বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস, স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা, বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট ডিভিশনের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন, উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণ এবং আদালত অঙ্গনকে দলীয়করণ মুক্ত রাখা।
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইইনূসের কাছে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক জানান, ৩৫২ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে ৩২টি অধ্যায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে মামলার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনতে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের মতে, বর্তমানে পুলিশের তদন্তে প্রভাব বা পক্ষপাতের অভিযোগ রয়েছে, যা বিচার প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর প্রভাব ফেলে। এ সমস্যা দূর করতে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে মামলার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের দায়িত্ব পুলিশের একচ্ছত্র অধীনে না থাকে।
আদালত ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কমিশন বলেছে, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট ডিভিশনের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করা প্রয়োজন। এটি বাস্তবায়নের জন্য সাংবিধানিক সংশোধনী প্রয়োজন হতে পারে। পাশাপাশি জেলা আদালতের কাঠামো সম্প্রসারণ করে উপজেলা পর্যায়ে নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজে বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারেন।
বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আইনগত সহায়তা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশনের মতে, দরিদ্র জনগোষ্ঠী অনেক সময় আইনি সহায়তা পায় না, যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করে। এ সমস্যা সমাধানে চলমান আইনি সহায়তা কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা কার্যকর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আইনজীবীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে আদালতের বাইরে রাখা যায়, সে বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে আদালত অঙ্গন দলীয়করণ মুক্ত থাকে।
আইনি শিক্ষার মানোন্নয়নেও বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন মনে করে, মেধাবী শিক্ষার্থীদের আইন পেশায় আকৃষ্ট করতে মেডিকেল শিক্ষার মতো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এতে আইনজীবীদের মান উন্নত হবে এবং বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়বে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব সুপারিশ কার্যকর করতে বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন প্রয়োজন। বিচার ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিচারকদের স্বতন্ত্রতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কমিশন প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে।
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস, স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা, বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট ডিভিশনের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন, উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণ এবং আদালত অঙ্গনকে দলীয়করণ মুক্ত রাখা।
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইইনূসের কাছে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক জানান, ৩৫২ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে ৩২টি অধ্যায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে মামলার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনতে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের মতে, বর্তমানে পুলিশের তদন্তে প্রভাব বা পক্ষপাতের অভিযোগ রয়েছে, যা বিচার প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর প্রভাব ফেলে। এ সমস্যা দূর করতে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে মামলার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের দায়িত্ব পুলিশের একচ্ছত্র অধীনে না থাকে।
আদালত ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কমিশন বলেছে, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট ডিভিশনের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করা প্রয়োজন। এটি বাস্তবায়নের জন্য সাংবিধানিক সংশোধনী প্রয়োজন হতে পারে। পাশাপাশি জেলা আদালতের কাঠামো সম্প্রসারণ করে উপজেলা পর্যায়ে নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজে বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারেন।
বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আইনগত সহায়তা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশনের মতে, দরিদ্র জনগোষ্ঠী অনেক সময় আইনি সহায়তা পায় না, যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করে। এ সমস্যা সমাধানে চলমান আইনি সহায়তা কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা কার্যকর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আইনজীবীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে আদালতের বাইরে রাখা যায়, সে বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে আদালত অঙ্গন দলীয়করণ মুক্ত থাকে।
আইনি শিক্ষার মানোন্নয়নেও বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন মনে করে, মেধাবী শিক্ষার্থীদের আইন পেশায় আকৃষ্ট করতে মেডিকেল শিক্ষার মতো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এতে আইনজীবীদের মান উন্নত হবে এবং বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়বে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব সুপারিশ কার্যকর করতে বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন প্রয়োজন। বিচার ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিচারকদের স্বতন্ত্রতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কমিশন প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে।