ডাভোস বৈঠকে সংস্কার কর্মসূচি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের ডাভোস থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে ওলাফ শলৎসকে অবহিত করেন অধ্যাপক ইউনূস। চ্যান্সেলর এ সময় বলেন, “আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব।”
অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে জানান, তিনি একটি ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা ছয়টি কমিশনের প্রণীত সংস্কার প্রতিবেদনগুলোর ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর রাজনৈতিক দলগুলো “জুলাই ঘোষণাপত্র” নামে একটি সনদে স্বাক্ষর করবে। এই ঘোষণাপত্রের উদ্দেশ্য হলো ছাত্র-নেতৃত্বাধীন জুলাই ও আগস্টের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা ধরে রাখা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বৈঠকে জুলাই আন্দোলনের কারণ, বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস চ্যান্সেলরকে জানান, কীভাবে তরুণ প্রজন্ম বছরের পর বছর ধরে চলা অপশাসনের অবসান ঘটানোর জন্য আন্দোলনে সক্রিয় ছিল।
তিনি একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ১২ বছর বয়সী এক ছাত্র তার মাকে একটি চিঠি লিখে আন্দোলনে যোগ দেয় এবং পরবর্তীতে শহীদ হয়। এই গল্পটি চ্যান্সেলর শলৎসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি জার্মান ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে জার্মান বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে আরও সুযোগ রয়েছে। আমরা হতে পারি আপনাদের কারখানা।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখনো সার্ক-এর ধারণাকে ধারণ করে এবং এই আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশকে কিভাবে উপকৃত করতে পারে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির প্রস্তাবে চ্যান্সেলর শলৎসের সমর্থন কামনা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও জার্মানির পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আরও আলোচনা হয়। চ্যান্সেলর শলৎস এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে জার্মানির ভূমিকা দৃঢ় করার কথা জানান।
ডাভোসের এই বৈঠক বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ করার একটি সুযোগ তৈরি করেছে। এটি বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
ডাভোস বৈঠকে সংস্কার কর্মসূচি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের ডাভোস থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে ওলাফ শলৎসকে অবহিত করেন অধ্যাপক ইউনূস। চ্যান্সেলর এ সময় বলেন, “আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব।”
অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে জানান, তিনি একটি ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা ছয়টি কমিশনের প্রণীত সংস্কার প্রতিবেদনগুলোর ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর রাজনৈতিক দলগুলো “জুলাই ঘোষণাপত্র” নামে একটি সনদে স্বাক্ষর করবে। এই ঘোষণাপত্রের উদ্দেশ্য হলো ছাত্র-নেতৃত্বাধীন জুলাই ও আগস্টের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা ধরে রাখা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বৈঠকে জুলাই আন্দোলনের কারণ, বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস চ্যান্সেলরকে জানান, কীভাবে তরুণ প্রজন্ম বছরের পর বছর ধরে চলা অপশাসনের অবসান ঘটানোর জন্য আন্দোলনে সক্রিয় ছিল।
তিনি একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ১২ বছর বয়সী এক ছাত্র তার মাকে একটি চিঠি লিখে আন্দোলনে যোগ দেয় এবং পরবর্তীতে শহীদ হয়। এই গল্পটি চ্যান্সেলর শলৎসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি জার্মান ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে জার্মান বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে আরও সুযোগ রয়েছে। আমরা হতে পারি আপনাদের কারখানা।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখনো সার্ক-এর ধারণাকে ধারণ করে এবং এই আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশকে কিভাবে উপকৃত করতে পারে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির প্রস্তাবে চ্যান্সেলর শলৎসের সমর্থন কামনা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও জার্মানির পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আরও আলোচনা হয়। চ্যান্সেলর শলৎস এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে জার্মানির ভূমিকা দৃঢ় করার কথা জানান।
ডাভোসের এই বৈঠক বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ করার একটি সুযোগ তৈরি করেছে। এটি বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।