গাজীপুর মহানগরীর রাজবাড়ী মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা -সংবাদ
গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-পাল্টা হামলার পর ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘দায়িত্বে অবহেলার’ অভিযোগে সদর থানার ওসি’কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিজেদের ‘ব্যর্থতা স্বীকার’ করে ক্ষমা চেয়েছেন মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নাজমুল করীম খান। আর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি।
শনিবার ০৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নগরীর রাজবাড়ি রোডে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন মহানগর পুলিশের কমিশনার। তিনি বলেন, ‘গতরাত যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার জন্য আমি পুলিশের পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’ এবং ওসি মো. আরিফুল ইসলামকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন মহানগর পুলিশের এ শীর্ষ কর্মকর্তা।
নাজমুল করীম খান বলেন, ‘আমি শুনেছি, আমার ওসি দুই ঘণ্টা পর আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বললাম, তাকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করব। আমি বলতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের পুলিশে চাকরি করতে দেয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে যারা অত্যাচার করেছে, দেশের ওপর জুলুম করেছে, তারা মাথাচাড়া দিচ্ছে। কিন্তু তাদের কোনো মাথাচাড়া বরদাশ্ত করা হবে না। ইতোমধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ (শনিবার) রাতে চিরুনি অভিযান চালানো হবে। ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দমন করার জন্য ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করা হবে।”
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নগরের ধীরাশ্রম দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এতে ‘অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত’ হয়েছেন বলে অভিযোগ।
আহতদের প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে গুরুতর আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা শনিবার বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এদিন দুপুরে নগরের ভাওয়াল রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন তারা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের পাশাপাশি গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবি করা হয়।
‘ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে আরেকটি বিপ্লব দেখতে হবে’
বিক্ষোভ সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এখনও গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সন্ত্রাসীরা এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের যোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে। এই সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ইন্টেলিজেন্স যদি আজকে (শনিবার) রাতের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারে তাহলে আমাদেরকে তাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কোথাও আমাদের কোনো সহযোদ্ধার গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করলে পুরো বাংলাদেশ আবার নতুন করে জেগে উঠবে। আমরা অভ্যুত্থানে দেখিয়েছি, এদেশের ছাত্র-জনতা সঠিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ধৈর্য ধরেছে। এই দেশে প্রশাসন থেকে শুরু করে যারা কাজ করছে তারা যদি আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে ফেলে তাহলে দেশে নতুন আরেকটি বিপ্লব দেখতে হবে।’
গাজীপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে শনিবার মতবিনিময় করে জেলা বিএনপি। এ সময় দলের নেতারা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এতে জেলা প্রশাসক নাফীসা আরেফিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক একে এম ফজলুল হক মিলন, মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম রনি উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধীদের লক্ষ্য করে গুলি
গাজীপুরের শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. নয়ন দেওয়ান সংবাদ’কে জানায়, এ সময় গুলিবিদ্ধ হন মুুবাশশের হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে মোটরসাইকেলে করে এসে এক দুর্বৃত্ত গুলি করে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মহানগরের উপ-পুলিশ কমিশনার রিয়াজ উদ্দিন সংবাদ’কে বলেন, ‘একজনকে গুলি করার খবর পেয়েছি। তদন্ত করছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
গাজীপুর মহানগরীর রাজবাড়ী মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা -সংবাদ
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-পাল্টা হামলার পর ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘দায়িত্বে অবহেলার’ অভিযোগে সদর থানার ওসি’কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিজেদের ‘ব্যর্থতা স্বীকার’ করে ক্ষমা চেয়েছেন মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নাজমুল করীম খান। আর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি।
শনিবার ০৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নগরীর রাজবাড়ি রোডে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন মহানগর পুলিশের কমিশনার। তিনি বলেন, ‘গতরাত যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার জন্য আমি পুলিশের পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’ এবং ওসি মো. আরিফুল ইসলামকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন মহানগর পুলিশের এ শীর্ষ কর্মকর্তা।
নাজমুল করীম খান বলেন, ‘আমি শুনেছি, আমার ওসি দুই ঘণ্টা পর আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বললাম, তাকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করব। আমি বলতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের পুলিশে চাকরি করতে দেয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে যারা অত্যাচার করেছে, দেশের ওপর জুলুম করেছে, তারা মাথাচাড়া দিচ্ছে। কিন্তু তাদের কোনো মাথাচাড়া বরদাশ্ত করা হবে না। ইতোমধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ (শনিবার) রাতে চিরুনি অভিযান চালানো হবে। ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দমন করার জন্য ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করা হবে।”
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নগরের ধীরাশ্রম দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এতে ‘অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত’ হয়েছেন বলে অভিযোগ।
আহতদের প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে গুরুতর আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা শনিবার বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এদিন দুপুরে নগরের ভাওয়াল রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন তারা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের পাশাপাশি গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবি করা হয়।
‘ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে আরেকটি বিপ্লব দেখতে হবে’
বিক্ষোভ সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এখনও গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সন্ত্রাসীরা এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের যোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে। এই সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ইন্টেলিজেন্স যদি আজকে (শনিবার) রাতের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারে তাহলে আমাদেরকে তাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কোথাও আমাদের কোনো সহযোদ্ধার গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করলে পুরো বাংলাদেশ আবার নতুন করে জেগে উঠবে। আমরা অভ্যুত্থানে দেখিয়েছি, এদেশের ছাত্র-জনতা সঠিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ধৈর্য ধরেছে। এই দেশে প্রশাসন থেকে শুরু করে যারা কাজ করছে তারা যদি আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে ফেলে তাহলে দেশে নতুন আরেকটি বিপ্লব দেখতে হবে।’
গাজীপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে শনিবার মতবিনিময় করে জেলা বিএনপি। এ সময় দলের নেতারা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এতে জেলা প্রশাসক নাফীসা আরেফিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক একে এম ফজলুল হক মিলন, মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম রনি উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধীদের লক্ষ্য করে গুলি
গাজীপুরের শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. নয়ন দেওয়ান সংবাদ’কে জানায়, এ সময় গুলিবিদ্ধ হন মুুবাশশের হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে মোটরসাইকেলে করে এসে এক দুর্বৃত্ত গুলি করে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মহানগরের উপ-পুলিশ কমিশনার রিয়াজ উদ্দিন সংবাদ’কে বলেন, ‘একজনকে গুলি করার খবর পেয়েছি। তদন্ত করছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’