সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর দেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করা হয় তিন দশমিক ১৫ বিলিয়ন থেকে তিন দশমিক ৮৪ বিলিয়ন। যার মধ্যে ২১ দশমিক চার শতাংশ রিসাইকেল করা হয়। বাকি ৭৮ দশমিক ছয় শতাংশ প্লাস্টিক বোতল নদী, সমুদ্র এবং ডাম্পিং স্টেশনে জমা হয়।
এই প্লাস্টিক বোতল ৪৫০ বছর পর্যন্ত পরিবেশে টিকে থাকে, যা পরবর্তিতে পরিবেশ ও আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়ায়।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকায় এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত প্রভাব : দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে।
গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন, শহরে পানির বোতল এবং গ্রামে কোমল পানীয়ের বোতল বেশি ব্যবহৃত হয়। দেশের প্রায় ৮৩ দশমিক ছয় শতাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করে। তাদরে মধ্যে শহরে ১৮ দশমিক চার শতাংশ গ্রামের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ প্লাস্টিক বোতলের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন।
এদের মধ্যে শহরের ৫১ শতাংশ এবং ৪২ শতাংশ গ্রামের ভোক্তা এই প্লাস্টিক বোতল একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেয়। বাকিরা একাধিকবার ব্যবহারের পর তা ফেলে দেয়। আরও দেখা গেছে, বর্জ্য সংগ্রহকারীদের মধ্যে মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতন।
এই প্লাস্টিক বোতল থেকে নির্গত রাসায়নিক, যেমন বিসফেনল এ গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। এসব ব্যবহারের ফলে শরীরের হরমোন সিস্টেমে বিঘœ ঘটে ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যানসার মতো রোগ তৈরির সম্ভবনা সৃষ্টি করে। জরিপ ভিত্তিক পদ্ধতিতে করা গবেষণাটি দেশের আটটি বিভাগের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের ওপর পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশ নেয়া ব্যাক্তিরে মধ্যে ভোক্তা, খুচরা বিক্রেতা ও বর্জ্য সংগ্রহকারীদের রাখা হয়।
পরিবেশে প্লাস্টিক বোতল ব্যবহারের প্রভাব, পরিবেশ দূষণ ও আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেন এসডোর চেয়ারপার্সন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য বোতল থেকে সৃষ্ট দূষণ আমাদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক চ্যালেঞ্জ। প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যবস্থা উন্নত করা এবং আমাদের প্রতিবেশতন্ত্র রক্ষার জন্য সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এসডো’র সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, প্রফেসর ড. মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি উপেক্ষা করা যায় না। বিসফেনল এ এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকের মতো রাসায়নিক আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করছে, যা মানবস্বাস্থ্য এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।’
এসডো’র মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে টেকসই বিকল্প এবং দায়িত্বশীল ভোক্তা আচরণকে উৎসাহিত করা যায়।’
এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের সংকট মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমরা প্রতিটি স্তরে পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করতে চাই, যাতে পরিবেশবান্ধব সমাধান গ্রহণ, বর্জ্য সংগ্রহকারীদের সহায়তা এবং পরিবেশ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় কঠোর নীতি প্রয়োগ করা যায়।’
প্রতিষ্ঠানটি প্লাস্টিক বোতলের প্রভাব হ্রাসের জন্য প্রতিবেদনে যে সুপারিশগুলোর উপর জোরদেন; পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী বিকল্প ব্যবহার করা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য বোতলেরর ব্যবহারকে উৎসাহিত করা, প্লাস্টিক বোতলের উৎপাদন ও ব্যবহার কমানো, নীতি ও নিয়ন্ত্রক নির্দেশিকা করা, বিকল্প সমাধান প্রচার ও উৎপাদন, পরিবেশ সম্মত রিসাইকেল, বিপজ্জনক প্লাস্টিক বর্জ্য বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা।
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর দেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করা হয় তিন দশমিক ১৫ বিলিয়ন থেকে তিন দশমিক ৮৪ বিলিয়ন। যার মধ্যে ২১ দশমিক চার শতাংশ রিসাইকেল করা হয়। বাকি ৭৮ দশমিক ছয় শতাংশ প্লাস্টিক বোতল নদী, সমুদ্র এবং ডাম্পিং স্টেশনে জমা হয়।
এই প্লাস্টিক বোতল ৪৫০ বছর পর্যন্ত পরিবেশে টিকে থাকে, যা পরবর্তিতে পরিবেশ ও আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়ায়।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকায় এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত প্রভাব : দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে।
গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন, শহরে পানির বোতল এবং গ্রামে কোমল পানীয়ের বোতল বেশি ব্যবহৃত হয়। দেশের প্রায় ৮৩ দশমিক ছয় শতাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করে। তাদরে মধ্যে শহরে ১৮ দশমিক চার শতাংশ গ্রামের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ প্লাস্টিক বোতলের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন।
এদের মধ্যে শহরের ৫১ শতাংশ এবং ৪২ শতাংশ গ্রামের ভোক্তা এই প্লাস্টিক বোতল একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেয়। বাকিরা একাধিকবার ব্যবহারের পর তা ফেলে দেয়। আরও দেখা গেছে, বর্জ্য সংগ্রহকারীদের মধ্যে মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতন।
এই প্লাস্টিক বোতল থেকে নির্গত রাসায়নিক, যেমন বিসফেনল এ গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। এসব ব্যবহারের ফলে শরীরের হরমোন সিস্টেমে বিঘœ ঘটে ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যানসার মতো রোগ তৈরির সম্ভবনা সৃষ্টি করে। জরিপ ভিত্তিক পদ্ধতিতে করা গবেষণাটি দেশের আটটি বিভাগের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের ওপর পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশ নেয়া ব্যাক্তিরে মধ্যে ভোক্তা, খুচরা বিক্রেতা ও বর্জ্য সংগ্রহকারীদের রাখা হয়।
পরিবেশে প্লাস্টিক বোতল ব্যবহারের প্রভাব, পরিবেশ দূষণ ও আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেন এসডোর চেয়ারপার্সন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য বোতল থেকে সৃষ্ট দূষণ আমাদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক চ্যালেঞ্জ। প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যবস্থা উন্নত করা এবং আমাদের প্রতিবেশতন্ত্র রক্ষার জন্য সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এসডো’র সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, প্রফেসর ড. মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি উপেক্ষা করা যায় না। বিসফেনল এ এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকের মতো রাসায়নিক আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করছে, যা মানবস্বাস্থ্য এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।’
এসডো’র মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে টেকসই বিকল্প এবং দায়িত্বশীল ভোক্তা আচরণকে উৎসাহিত করা যায়।’
এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের সংকট মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমরা প্রতিটি স্তরে পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করতে চাই, যাতে পরিবেশবান্ধব সমাধান গ্রহণ, বর্জ্য সংগ্রহকারীদের সহায়তা এবং পরিবেশ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় কঠোর নীতি প্রয়োগ করা যায়।’
প্রতিষ্ঠানটি প্লাস্টিক বোতলের প্রভাব হ্রাসের জন্য প্রতিবেদনে যে সুপারিশগুলোর উপর জোরদেন; পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী বিকল্প ব্যবহার করা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য বোতলেরর ব্যবহারকে উৎসাহিত করা, প্লাস্টিক বোতলের উৎপাদন ও ব্যবহার কমানো, নীতি ও নিয়ন্ত্রক নির্দেশিকা করা, বিকল্প সমাধান প্রচার ও উৎপাদন, পরিবেশ সম্মত রিসাইকেল, বিপজ্জনক প্লাস্টিক বর্জ্য বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা।