করা হলো এর প্রতিবাদেই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছেন।
এ বিষয়ে এম এম নীটওয়্যার লিমিটেডের প্রশাসকি কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন জানান, যেসব শ্রমিকদের টার্মিনেশন বা চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনাদি পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরেও কিছু শ্রমিক কারখানায় কাজ বন্ধ করে বসে আছেন। যে অবস্থা চলছে তাতে কারখানা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অন্যদিকে কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা গত একমাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে তিনদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় কাজ বন্ধ করে শ্রমিকরা কারখানা মূল ফটকের সামনে অবস্থান করেন। হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল ও নাইট বিলসহ ১০ দফা দাবি অদায়ে বিক্ষোভ করছেন বাইমাইল এলাকায় কাশেমল্যাম্পস কারখানার শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সংবাদ’কে বলেন, বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানাসহ অন্যদিকে নয়টি সব মিলে ১৪টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।