পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ
দিল্লি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যকে ‘মিথ্যা ও উস্কানিমূলক’ অভিহিত করে এ ঘটনায় ঢাকায় ভারতের শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে প্রতিবাদপত্র হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি যে, শেখ হাসিনাকে বিরত রাখার জন্য, যাতে করে উনি এ ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি না দেন। এটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এটার জবাব পাইনি এখনও।
“আমরা আজকে আবার…তাদের কয়েকদিনের কার্যকলাপের কারণে আমরা আরেকবার তাদেরকে প্রতিবাদপত্র দিয়েছি। হাই কমিশনার এই মুহূর্তে নেই, ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে ডেকে তার হাতে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে। আমরা আবারও অনুরোধ করেছি, তাকে যেন বিরত রাখা হয়।”
প্রতিবাদ পাঠানোর কারণ ব্যাখ্যা করে উপদেষ্টা বলেন, “কারণ, তার এসব বক্তব্য প্রধানতই মিথ্যা। তিনি উল্লেখ করছেন, সেটা অস্থিতিশীলতার উস্কানি দিচ্ছে বাংলাদেশে। এ কারণে আমরা বলেছি, এই চর্চা বন্ধ করার জন্য তারা যেন ব্যবস্থা নেন।”
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও ঢাকায় এই মুহূর্তের মিশন প্রধানকে ডেকে প্রতিবাদপত্র ধরিয়ে দেওয়ার কথা তুলে ধরা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিকভাবে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বক্তব্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে ‘জোরালো প্রতিবাদ’ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারের হাতে তুলে দেওয়া প্রতিবাদপত্রে ‘গভীর উদ্বেগ, হতাশা ও কঠোর আপত্তি’ জানানোর কথা তুলে ধরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেননা এসব বক্তব্য-বিবৃতি ‘বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত হানছে’।
মন্ত্রণালয় গুরুত্ব দিয়ে বলেছে যে, তার এ ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশ বিরোধী বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং (এগুলো) দুদেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক তৈরির যে প্রচেষ্টা, সেটার সহায়ক নয়।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতে থাকাবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য যোগাযোগব্যবস্থা ব্যবহার করে শেখ হাসিনার ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও প্ররোচনামূলক বক্তব্য’ বন্ধে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ ভারত সরকারকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এক্ষেত্রে ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মেজাজ’ যেন ভারত সরকার দেখায়, প্রতিবাদপত্রে সেটা তুলে ধরার কথা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে ৫ অগাস্ট গণভবন থেকে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।
প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসন ক্ষমতার পর সেই থেকে ছয় মাস ধরে ভারতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্যে তিনি সংবাদমাধ্যমে কোনো বক্তব্য না দিলেও আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে তার নামে কয়েকটি বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশ ও বিদেশে অবস্থান করা নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার কয়েকটি ফোনালাপ ফাঁসের খবরও প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সমাবেশে টেলিফোনে বক্তব্য দিয়েছেন দলীয় প্রধান।
সবশেষ বুধবার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউবে ‘ছাত্রসমাজের উদ্দেশে’ সরাসরি বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।
তার ওই বক্তব্য প্রদানকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি প্রায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ বিরোধীদের ভাঙচুর ও রোষের মুখে পড়েছে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধাসদন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় শেখ পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার বক্তব্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা এবং গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, "দেশের স্বাধীনতা কয়েকজন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলবে এই শক্তি তাদের হয়নি। তারা একটি দালান ভেঙে ফেলতে পারবে, কিন্তু ইতিহাস মুছতে পারবে না।ইতিহাস কিন্তু প্রতিশোধ নেয়।”
তার ভাষায়, যারা ওই বাড়িতে ভাঙচুর করছে, তারা ‘হীনমন্যতার পরিচয়’ দিচ্ছে।
“বাড়িটার কী অপরাধ? ওই বাড়িটাকে কেন এত ভয়? আমি দেশের মানুষের কাছে আজ বিচার চাই। বলেন আপনারা, আমি কি আপনাদের জন্য কিছুই করিনি।”
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের প্রতি কোনো ‘রাগ বা অভিযোগ’ নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “কিন্তু যারা এই ধ্বংস করছে, তারা তো খুনি হিসেবে চিহ্নিত হবে।”
তিনি বলেন, “দেশের মানুষের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তারা ফ্যাসিবাদী, না যারা মানুষকে উন্নত জীবন দেয়, ত্যারা ফ্যাসিবাদী? এটা দেশের জনগণই বিচার করবে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
দিল্লি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যকে ‘মিথ্যা ও উস্কানিমূলক’ অভিহিত করে এ ঘটনায় ঢাকায় ভারতের শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে প্রতিবাদপত্র হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি যে, শেখ হাসিনাকে বিরত রাখার জন্য, যাতে করে উনি এ ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি না দেন। এটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এটার জবাব পাইনি এখনও।
“আমরা আজকে আবার…তাদের কয়েকদিনের কার্যকলাপের কারণে আমরা আরেকবার তাদেরকে প্রতিবাদপত্র দিয়েছি। হাই কমিশনার এই মুহূর্তে নেই, ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে ডেকে তার হাতে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে। আমরা আবারও অনুরোধ করেছি, তাকে যেন বিরত রাখা হয়।”
প্রতিবাদ পাঠানোর কারণ ব্যাখ্যা করে উপদেষ্টা বলেন, “কারণ, তার এসব বক্তব্য প্রধানতই মিথ্যা। তিনি উল্লেখ করছেন, সেটা অস্থিতিশীলতার উস্কানি দিচ্ছে বাংলাদেশে। এ কারণে আমরা বলেছি, এই চর্চা বন্ধ করার জন্য তারা যেন ব্যবস্থা নেন।”
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও ঢাকায় এই মুহূর্তের মিশন প্রধানকে ডেকে প্রতিবাদপত্র ধরিয়ে দেওয়ার কথা তুলে ধরা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিকভাবে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বক্তব্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে ‘জোরালো প্রতিবাদ’ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারের হাতে তুলে দেওয়া প্রতিবাদপত্রে ‘গভীর উদ্বেগ, হতাশা ও কঠোর আপত্তি’ জানানোর কথা তুলে ধরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেননা এসব বক্তব্য-বিবৃতি ‘বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত হানছে’।
মন্ত্রণালয় গুরুত্ব দিয়ে বলেছে যে, তার এ ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশ বিরোধী বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং (এগুলো) দুদেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক তৈরির যে প্রচেষ্টা, সেটার সহায়ক নয়।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতে থাকাবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য যোগাযোগব্যবস্থা ব্যবহার করে শেখ হাসিনার ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও প্ররোচনামূলক বক্তব্য’ বন্ধে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ ভারত সরকারকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এক্ষেত্রে ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মেজাজ’ যেন ভারত সরকার দেখায়, প্রতিবাদপত্রে সেটা তুলে ধরার কথা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে ৫ অগাস্ট গণভবন থেকে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।
প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসন ক্ষমতার পর সেই থেকে ছয় মাস ধরে ভারতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্যে তিনি সংবাদমাধ্যমে কোনো বক্তব্য না দিলেও আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে তার নামে কয়েকটি বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশ ও বিদেশে অবস্থান করা নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার কয়েকটি ফোনালাপ ফাঁসের খবরও প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সমাবেশে টেলিফোনে বক্তব্য দিয়েছেন দলীয় প্রধান।
সবশেষ বুধবার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউবে ‘ছাত্রসমাজের উদ্দেশে’ সরাসরি বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।
তার ওই বক্তব্য প্রদানকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি প্রায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ বিরোধীদের ভাঙচুর ও রোষের মুখে পড়েছে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধাসদন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় শেখ পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার বক্তব্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা এবং গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, "দেশের স্বাধীনতা কয়েকজন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলবে এই শক্তি তাদের হয়নি। তারা একটি দালান ভেঙে ফেলতে পারবে, কিন্তু ইতিহাস মুছতে পারবে না।ইতিহাস কিন্তু প্রতিশোধ নেয়।”
তার ভাষায়, যারা ওই বাড়িতে ভাঙচুর করছে, তারা ‘হীনমন্যতার পরিচয়’ দিচ্ছে।
“বাড়িটার কী অপরাধ? ওই বাড়িটাকে কেন এত ভয়? আমি দেশের মানুষের কাছে আজ বিচার চাই। বলেন আপনারা, আমি কি আপনাদের জন্য কিছুই করিনি।”
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের প্রতি কোনো ‘রাগ বা অভিযোগ’ নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “কিন্তু যারা এই ধ্বংস করছে, তারা তো খুনি হিসেবে চিহ্নিত হবে।”
তিনি বলেন, “দেশের মানুষের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তারা ফ্যাসিবাদী, না যারা মানুষকে উন্নত জীবন দেয়, ত্যারা ফ্যাসিবাদী? এটা দেশের জনগণই বিচার করবে।”