ভোলার একটি গ্যাস ক্ষেত্র
সরকার এবার দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে এলএনজি (ঘনীভূত প্রাকৃতিক গ্যাস) করে ঢাকা ও অন্যান্য এলাকায় বিক্রির পরিকল্পনা করছে। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাকো ইতোমধ্যে প্রতিদিন ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এনে ঢাকা এবং আশেপাশের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় সরবরাহ করছে। প্রতিষ্ঠানটি আরও ২০ মিলিয়ন ঘনফুট সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) আকারে ঢাকায় সরবরাহ দিতে চায়। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
ইন্ট্রাকো জানায়, সরকার চাইলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে দৈনিক গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা বেড়ে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হবে। সেক্ষেত্রে জাতীয় গ্রিডে বা বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরাসরি গ্যাস সরবরাহ করা হলে আগের চেয়ে দাম কিছুটা কম পড়বে। সরকার চাইলে ভোলা থেকে এলএনজি আকারেও গ্যাস সরবরাহ দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
*অব্যবহৃত গ্যাস*
শাহবাজপুর ও ভোলা দুই গ্যাসক্ষেত্রে মজুত রয়েছে ২.০৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। স্থানীয়ভাবে এর চাহিদা ৭০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। প্রায় ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ) গ্যাস অব্যবহৃত থাকে।
ভোলায় গ্যাস উৎপাদনের কাজ করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। বাপেক্সের কাছ থেকে গ্যাস কিনে ভোক্তাপর্যায়ে তা সরবরাহ করে সুন্দরবন গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সুন্দরবনের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ি কিনে নিয়ে শিল্পে গ্যাস সরবরাহের কাজটি করছে সিএনজি খাতের কোম্পানি ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি’।
‘কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি)’ হিসেবে সিলিন্ডারে ভরে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন শিল্পকারখানায়। প্রায় এক বছর আগে (২১ ডিসেম্বর, ২০২৩) ঢাকার ধামরাইয়ে বস্ত্র খাতের একটি কারখানায় সরবরাহের আনুষ্ঠানিকভাবে এ গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। প্রতি সিলিন্ডারে গ্যাস থাকে সাড়ে তিন হাজার ঘনমিটার। বিশেষ ট্রাকে করে এটি পরিবহন করা হয়। পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবন থেকে ইন্ট্রাকো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কিনছে ১৭ টাকায়। ভোলা থেকে ঢাকা পর্যন্ত গ্যাস আনতে ২৩০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। গ্যাসকে সিএনজিতে রূপান্তর, ঢাকা পর্যন্ত আনতে পরিবহনে ডিজেল খরচ এবং সড়ক পথে (সেতু) টোল খরচের একটি হিসেব ধরে এই সিএনজির প্রতি ঘনমিটারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা।
শিল্প কারখানার মালিকরা পাইপলাইন থেকে সরাসরি প্রতি ঘনমিটার গ্যাস পাচ্ছেন ৩০ টাকায়। চলমান গ্যাস সংকটের কারণে যেসব এলাকার শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়, সেখানে জেনারেটরে জ্বালানি তেলের পরিবর্তে ভোলার গ্যাস অনেকটাই লাভজনক বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রিয়াদ আলী সেমিনারে বলেন, ‘দেশে গ্যাস সংকট থাকার পরও পাইপলাইনের অভাবে ভোলায় আবিষ্কৃত গ্যাস পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সেজন্য আমরা ওই গ্যাস সিএনজিতে রূপান্তরিত করে বিশেষ পরিবহনের মাধ্যমে এনে তা ঢাকা এবং আশেপাশের কারখানায় সরবরাহ করছি।’
সেমিনারে জানানো হয়, চুক্তির পর গত বছরের ২১ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১৮টি কারখানায় এই গ্যাস সরবরাহ করেছে ইন্ট্রাকো। এখন পর্যন্ত ৯ কোটি টাকার গ্যাস বিক্রি করা হয়েছে। এ খাতে প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। ২০ মিলিয়ন ঘনফুটের প্রসেসপ্লান্ট তৈরিতে বিনিয়োগ হচ্ছে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা।
*জ্বালানি উপদেষ্টা, টেন্ডার*
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গত ২৩ নভেম্বর ঢাকায় এক সেমিনারে বলেন, ‘ভোলায় ৭০ এমএমসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলেও পাইপলাইন না থাকায় ওই গ্যাস ঢাকায় বা শিল্প এলাকায় আনা যাচ্ছে না। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনার জন্য আমরা ডিসেম্বরেই ওপেন টেন্ডার দিচ্ছি। আগ্রহী ব্যবসায়ীরা দরপত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এলএনজি বা সিএনজি ফরম্যাটে এই গ্যাস ঢাকায় আনতে পারবেন। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনা গেলে শিল্পে গ্যাসের সংকট কিছুটা হলেও কমবে।’
এ প্রসঙ্গে রিয়াদ আলী সোমবার সেমিনারে বলেন, ‘আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সরকার যেভাবে চায় সেইভাবেই আমরা কাজ করতে চাই। যত বেশি প্রতিষ্ঠান আসবে ততো বেশি প্রতিযোগিতা বাড়বে। দেশের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি আমাদের মার্কেটিং এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও সুবিধা বাড়বে। ইতোমধ্যে গ্যাস নেয়ার জন্য অনেক শিল্প মালিক যোগাযোগ করছেন।’
ইন্ট্রাকোর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করে সমুদ্রেপথে এবং পরবর্তী সড়কপথে ওই গ্যাস এনে বিভিন্ন কারখানায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা একটি বড় ক্যাসকেড ট্রাক ট্রেইলার (বিশেষ পরিবহন) ব্যবহার করছি।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ইন্ট্রাকোর মহাব্যবস্থাপক (এডমিন) নৌ-বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার আবু সাইদ, চিফ অপারেটিং অফিসার এহসানুল হক পাটোয়ারি, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) মোমিন মোল্লাহ প্রমুখ।
*২০ মিলিয়ন ঘনফুট*
কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম্প্রেস এবং পরিবহনের লক্ষ্যে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাঁচড়া ইউনিয়নের চর গাজীপুর মৌজায় ১০৬ শতক জমি কিনেছে ইন্ট্রাকো। জমির ভূমি উন্নয়ন, সীমানা নিরাপত্তা বেষ্টনি স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
এ ছাড়া কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনীয় কম্প্রেসার কেনার জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, যা বর্তমানে উৎপাদনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া ইন্ট্রাকো ইতোমধ্যে সুন্দরবন গ্যাস কর্তৃক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ২.৮ কিলোমিটার ১০ ইঞ্চি ব্যাসের বিতরণ লাইন স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে এবং মূল্যায়নের কাজ চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এই ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন গ্রাহককে সরবরাহ না করে সরকারের অনুমতিক্রমে জাতীয় গ্যাস গ্রিডের স্বল্পচাপ এলাকার যেকোনো পয়েন্টে অথবা ভোলা থেকে সরাসরি খুলনায় পরিবহনের মাধ্যমে খুলনাস্থ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ভোলার একটি গ্যাস ক্ষেত্র
মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
সরকার এবার দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে এলএনজি (ঘনীভূত প্রাকৃতিক গ্যাস) করে ঢাকা ও অন্যান্য এলাকায় বিক্রির পরিকল্পনা করছে। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাকো ইতোমধ্যে প্রতিদিন ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এনে ঢাকা এবং আশেপাশের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় সরবরাহ করছে। প্রতিষ্ঠানটি আরও ২০ মিলিয়ন ঘনফুট সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) আকারে ঢাকায় সরবরাহ দিতে চায়। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
ইন্ট্রাকো জানায়, সরকার চাইলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে দৈনিক গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা বেড়ে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হবে। সেক্ষেত্রে জাতীয় গ্রিডে বা বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরাসরি গ্যাস সরবরাহ করা হলে আগের চেয়ে দাম কিছুটা কম পড়বে। সরকার চাইলে ভোলা থেকে এলএনজি আকারেও গ্যাস সরবরাহ দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
*অব্যবহৃত গ্যাস*
শাহবাজপুর ও ভোলা দুই গ্যাসক্ষেত্রে মজুত রয়েছে ২.০৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। স্থানীয়ভাবে এর চাহিদা ৭০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। প্রায় ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ) গ্যাস অব্যবহৃত থাকে।
ভোলায় গ্যাস উৎপাদনের কাজ করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। বাপেক্সের কাছ থেকে গ্যাস কিনে ভোক্তাপর্যায়ে তা সরবরাহ করে সুন্দরবন গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সুন্দরবনের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ি কিনে নিয়ে শিল্পে গ্যাস সরবরাহের কাজটি করছে সিএনজি খাতের কোম্পানি ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি’।
‘কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি)’ হিসেবে সিলিন্ডারে ভরে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন শিল্পকারখানায়। প্রায় এক বছর আগে (২১ ডিসেম্বর, ২০২৩) ঢাকার ধামরাইয়ে বস্ত্র খাতের একটি কারখানায় সরবরাহের আনুষ্ঠানিকভাবে এ গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। প্রতি সিলিন্ডারে গ্যাস থাকে সাড়ে তিন হাজার ঘনমিটার। বিশেষ ট্রাকে করে এটি পরিবহন করা হয়। পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবন থেকে ইন্ট্রাকো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কিনছে ১৭ টাকায়। ভোলা থেকে ঢাকা পর্যন্ত গ্যাস আনতে ২৩০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। গ্যাসকে সিএনজিতে রূপান্তর, ঢাকা পর্যন্ত আনতে পরিবহনে ডিজেল খরচ এবং সড়ক পথে (সেতু) টোল খরচের একটি হিসেব ধরে এই সিএনজির প্রতি ঘনমিটারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা।
শিল্প কারখানার মালিকরা পাইপলাইন থেকে সরাসরি প্রতি ঘনমিটার গ্যাস পাচ্ছেন ৩০ টাকায়। চলমান গ্যাস সংকটের কারণে যেসব এলাকার শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়, সেখানে জেনারেটরে জ্বালানি তেলের পরিবর্তে ভোলার গ্যাস অনেকটাই লাভজনক বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রিয়াদ আলী সেমিনারে বলেন, ‘দেশে গ্যাস সংকট থাকার পরও পাইপলাইনের অভাবে ভোলায় আবিষ্কৃত গ্যাস পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সেজন্য আমরা ওই গ্যাস সিএনজিতে রূপান্তরিত করে বিশেষ পরিবহনের মাধ্যমে এনে তা ঢাকা এবং আশেপাশের কারখানায় সরবরাহ করছি।’
সেমিনারে জানানো হয়, চুক্তির পর গত বছরের ২১ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১৮টি কারখানায় এই গ্যাস সরবরাহ করেছে ইন্ট্রাকো। এখন পর্যন্ত ৯ কোটি টাকার গ্যাস বিক্রি করা হয়েছে। এ খাতে প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। ২০ মিলিয়ন ঘনফুটের প্রসেসপ্লান্ট তৈরিতে বিনিয়োগ হচ্ছে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা।
*জ্বালানি উপদেষ্টা, টেন্ডার*
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গত ২৩ নভেম্বর ঢাকায় এক সেমিনারে বলেন, ‘ভোলায় ৭০ এমএমসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলেও পাইপলাইন না থাকায় ওই গ্যাস ঢাকায় বা শিল্প এলাকায় আনা যাচ্ছে না। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনার জন্য আমরা ডিসেম্বরেই ওপেন টেন্ডার দিচ্ছি। আগ্রহী ব্যবসায়ীরা দরপত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এলএনজি বা সিএনজি ফরম্যাটে এই গ্যাস ঢাকায় আনতে পারবেন। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনা গেলে শিল্পে গ্যাসের সংকট কিছুটা হলেও কমবে।’
এ প্রসঙ্গে রিয়াদ আলী সোমবার সেমিনারে বলেন, ‘আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সরকার যেভাবে চায় সেইভাবেই আমরা কাজ করতে চাই। যত বেশি প্রতিষ্ঠান আসবে ততো বেশি প্রতিযোগিতা বাড়বে। দেশের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি আমাদের মার্কেটিং এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও সুবিধা বাড়বে। ইতোমধ্যে গ্যাস নেয়ার জন্য অনেক শিল্প মালিক যোগাযোগ করছেন।’
ইন্ট্রাকোর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করে সমুদ্রেপথে এবং পরবর্তী সড়কপথে ওই গ্যাস এনে বিভিন্ন কারখানায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা একটি বড় ক্যাসকেড ট্রাক ট্রেইলার (বিশেষ পরিবহন) ব্যবহার করছি।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ইন্ট্রাকোর মহাব্যবস্থাপক (এডমিন) নৌ-বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার আবু সাইদ, চিফ অপারেটিং অফিসার এহসানুল হক পাটোয়ারি, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) মোমিন মোল্লাহ প্রমুখ।
*২০ মিলিয়ন ঘনফুট*
কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম্প্রেস এবং পরিবহনের লক্ষ্যে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাঁচড়া ইউনিয়নের চর গাজীপুর মৌজায় ১০৬ শতক জমি কিনেছে ইন্ট্রাকো। জমির ভূমি উন্নয়ন, সীমানা নিরাপত্তা বেষ্টনি স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
এ ছাড়া কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনীয় কম্প্রেসার কেনার জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, যা বর্তমানে উৎপাদনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া ইন্ট্রাকো ইতোমধ্যে সুন্দরবন গ্যাস কর্তৃক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ২.৮ কিলোমিটার ১০ ইঞ্চি ব্যাসের বিতরণ লাইন স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে এবং মূল্যায়নের কাজ চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এই ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন গ্রাহককে সরবরাহ না করে সরকারের অনুমতিক্রমে জাতীয় গ্যাস গ্রিডের স্বল্পচাপ এলাকার যেকোনো পয়েন্টে অথবা ভোলা থেকে সরাসরি খুলনায় পরিবহনের মাধ্যমে খুলনাস্থ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।