সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর সিদ্ধান্ত এবং একই সময়ে জনগণের ওপর বাড়তি ভ্যাট আরোপের বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ স্পষ্ট করেছেন যে, মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “মহার্ঘ ভাতা যদি দেই সেটা আলাদা হিসাব করব। বাংলাদেশ সবচেয়ে ‘লোয়েস্ট ট্যাক্সপেয়িং’ কান্ট্রি। এলডিসির চেয়েও আমাদের ট্যাক্স কম। ভুটান, নেপাল, আইভোরিকোস্ট, বুরকিনাফাসোর চেয়েও কম। এত কম ট্যাক্স দিয়ে কীভাবে চান যে আপনাকে সবকিছু দেব? এটা প্রত্যাশা করা ঠিক হয় না।”
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেছেন, “মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে বলেই কমিটি করা হয়েছে। কত শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কমিটি সুপারিশ করবে। আপার লিমিট ও লোয়ার লিমিট নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। স্টাফদের হয়ত একটু বেশি থাকতে পারে। পেনশনাররাও মহার্ঘ ভাতা পাবেন।”
সচিব থেকে পিওন পর্যন্ত সবাই মহার্ঘ ভাতা পাবেন : সিনিয়র সচিব
সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দেবে সরকার
অন্যদিকে, সরকারের আয় বাড়াতে শতাধিক পণ্য ও সেবায় আমদানি, উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে অনেকে আশঙ্কা করছেন, মহার্ঘ ভাতা মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে এবং সাধারণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
গত শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা মনে করি, সরকার যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এখানে এ ধরনের (মহার্ঘ ভাতা) পদক্ষেপগুলো নিঃসন্দেহে কিছুটা সমস্যা তৈরি করবে। একই সময়ে মহার্ঘ ভাতা তো মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় তো বাড়ছে না। এটা একটা সমস্যা। এই বিষয়গুলো আপাতত খুব বেশি প্রয়োজন ছিল না।”
‘মহার্ঘ ভাতা মূল্যস্ফীতি বাড়াবে’, সরকারের পদক্ষেপে আপত্তি বিএনপির
বাড়তি ভ্যাট ও মহার্ঘ ভাতায় আপত্তি বিএনপির, অন্তর্বর্তী সরকারকে খরচ কমানোর পরামর্শ
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “গণআন্দোলনে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের বাড়তি ব্যয়ের প্রকল্পের চাপ সামলাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিমশিম খাচ্ছে।”
সরকার আয় বাড়াতে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চশমার ভ্যাট বাড়িয়েছি। ১২৫ টাকায় পৃথিবীর কোন দেশে চশমা পাওয়া যায়? ওখানে ১৫ টাকা বাড়বে। খাবেন ৬০০/৭০০ টাকা, ২০ টাকা ভ্যাট দেবেন না। ভাতের হোটেলে তো ভ্যাট জিরো করে দিয়েছি। গ্লোরিয়া জিন্স থেকে এক কাপ কফি খাবেন, ওখানে ১৫ টাকা দিতে আপনার বাঁধে। এই রকম অ্যাটিচিউড থাকলে তো ‘ডিফিকাল্ট’। দরকার হলে ২০ টাকা বেশি দিয়ে মিষ্টি খাব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজস্ব এত কম যে, পুরো চিত্রটা এখনও অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। আমাদের রেভিনিউ বাড়াতে হবে।”
অর্থ উপদেষ্টা জানান, “আমি কিছুদিন আগে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে গেলাম। আমরা যখন (সরকার ক্ষমতায়) আসি, তখন ১৩৫ মিলিয়ন ডলার এলএনজি আমদানির বিল পাওনা ছিল। আমরা সেটা পেমেন্ট করেছি। এখন আবার ১ মিলিয়ন ডলার পাওনা হয়েছে। রাশিয়ান অ্যাম্বাসেডর বলছে যে, তোমরা টাকা দিচ্ছ না, গম আমদানির বিল।”
তিনি বলেন, “বড় বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয় দ্বিগুণ হচ্ছে। পাঁচ বছরের প্রকল্প ১০ বছর ধরে চলছে। যেখানে খরচ হওয়ার কথা ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা, সেখানে খরচ হচ্ছে ৫২ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কোথা থেকে আসবে? এগুলো আমাদের শোধ দিতে হবে।”
অর্থ উপদেষ্টার মতে, মহার্ঘ ভাতা ও ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। তবে সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি।
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর সিদ্ধান্ত এবং একই সময়ে জনগণের ওপর বাড়তি ভ্যাট আরোপের বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ স্পষ্ট করেছেন যে, মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “মহার্ঘ ভাতা যদি দেই সেটা আলাদা হিসাব করব। বাংলাদেশ সবচেয়ে ‘লোয়েস্ট ট্যাক্সপেয়িং’ কান্ট্রি। এলডিসির চেয়েও আমাদের ট্যাক্স কম। ভুটান, নেপাল, আইভোরিকোস্ট, বুরকিনাফাসোর চেয়েও কম। এত কম ট্যাক্স দিয়ে কীভাবে চান যে আপনাকে সবকিছু দেব? এটা প্রত্যাশা করা ঠিক হয় না।”
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেছেন, “মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে বলেই কমিটি করা হয়েছে। কত শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কমিটি সুপারিশ করবে। আপার লিমিট ও লোয়ার লিমিট নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। স্টাফদের হয়ত একটু বেশি থাকতে পারে। পেনশনাররাও মহার্ঘ ভাতা পাবেন।”
সচিব থেকে পিওন পর্যন্ত সবাই মহার্ঘ ভাতা পাবেন : সিনিয়র সচিব
সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দেবে সরকার
অন্যদিকে, সরকারের আয় বাড়াতে শতাধিক পণ্য ও সেবায় আমদানি, উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে অনেকে আশঙ্কা করছেন, মহার্ঘ ভাতা মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে এবং সাধারণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
গত শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা মনে করি, সরকার যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এখানে এ ধরনের (মহার্ঘ ভাতা) পদক্ষেপগুলো নিঃসন্দেহে কিছুটা সমস্যা তৈরি করবে। একই সময়ে মহার্ঘ ভাতা তো মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় তো বাড়ছে না। এটা একটা সমস্যা। এই বিষয়গুলো আপাতত খুব বেশি প্রয়োজন ছিল না।”
‘মহার্ঘ ভাতা মূল্যস্ফীতি বাড়াবে’, সরকারের পদক্ষেপে আপত্তি বিএনপির
বাড়তি ভ্যাট ও মহার্ঘ ভাতায় আপত্তি বিএনপির, অন্তর্বর্তী সরকারকে খরচ কমানোর পরামর্শ
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “গণআন্দোলনে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের বাড়তি ব্যয়ের প্রকল্পের চাপ সামলাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিমশিম খাচ্ছে।”
সরকার আয় বাড়াতে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চশমার ভ্যাট বাড়িয়েছি। ১২৫ টাকায় পৃথিবীর কোন দেশে চশমা পাওয়া যায়? ওখানে ১৫ টাকা বাড়বে। খাবেন ৬০০/৭০০ টাকা, ২০ টাকা ভ্যাট দেবেন না। ভাতের হোটেলে তো ভ্যাট জিরো করে দিয়েছি। গ্লোরিয়া জিন্স থেকে এক কাপ কফি খাবেন, ওখানে ১৫ টাকা দিতে আপনার বাঁধে। এই রকম অ্যাটিচিউড থাকলে তো ‘ডিফিকাল্ট’। দরকার হলে ২০ টাকা বেশি দিয়ে মিষ্টি খাব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজস্ব এত কম যে, পুরো চিত্রটা এখনও অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। আমাদের রেভিনিউ বাড়াতে হবে।”
অর্থ উপদেষ্টা জানান, “আমি কিছুদিন আগে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে গেলাম। আমরা যখন (সরকার ক্ষমতায়) আসি, তখন ১৩৫ মিলিয়ন ডলার এলএনজি আমদানির বিল পাওনা ছিল। আমরা সেটা পেমেন্ট করেছি। এখন আবার ১ মিলিয়ন ডলার পাওনা হয়েছে। রাশিয়ান অ্যাম্বাসেডর বলছে যে, তোমরা টাকা দিচ্ছ না, গম আমদানির বিল।”
তিনি বলেন, “বড় বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয় দ্বিগুণ হচ্ছে। পাঁচ বছরের প্রকল্প ১০ বছর ধরে চলছে। যেখানে খরচ হওয়ার কথা ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা, সেখানে খরচ হচ্ছে ৫২ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কোথা থেকে আসবে? এগুলো আমাদের শোধ দিতে হবে।”
অর্থ উপদেষ্টার মতে, মহার্ঘ ভাতা ও ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। তবে সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি।